ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার: মির্জা ফখরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৩, ১৬: ০২
আপডেট : ০২ মে ২০২৩, ১৬: ১০

ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে—এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই আইন বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায়, যা গণতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সরকার এই আইনের সুযোগ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, সংবাদকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে। 

আজ মঙ্গলবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিডনি রোগে আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে আট মাসের বেশি সময় কারাগারে আটক এবং ইউএনবির সাংবাদিক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে একই আইনে মামলার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। 

মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে কারাগারে আটক শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাসহ আটক সব বন্দীর মুক্তি, এই আইনের অধীনে সব মামলা প্রত্যাহার এবং গণতন্ত্রবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনতিবিলম্বে বাতিলের দাবি জানায় বিএনপি। 

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল, ২০২৩ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বিলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল, ২০২৩ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে সংসদে পেশ করা হয়েছে। শিগগিরই তা আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়া চলছে। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনটি প্রণয়নের কোনো পর্যায়েই অংশীজনের মতামত নেওয়া হয়নি। প্রস্তাবিত আইনের পরিধি শুধু বিস্তৃত নয়, অসীম। সরকার ইচ্ছা করলেই যেকোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান, পেশা ও সেবাকে এই আইনের আওতায় এনে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করে তা অমান্য করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানাতে পারবে। এই আইনকে প্রচলিত শ্রম আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করে শ্রমজীবী জনগণ যা কিছু অধিকার অর্জন করেছিল, তা নাকচ করে দেওয়া হবে। 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রচলিত শ্রম আইনেই কোনো ধর্মঘট জনজীবন কিংবা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করলে তা নিষিদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিরোধটি শ্রম আদালতে পাঠানোর কথা বলা আছে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকার প্রয়োজন মনে করলেই লক্ষ-কোটি শ্রমজীবী, পেশাজীবী মানুষকে ছয় মাস করে সারা জীবন ধর্মঘট নিষিদ্ধ ঘোষণার আওতায় রাখতে পারবে। কিন্তু তাদের ন্যায্য সমস্যার সমাধান কিংবা প্রাপ্য আদায়ের কোনো বিকল্পের কথা আইনে রাখা হয়নি। 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত আইনটি শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকারকেই ক্ষুণ্ন করবে না, এটি সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের সংবিধানসম্মত প্রতিবাদের অধিকারের পরিপন্থী। বিএনপি প্রস্তাবিত ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল, ২০২৩’ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত