Ajker Patrika

পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি গণতন্ত্রের ধারণার বিরুদ্ধে: আবুল কাসেম ফজলুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি গণতন্ত্রের ধারণার বিরুদ্ধে: আবুল কাসেম ফজলুল হক

পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি গণতন্ত্রের ধারার রাজনীতির সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় পরিষদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। 

একদম ইউনিয়ন থেকে শুরু রাজধানীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিতে এই ধরনের অবস্থা দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ গণমূর্তি পার্টির উপদেষ্টা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ‘আমাদের জাতীয় পর্যায়ে বড় বড় যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ছিল। ১৯৫৪ সালে যে প্রাদেশিক সভার নির্বাচন হলো, তাতে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী তাঁদের অসাধারণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। দেশবাসী তাঁদের বিশ্বাস করতেন। কিন্তু সেই আওয়ামী লীগকে এখন আওয়ামী লীগ বলা কঠিন। এই দল এখন হয়ে গেছে শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণাধীন। এখন সকল কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শেখ হাসিনার হাতে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা-নেতারা যারা বিভিন্ন সাংগঠনিক ক্যাপাসিটিতে আছেন, তারা সকল ক্ষমতা শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন। এই ধরনের মানসিকতা গণতন্ত্রের পরিচালক নয়।’

তিনি বলেন, ‘নেতৃস্থানীয় যারা, তারা শেখ হাসিনার হাতে সমস্ত কর্তৃত্ব দিয়ে একটা ডিক্টেটরশিপ প্রতিষ্ঠা করেছেন। একটা নির্বাচন গেল, সেখানে শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী সেটি সফল হয়েছে। কিন্তু এই যে নির্বাচন হলো ৭ জানুয়ারি, সেখানে স্বাভাবিক রাজনীতির বৈশিষ্ট্য অতি অল্প আছে। সেটা ৫ ভাগের বেশি হবে না। আর ৯৫ ভাগ সাজিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ফলাফল ঘোষিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, এবার আওয়ামী লীগ যেসব দলের সঙ্গে সমঝোতা করেছে এবং তাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটি রক্ষা করেনি। জাতীয় পার্টি, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন এদের কিছু সিট ছেড়ে দেবে বলেছিল। কিন্তু ইলেকশনে দেখা গেল, সেই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ রক্ষা করেনি।’ 

বিএনপি রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি আপনারা দেখছেন, সেখানে তারেক জিয়া লন্ডনে বসে টেলিফোন যে সিদ্ধান্ত দেন বিএনপি সেটা কার্যকর করে। এখানে তারেক জিয়ার সঙ্গে যার সম্পর্ক যত বেশি, তারা তত বড় অবস্থানে আছেন। রাজনীতিতে উত্তরাধিকার ভিত্তিক, পরিবারতান্ত্রিক এটার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের ধারণা। বিএনপি তো রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠেনি, হয়ে উঠবে বলেও মনে হয় না। কারণ গত ২০ বছর ধরে তাঁদের কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। তারা ওই উত্তরাধিকার ভিত্তিক পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতে চলে গেছে। জাতীয় পার্টিরও একই অবস্থান। 

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘এইবার আমেরিকা যেভাবে ঢাকায় এসে নির্বাচনের অন্তত ছয় মাস আগে শেখ হাসিনার ওপরে এবং বাংলাদেশের চাপ সৃষ্টি করেছে যে, বাংলাদেশের মৌলিক অধিকার নেই। এ অবস্থায় তো সঠিক নির্বাচন হতে পারে না। নানা কৌশলে তারা অনেক সমালোচনা করেছে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ওপর। এই চাপ শেখ হাসিনা সামলে নিয়েছেন। আমাদের স্বীকার করতে হবে আমেরিকা ও ইউরোপের এই চাপের ওপরে শেখ হাসিনা মাথা নত করিনি। তাদের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনা গ্রহণ করেনি। তার নিজের বিবেচনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের চার পাঁচজন লোকের সঙ্গে পরামর্শ করে যেভাবে কাজ করেছেন, এটা তো আমি বলব শেখ হাসিনার একটা সাফল্য আছে।’ 

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ গণ মুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকারসহ অন্যান্য বক্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত