আওয়ামী লীগের ক্ষমতার মোহ নাই: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২২, ২২: ২০

আওয়ামী লীগের ক্ষমতার কোন মোহ নাই বলে জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জনগণ চাইলে আছি, না হলে নাই। এটা নেত্রী বলে দিয়েছেন। ক্ষমতা আমাদের জন্য জনসেবার মহান ব্রত। ক্ষমতা কোন মোহ নয়।’

আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ২২তম সম্মেলন উপলক্ষে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির বৈঠকে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। 

ক্ষমতা বিএনপির মোহ ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, ‘তাদের মোহ, যারা হাওয়া ভবন টেকব্যাক করতে চাই। হারানো হাওয়া ভবন ফিরে পেতে তারা টেকব্যাক আন্দোলন করছে।’ 

বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দুর্বল করা লাগবে না বলে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘তারা যেভাবে চলছে নেতিবাচক রাজনীতিতে নিজেরাই দুর্বল হয়ে যাবে। নিজেরাই নিজেদের দুর্বল করার জন্য যথেষ্ট। আওয়ামী লীগের কোনো দরকার নাই, প্রয়োজনও নাই। তাদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কেন করব? আমাদের সামনে দৃশ্যমান কাজ আছে।’

কাদের বলেন, ‘অনেকই অনেক কথা বলতে পারে, আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে নেই। তারা সম্মেলন করেই না। আমরা আমাদের নিয়মিত সম্মেলনের কাজ করছি।’ 

বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে সরকার ঈর্ষান্বিত দলটির নেতাদের এমন দাবির জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনপ্রিয়তাটা কীভাবে বুঝব? নির্বাচনে আসেন। সেখানে প্রমাণ হবে কারা জনপ্রিয়।’ 

বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক কবে হয়েছে জানতে চান কাদের। এ সময় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটিকে জাম্বো জেট বলে উল্লেখ করেন তিনি। যারা দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা করে না, তারা দেশের মধ্যে কীভাবে গণতন্ত্র চর্চা করবে বলে প্রশ্ন রাখেন কাদের। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির নামে কয়েকজন বসে সিদ্ধান্ত নেয় বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, তাদের দল ও সংগঠন করার দরকার নাই। তাদের কিছু লোক দরকার বিদেশিদের নালিশ করার জন্য। 

বিএনপি নেতারা সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্রেকফাস্ট পার্টিতে যায় এবং রাতে ডিনার করে দাবি করেন কাদের। বলেন, নালিশ করে দেশের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। 

অভাবী কিছু মানুষ এখন কষ্টে আছে উল্লেখ করেন কাদের। সেই কষ্ট পীড়িত লোকদের বিএনপি উসকানি দিচ্ছে বলেও দাবি তার। বিএনপির আমলে দৃশ্যমান কাজ দেখানোর অনুরোধ করেন তিনি। বলেন, ‘ভোট নিবে কি বলে? আমাদের যত কাজ, তত প্রচার নেই। ফেসবুকে আমাদের উপস্থিতিটা একেবারেই দুর্বল।’ 

ফেসবুকে শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় অপপ্রচার করা হয় বলেও দাবি করেন কাদের। এ সময় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, এগুলোর জবাব আপনারা দেবেন না? প্রচার উপ-কমিটির সদস্যদের ফেসবুকে সরব উপস্থিতি দেখেন না বলে জানান তিনি। বলেন, ‘কাউন্টার করবে কে? এটা কাউন্টার করতে হবে। মিথ্যাচার ও বিষোদ্‌গারের জবাব দিতে হবে। ‘

দলীয় নেতাদের টেলিভিশন টকশোর বিষয়ে কাদের বলেন, ‘টকশোতে অনেকই যায়। মাঝে মাঝে সময় পেলে শুনি। কাউন্টারটা যথাযথ না হলে, কাউন্টার করে লাভ নাই। কেউ কেউ আছেন চৌকস কাউকে আমাদের প্রতিপক্ষ থেকে বেছে নেন। আমাদের এখান থেকে দুর্বল একজনকে দাঁড় করান। এটাও কিন্তু চতুরতার সঙ্গে করা হয়।’

সম্মেলনের দিন কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র দুপুরবেলা খাবার সরবরাহ করা হবে বলে জানান কাদের। সম্মেলন উপলক্ষে পোস্টার ও স্লোগান তৈরি বিষয়টি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেখানো হবে বলে জানান তিনি। 

সম্মেলন উপলক্ষে দাওয়াত কার্ড যাতে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হয় সেই নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সম্মেলনে কাউন্সিলরদের দ্বিগুণ হচ্ছে ডেলিগেট। ৮ হাজারের মত কাউন্সিলর, ডেলিগেট হবে ১৬ হাজার। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মুহূর্তে জনগণের কষ্ট দুর করার জন্য নেত্রী রাতে ঘুমান না। তার ঘুম হয় না। সর্বক্ষণ এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চিন্তায় মগ্ন থাকেন। যেখানে যাকে প্রয়োজন যোগাযোগ করেন। বৈঠকের নিয়মিত ফলোআপ তিনি করে যাচ্ছেন। চিন্তার কোন কারণ নাই, আমাদের নেত্রী ভাগ্যবতী। পরিস্থিতি আমরা সামাল দিতে পারব। 

মেট্রোরেল ডিসেম্বরের শেষে উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি। বলেন, নেত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছি। বঙ্গবন্ধু টানেল জানুয়ারিতে উদ্বোধন করব। 

প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত