বাড়িতে কান্নাকাটি আর বক্তৃতায় চাপাবাজি, ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯: ১৪

মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় ভয় পেয়েও ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা এ নিয়ে চাপাবাজি করে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

আজ বুধবার রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চলমান এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকার বিপদে আছে—এমন মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিপদে আছে তারা (সরকার), এটা বোঝা যায়। বিভিন্ন বক্তৃতায় যেসব চাপাবাজি করে। ছেলে-মেয়েরা আমেরিকায় যেতে পারছে না, ফিরে আসতেছে। বড় বড় সরকারি কর্মকর্তারা ভিসার দরখাস্ত দিয়ে রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে কান্নাকাটি চলতেছে। আর বাইরে এসে মাইকের সামনে বলছেন এই সব স্যাংশন, এই সব রেস্ট্রিকশসন আমরা পরোয়া করি না।’ 

ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা (সরকার) ভয় পেয়েছেন, কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত। যাদের কারণে এই লজ্জা, তাদের আর বহন করার কোনো প্রয়োজন নাই।’

চলমান সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে অংশ নিতে দলমত-নির্বিশেষে সবার প্রতি আহ্বান জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ন্যায্য। আমরা জনগণের পক্ষে আছি। জনগণ আমাদের পক্ষে আছে। বাংলাদেশের সবাই পরিবর্তন চায়। কেউ বলতেছে, কেউ বলতেছে না। যারা এখনো রাস্তায় নামছেন না, তাঁদের বলি—এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে। বাংলাদেশের জনগণ শুধু নয়, গণতান্ত্রিক বিশ্বও এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই সরকারের পতন হবেই হবে। যারা এই সরকার পতনের আন্দোলনে আছেন, তাঁরা স্বৈরাচারের পতন করেছেন বলে গৌরব করবেন। আর যাঁরা আন্দোলনে আসছেন না, তাঁরা আক্ষেপ করবেন আর বলবেন—আ হা! স্বৈরাচারবিরোধী এই আন্দোলনে থাকতে পারলাম না!’

সমাবেশের কারণে সড়কে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তাদের মাঝে ফিরে পেতে চায়। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। খালেদা জিয়া পালিয়ে যাওয়ার মানুষ না। তিনি জীবনে কখনো পালিয়ে যাননি। চিকিৎসা শেষে তিনি ফিরে এসে আবারও আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন।’

যানজটে ভোগান্তি 
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বেলা ২টা থেকে সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই নেতা-কর্মীরা এসে জড়ো হন। গাবতলী বাস টার্মিনালসংলগ্ন ব্যস্ত সড়কটিই ছিল এই সমাবেশের স্থান। সমাবেশ শুরুর আগে থেকে শেষ হওয়ার পরেও অনেকটা সময় ধরে সড়কের এক পাশের অনেকটা অংশ অবরুদ্ধ থাকে। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই পথে যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ ছিল। এর প্রভাবে এই এলাকার পাশাপাশি আশপাশের এলাকার সড়কেও প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা গড়ানের সঙ্গে থেমে থাকা বাহনের সারি দীর্ঘ হতে থাকে, চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিস ফেরত মানুষেরা। সমাবেশ শেষ হওয়ার বেশ কিছু সময় পরেও অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি।

জনভোগান্তি এড়াতে রাস্তার একটা অংশ গাড়ি চলাচলের জন্য ফাঁকা রাখতে মঞ্চ থেকে বারবার নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করা হয়। যদিও সেই অনুরোধ কানে তোলেননি নেতা-কর্মীরা। 

এদিকে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সমাবেশস্থলের চারপাশে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত