দলের মতপার্থক্যের জন্য দেশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বিএনপি নেতা-কর্মীদের তারেক

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩: ৪৪
Thumbnail image
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দলের মধ্যে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, সেই মতপার্থক্য এমন কোনো পর্যায়ে যেন না পৌঁছায়, যাতে দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজ সোমবার নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরি দ্বি-মুখি দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশ গড়ার জন্য সকল নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি; দেশে বহু মানুষ আছে। বিভিন্ন জনের বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গ আছেন। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আছেন। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন মতামত আছে। আমরা সেই মতামতগুলো আলোচনা করব। সকলে সকলের মতামত উপস্থাপন করবে। কিন্তু দিন শেষে যেই মতামতের পক্ষে সবচাইতে বেশি সমর্থন থাকবে, সেই মতামতের ভিত্তিতেই আমরা দেশকে গড়ে তুলব। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন দলের (সহযোগী সংগঠন) মধ্যেও বিভিন্ন মানুষের মধ্যেও মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সেই মতপার্থক্য এমন কোনো পর্যায়ে না পৌঁছায় যেখানে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেখানে দেশের সামনে এগিয়ে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হবে। যেখানে দেশের মানুষের স্বাভাবিক যে চাওয়া, সেই চাওয়াগুলো বাধাগ্রস্ত হবে। এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব যাতে না হয়— এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে।’

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আয়োজনে ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি র‍্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারকে নতুন বাড়ি প্রদান এবং পঞ্চগড়–দিনাজপুর জেলায় নিহত ১২ জনের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে সহযোগিতা দেওয়া হয়।

তারেক রহমান বলেন, ‘এখন সামনে আমাদের আরেকটি বড় যুদ্ধ, কী সেই যুদ্ধ? বিগত ১৬ বছর যে আন্দোলন-সংগ্রাম, বিশেষ করে যে অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, মানুষের সহযোগিতা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো করেছিল, সেই অধিকারগুলোকে এখন পর্যায়ক্রমিকভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

আজ সোমবার নীলফামারীর লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরির এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার নীলফামারীর লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছুরির এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই গোলাম রব্বানীসহ যারা শহীদ হয়েছে, যারা নিজের জীবন দিয়েছে, তাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের রাজনৈতিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা। মানুষের বাক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করা। যে গোলাম রব্বানীকে হত্যা করা হয়েছে, গোলাম রব্বানী শুধু একজন নয়। যে স্বৈরাচার বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে আগস্ট মাসের পাঁচ তারিখে, সেই স্বৈরাচার গত ১৬ বছরে সারা বাংলাদেশে হাজারো গোলাম রব্বানীকে হত্যা করেছে, লক্ষ লক্ষ পরিবারকে নির্যাতন করেছে। পালিয়ে যাওয়ার কদিন আগেও, সেই স্বৈরাচার প্রায় দুই হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রায় ত্রিশ হাজারের কাছাকাছি মানুষকে বিভিন্নভাবে জখম করেছে, নির্যাতন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সমস্যাগুলোর পর্যায়ক্রমিকভাবে আমাদের সমাধান করতে হবে। এখন এই সমাধান করতে হলে নিশ্চয়ই কাউকে তো থাকতে হবে, যারা আপনাদের এই সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারে। গোলার রব্বানীরা চেয়েছিল দেশে একটি সিস্টেম থাকুক, এমন একটি ব্যবস্থা দেশে ধীরে ধীরে গড়ে উঠুক, যাতে করে আপনাদের সমস্যাগুলো, এলাকার মানুষের সমস্যা, সমগ্র দেশে গ্রামে গঞ্জের লক্ষ কোটি মানুষের যে সমস্যা, সেগুলো নিয়ে যাতে কিছু মানুষ কথা বলতে পারে এবং সরকার যাতে বাধ্য থাকে দেশের মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান করার। মানুষের কথা যাতে ঠিকভাবে যেখানে পৌঁছা উচিত সেখানে পৌঁছাতে পারে।’

সংগঠনে আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

আরও বক্তব্য দেন– বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আসাদুল হাবিব দুলু, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহসম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, জেলা বিএনপির সভাপতি আ. খ. ম আলমগীর সরকার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, নিহত বিএনপি নেতা গোলাম রব্বীর মেয়ে রহমত জাহান রিক্তা প্রমুখ।

২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ভোরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ঠনঠনিয়া গ্রামের মামা আলি হোসেন ও মিয়া হোসেনের বাড়ি থেকে গোলাম রব্বানীকে র‍্যাব তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি সকাল ৭টায় সদর উপজেলার পলাশবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের অদূরে নীলফামারী-ডোমার সড়কে গোচামারী ব্রিজের পাশ থেকে তাঁর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হয়। গোলাম রব্বানী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজহারীর মাহফিলে অসংখ্য মানুষের স্বর্ণালংকার-মোবাইল খোয়া, থানায় জিডির হিড়িক

মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়ি ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার আসামির ঢামেকে মৃত্যু

টিউলিপকে লন্ডনের ফ্ল্যাটদাতা কে এই মোতালিফ, কীভাবে তিনি হাসিনা-ঘনিষ্ঠ

লাল কার্ড হজমের পর ভিনির রহস্যময় পোস্ট

বাংলাদেশি আম্পায়ার বললেন ‘না’, আপিল করতে গিয়ে ধপাস কামিন্স

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত