বিএনপি গণতন্ত্রের আস্তিন জড়ালেও তাদের আস্তিনের মধ্যেই রয়েছে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরার দানবীয় রূপ বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বৈরতন্ত্রের প্রতিভূ বিএনপির গোপন অভিপ্রায়ে রয়েছে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার নানামুখী ষড়যন্ত্রের নীলনকশা। নির্বাচনে অংশ না নেওয়া, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, নির্বাচন কমিশন ও গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিকরণে অনীহা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা, দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকা সেই নীলনকশারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামে যে দেশদ্রোহী অপশক্তি স্বৈরাচার আইয়ুব-মোনেমের পক্ষে তথা বাঙালির স্বাধীনতা এবং মুক্তির বিপক্ষে ছিল, তাদের উত্তরাধিকার আজও বাংলাদেশের গণতন্ত্র-উন্নয়ন অগ্রগতি-মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে প্রধান অন্তরায়। সেই অপশক্তির প্রতিভূ বিএনপি-জামাত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং দলটি ভুল রাজনীতির কারণে এখন চরম দুর্দিনের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেন কাদের। তিনি বলেন, নিজেদের রাজনৈতিক ব্যর্থতায় বিএনপি আজ গভীর সংকটে নিপতিত। রাজনৈতিক দৈন্যতায় চরম দুর্দিনের কালো অন্ধকারের হতাশা-অবসাদ জেঁকে বসেছে তাদের মনে। সেই সংকট ঢাকতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতিকে দুর্দিনের আষাঢ়ে গল্প শোনানোর পাঁয়তারা করছেন। বিভিন্ন সময় তাদের শাসনামলের দুঃসহ নির্যাতন-নিষ্পেষণ এখনো দেশবাসীর স্মৃতিতে দগদগে ক্ষতের স্মারক বহন করছে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলার জনগণ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও চরম অনিশ্চয়তার দুর্বিষহ সময়ে ফিরে যেতে চায় না। সেই অন্ধকারময় সময় কাটিয়ে বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আলোকোজ্জ্বল আগামীর পথে এগিয়ে চলেছে। তাঁর নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্রের প্রতিভূ বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা এবং পারিপার্শ্বিক সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা জয় করে উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত অভিষ্ঠে পৌঁছাবেই। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ২৪ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনের লক্ষ্যে দুর্বার গণ-আন্দোলন শহীদ হন কিশোর মতিউর রহমান, রুস্তমসহ অনেকেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি অনন্য গুরুত্ব বহন করে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার আইয়ুব খানের পতন ঘটে। ছাত্র-জনতার এই গণ-অভ্যুত্থান বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে আরও বেগবান করে তোলে। 

কাদের বলেন, একইভাবে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বাতিঘর শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে তৎকালীন আরেক স্বৈরশাসক চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানে আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গণহত্যা চালায়। বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রাণ রক্ষায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে। সেদিন পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৪ জন বা তার অধিককে এবং আহত হয় কমপক্ষে দুই শতাধিক। তাই দিনটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে নৃশংসতম কালো দিন।