রেজা করিম ও ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা
গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠ গরম করে রেখেছেন গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্ররা। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সমমনা সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে নিজেদের ‘রাজনৈতিক শক্তি’ হিসেবে জানান দিতে চাইছে। তারা সরকারের নীতি ও কার্যকলাপের ওপর কিছু প্রভাব বিস্তারে সফল হলেও রাষ্ট্রপতির অপসারণ, সংবিধান বাতিলের দাবি ও ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের উদ্যোগসহ কয়েকটি ইস্যুতে তাদের সঙ্গে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
আন্দোলনকারী ছাত্রদের তরফ থেকে বিএনপিসহ দলগুলোর অবস্থানকে ‘রাজনৈতিক চাপ’ বলা হচ্ছে। অন্যদিকে এই অভিযোগকে নাকচ করে দিয়ে সংকট সমাধানে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র ও নাগরিক সমাজের তরুণ নেতাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষার্থীদের দাবিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপি ছাত্রদের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। দলটি ছাত্রদের দাবির বিপরীতে দাঁড়িয়ে চাপ সৃষ্টি করছে।’
বিএনপির বিষয়ে ছাত্রদের এ মূল্যায়নের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘তাঁরা (ছাত্র) তো সংবিধান বাতিল চান। লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত যে সংবিধান, তা তো কেটে ফেলা যায় না, সংশোধন হতে পারে। এটাকে বাদ দেওয়া তো মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আলোচনায় বসার কথা বলেছে। আগে বসা হোক, তারপর কথা বলতে পারব।’
গত ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে তাঁর অপসারণ, ১৯৭২ সালে গৃহীত দেশের প্রথম সংবিধান বাতিল, বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন এবং আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন ছাত্ররা। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নৃশংসতার জন্য নিন্দিত ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলেও বাকি দাবিগুলো পূরণ হয়নি। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে বলে বিভিন্ন মহলের অভিমত ছিল। একই যুক্তিতে ছাত্রদের এই দাবিতে আপত্তি জানায় কয়েকবার ক্ষমতায় আসা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। এমন প্রেক্ষাপটে জুলাই অভ্যুত্থানের ‘ঘোষণাপত্র’ আসবে বলে ২৮ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়ক। পরদিনই এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মুজিববাদী সংবিধানের’ কবর রচনা করা হবে।
ঘোষণাপত্রের পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে সংবিধান বিষয়ে ছাত্রদের বক্তব্যে বিএনপি অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। সংবিধান বাতিলের দাবি প্রসঙ্গে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে লেখা যে সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে।... এভাবে কথা বলাটা ঠিক হলো?’
রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সর্বসম্মত’ ঘোষণাপত্র তৈরির আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ঘোষণাপত্র প্রকাশের বদলে ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ নামে ঐক্য সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই সমাবেশে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি, দ্রুততম সময়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার অথবা বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়। এ সমাবেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। ১ জানুয়ারি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘এই নামে (মার্চ ফর ইউনিটি) কেন সমাবেশ করতে হলো? ইউনিটির নামে এ ধরনের সমাবেশ, বক্তব্য, ষড়যন্ত্রকারী, লুটপাটকারী ও ফ্যাসিবাদীদের জন্য সহায়ক নয় কি? মার্চ ফর ইউনিটির সমাবেশে আমরা লক্ষ করেছি, তাদের মুখ থেকে কী ধরনের বাক্য এসেছে, কী ধরনের বক্তব্য এসেছে, তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ (শরীরী ভাষা) কী ছিল। আমাদের প্রশ্ন, কী কারণে ইউনিটির নামে মিটিং করতে হয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মাঠে থেকে দাবি আদায় করতে পারতাম। কিন্তু দেশের স্থিতিশীলতা দরকার। আর রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যও প্রয়োজন। আমরা প্রোক্লেমেশনের (ঘোষণাপত্রের) বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হবে। তাই আমরা মার্চ ফর ইউনিটি পালন করেছি।’
শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে বিভিন্নভাবে যুক্তদের নিয়ে ৫ আগস্টের পর গঠিত হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি। এর সদস্যসচিব আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির অপসারণ, সংবিধান সংস্কার অথবা বাতিল এবং প্রোক্লেমেশনের দাবি থেকে আমরা সরে আসিনি। প্রোক্লেমেশনের ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য যেন তৈরি হয়।’
আখতার হোসেন আরও বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল চাওয়া মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বক্তব্য। বাহাত্তরের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের চাওয়ার সঙ্গে অসংগতি রয়েছে। সে জন্য আমরা নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছি।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, ‘অভ্যুত্থানের ফোর্স হিসেবে আমরা দাবি করেছি, আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের ইনসিকিউরিটি (নিরাপত্তাহীনতার বোধ) তৈরি হয়েছে। তার আঁচ সরকারেও লেগেছে। তবে এ সরকার জনগণের ম্যান্ডেটের সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে এর সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
‘বিএনপি ছাত্রদের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না’—এমন অভিযোগের জবাবে ছাত্রদের সুস্থির হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। আলোচনার সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা বয়স্কদের মস্তিষ্ক এবং তারুণ্যের শক্তিকে এক করতে চাই। সে ক্ষেত্রে তাদের (ছাত্র) অবজ্ঞা করার বা গুরুত্ব না দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মিলিত শক্তির মাধ্যমেই সংস্কার করতে চাই।... এখন যদি আরও কিছু প্রয়োজন হয়, বিএনপির সঙ্গে তারা বসতে পারে তো আলোচনায়। শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই বসতে পারে। বিশেষ বিশেষ দলের সঙ্গে বিশেষ বিশেষ পর্যায়ে যোগাযোগ, সেটা তো সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখে না। যোগাযোগটা তো সবার সঙ্গেই হওয়া উচিত।’
ছাত্রদের সাম্প্রতিক এসব তৎপরতার বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে বিএনপির এককালের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ এ বিষয়ে বলেন, ‘জনগণ কোনটা গ্রহণ করবে, এটা তাদের বিষয়। ছাত্ররা একটা পরিবর্তন এনেছে, তাদের বিভিন্ন দাবি থাকতে পারে, আমরা কাউকে চাপ দেই না। কোনো বক্তব্য স্পষ্ট না হওয়ার আগে সে বিষয়ে কোনো কথাও বলি না।’
এ প্রসঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ছাত্ররা তাদের দাবি উত্থাপন করছে। বিভিন্ন দল-সংগঠন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। তবে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক উত্তরণ প্রক্রিয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগোনোই ঠিক হবে।’
গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠ গরম করে রেখেছেন গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্ররা। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সমমনা সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে নিজেদের ‘রাজনৈতিক শক্তি’ হিসেবে জানান দিতে চাইছে। তারা সরকারের নীতি ও কার্যকলাপের ওপর কিছু প্রভাব বিস্তারে সফল হলেও রাষ্ট্রপতির অপসারণ, সংবিধান বাতিলের দাবি ও ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের উদ্যোগসহ কয়েকটি ইস্যুতে তাদের সঙ্গে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
আন্দোলনকারী ছাত্রদের তরফ থেকে বিএনপিসহ দলগুলোর অবস্থানকে ‘রাজনৈতিক চাপ’ বলা হচ্ছে। অন্যদিকে এই অভিযোগকে নাকচ করে দিয়ে সংকট সমাধানে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র ও নাগরিক সমাজের তরুণ নেতাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষার্থীদের দাবিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপি ছাত্রদের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। দলটি ছাত্রদের দাবির বিপরীতে দাঁড়িয়ে চাপ সৃষ্টি করছে।’
বিএনপির বিষয়ে ছাত্রদের এ মূল্যায়নের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘তাঁরা (ছাত্র) তো সংবিধান বাতিল চান। লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত যে সংবিধান, তা তো কেটে ফেলা যায় না, সংশোধন হতে পারে। এটাকে বাদ দেওয়া তো মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আলোচনায় বসার কথা বলেছে। আগে বসা হোক, তারপর কথা বলতে পারব।’
গত ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে তাঁর অপসারণ, ১৯৭২ সালে গৃহীত দেশের প্রথম সংবিধান বাতিল, বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন এবং আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন ছাত্ররা। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নৃশংসতার জন্য নিন্দিত ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলেও বাকি দাবিগুলো পূরণ হয়নি। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে বলে বিভিন্ন মহলের অভিমত ছিল। একই যুক্তিতে ছাত্রদের এই দাবিতে আপত্তি জানায় কয়েকবার ক্ষমতায় আসা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। এমন প্রেক্ষাপটে জুলাই অভ্যুত্থানের ‘ঘোষণাপত্র’ আসবে বলে ২৮ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়ক। পরদিনই এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মুজিববাদী সংবিধানের’ কবর রচনা করা হবে।
ঘোষণাপত্রের পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে সংবিধান বিষয়ে ছাত্রদের বক্তব্যে বিএনপি অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। সংবিধান বাতিলের দাবি প্রসঙ্গে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে লেখা যে সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে।... এভাবে কথা বলাটা ঠিক হলো?’
রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সর্বসম্মত’ ঘোষণাপত্র তৈরির আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ঘোষণাপত্র প্রকাশের বদলে ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ নামে ঐক্য সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই সমাবেশে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি, দ্রুততম সময়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার অথবা বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়। এ সমাবেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। ১ জানুয়ারি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘এই নামে (মার্চ ফর ইউনিটি) কেন সমাবেশ করতে হলো? ইউনিটির নামে এ ধরনের সমাবেশ, বক্তব্য, ষড়যন্ত্রকারী, লুটপাটকারী ও ফ্যাসিবাদীদের জন্য সহায়ক নয় কি? মার্চ ফর ইউনিটির সমাবেশে আমরা লক্ষ করেছি, তাদের মুখ থেকে কী ধরনের বাক্য এসেছে, কী ধরনের বক্তব্য এসেছে, তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ (শরীরী ভাষা) কী ছিল। আমাদের প্রশ্ন, কী কারণে ইউনিটির নামে মিটিং করতে হয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মাঠে থেকে দাবি আদায় করতে পারতাম। কিন্তু দেশের স্থিতিশীলতা দরকার। আর রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যও প্রয়োজন। আমরা প্রোক্লেমেশনের (ঘোষণাপত্রের) বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হবে। তাই আমরা মার্চ ফর ইউনিটি পালন করেছি।’
শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে বিভিন্নভাবে যুক্তদের নিয়ে ৫ আগস্টের পর গঠিত হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি। এর সদস্যসচিব আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির অপসারণ, সংবিধান সংস্কার অথবা বাতিল এবং প্রোক্লেমেশনের দাবি থেকে আমরা সরে আসিনি। প্রোক্লেমেশনের ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য যেন তৈরি হয়।’
আখতার হোসেন আরও বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল চাওয়া মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বক্তব্য। বাহাত্তরের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের চাওয়ার সঙ্গে অসংগতি রয়েছে। সে জন্য আমরা নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছি।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, ‘অভ্যুত্থানের ফোর্স হিসেবে আমরা দাবি করেছি, আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের ইনসিকিউরিটি (নিরাপত্তাহীনতার বোধ) তৈরি হয়েছে। তার আঁচ সরকারেও লেগেছে। তবে এ সরকার জনগণের ম্যান্ডেটের সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে এর সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’
‘বিএনপি ছাত্রদের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না’—এমন অভিযোগের জবাবে ছাত্রদের সুস্থির হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। আলোচনার সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা বয়স্কদের মস্তিষ্ক এবং তারুণ্যের শক্তিকে এক করতে চাই। সে ক্ষেত্রে তাদের (ছাত্র) অবজ্ঞা করার বা গুরুত্ব না দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মিলিত শক্তির মাধ্যমেই সংস্কার করতে চাই।... এখন যদি আরও কিছু প্রয়োজন হয়, বিএনপির সঙ্গে তারা বসতে পারে তো আলোচনায়। শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই বসতে পারে। বিশেষ বিশেষ দলের সঙ্গে বিশেষ বিশেষ পর্যায়ে যোগাযোগ, সেটা তো সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখে না। যোগাযোগটা তো সবার সঙ্গেই হওয়া উচিত।’
ছাত্রদের সাম্প্রতিক এসব তৎপরতার বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে বিএনপির এককালের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ এ বিষয়ে বলেন, ‘জনগণ কোনটা গ্রহণ করবে, এটা তাদের বিষয়। ছাত্ররা একটা পরিবর্তন এনেছে, তাদের বিভিন্ন দাবি থাকতে পারে, আমরা কাউকে চাপ দেই না। কোনো বক্তব্য স্পষ্ট না হওয়ার আগে সে বিষয়ে কোনো কথাও বলি না।’
এ প্রসঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ছাত্ররা তাদের দাবি উত্থাপন করছে। বিভিন্ন দল-সংগঠন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। তবে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক উত্তরণ প্রক্রিয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগোনোই ঠিক হবে।’
গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় জোড় ইজতেমা পালন করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারী আরেক শীর্ষ নেতা শফিউল্লাহ্কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় টঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য
১ ঘণ্টা আগেছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে তর্কবিতর্ক ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসানের ওপর হামলার দায় অস্বীকার করেছে ছাত্রদল। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই দুটি ঘটনাসহ আর অনেক ঘটনায় কিছু গণমাধ্যম কোনো ধরনের যাচাই–বাছাই ছাড়াই সংবাদ পরিবেশন করেছে। কুচক্রী একটি মহল ছাত্রদলের
৯ ঘণ্টা আগেবিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আগামীকাল রোববার দেখা করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। রাত ৮টায় গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় যাবেন তাঁরা। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান আজ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
১১ ঘণ্টা আগেবিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা চাঁদাবাজির চার মামলা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামীকাল...
১৭ ঘণ্টা আগে