সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘরে ফিরবেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের রাহু থেকে জনগণকে মুক্ত করতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব।

আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচন ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির একাংশ এই সভার আয়োজন করে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর প্রধান বিচারপতি বিবৃতি না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ঢুকে হামলা করেছে, অথচ প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটির নেতারা একটি বিবৃতি পর্যন্ত দিলেন না। কারণ আজকে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে সরকার।

মহাসচিব বলেন, কী নৃশংসভাবে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদের ওপরও হামলা করেছে। মেয়েদের একজন আইসিইউতে ভর্তি আছেন। ছাত্রলীগ লাঠি নিয়ে রাজপথে প্রতিপক্ষকে যেভাবে আঘাত করেছে,, তাতে মনে পড়ে গেছে পল্টনে লগি-লাঠি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার মতো পৈশাচিক ঘটনার। এটা হলো আওয়ামী লীগের চরিত্র। তারা একটি সন্ত্রাসী দল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানান মির্জা ফখরুল। 

জন্মের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ এভাবে সন্ত্রাস করে আসছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দলের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগে টিকতে পারেননি। দলটির কাউন্সিলে তাঁকে হেনস্তা করা হলে তিনি বেরিয়ে গিয়ে নতুন দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করেন। গত ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ আমাদের নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করেছে। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর নামে মামলা রয়েছে। আমি নিজে বহুবার কারাগারে গেছি। এই অবস্থার অবসান হতে হবে।’ 

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘যার যে অবস্থানে আছেন, সে অবস্থানে থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কারণ এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়।’ 

২০ দলীয় জোটের শরিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তাফা জামাল হায়দার, ডাকসুর সাবেক ভিপি গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, এনডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সিনিয়র সহসাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টি এস আয়ুব, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট অহিদুজ্জামান দিপু, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী চৌধুরী বেলাল আহমেদ প্রমুখ।