তানিম আহমেদ, ঢাকা
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ভোট কারচুপিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ আইন করে তা বন্ধ করেছে। বাংলাদেশ সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের এমনটাই জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা। দলটি আরও দাবি করেছে, নির্বাচনী ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনে আইন সংশোধন করেছে তাদের সরকার। একই সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতাও প্রধানমন্ত্রী ছেড়ে দিয়েছেন।
শনিবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনে ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের। বৈঠকে তাঁরা এসব দাবি করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারির শুরুতে বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে ইইউর ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল ১৬ দিনের সফরে গত ৮ জুলাই বাংলাদেশে আসে।
প্রতিনিধিদলটি এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল, পুলিশ কর্মকর্তাসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবে তারা।
শনিবার সফরকারী দলটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও এবি পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে দুপুর ১২টা থেকে বৈঠকের সময় নির্ধারিত ছিল। সাড়ে ১১টার দিকে সভাস্থলে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তাঁর সঙ্গে আসেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।
এর আগে বৈঠকস্থলে আসেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। পরে আসেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত ও তারানা হালিম।
দুপুর ১২টার কিছু আগে হোটেল শেরাটনে আসে ইইউ প্রতিনিধিদল। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক শুরু হয়, যা চলে প্রায় ১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত। পরে দুই পক্ষ মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়। সেখানেও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। দুপুর ২টা ১০ মিনিটের পরে বৈঠকস্থল ত্যাগ করে ইইউ প্রতিনিধিদল। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ইইউ প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের কাছে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা, নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে বলে দাবি করেছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। তাঁদের দাবি, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগ নেতারাই কথা বলেন। একপর্যায়ে দলটির নেতারা ইইউ প্রতিনিধিদলকে প্রশ্ন করার জন্য অনুরোধ করেন। দলটির নেতারা প্রতিনিধিদলকে বলেন, আপনারা কী জানতে চান আমাদের বলেন। জবাবে তাঁরা বলেন, আপনারা বলেন।
সূত্রে জানা গেছে, রুটিন প্রশ্নের বাইরে আওয়ামী লীগের কাছে প্রতিনিধিদল তেমন কিছু জানতে চায়নি। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কেন সেটি জানতে চেয়েছেন।
জবাবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার দায় বিএনপিকেও নিতে হবে। তারা অংশ না নিয়ে ভোট ঠেকানোর চিন্তা করায় এটি হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নামে তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। এক আসনে সর্বনিম্ন তিন জনকে মনোনয়ন দিয়েছে। ভোটের মাঠ থেকে তারা সরে যাওয়ায় বিতর্ক উঠেছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইইউ প্রতিনিধিদলের সামনে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংস্কারে তাদের সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। এ সময় তারা জানায়, ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ৬৬টি আইন ও অধ্যাদেশ রয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন হয়েছে। পাঁচটি অধ্যাদেশ জারি করেছে এক-এগারোর সরকার। বাকি পাঁচটি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ইইউ প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থাকে টেকসই ও আমূল সংস্কারের কাজ আমরাই করেছি।’
দলটির নেতারা জানান, সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের একক ক্ষমতা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু গত বছর এ আইন সংশোধন করে সিইসি ও ইসি নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। দলটির এক নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি স্বাধীনভাবে সিইসি ও ইসি নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজের ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন।’ ওই নেতা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইইউ আমাদের উৎসাহ দিয়েছে। সাহসী সিদ্ধান্ত বলেও উল্লেখ করেছে।’
সর্বশেষ সংসদ অধিবেশনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনী বিল পাসের কথা ইইউকে জানায় আওয়ামী লীগ। সেখানে তারা ভোটের সময় পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর কেউ হামলা করলে শাস্তির বিধানের কথা তুলে ধরে। সে সময় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ভোটে কারচুপি করেছিলেন। সেই সময় ব্যালট পেপারে শুধু সিল থাকলেও চলত। কিন্তু সেটার পরিবর্তন হয়েছে নতুন আইনের মাধ্যমে। এখানে ব্যালট পেপারে শুধু সিল থাকলেই হবে না, স্বাক্ষর থাকার বাধ্যবাধকতা আছে। এতে ভোটের কারচুপি বন্ধ হবে।’
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচন, পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা ইইউ প্রতিনিধিদলের কাছে তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এ সময় দলটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত কথা বলেন বলে জানান এক নেতা। আরাফাত জানান, সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ধরনের অগ্রাধিকার নিচ্ছেন না। আইনের কারণে তাঁর লেমিনেটেড পোস্টার নামানোর কথাও জানান। অন্যান্য অনেক প্রার্থীর ওই ধরনের পোস্টার এখনো আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার দাবি, ইইউ প্রতিনিধিদল তাঁদের বলেছে, পৃথিবীর কোথাও নিখুঁত নির্বাচনব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে তো সুইজারল্যান্ডের তুলনা হবে না। এমনকি পশ্চিমা বিশ্বেও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল ভোটের সময় সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়টিও তুলে ধরে। এ সময় এক নেতা বলেন, ‘লাইভ স্ট্রিমিং হবে। সেখানে কোনো কারচুপি হয়েছে কি না, তা সবাই দেখতে পারবে।’
একই সঙ্গে তাঁরা বলেন, ভোটের সময় সহিংসতা বিএনপিই করেছে। ২০১৪ সালেও ভোট বন্ধে অগ্নিসন্ত্রাস বিএনপিই করেছে। ২০০১ সালে বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বিএনপি-জামায়াতই ঘটিয়েছে। নির্বাচনের পূর্ব ও পরবর্তী সহিংসতার ইতিহাস বিএনপি-জামায়াতের আছে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে ইইউ প্রতিনিধিদল তেমন কিছু বলেনি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, কোনো দল নির্বাচনে এলে তাকে আমরা স্বাগত জানাব। এতে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। কিন্তু কেউ যদি নির্বাচনে আসতে না চায়, তাহলে সংবিধান বা আইন মোতাবেক সেই দলকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে আনার সুযোগ নেই। ইইউ প্রতিনিধিদল এই বক্তব্য গ্রহণ করেছে বলেও দাবি ওই নেতার।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, ইইউর কাছে বিএনপি যেসব তথ্য দিচ্ছে, সেগুলোকে একপেশে বলে অভিহিত করেছে আওয়ামী লীগ। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য ইইউ প্রতিনিধিদলকে আহ্বান জানিয়েছে তারা।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ভোট কারচুপিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ আইন করে তা বন্ধ করেছে। বাংলাদেশ সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের এমনটাই জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা। দলটি আরও দাবি করেছে, নির্বাচনী ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনে আইন সংশোধন করেছে তাদের সরকার। একই সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতাও প্রধানমন্ত্রী ছেড়ে দিয়েছেন।
শনিবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনে ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের। বৈঠকে তাঁরা এসব দাবি করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারির শুরুতে বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে ইইউর ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল ১৬ দিনের সফরে গত ৮ জুলাই বাংলাদেশে আসে।
প্রতিনিধিদলটি এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল, পুলিশ কর্মকর্তাসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবে তারা।
শনিবার সফরকারী দলটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও এবি পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে দুপুর ১২টা থেকে বৈঠকের সময় নির্ধারিত ছিল। সাড়ে ১১টার দিকে সভাস্থলে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তাঁর সঙ্গে আসেন দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।
এর আগে বৈঠকস্থলে আসেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. জমির, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। পরে আসেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত ও তারানা হালিম।
দুপুর ১২টার কিছু আগে হোটেল শেরাটনে আসে ইইউ প্রতিনিধিদল। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক শুরু হয়, যা চলে প্রায় ১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত। পরে দুই পক্ষ মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়। সেখানেও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। দুপুর ২টা ১০ মিনিটের পরে বৈঠকস্থল ত্যাগ করে ইইউ প্রতিনিধিদল। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ইইউ প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের কাছে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা, নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে বলে দাবি করেছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা। তাঁদের দাবি, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগ নেতারাই কথা বলেন। একপর্যায়ে দলটির নেতারা ইইউ প্রতিনিধিদলকে প্রশ্ন করার জন্য অনুরোধ করেন। দলটির নেতারা প্রতিনিধিদলকে বলেন, আপনারা কী জানতে চান আমাদের বলেন। জবাবে তাঁরা বলেন, আপনারা বলেন।
সূত্রে জানা গেছে, রুটিন প্রশ্নের বাইরে আওয়ামী লীগের কাছে প্রতিনিধিদল তেমন কিছু জানতে চায়নি। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কেন সেটি জানতে চেয়েছেন।
জবাবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার দায় বিএনপিকেও নিতে হবে। তারা অংশ না নিয়ে ভোট ঠেকানোর চিন্তা করায় এটি হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নামে তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। এক আসনে সর্বনিম্ন তিন জনকে মনোনয়ন দিয়েছে। ভোটের মাঠ থেকে তারা সরে যাওয়ায় বিতর্ক উঠেছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইইউ প্রতিনিধিদলের সামনে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংস্কারে তাদের সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। এ সময় তারা জানায়, ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ৬৬টি আইন ও অধ্যাদেশ রয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন হয়েছে। পাঁচটি অধ্যাদেশ জারি করেছে এক-এগারোর সরকার। বাকি পাঁচটি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ইইউ প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থাকে টেকসই ও আমূল সংস্কারের কাজ আমরাই করেছি।’
দলটির নেতারা জানান, সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের একক ক্ষমতা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু গত বছর এ আইন সংশোধন করে সিইসি ও ইসি নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। দলটির এক নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি স্বাধীনভাবে সিইসি ও ইসি নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজের ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন।’ ওই নেতা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইইউ আমাদের উৎসাহ দিয়েছে। সাহসী সিদ্ধান্ত বলেও উল্লেখ করেছে।’
সর্বশেষ সংসদ অধিবেশনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনী বিল পাসের কথা ইইউকে জানায় আওয়ামী লীগ। সেখানে তারা ভোটের সময় পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর কেউ হামলা করলে শাস্তির বিধানের কথা তুলে ধরে। সে সময় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ভোটে কারচুপি করেছিলেন। সেই সময় ব্যালট পেপারে শুধু সিল থাকলেও চলত। কিন্তু সেটার পরিবর্তন হয়েছে নতুন আইনের মাধ্যমে। এখানে ব্যালট পেপারে শুধু সিল থাকলেই হবে না, স্বাক্ষর থাকার বাধ্যবাধকতা আছে। এতে ভোটের কারচুপি বন্ধ হবে।’
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচন, পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা ইইউ প্রতিনিধিদলের কাছে তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এ সময় দলটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত কথা বলেন বলে জানান এক নেতা। আরাফাত জানান, সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ধরনের অগ্রাধিকার নিচ্ছেন না। আইনের কারণে তাঁর লেমিনেটেড পোস্টার নামানোর কথাও জানান। অন্যান্য অনেক প্রার্থীর ওই ধরনের পোস্টার এখনো আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার দাবি, ইইউ প্রতিনিধিদল তাঁদের বলেছে, পৃথিবীর কোথাও নিখুঁত নির্বাচনব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে তো সুইজারল্যান্ডের তুলনা হবে না। এমনকি পশ্চিমা বিশ্বেও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল ভোটের সময় সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়টিও তুলে ধরে। এ সময় এক নেতা বলেন, ‘লাইভ স্ট্রিমিং হবে। সেখানে কোনো কারচুপি হয়েছে কি না, তা সবাই দেখতে পারবে।’
একই সঙ্গে তাঁরা বলেন, ভোটের সময় সহিংসতা বিএনপিই করেছে। ২০১৪ সালেও ভোট বন্ধে অগ্নিসন্ত্রাস বিএনপিই করেছে। ২০০১ সালে বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বিএনপি-জামায়াতই ঘটিয়েছে। নির্বাচনের পূর্ব ও পরবর্তী সহিংসতার ইতিহাস বিএনপি-জামায়াতের আছে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে ইইউ প্রতিনিধিদল তেমন কিছু বলেনি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, কোনো দল নির্বাচনে এলে তাকে আমরা স্বাগত জানাব। এতে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। কিন্তু কেউ যদি নির্বাচনে আসতে না চায়, তাহলে সংবিধান বা আইন মোতাবেক সেই দলকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে আনার সুযোগ নেই। ইইউ প্রতিনিধিদল এই বক্তব্য গ্রহণ করেছে বলেও দাবি ওই নেতার।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, ইইউর কাছে বিএনপি যেসব তথ্য দিচ্ছে, সেগুলোকে একপেশে বলে অভিহিত করেছে আওয়ামী লীগ। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য ইইউ প্রতিনিধিদলকে আহ্বান জানিয়েছে তারা।
সংবিধান সংস্কার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে বিএনপি। এ জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল আলী রিয়াজের নেতৃত্বে গঠিত সংবিধান সংস্কার বিষয়ক কমিটির সঙ্গে দেখা করবে।
১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল ডেলিগেশন অব ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মি. সেবাস্টিয়ান রিগার ব্রাউনের আমন্ত্রণে রাজধানী ঢাকার গুলশানে তাঁর বাসায় ইইউ অন্তর্ভুক্ত আটটি দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন
১১ ঘণ্টা আগেবিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে পবিত্র ওমরাহ পালনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন
১৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমরা মনে করি এই অন্তর্বর্তী সরকারের সকল সিদ্ধান্ত, সকল নীতি, সকল ভূমিকার মধ্যে জনআকাঙক্ষার প্রতিফলন থাকা উচিত। কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি দুর্ভাগ্যজনক হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো নীতি, কোনো কোনো সিদ্ধ
১৪ ঘণ্টা আগে