চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের সমাবেশে জনতার ঢল দেখে আওয়ামী লীগের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানীর গুলশানে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের সমাবেশে জনতার ঢল যেভাবে নেমে এসেছে, তা দেখে আওয়ামী লীগের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ময়মনসিংহে অঘোষিত কারফিউ জারি করা হয়েছে, গাড়িঘোড়া কিছু চলতে দেয়নি। ককটেল, গুলিবর্ষণ করেও কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারেনি। উল্টো পুলিশকে ব্যবহার করে আমাদের ৪০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এভাবে দমন করে, গুলি করে, হত্যা করে, গুম করে কোনো দিনই ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না, যতই তারা শক্তিশালী হোক।’

সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনির্বাচিত, অবৈধ, ভোটাধিকার হরণকারী সরকারের অপসারণের দাবিতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করছি। ইতিমধ্যে আমরা প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছি। দ্বিতীয় পর্যায়েও অনেকগুলো দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়েছে। আজকে আমরা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনার মাধ্যমে কয়েকটি বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের যেসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং ক্ষমতাসীন দলের লুটপাটের বিরুদ্ধে কমিশন গঠন করা নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করার জন্য একমত হয়েছি।’

আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীদের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছুদিন আগেও তাঁরা দাবি করেছেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আজকে কী এমন ঘটেছে যে তাঁরা এখন ভয় পাচ্ছেন? কারণটা হলো, এত বেশি দুর্নীতি হচ্ছে প্রতিটা ক্ষেত্রে, প্রতিটা জায়গায় যে তাদের এখন এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

এই সরকার রাষ্ট্র চালাতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘৪৩ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে সচিব-মুখ্য সচিবের বাড়ি তৈরি করার জন্য। আপনি কী আশা করবেন? এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রে, একটা-দুইটা নয়, সমস্ত খাতে। আজকে যে দুর্নীতি চলছে, সে জন্য তারা এই অবস্থায় পড়েছে।’