জনপ্রতিনিধিরা এখন আমলাতন্ত্রের অধীন: মেনন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৩১

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু আমলাতন্ত্রকে জনপ্রতিনিধিদের অধীনস্থ করেছিলেন। এখন জনপ্রতিনিধিরা আমলাতন্ত্রের অধীন। তাঁরা রাজনীতিকদের ‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত’ বলতে দ্বিধা করে না। কেবল তাই নয়, তাঁরা বলেন, তারাই দেশ পরিচালনা করবেন। 

আজ বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে মেনন এসব কথা বলেন।

রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ নিয়ে উষ্মা প্রকাশে করে মেনন বলেন, ‘আমরা আজকে লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশের শাসনক্ষমতাকে কেন্দ্র করে এখন সামরিক-বেসামরিক আমলা-ক্ষুদ্র ধনী গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের রাজনীতি করতে বাধা নেই। কিন্তু রাজনীতি যখন ব্যবসা হয়ে দাঁড়ায় তখন আপত্তি থাকবেই। এই সংসদে আমরা তার প্রমাণ পাচ্ছি। রাজনীতি আর রাজনীতিকদের হাতে নেই।’

স্বাস্থ্য খাতের সমালোচনা করে মেনন বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাত অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোভিড মোকাবিলা করা গেছে। কিন্তু কোভিডের আরেকটি ঢেউ কতখানি সামাল দেওয়া যাবে তা জানা নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে হবে। কোভিডের কারণে শিক্ষা খাতে বেহাল অবস্থা। একমুখী শিক্ষার নামে বিএনপি আমলে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে হয়।’

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি গৌরববোধ আছে। সেই গৌরববোধ আমাদের যুবকদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল। সেটা শাহবাগ আন্দোলনে দেখেছিলাম। যার বিরুদ্ধে ধর্মবাদীরা আক্রমণ করে। আমরা এবার কী দেখলাম? সেই গৌরববোধ আর তরুণদের মধ্যে নেই। আমরা সঞ্চারিত করতে পারিনি। এ কারণের ক্রিকেট মাঠে পাকিস্তানের ধ্বনি ওঠে। পাকিস্তানি পতাকা ওড়ান হয়। এটা পরিকল্পিত কি-না সেটা আমি জানি না। তবে এটা আমাদের ব্যর্থতা সেটা স্বীকার করতে হবে।’

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শেখ হাসিনার এই তিন টার্মের দেশে অভূতপূর্ণ উন্নয়ন হচ্ছে। সকল সূচকে ঘটছে অগ্রগতি। সব সূচকে পাকিস্তানকে আমরা ছাড়িয়ে গেছি। জিডিপি ও মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। কিন্তু দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর হাতে। কোভিডকালেও কোটিপতিদের সংখ্যা বেড়েছে। ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এ অঞ্চলে প্রথম। গড় জাতীয় আয় বাড়লেও জনগণের আয় কমেছে। কোটিপতিদের সংখ্যা বাড়লেও ৫ লাখ কৃষকের ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের দারিদ্র্যসীমার হার ২০ শতাংশের কমিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু করোনার দুই বছরে নতুন দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখের ওপরে। অর্থমন্ত্রী এই বেসরকারি হিসাব স্বীকার করেন না। কিন্তু সরকারি কোনো হিসাবও নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত