রিমন রহমান, রাজশাহী
খুব খাতির করে এক বৃদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে খাবারের হোটেলে ঢুকলেন এক যুবক। বৃদ্ধ মাছ-মাংস খাবেন না, কিন্তু ওই যুবকের পীড়াপীড়ি। অন্তত মাছ তাঁকে খেতেই হবে। শেষে ডিম খেতে রাজি হলেন ওই বৃদ্ধ। সঙ্গে লালশাক আর ডাল।
বৃদ্ধ তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছেন। পাশে বসে ওই যুবক। কিছুক্ষণ পরে বৃদ্ধের কাছাকাছি কান নিয়ে বললেন, ‘আমরা একটু সমস্যার মধ্যে আছি। আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন।’ বৃদ্ধ জানতে চাইলেন, সমস্যা কী। যুবক বললেন, ‘কিছুদিন আগে র্যাবে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ কাজী আরেফসহ তিনজনকে খুনের আসামি। এখন জেলে।’
বৃদ্ধ এ কথার গুরুত্ব বুঝতে পারলেন বলে মনে হলো না। তিনি আপনমনে খেতেই ব্যস্ত। রোববার দুপুর ২টায় এমন দৃশ্যই দেখা গেল রাজশাহী নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার ‘হোটেল স্ক্যানার’ নামের একটি খাবারের হোটেলে। এই প্রতিবেদক যে টেবিলে বসে খাচ্ছিলেন, সেটিতেই এসে বসেছিলেন ওই বৃদ্ধ এবং যুবক।
ওই যুবক বৃদ্ধকে আরও বললেন, তাঁর ‘আব্বু’ এখন ঢাকায় কারাগারে। খুনের ঘটনার পর ২২ বছর রাজশাহীতে ছিলেন। জমির ব্যবসা করে পাঁচ পাঁচটি বাড়ি করেছেন। কেউ কিছু বুঝতে পারেনি। হঠাৎ কিছুদিন আগে ধরে নিয়ে গেছে র্যাব। এখন জামিনের চেষ্টা চলছে। মাসখানেকের মধ্যে তাঁর জামিন হতে পারে বলেও তিনি ওই বৃদ্ধকে জানালেন।
ওই যুবক যে ব্যক্তির কথা বলছিলেন, তিনি দুর্ধর্ষ খুনি রওশন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা কাজী আরেফ আহমেদসহ একসঙ্গে পাঁচজনকে ব্রাশফায়ারে হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি। এ ছাড়া আরও কয়েকটি হত্যায় তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল। ডাকাতির মামলাও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। ১৯৯৯ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি সভা চলাকালে প্রকাশ্যে কাজী আরেফসহ পাঁচ নেতাকে হত্যার পর রাজশাহী চলে আসেন তিনি। ‘আলী’ নামে পরিচিত হয়ে এখানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কাটিয়ে দেন ২২ বছর। জাতীয় পরিচয়পত্রও করেছিলেন ‘উদয় মণ্ডল’ নামে। গত ১৮ আগস্ট র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
খাবারের হোটেলে এই প্রতিবেদক ওই যুবকের নাম জানতে চান। তিনি একটা ভিজিটিং কার্ড দেন। তাতে নাম লেখা ওমর আলী। প্রতিবেদক বলেন, রওশনের ছেলের নাম আমির হামজা। তখন ওই যুবক জানান, তিনি পালিত ছেলে। তাঁর ডাকনাম তরুণ।
রওশনকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব বলেছিল, রওশন তাঁর মোবাইল নম্বর সব সময় বন্ধ রাখতেন। মিসড কল অ্যালার্ট চালু রাখতেন। মাঝে মাঝে ফোন অন করে শুধু তরুণ নামে এক যুবকের সঙ্গে কথা বলতেন। তরুণ তাঁর জমির ব্যবসার সবই দেখাশোনা করেন। এই তরুণেরই দেখা মিলল খাবারের হোটেলে। তিনি জানালেন, ব্যবসা ঠিকঠাকই চলছে। তিনিই সবকিছু দেখাশোনা করছেন।
ওমর আলী ওরফে তরুণের ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে, ‘মোহাম্মদ আলী এন্টার প্রাইজ’। অর্থাৎ আলীর নামেই এই প্রতিষ্ঠানটি। কার্ডে আরও লেখা আছে, ‘প্লট আকারে জমি বিক্রয় করা হয়’। কার্ডের অপর পৃষ্ঠায় ফায়ার সার্ভিস, থানা, অ্যাম্বুলেন্স, পত্রিকা অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরের মোবাইল নম্বর লেখা। তরুণ বললেন, তাঁরা জমির ব্যবসা করেন। জমির প্রয়োজন হলে যেন এই নম্বরে ফোন করা হয়।
এতক্ষণে বৃদ্ধের খাওয়া শেষ। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘আমি মুসাফির। বাড়ি চারঘাটে। মানুষের কাছে হাত পেতে চলি। দুপুরবেলা খেতে চাইলে এই বাবাজি (তরুণ) খাওয়ালো। একটা সমস্যার কথাও বলল। আল্লাহ মুশকিল আশান করুক।’
দুজনের একসঙ্গে ছবি তোলার পর তরুণ এবার এই প্রতিবেদকের পরিচয় জানতে চান। এই প্রতিবেদক পরিচয় দিলে তরুণ বললেন, ‘আমি এখানে মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করছিলাম। বাবাজি খেতে চাইলেন। তাই খাওয়ালাম।’
রওশন সম্পর্কে জানতে চাইলে তরুণ জানালেন, তিনি ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে দেখেননি। মায়ের কাছে বড় হয়েছেন। তিনি রওশনের পালিত ছেলে। তাই ‘আব্বু’ বলে ডাকেন।
খুব খাতির করে এক বৃদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে খাবারের হোটেলে ঢুকলেন এক যুবক। বৃদ্ধ মাছ-মাংস খাবেন না, কিন্তু ওই যুবকের পীড়াপীড়ি। অন্তত মাছ তাঁকে খেতেই হবে। শেষে ডিম খেতে রাজি হলেন ওই বৃদ্ধ। সঙ্গে লালশাক আর ডাল।
বৃদ্ধ তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছেন। পাশে বসে ওই যুবক। কিছুক্ষণ পরে বৃদ্ধের কাছাকাছি কান নিয়ে বললেন, ‘আমরা একটু সমস্যার মধ্যে আছি। আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন।’ বৃদ্ধ জানতে চাইলেন, সমস্যা কী। যুবক বললেন, ‘কিছুদিন আগে র্যাবে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ কাজী আরেফসহ তিনজনকে খুনের আসামি। এখন জেলে।’
বৃদ্ধ এ কথার গুরুত্ব বুঝতে পারলেন বলে মনে হলো না। তিনি আপনমনে খেতেই ব্যস্ত। রোববার দুপুর ২টায় এমন দৃশ্যই দেখা গেল রাজশাহী নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার ‘হোটেল স্ক্যানার’ নামের একটি খাবারের হোটেলে। এই প্রতিবেদক যে টেবিলে বসে খাচ্ছিলেন, সেটিতেই এসে বসেছিলেন ওই বৃদ্ধ এবং যুবক।
ওই যুবক বৃদ্ধকে আরও বললেন, তাঁর ‘আব্বু’ এখন ঢাকায় কারাগারে। খুনের ঘটনার পর ২২ বছর রাজশাহীতে ছিলেন। জমির ব্যবসা করে পাঁচ পাঁচটি বাড়ি করেছেন। কেউ কিছু বুঝতে পারেনি। হঠাৎ কিছুদিন আগে ধরে নিয়ে গেছে র্যাব। এখন জামিনের চেষ্টা চলছে। মাসখানেকের মধ্যে তাঁর জামিন হতে পারে বলেও তিনি ওই বৃদ্ধকে জানালেন।
ওই যুবক যে ব্যক্তির কথা বলছিলেন, তিনি দুর্ধর্ষ খুনি রওশন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা কাজী আরেফ আহমেদসহ একসঙ্গে পাঁচজনকে ব্রাশফায়ারে হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি। এ ছাড়া আরও কয়েকটি হত্যায় তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল। ডাকাতির মামলাও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। ১৯৯৯ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি সভা চলাকালে প্রকাশ্যে কাজী আরেফসহ পাঁচ নেতাকে হত্যার পর রাজশাহী চলে আসেন তিনি। ‘আলী’ নামে পরিচিত হয়ে এখানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কাটিয়ে দেন ২২ বছর। জাতীয় পরিচয়পত্রও করেছিলেন ‘উদয় মণ্ডল’ নামে। গত ১৮ আগস্ট র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
খাবারের হোটেলে এই প্রতিবেদক ওই যুবকের নাম জানতে চান। তিনি একটা ভিজিটিং কার্ড দেন। তাতে নাম লেখা ওমর আলী। প্রতিবেদক বলেন, রওশনের ছেলের নাম আমির হামজা। তখন ওই যুবক জানান, তিনি পালিত ছেলে। তাঁর ডাকনাম তরুণ।
রওশনকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব বলেছিল, রওশন তাঁর মোবাইল নম্বর সব সময় বন্ধ রাখতেন। মিসড কল অ্যালার্ট চালু রাখতেন। মাঝে মাঝে ফোন অন করে শুধু তরুণ নামে এক যুবকের সঙ্গে কথা বলতেন। তরুণ তাঁর জমির ব্যবসার সবই দেখাশোনা করেন। এই তরুণেরই দেখা মিলল খাবারের হোটেলে। তিনি জানালেন, ব্যবসা ঠিকঠাকই চলছে। তিনিই সবকিছু দেখাশোনা করছেন।
ওমর আলী ওরফে তরুণের ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে, ‘মোহাম্মদ আলী এন্টার প্রাইজ’। অর্থাৎ আলীর নামেই এই প্রতিষ্ঠানটি। কার্ডে আরও লেখা আছে, ‘প্লট আকারে জমি বিক্রয় করা হয়’। কার্ডের অপর পৃষ্ঠায় ফায়ার সার্ভিস, থানা, অ্যাম্বুলেন্স, পত্রিকা অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরের মোবাইল নম্বর লেখা। তরুণ বললেন, তাঁরা জমির ব্যবসা করেন। জমির প্রয়োজন হলে যেন এই নম্বরে ফোন করা হয়।
এতক্ষণে বৃদ্ধের খাওয়া শেষ। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘আমি মুসাফির। বাড়ি চারঘাটে। মানুষের কাছে হাত পেতে চলি। দুপুরবেলা খেতে চাইলে এই বাবাজি (তরুণ) খাওয়ালো। একটা সমস্যার কথাও বলল। আল্লাহ মুশকিল আশান করুক।’
দুজনের একসঙ্গে ছবি তোলার পর তরুণ এবার এই প্রতিবেদকের পরিচয় জানতে চান। এই প্রতিবেদক পরিচয় দিলে তরুণ বললেন, ‘আমি এখানে মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করছিলাম। বাবাজি খেতে চাইলেন। তাই খাওয়ালাম।’
রওশন সম্পর্কে জানতে চাইলে তরুণ জানালেন, তিনি ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে দেখেননি। মায়ের কাছে বড় হয়েছেন। তিনি রওশনের পালিত ছেলে। তাই ‘আব্বু’ বলে ডাকেন।
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
৫ দিন আগেফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
৮ দিন আগেকথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪