বেঁচে থাকতে অক্সিজেন লাগে না যে প্রাণীর

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্য  আবশ্যক উপাদান হলো অক্সিজেন। তবে বিজ্ঞানীরা এমন এক পরজীবী খুঁজে পেয়েছেন যাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই। বিষয়টি অদ্ভুত ও আজব শোনালেও এমন প্রাণী অন্য কোনো গ্রহে নয়, পৃথিবীতেই পেয়েছেন গবেষকেরা। 

২০২০ সালে ইসরায়েলের তেল-আবিব বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল  গবেষক একটি জেলিফিশের মতো পরজীবী আবিষ্কার করেছেন যার কোনো মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম নেই। বহুকোষী জীবে এই ধরনের অনুপস্থিতি এটিই প্রথম। অর্থাৎ এটি শ্বাস নেয় না। 

গবেষকেরা এই পরজীবীর নাম দিয়েছেন হেননেগুয়া স্যালমিনিকোলা। এটির মাত্র ১০ কোটি কোষ রয়েছে। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্যামন মাছের কোষের ভেতরে অক্সিজেনশূন্য স্থানে এরা থাকে এবং প্রক্রিয়াজাত পুষ্টি গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। তবে পোষক দেহের কোনো ক্ষতি করে না এরা, মানুষেও পরজীবীগুলো সংক্রমিত হয় না। 

ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সিনিয়র গবেষণা সহযোগী স্টিফেন অ্যাটকিনসন বলেন,‘আমরা যখন একটি প্রাণীর কথা বলি তখন  ধরেই নিই সেটি বহুকোষী এবং বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন গ্রহণ করে। তবে ব্যাকটেরিয়ার মতো কিছু এককোষী জীবন এর কথা ভাবি না। এরা ব্যতিক্রমী। একটি বহুকোষী প্রাণীর সন্ধান পেয়েছি যেটির অক্সিজেন লাগে এমন জিনগত প্রত্যঙ্গ নেই।’
 
তিনি আরও বলেন, একটি ‘প্রাণী’ কেমন হতে পারে তার সংজ্ঞা প্রসারিত করে এই গবেষণা। এই ধরনের একটি ক্ষুদ্র প্রাণীর জন্য এটি বেশ মহাকাব্যিক বিষয়। 

স্যামন মাছের যে অংশে এই পরজীবী বাস করে সেখানে কোনো অক্সিজেন নেই। তাই অক্সিজেন ছাড়াই এগুলো বেঁচে থাকতে পারে। এদের তাই মাইটোকন্ড্রিয়ায় জিনোমও নেই। মাইটোকন্ড্রিয়া খাবার থেকে শক্তি উৎপাদন করে। 

অ্যাপটিকসন বলেন, জিনোমটি না থাকার কারণে পরজীবীটিকে ওই বিশেষ অঙ্গটির জন্য জিন তৈরি করতে গিয়ে শক্তি খরচ করতে হচ্ছে না। ফলে এর খুব কম শক্তি লাগছে। 

তবে পরজীবীগুলো অক্সিজেনের পরিবর্তের কিসের ওপর নির্ভর করে তা জানে না গবেষকেরা। এটি তার হোস্ট থেকে অণুগুলোকে শোষণ করে যা ইতিমধ্যে শক্তি তৈরি করেছে। তবে অ্যাটিকসন মনে করেন, এটি পোষকদেহ থেকে অণুগুলো শোষণ করে যা ইতিমধ্যে শক্তি তৈরি করেছে। 

অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারে এমন আরও প্রাণী রয়েছে বলে মনে করেন অ্যাটিকসন। সেগুলোর জীবনধারণের প্রক্রিয়া আরও জটিল ও অদ্ভূত হতে পারে। 

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত