সহ-অধিনায়কে অনাগ্রহী বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ০৬
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ১৫

বিশ্বকাপের পরই টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিরাট কোহলি। তাঁর আকস্মিক অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণার পরই টি-টোয়েন্টির পর ভারতকে কে নেতৃত্ব দেবেন, সেটি নিয়েই এখন যত শোরগোল ভারতীয় ক্রিকেটে। অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে সবার আগেই ছিলেন রোহিত শর্মা। রোহিতকে আবার নাকি চান না কোহলি! তাঁর পছন্দ লোকেশ রাহুল আর ঋষভ পন্ত। সুনীল গাভাস্কার ভোট দিয়েছেন শুধু রাহুলের বাক্সেই!

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) হয়তো অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে এত প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো না, যদি তাদের একটা শক্তিশালী লিডারশিপ গ্রুপ থাকত। যেভাবে মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর অনায়াসে তারা কোহলিকে বেছে নিতে পেরেছিল। লম্বা সময় ধোনির ‘ডেপুটি’ হিসেবে যে গড়ে তোলা হয়েছিল কোহলিকে।

ভারতের শক্তিশালী ক্রিকেট-কাঠামো থাকার পরও অধিনায়ক কোহলির উত্তরসূরি বাছতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। অধিনায়কের সন্ধানে বিসিবিকেও বেশ সংকটে পড়তে হয়েছিল ২০১৯  সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরের আগমুহূর্তে মাশরাফি বিন মুর্তজা চোটে পড়লে। শক্ত লিডারশিপ গ্রুপ না থাকায় সফরের আগের দিন দলের অধিনায়ক নির্বাচনে গলদঘর্ম অবস্থা ক্রিকেট বোর্ডের! অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপৎকালীন দায়িত্বটা তামিম ইকবাল নিয়ে কোনোভাবে উদ্ধার করেছিলেন বিসিবিকে। একই বছরের অক্টোবরে ক্রিকেট বোর্ড আরও বড় সংকটে পড়েছিল যখন নিয়মিত টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিষেধাজ্ঞায় পড়লেন। ভারত সফরের আগমুহূর্তে বিসিবি সমস্যাটার সমাধান করেছিল টেস্ট দলের ভার মুমিনুল হকের কাঁধে তুলে দিয়ে। আর টি-টোয়েন্টিতে সেটি পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পরে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমকে করায় বাংলাদেশ দল পরিণত হয় তিন অধিনায়কে।

তিন অধিনায়কের ভিড়ে বিসিবি ‘ডেপুটি’ বা সহ-অধিনায়কের চিন্তা আপাতত আর করছে না। অথচ অধিনায়কের সঙ্গে ডেপুটি রেখে নতুন অধিনায়ক গড়ে তোলার চর্চাটা একটা সময় বাংলাদেশ ভালোভাবেই করেছে। আশরাফুলের সঙ্গে মাশরাফিকে, মাশরাফির সঙ্গে সাকিবকে কিংবা সাকিবের সঙ্গে তামিমকে সহ-অধিনায়ক করাই হয়েছিল ভবিষ্যতে দৃষ্টি রেখে।

গত দুই-তিন বছরে বিসিবি অবশ্য সহ-অধিনায়কের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না! অধিনায়কের আকস্মিক চোট কিংবা কোভিডের এই সময়ে কিছু হলে বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়লে নিয়মিত অধিনায়কের ভার তুলে দিতে বেশ বিপাকেই পড়তে হয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। গত এপ্রিলের কথাই ধরুন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চোটে পড়লে আকস্মিক অধিনায়কত্ব পান আনকোরা লিটন দাস। ওই ম্যাচে বাংলাদেশকে আরও বিপর্যস্ত দেখা গেছে।

এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ যাচ্ছে সহ-অধিনায়ক ছাড়াই। গতকাল বোর্ড সভা শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বললেন, আপাতত কাউকে সহ-অধিনায়ক করার কোনো পরিকল্পনা নেই তাঁদের, ‘মাহমুদউল্লাহ আছে। এই দলে সাকিব আছে, মুশফিক আছে। ওদের তো আর সহ-অধিনায়ক করতে পারি না।’

কদিন আগে সহ-অধিনায়ক প্রসঙ্গে সাকিবও একই কথা বলছিলেন, ‘প্রথা অনুযায়ী সহ-অধিনায়ক থাকলে ভালো হতো। তবে সহ-অধিনায়ক নেই বলে যে খুব একটা সমস্যা, আমার কাছে তা মনে হয় না।’ 
সাকিবের সঙ্গে একমতই পোষণ করেছেন মাহমুদউল্লাহও। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘যেহেতু দলে সাকিব-মুশি-মোস্তাফিজ আছে। আরও বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। আমরা যেহেতু সবাই একে অপরকে সহায়তা করি, একজন আরেকজনকে সমর্থন করি। আশা করি, এটা তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

দলে এখন মাহমুদউল্লাহ-সাকিব-তামিমদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটার আছেন বলে হয়তো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু তাঁরা দৃশ্য থেকে আড়াল হলে যাঁদের কাঁধে চাপবে নেতৃত্বভার, তাঁরা কি তৈরি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন?

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত