Ajker Patrika

ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১১: ১৫
ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি

সত্তরের দশকে ক্রীড়া সংগঠকেরা গাঁটের পয়সা খরচ করে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা আজকের বিসিবি। তখন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের (ঢাকা স্টেডিয়াম) যে ছোট্ট কক্ষে এর কার্যালয় ছিল, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ পর্যন্ত ছিল না। রাতের বেলা সংগঠকেরা কাজ করতেন মোমবাতি জ্বালিয়ে। বিসিবির আজকের বৈভবের কাছে সে গল্প সত্যিই বেমানান। সেদিনের মোমবাতির আলো ছাপিয়ে বিসিবি এখন অর্থের পাহাড়ে। সে পরিমাণও চমকে ওঠার মতো।

করোনা মহামারিতে লোকসানে পড়েনি–সারা পৃথিবীতে এমন প্রতিষ্ঠান বোধহয় কমই আছে। ব্যতিক্রম যা আছে, তাদের তালিকায় বিসিবি। তাদের আর্থিক অগ্রগতি এ সময়েও বেড়ে চলেছে।

বিসিবির গত ১০ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়-ব্যয়, নিট উদ্বৃত্ত, নগদ ও ব্যাংক জমা, এফডিআর মিলে বিসিবির স্থায়ী মূলধন বা পুঞ্জিভূত তহবিলে আছে ৮৩২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে যা ছিল ৩৯৭ কোটি ৫২ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

করোনা মহামারিতে যেখানে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো ধনী ক্রিকেট বোর্ডগুলো কর্মী ছাঁটাই, বেতন কমানো কিংবা ব্যয় সংকোচনের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে, বিসিবিকে তার কোনো পথেই হাঁটতেই হয়নি। করোনাধাক্কায় কারও চাকরি যায়নি। দেশি-বিদেশি কোচসহ চার শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন ছিল নিয়মিত। এর বাইরে কোভিড মহামারিতে বিসিবি প্রধানমন্ত্রী তহবিল, ত্রাণ, আম্পায়ার্স সমিতি, সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়দের চিকিৎসা, সাংবাদিক, ক্রিকেট সরঞ্জামাদি ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদান দিয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে (ডব্লিউআইসিবি) ঋণও দিয়েছে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বিশ্বে বিসিবির অবস্থান
প্রশ্ন উঠতে পারে, মাত্র এক দশকে বিসিবি আর্থিকভাবে কী করে এত শক্তিশালী হলো? তার জবাব দিয়েছেন ক্রীড়া সংগঠকেরা। তাঁরা বলছেন, ক্রিকেট অর্থনীতিতে বিসিবি সবচেয়ে বড় লাফ দিয়েছে গত দশকের শুরুর দিকে। সাবেক বিসিবি সভাপতি (বর্তমানে অর্থমন্ত্রী) আ হ ম মুস্তফা কামালের (সেপ্টেম্বর ২০০৯ থেকে অক্টোবর ২০১২) সময়ে যে গতিটা পেয়েছিল, সেটা অব্যাহত রাখেন টানা নয় বছর বোর্ডের সভাপতির পদে থাকা নাজমুল হাসান পাপন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন ও টেস্টখেলুড়ে ক্রিকেট বোর্ডগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিসিবি এখন বিশ্বের পঞ্চম ধনী ক্রিকেট বোর্ড। অন্যান্য ক্রীড়া সংগঠনের তুলনায় দেশে তারা যে এক নম্বর, তা বলাই বাহুল্য। দেশের দ্বিতীয় বড় ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনের (বাফুফে) আয় গত পাঁচ বছরে গড়ে ৪০ কোটি টাকাও ছাড়ায়নি। উদ্বৃত্ত দূরে থাক, গত চার বছরে বাফুফের বাজেট ঘাটতি ছিল ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মতো।

ধনী ক্রিকেট বোর্ডের তালিকায় চার নম্বরে থাকা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে খুব বেশি দূরত্ব নেই বিসিবির। সবার ওপরে থাকা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) তহবিলে আছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। এই তালিকায় দুইয়ে থাকা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) আছে তিন হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি আর তৃতীয় ধনী ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। আর্থিক অবস্থানে বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে পেছনে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘আমরা তহবিল ব্যবস্থাপনা (ফান্ড ম্যানেজমেন্ট) ঠিকভাবে করার চেষ্টা করছি। যেন আয় ও ব্যয়ে ভারসাম্য থাকে। আইসিসি থেকে শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে টাকা পায়, আমরাও সেটাই পাই। ম্যানেজমেন্ট এখানে বড় বিষয়। এরপরও যে কিছু হয় না, সেটি বলব না।’

বিসিবির আয়ের উৎস
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি ও আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা এসিসি থেকে পাওয়া লভ্যাংশ, ফান্ড, স্পনসরশিপ মানি, টেলিভিশনের সম্প্রচারস্বত্ব, ব্যাংক সুদ ও দেশের মাঠে হওয়া বিভিন্ন সিরিজ-টুর্নামেন্ট থেকেই মূলত আয় করে বিসিবি।

গত এক দশকে বিসিবির আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে পাঁচটি বড় টুর্নামেন্ট। ২০১১ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হিসেবে বিসিবি আইসিসি থেকে পেয়েছে ১৮৬ কোটি ৩৫ লাখ আর ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করে পেয়েছে ১৩০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ২০১২ থেকে ২০১৬—টানা তিনটি এশিয়া কাপ আয়োজন করে বিসিবির অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৬৪ কোটির বেশি টাকা। গত এক দশকে এই পাঁচ টুর্নামেন্ট থেকেই বিসিবির আয় প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা।

নিজাম উদ্দিন বলেন, ঘরের মাঠে আয়োজিত আইসিসির টুর্নামেন্ট বিসিবির আর্থিক চেহারাটা বদলে দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, বিশেষ করে বিপিএল। তবে বড় অংশ এসেছে আইসিসি থেকেই।

গত চার বছরে বিসিবির বিপণন খাতেও আয় বেড়েছে। মিডিয়া, টিম স্পনসর ও অন্যান্য স্পনসর রাইটস ফি থেকে বোর্ডের আয় প্রায় ২.৯ কোটি ডলার বা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।

বিসিবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর)। নিয়মিত বিভিন্ন শিডিউল ব্যাংকে এফডিআর বিনিয়োগ করে গত তিন অর্থবছরে এসেছে ১৫২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। উল্লিখিত অর্থবছরে সুদ থেকে বিসিবির অর্জিত আয়ের ওপর কর রেয়াতি সুবিধা অনুমোদন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই সময়ে বিসিবি ব্যাংকে বিনিয়োগকৃত অর্থের সুদবাবদ প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর রেয়াতি বা ট্যাক্স এক্সাম্পশন সুবিধা বাবদ সাশ্রয় করেছে ১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। 
 
মহামারিতেও বেড়েছে আয়
করোনা মহামারিতে যেখানে দেশ-বিদেশে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান আর্থিক লোকসানে পড়েছে, বিসিবির সেটির আঁচ খুব একটা লাগেনি। উল্টো চলতি অর্থবছরে গত বছরের তুলনায় সম্ভাব্য আয় ৪১ কোটি টাকার বেশি আশা করছে বিসিবি।

করোনায় খেলা বন্ধ থাকায় বিসিবিকে গত মৌসুমে আয়োজন করতে হয়নি ছেলে, মেয়ে ও বয়সভিত্তিক নানা পর্যায়ের ১৫টির বেশি লিগ বা টুর্নামেন্ট। স্থগিত হয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সিরিজ। যেগুলোয় লাভের চেয়ে ব্যয়ই হতো বেশি। অন্যদিকে আইসিসির ফান্ড, স্পনসর মানি কিংবা এফডিআর থেকে আয় অব্যাহত থেকেছে। 
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বললেন, ‘গত দুই বছরে আইসিসির একটা ফান্ড বেড়ে গেছে। সে কারণে আমাদেরও বেড়েছে। এখন দেখা যাক আইসিসির টুর্নামেন্টগুলো হয় কি না! সামনে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে। আমরা কিন্তু খুবই ভেবেচিন্তে, নিশ্চিত হয়েই বাজেট করি।

কমছে বিসিবির উদ্বৃত্ত
চলতি অর্থবছরে বিসিবির আয়-ব্যয় প্রায় সমান হতে চলেছে। এতে কমতে শুরু করেছে উদ্বৃত্তের পরিমাণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়-ব্যয় শেষে বেঁচেছিল ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। পরের বছরে উদ্বৃত্ত প্রায় সমানই থাকে। গত অর্থবছরে এটি কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি। চলতি অর্থবছরে বিসিবির সম্ভাব্য উদ্বৃত্ত ধরা হচ্ছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। গত ১৫ জুন বিসিবির পরিচালনা পরিষদের দশম সভায় অনুমোদন হওয়া চলতি অর্থবছরে বিসিবির সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা আর ব্যয় ২৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

মহামারিতে ক্রিকেট আয়োজনে জৈব সুরক্ষাবলয় তৈরি করতে হয়, যেটি বেশ ব্যয়বহুল। অন্য সময়ের তুলনায় বিসিবির খরচ বেড়ে যাওয়ার এটিও একটি কারণ। ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে নিজাম উদ্দিনের ব্যাখ্যা, ‘আন্তর্জাতিক সিরিজের সংখ্যা বেড়েছে। খরচও অনেক বেড়ে গেছে। বেশির ভাগ খরচ বিদেশ সফরে হচ্ছে। আমাদের কিন্তু ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলো সেভাবে বাড়েনি। সুরক্ষাবলয়, ১৫ দিনের কোয়ারেন্টিন, যে দল বাংলাদেশে আসছে তাদের ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে গেছে। এতেই ব্যয় বাড়ছে।’

তবে খরচ বেড়ে যতই উদ্বৃত্ত কমুক, এটা অবশ্য বিসিবিকে ধাক্কা দেওয়ার মতো কিছইু নয়।

বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এসিসির সাবেক প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হকের প্রত্যাশা, বিপুল এই অর্থ বিসিবি আরও বেশি কাজে লাগাবে ক্রিকেটের উন্নয়নে, ‘এটা ব্যবহার করা দরকার ক্রিকেট উন্নয়নে। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে। ক্রিকেটের জন্যই তো হয়েছে এই ফান্ড। আমাদের মূল আয় আইসিসি থেকে। আমরা যদি পূর্ণ সদস্য না হতাম, তাহলে আমাদের হয়তো এত টাকা থাকত না। তখন সরকারি বাজেটের ওপর নির্ভর করতে হতো। ক্রিকেটে আরও উন্নতি করতে হলে ঠিক জায়গায় টাকাটা খরচ করতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশকে হ্যাটট্রিক ফাইনাল খেলতে দিল না পাকিস্তান

ক্রীড়া ডেস্ক    
শুরুতে উইকেট ফেললেও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে হেরে সেমি থেকেই বিদায় বাংলাদেশের। ছবি: এসিসি
শুরুতে উইকেট ফেললেও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে হেরে সেমি থেকেই বিদায় বাংলাদেশের। ছবি: এসিসি

নকআউট পর্বে যেমন প্রত্যাশা ছিল, আজিজুল হাকিম তামিমের বাংলাদেশ সেটা পূরণ করতে পারেনি। দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তামিম-জাওয়াদ আবরারদের হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে পাকিস্তান।

২০২৩, ২০২৪ সালে টানা দুইবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপজয়ী বাংলাদেশ এবার নেমেছিল শিরোপা ধরে রাখার মিশনে। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল তামিমের দল। তবে বাংলাদেশকে হ্যাটট্রিক ফাইনাল খেলতে দিল না পাকিস্তান। ৮ উইকেটে জিতে চতুর্থবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল পাকিস্তান।

দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে আজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে চার ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল। ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৫০ ওভার থেকে কমিয়ে ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। ২৭ ওভারে ১২২ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় ১ রানেই। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে ইকবাল হোসেন ইমনের অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল খোঁচা দিতে যান পাকিস্তানি ওপেনার হামজা জহুর। বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সহজেই সেটা তালুবন্দী করেছেন। দুই বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি হামজা।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির কারণে সময়মতো শুরু হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে শুরু হলে ম্যাচটা ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১২১ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সামিউন বশির রাতুল। ৩৭ বলের ইনিংসে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন তিনি।

পাকিস্তানের সুবহান ৬ ওভারে ২০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। হুজাইফা আহসান নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সায়েম, আহমেদ হুসেইন ও আলী রাজা। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রাতুল রানআউট হওয়াতেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের বিপক্ষে এলোমেলো ব্যাটিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৯
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি

গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে ওঠা বাংলাদেশকে আজ বড্ড অচেনা লেগেছে। পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ল আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। বলের লাইন না বুঝে খেলতে গিয়েই বেশির ভাগ উইকেট হারিয়েছে তামিমের দল।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির কারণে সময়মতো শুরু হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে যখন ম্যাচ শুরু হয়, তখন দৈর্ঘ্য ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১২১ রানে।

পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫.১ ওভারে ২ উইকেটে ২৪ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। দুই ওপেনারই দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন। রিফাত বেগ ১৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেছেন ১৪ রান। ওপেনিংয়ে তাঁর আরেক সঙ্গী জাওয়াদ আবরার করেছেন ৯ রান। দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক তামিম ও কালাম সিদ্দিকী। ৪৩ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা (তামিম-কালাম)। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে তামিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আব্দুল সুবহান। ২৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তামিমের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। বড় শট খেলতে গিয়েই আকাশে বল তুলে দেন আবরার-শেখ পারভেজ জীবনরা। পাকিস্তানি ফিল্ডাররা সেই ক্যাচগুলো তালুবন্দী করেছেন। ২৬.৩ ওভারে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে তামিমের বাংলাদেশ। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সামিউন বশির রাতুল। ৩৭ বলের ইনিংসে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন তিনি।

পাকিস্তানের সুবহান ৬ ওভারে ২০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। হুজাইফা নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সায়েম, আহমেদ হুসেইন ও আলী রাজা। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রাতুল রানআউট হওয়াতেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেয়েদের বিসিএলে রোমাঞ্চের এক দিন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আজ তিনটি ফিফটি এসেছে। ছবি: বিসিবি
আজ তিনটি ফিফটি এসেছে। ছবি: বিসিবি

মেয়েদের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) আজ তিনটি ফিফটি হয়েছে। অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন দিলারা দোলা, সোবহানা মোস্তারি ও রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। এর মধ্যে বৃথা গেছে ঝিলিকের ফিফটি। তবে ঠিকই জিতেছে দোলা ও মোস্তারির দল। তিন ফিফটি ছাপিয়ে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে আলোচনায় এসেছে দুটি ম্যাচ।

টানটান উত্তেজনার পর শেষ বলে মীমাংসা হয়েছে সেন্ট্রাল জোন এবং ইস্ট জোনের ম্যাচ। রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে ১ রানে জিতেছে সেন্ট্রাল জোন। তাদের করা ১৫৬ রানের জবাবে ১৫৫ রানে থামে ইস্ট জোন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে তাদের সামনে ১২ রানের সমীকরণ ছিল। জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনার করা সে ওভারে ১০ রানের বেশি নিতে পারেননি ইস্ট জোনের দুই ব্যাটার ফাহিমা খাতুন ও মুরশিদা খাতুন।

প্রথম ৪ বলে সমান রান দেন সুমনা। তাঁর করা পঞ্চম বল থেকে বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ফাহিমা। জেতার জন্য শেষ বলে করতে হতো ৪ রান। এ যাত্রায় ২ রানের বেশি নিতে পারেননি ফাহিমা। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সেন্ট্রাল জোন। এর আগে দোলা ও নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাটে চড়ে এই পুঁজি পায় তারা। ৫৫ বলে ১৩ চারে ৮৫ রান করেন দোলা। জ্যোতির অবদান ৪৬ রান।

একই ভেন্যুতে সাউথ জোনকে ৪ রানে হারিয়েছে নর্থ জোন। মোস্তারির ৬৯ রানের ইনিংসে ভর করে ১৩১ রানের সংগ্রহ পায় তারা। শারমিন সুলতানার অবদান ৩৭ রান। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি সাউথ জোন। ৬ উইকেট হাতে রেখে শেষ ওভারে তাদের করতে হতো ১৩ রান। উইকেটে লতা মন্ডল ও সুলতানা খাতুনের মতো দুই সেট ব্যাটার থাকায় জেতার স্বপ্ন বুনছিল সাউথ জোন।

সানজিদা আক্তার মেঘলার প্রথম বলে চার মেরে দারুণ শুরু করেন সুলতানা। দ্বিতীয় বলে নেন ২ রান। শেষ ৪ বলে তাদের সামনে সমীকরণ ছিল ৭ রানের। এমন সময়ই ছন্দপতন। তৃতীয় বলে রান আউট হন ১৬ বলে ২৬ রান করা সুলতানা। পরের বলে মারুফা আক্তারকে ফেরান মেঘলা। পঞ্চম বলে ২ রান নেন আয়শা আক্তার। শেষ বলে তাঁকেও আউট করেন মেঘলা। শেষ ওভারে ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মেঘলা। ৪ ওভারে ২২ রান দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইরানে ম্যাচ না খেলে দুই বছর নিষিদ্ধ ভারতের মোহনবাগান

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
মোহনবাগানকে শাস্তি দিল এএফসি। ছবি: সংগৃহীত
মোহনবাগানকে শাস্তি দিল এএফসি। ছবি: সংগৃহীত

সেপ্টেম্বরে ইরানে ম্যাচ খেলার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু তিন মাস আগে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের টুর্নামেন্টের ম্যাচ খেলতে যায়নি ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। সেই ঘটনার কঠিন শাস্তি পেল মোহনবাগান। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা গুনতে হবে তাদের।

এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা কমিটি পরশু মোহনবাগানকে কঠিন শাস্তি দিয়েছে। ২০২৭-২৮ মৌসুম পর্যন্ত কোনো এশিয়ান প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবে না। একই সঙ্গে তাদের ১ লাখ ৭২৯ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এই ১ লাখ ডলারের মধ্যে ৫০ হাজার ডলারের (৬১ লাখ টাকা) জরিমানার শাস্তিটা মূলত সেপ্টেম্বরে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে। এএফসি ও ইরানি ক্লাব সেপাহান এসসি’র যে ক্ষতিপূরণ হয়েছে, সেক্ষেত্রে আরও বেশি ৫০৭২৯ ডলার দিতে হবে বলে এএফসির নির্দেশ। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ৬২ লাখ টাকা।

সেপাহানের বিপক্ষে সেপ্টেম্বরে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় গ্রুপের ম্যাচ খেলতে ইরানে যাওয়ার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু ইরানে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও চিকিৎসা বিমা কভারেজের সমস্যার কথা উল্লেখ করেছিল মোহনবাগান। এএফসি এরপর তাদের সব ম্যাচ বাতিল করেছে। এএফসির দ্বিতীয় স্তরের এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কোনো ধরনের ভর্তুকিও পাবে না ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব।

মোহনবাগান ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সেপাহান এসসির বিপক্ষে খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছিল সিএএস। গত বছর ইরানের আরেক ক্লাব ট্র্যাকটর এসসির বিপক্ষে খেলেনি মোহনবাগান। ট্র্যাকটর এসসি-মোহনবাগান ম্যাচটি ইরানেই হওয়ার কথা ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত