রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে সাকিবদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী 

ক্রীড়া ডেস্ক
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০: ৪৪
Thumbnail image

১৩ ম্যাচে পূর্ণ ২৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে শিরোপায় এক হাত দিয়ে রেখেছে আবাহনী। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন আবাহনী—এই সমীকরণ ছিল আবাহনীর সামনে। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ৪ উইকেটে জিতে ২০২৩-২৪ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) শিরোপা জিতল  আবাহনী।

বেশির ভাগ জাতীয় দলের খেলোয়াড় নিয়ে গড়া আবাহনীর চিন্তা ছিল একাদশ গড়া নিয়েই। শান্ত-লিটনরা এখন ব্যস্ত চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে। তানভীর ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, তানভীর ইসলাম—জিম্বাবুয়ে সিরিজের তিন ক্রিকেটারকে নিয়ে আজ একাদশ সাজায় আবাহনী। প্রতিপক্ষ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সাকিব আল হাসান দেশে ফিরেছেন গতকাল। আবাহনীর বিপক্ষে সুপার লিগে আজ তাঁর খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি খেলেছেন।

আবাহনীর উদ্বোধনী জুটি দলীয় ১০ রানে ভেঙেছে সাকিবের কল্যাণেই। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে আবাহনী ওপেনার সাব্বির হোসেনকে ফেরান সাকিব। বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার এক রকম ‘প্রতিশোধ’ই নিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে সাকিব যখন তানজিম সাকিবের বলে আউট হয়েছেন, তখন ক্যাচ ধরেন সাব্বির।

১১ বলে ৬ রান করে সাব্বিরের বিদায়ের পর তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন এনামুল হক বিজয়। ওপেনার নাঈম শেখের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়েন বিজয়। এই জুটিটা কিছুটা ধীর গতিতে হয়েছে। স্কোরকার্ড দেখলেই তা বোঝা যাবে। ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাঈমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন শফিকুল ইসলাম। ৪২ বলে ১ চারে ২১ রান করেন নাঈম।

নাঈমের বিদায়ে আবাহনীর স্কোর হয়ে যায় ১৫.৩ ওভারে ২উইকেটে ৬০ রান। এরপর চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। তৃতীয় উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়েন বিজয় ও আফিফ। দুজনই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। বিজয় ফিফটি পেয়েছেন ৫৭ বলে। ৫২ বলে ফিফটি করেছেন আফিফ। ৩১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাইফকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ফিফটি করেন আফিফ। একই ওভারের চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে সাইফকে চার ও ছক্কা মারেন আফিফ। এই সাইফ ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে বিজয়কে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন। ৮০ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬৭ রান  করেন বিজয়।

বিজয়ের বিদায়ে আবাহনীর স্কোর হয়ে যায় ৩২.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬৩ রান। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সৈকতকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন আফিফ। বিজয় সেঞ্চুরি না পেলেও আফিফের সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জেগেছিল। তবে আফিফের তিন অঙ্ক ছোঁয়া হয়নি। ৪৩তম ওভারের প্রথম বলে আফিফকে ফেরান তাইবুর রহমান। ৮৮ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৮৩ রান  করেন আফিফ।

আফিফের বিদায়ে আবাহনীর স্কোর হয়ে যায়  ৪২.১ ওভারে ৪ উইকেটে ২১৩ রান। ম্যাচ যতই শেষের দিকে গড়াতে থাকে, ততই জমে ওঠে। শেষ চার ওভারে আবাহনীর দরকার হয় ৩৪ রান, হাতে ৬ উইকেট। সৈকত এক প্রান্তে আগলে খেললেও  দুই ব্যাটার নাহিদুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিবের উইকেট হারায় আবাহনী। শেষ দুই বলে যখন ১ রান দরকার, তখন ছক্কা মেরে আবাহনীর ২৩তম শিরোপা এনে দেন সৈকত। ১ বল হাতে রেখে আবাহনী পায় ৪ উইকেটের জয়। ম্যাচসেরা হয়েছেন আবাহনী অধিনায়ক সৈকত। ৫৪ বলে ৪ ছক্কায় করেছেন ৫৩ রান।

প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া শেখ জামাল ব্যাটিংয়ে ধুঁকতে থাকে।  ১৫ রানে হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। পাঁচ নম্বরে নেমে বিপদে ফেরা শেখ জামালের হাল ধরেন সাকিব। চতুর্থ উইকেটে সৈকত আলীর সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন সাকিব। প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার পর অবশ্য সাকিব তাড়াতাড়ি আউট হয়েছেন। ৫৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৯ রান করেছেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার। এক পর্যায়ে দলের স্কোর হয়ে যায় ৩৫.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫২ রান। ৯ নম্বরে নামা জিয়াউর রহমানের ঝোড়ো ব্যাটিংয়েই ২৫০ পেরোতে পারে শেখ জামাল। ৫৮ বলে ৫ চার ও ৮ ছক্কায় ৮৫ রান করেছেন জিয়াউর। তিনিই শেখ জামালের সর্বোচ্চ স্কোরার। ৯ উইকেটে ২৬৭ রানে ইনিংস শেষ করে দলটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত