ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের আরেক ইতিহাস

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ৫৫
Thumbnail image
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।ছবি: ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

মেহেদী হাসান মিরাজ ক্যাচ ধরেই শুরু করেছেন বাঁধভাঙা উদ্‌যাপন। ধারাভাষ্যকক্ষে উচ্চকণ্ঠে ইয়ান বিশাপ তখন বাংলাদেশের প্রশংসায় মত্ত। কারণ, লিটন দাসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ নতুন এক ইতিহাস গড়ল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে তাদের বিপক্ষে এর আগে টেস্ট, ওয়ানডে দুটি সিরিজই জিতেছিল বাংলাদেশ। বাকি ছিল টি-টোয়েন্টি। এবার সেই অপূর্ণতা দূর করল বাংলাদেশ। সেন্ট ভিনসেন্টে আজ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে উইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে সেবার বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ হেরেছিল ক্যারিবীয় দ্বীপে। শেষ দুই ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের মাঠে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল এশিয়ার দলটি। এ নিয়ে বিদেশের মাঠে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

১৩০ রানের লক্ষ্যে নেমে আজ প্রথম দুই ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই তাসকিন আহমেদের ঝোড়া আঘাত। ওভারের প্রথম ও পঞ্চম বলে দুই ক্যারিবীয় ব্যাটার ব্র্যান্ডন কিং ও আন্দ্রে ফ্লেচারকে ফিরিয়েছেন তাসকিন। কিং ১ রান করলেও ফ্লেচার রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন। দুটি ক্যাচই ধরেছেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস।

ঝড়ের আভাস দেওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার জনসন চার্লসকে এরপর ফিরিয়েছেন শেখ মেহেদী হাসান। ১২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ রান করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন চার্লস। উইন্ডিজের আরেক বিধ্বংসী ব্যাটার নিকোলাস পুরানের (৫) উইকেটটাও দ্রুত তুলে নিয়েছেন মেহেদী। স্লিপে ক্যাচ ধরেন সৌম্য। পাওয়ার প্লের শেষ ওভার মেহেদী দিয়েছেন উইকেট মেডেন। ৬ ওভারে ৪ উইকেটে ৩২ রান করে উইন্ডিজ।

পঞ্চম উইকেট ৩৩ রানেই হারাতে পারত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ, সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে রভমান পাওয়েল কোনো রকমে খোঁচা লাগিয়েছেন। তবে আউটসাইড এজ হওয়া বল সৌম্য সরকার ধরতে পারলেন না। সজোরে আসা বল তাঁর হাত থেকে যেমন ফস্কে গেছে, তেমনি ব্যথায় কাতড়াতে থাকেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ফিজিও চলে আসেন মাঠে।

ফিল্ডার হিসেবে দুর্দান্ত সৌম্য এই ক্যাচ হাতছাড়া করায় হতাশা বাড়ে তানজিম হাসান সাকিবসহ পুরো বাংলাদেশ দলের। কারণ, পাওয়েল তখন ০ রানে আউট হতেন। তবে উইন্ডিজ অধিনায়ক ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৭ বলে ১ চারে ৬ রান করে ফিরেছেন। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে হাসান মাহমুদকে লেগ সাইডে ঘোরাতে যান পাওয়েল। এজ হওয়া বল পয়েন্টে ডাইভ দিয়ে দারুণভাবে তালুবন্দী করেছেন মিরাজ। সেই ওভারটি হাসান মাহমুদ দিয়েছেন উইকেট মেডেন।

ঠিক তার পরের ওভারেই রোমারিও শেফার্ডকে ফেরান তানজিম সাকিব। ০ রানে শেফার্ড ফিরলে উইন্ডিজের স্কোর হয়ে যায় ৮.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ৪২ রান। এখান থেকে পাল্টা আক্রমণে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে স্বাগতিকেরা। সপ্তম উইকেটে আকিল হোসেন ও রস্টন চেজ ৪৯ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন। ওভারপ্রতি যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার হয় প্রায় ১২ করে, তখনই চড়াও হতে গিয়ে উইকেট হারায় তারা। ১৭তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে চেজ ও মোতিকে ফিরিয়েছেন রিশাদ হোসেন। শেষ বলে অবশ্য হ্যাটট্রিকটা হয়নি।

রিশাদের জোড়া ধাক্কার পর ১৩ রানে শেষ ২ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে আকিলকে ফিরিয়ে উইন্ডিজের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন তাসকিন। ১৮.৩ ওভারে ১০২ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন চেজ। ৩৪ বলের ইনিংসে ১ চার ও ২ ছক্কা মেরেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন আকিল।

বাংলাদেশের তাসকিন নিয়েছেন ৩ উইকেট। ৩.৩ ওভার বোলিং করে ১৬ রান দিয়েছেন তিনি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রিশাদ, তানজিম সাকিব ও মেহেদী। হাসান পেয়েছেন ১ উইকেট। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী।১৭ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৯ রান করে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন শামীম। উইন্ডিজের মোতি নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন আকিল, চেজ, আলজারি জোসেফ ও ম্যাকয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত