পূর্বাঞ্চলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন আকবরের উত্তরাঞ্চল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৩৮
Thumbnail image

জয়সূচক রানটির জন্য কিছুই করতে হলো না উত্তরাঞ্চলকে। একটি রান নিয়ে স্ট্রাইকে থাকা আকবর আলী জয়ের আনন্দে লাফিয়ে উঠবেন সেরকম কোনো সুযোগই পাননি! ৪৪তম ওভারের পঞ্চম বলটি করতে এসে ওয়াইড দিলেন পূর্বাঞ্চলের পেসার রেজাউর রহমান রাজা। তাতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ২০২৩ মৌসুমের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় আকবরের উত্তরাঞ্চলের।

বিসিএলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন উত্তরাঞ্চল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দিবারাত্রির ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসের চ্যালেঞ্জটা হবে কুয়াশা—সেটি বুঝেই যেন টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক আকবর। তাই রাতে বোলিংয়ে পূর্বাঞ্চলের রাজা-খালেদ আহমেদদের একটু অসুবিধাও হয়েছিল। 

তবু শাহাদাত হোসেন দিপুর সেঞ্চুরির সৌজন্যে উত্তরাঞ্চলকে ২৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যই ছুড়ে দেয় পূর্বাঞ্চল। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও হাবিবুর রহমান সোহান শুরু করেছিলেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। তবে জুটি বড় করতে দেননি রাজা। তৃতীয় ওভারে সোহানকে ফেরান এই পেসার। দলের ৩৩ রানে সোহান ফেরেন ১০ বলে ১৭ রান করে। 

উত্তরাঞ্চলের ৬৫ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার তামিমও। ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৩ রান করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর দ্রুত অমিত হাসান (৯) ও আবদুল্লাহ আল মামুনের (৮) উইকেট হারায় তারা। তখন হারের শঙ্কা জেগে ওঠে উত্তরাঞ্চলের। 

পঞ্চম উইকেটে তাইবুর রহমান ও প্রীতম কুমারের ৯০ রানের জুটিতে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে উত্তরাঞ্চল। তাইবুরকে (২৪) ফিরিয়ে পূর্বাঞ্চলকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। ষষ্ঠ উইকেটে প্রীতমের সঙ্গে ৮০ রানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন আকবর। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭৬ রান করার পর খামখেয়ালি এক রানআউট হন প্রীতম। তবে তখন দলে রান ২৫৮। পরে নাহিদুলকে সঙ্গে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন আকবর। ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন উত্তরাঞ্চলের অধিনায়ক। পূর্বাঞ্চলের হয়ে ২টি উইকেট নিয়েছেন নাসুম।

বিসিএলের লিস্ট ‘এ’ সংস্করণের প্রথম পর্বের সব ম্যাচই হয়েছে কক্সবাজারে। তবে আজ পূর্বাঞ্চল-উত্তরাঞ্চলের ফাইনাল হয়েছে মিরপুরে। এই মৌসুমেই প্রথমবারের মতো বিসিএল প্রথম শ্রেণির সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পূর্বাঞ্চল। তাদের সামনে সুবর্ণ সুযোগ ছিল লিস্ট ‘এ’ সংস্করণেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।

তবে শিরোপার লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে পূর্বাঞ্চল। প্রথম ওভারেই উত্তরাঞ্চলের পেসার শহিদুল ইসলামের শিকার হয়েছেন ওপেনার সৈকত আলী (৪)। ৭ম ওভারে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা মাহমুদুল হাসান জয়কে (১৬) ফেরান নাহিদ। দলের ৫৮ রানে ফেরেন মুমিনুল হক (৮)। দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপর্যয়ে পড়ে পূর্বাঞ্চল।

তখনো একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখেশুনে খেলছিলেন আরেক ওপেনার ইমন। চতুর্থ উইকেটে দিপুকে সঙ্গে নিয়ে ১২২ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন তিনি। ফলে দলও প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ভালো স্কোরের দিকে এগোয়। কিন্তু ৩৭তম ওভারের প্রথম বলে ইমনকে ফিরিয়ে উত্তরাঞ্চলকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাহিদই। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৯ বলে ৭৩ রান করেন ইমন।

দারুণ ব্যাটিংয়ে ১১৭ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দিপু। শেষ পর্যন্ত দলকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দিতে খেলেছেন ১২২ বলে ১১৩ রানের ইনিংস। মেরেছেন ৯টি চার ও ২টি ছয়। এ ছাড়া ৩৬ বলে ৩৬ এসেছে পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক ইরফান শুক্কুরের ব্যাট থেকে। উত্তরাঞ্চলের হয়ে নাহিদ ১০ ওভারে ৫০ রান দিয়ে শিকার করেছেন ৫ উইকেট। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটাই তাঁর সেরা বোলিং ফিগার। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত