বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার পিছু ছাড়ছে না 'টাইমড আউট' বিতর্ক

মারুফ কিবরিয়া, সৌগত বসু ও ইলিয়াস আহমেদ, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ থেকে
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪, ১১: ৪৫
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪, ১৩: ৫২

ধিকিধিকি আগুন জ্বলে—শ্রীলঙ্কা কাল ট্রফি নিয়ে উদ্‌যাপন করে যেন বাংলাদেশি ব্যান্ড মাইলসের জনপ্রিয় গানটি মনে করিয়ে দিল। তাদের মনে এখনো যেন বিশ্বকাপে দিল্লির সেই ম্যাচের টাইমড আউট বিতর্কের আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে। 

টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে ট্রফি নিয়ে শ্রীলঙ্কা দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটার হাতের ঘড়ি ইঙ্গিত করে ‘টাইমড আউট’ উদ্‌যাপন করেছেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেখেছেন প্রতিপক্ষের ইঙ্গিতপূর্ণ উদ্‌যাপন। সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বললেন, ‘ওরা ওই টাইমড আউট নিয়েই তো দেখিয়েছে! আমার মনে হয়, ওরা এখনো (সেটা থেকে) বের হতে পারে নাই। আমার মনে হয়, ওদের বের হওয়া উচিত। বর্তমানে থাকা উচিত। আমরা খেলার নিয়মের বাইরে কিছু করিনি (বিশ্বকাপে দিল্লির সেই ম্যাচে)। একটু বেশিই মাতামাতি করছে, তো করুক। এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত না।’ 

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সেদিন অবশ্য অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বিপক্ষে টাইমড আউটের বুদ্ধিটা শান্তই দিয়েছিলেন। এখন অধিনায়ক হিসেবে সেই ঘটনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তাঁকেই বেশি সইতে হচ্ছে। কাল সংবাদ সম্মেলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে শান্ত তাই বললেন, ‘ওরা যে এই টাইমড আউটের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, এটা বেশি করে তুলে ধরেন।’ 

অবশ্য সিলেটের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইমড উদ্‌যাপন বাংলাদেশই আগে ফিরিয়ে এনেছে। প্রথম ম্যাচেই লঙ্কান ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দোকে আউট করে এই উদ্‌যাপন করেছিলেন শরীফুল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত সিরিজ জিতে একই উদ্‌যাপন করল পুরো শ্রীলঙ্কা। 

লঙ্কানদের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা কুশল মেন্ডিসকে বেশি বলতে হলো দুই দলের দ্বৈরথ আর বিতর্কিত উদ্‌যাপন নিয়েই। কুশল সতীর্থদের উদ্‌যাপনের সঙ্গী হলেও সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘কেউ কেউ করেছে টাইমড আউট উদ্‌যাপন। তবে আমি জানি না।’ তিনি মনে করেন, যেকোনো উদ্‌যাপন তাঁরা করতেই পারেন। কুশল বললেন, ‘নিজেদের বিষয় নিয়ে আমরা উদ্‌যাপন করতে পারি। আমরা উদ্‌যাপন করেছি কারণ, আমরা খুশি।’ 

তাহলে শান্তর কথাই ঠিক, শ্রীলঙ্কা বের হতেই পারছে না সেই বিতর্ক থেকে। কুশলের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসা সহকারী কোচ নাভিদ নওয়াজ এগিয়ে এসে উত্তরটা দিলেন, ‘আমরা এখান থেকে বেরিয়েছি। এটা এমন একটা উদ্‌যাপন, যেটি তখন ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি করেছিল। খেলার তপ্ত মুহূর্তে এটা হয়েছে। দুই দলেরই উচিত এটা ভুলে যাওয়া।’ 

কিন্তু দুই দলের লড়াইয়ে যে ঝাঁজ, এই দ্বৈরথের একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাভিদ, ‘দুই দলই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলে। পরিবেশ দারুণ। শতভাগ দেয় তারা। মাঠে কারও কারও আবেগের বিস্ফোরণ ঘটে। তবে সীমানার বাইরে তারা সবাই বন্ধুভাবাপন্ন হলেও মাঠে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। এটাই আসলে খেলা। এটাই দুই দল আশা করে।’ 

মাঠে কঠিন লড়াইয়ে কাল বাংলাদেশ হেরে গেল অচেনা এক লঙ্কান পেসারের বিধ্বংসী বোলিংয়ের কাছে। নুয়ান তুশারার বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে বাংলাদেশের যে ব্যাটিং বিপর্যয়, সেটির শুরু শান্তর আউটের মাধ্যমে। সিরিজ হারলেও তিনি অবশ্য অনেক প্রাপ্তি খুঁজে পাচ্ছেন, ‘সিরিজে অনেক ইতিবাচক দিক ছিল। যেভাবে উইকেট হারানোর পরও আমরা ফিরে এসেছি। সিরিজে অনেক ইতিবাচক দিক ছিল, যা ভবিষ্যতে কাজে দেবে।’ 

টি-টোয়েন্টির রোমাঞ্চ শেষে আজ দুই দল চট্টগ্রামে যাচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত