এশিয়া কাপে জটিল সূচির ‘শিকার’ বাংলাদেশ

রানা আব্বাস, ক্যান্ডি থেকে
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১: ২৭
Thumbnail image

ক্যান্ডির কালো মেঘ যখন বৃষ্টি হয়ে ঝরতে শুরু করেছে, বাংলাদেশ দল তখন রওনা দিয়েছে পাকিস্তানে। ক্যান্ডি থেকে সড়কপথে প্রায় তিন ঘণ্টার দূরত্বে কলম্বো বিমানবন্দর। সেখান থেকে ভাড়া করা বিমানে চড়ে সাকিবদের গন্তব্য লাহোরে।

বাংলাদেশ দল এখন পৃথিবীর যেখানেই খেলতে যাক, তাদের ঘিরে সংবাদমাধ্যম কিংবা দর্শকের ভিড় থাকবেই। এশিয়া কাপ কিংবা আইসিসির ইভেন্ট হলে তো কথাই নেই। কিন্তু এবার এশিয়া কাপ এমন এক পদ্ধতিতে হচ্ছে, যেখানে অবতারণা হচ্ছে ব্যতিক্রম কিছু দৃশ্যের। হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ খেলতে যেমন বাংলাদেশকে যেতে হচ্ছে এক দেশ থেকে আরেক দেশে। ভ্রমণঝক্কি থাকলেও দল যতটা সহজে শ্রীলঙ্কা থেকে পাকিস্তানে যেতে পারছে, সংবাদকর্মী কিংবা একজন দর্শকের ক্ষেত্রে বিষয়টি ততই কঠিন।

কলম্বো থেকে লাহোরের কঠিন যাত্রা তবু মানা গেল, কিন্তু অস্বস্তি তো থেকে যাচ্ছে। এক মাস পরে ভারতে হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ। ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক টানাপোড়েনে সযতনে পাকিস্তান সফর এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে। আর সে কারণেই ক্যান্ডিতে আসা বাংলাদেশি দর্শকের ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ গানের মতো বিষণ্ন মনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে লাহোরে হতে যাওয়া বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের জন্য।

কী এক কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। গতবার টুর্নামেন্টে শারজায় নিজেদের প্রথম ম্যাচেই আফগানিস্তানের কাছে হেরে দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একই সমীকরণ নিয়ে খেলতে নেমেছিল। এবার লঙ্কানদের কাছে হেরে আফগানদের খেলতে হবে সেই একই বাঁচা-মরার সমীকরণ নিয়ে। বাংলাদেশ যতটা টেনশন নিয়ে খেলতে নামবে, আফগানিস্তান ততটা নয়। তাদের এশিয়া কাপ অভিযান শুরুই হচ্ছে আজ।

হাইব্রিড মডেলের সূচিতে প্রতিটি দলেরই কিছু না কিছু ‘অ্যাডভান্টেজ’ থাকছে। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা যেমন নিজেদের ঘরের মাঠে শুরু করতে পেরেছে টুর্নামেন্ট। দুই দলই জয় দিয়ে শুরু করেছে। ভারতকে তো হাইব্রিডের ভ্রমণঝক্কিই নিতে হচ্ছে না। ক্যান্ডিতেই গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ। সুপার ফোরে উঠলে বাকি ম্যাচগুলো হবে কলম্বোয়। আফগানিস্তান পাকিস্তানে টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারছে গ্রুপের বাকি দুই দলের পরিস্থিতি দেখে। প্রথমবার এশিয়া কাপ খেলতে আসা নেপালের কাছে এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণই অনেক বড় বিষয়। সে হিসেবে বলা যায়, জটিল এই সূচির সবচেয়ে বড় ‘ভিকটিম’ বাংলাদেশ। সে কারণে বাংলাদেশি দর্শকেরা বড় চিন্তা নিয়ে ক্যান্ডিতে অপেক্ষায়—বাংলাদেশ আদৌ সুপার ফোরে খেলতে শ্রীলঙ্কায় আসতে পারবে কি?

আগামীকাল লাহোরে বাংলাদেশের শুধু আফগানিস্তানকে হারালেই চলছে না, পরশু একই মাঠে শ্রীলঙ্কাকে জিততে হবে আফগানদের বিপক্ষেও। যদি এসব জটিল হিসাব-নিকাশ না মেলে? শ্রীলঙ্কায় খেলা দেখতে বাংলাদেশ থেকে উড়ে আসা রেজাউল করিম চিৎকারই করে উঠলেন, ‘প্লিজ, এমন কঠিন প্রশ্ন করবেন না। আমরা বড় আশা নিয়ে অপেক্ষায় আছি, বাংলাদেশ সুপার ফোরের বাকি ম্যাচ খেলতে শ্রীলঙ্কায় আসবে।’

যদি বাংলাদেশ সুপার ফোরে না-ই যেতে পারে, সাকিবদের মতো রেজাউলরাও বিরস মুখে বাড়ি ফিরবেন গ্রুপ পর্ব শেষেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত