Ajker Patrika

...আমি বোবা হয়ে গেছি!

রানা আব্বাস
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২: ১০
...আমি বোবা হয়ে গেছি!

১২ ম্যাচে ৪৫.৭৫ গড়ে ৩৬৬ রান, ৬.৮১ ইকোনমিতে ১৬ উইকেট—পরিসংখ্যানই বলছে, এবারের বিপিএলে নাসির হোসেন কতটা দুর্দান্ত ছিলেন। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স অসাধারণ হলেও তাঁর দল ঢাকা ডমিনেটরস পারেনি প্লে অফে উঠতে। তবু এই বিপিএল বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকছে নাসিরের কাছে। গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকা অধিনায়ক বললেন নিজের ফেরা, দলের ব্যর্থতাসহ অনেক কিছুই। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: যত বিপিএল খেলেছেন, এটাই কি আপনার সেরা? 
নাসির হোসেন: বিপিএল খেলছি আট-নয় বছর, একটা কি দুটো মিস গেছে। সব মিলিয়ে বলব, এমন মৌসুম আগে কখনো যায়নি। এটার কারণও আছে। সব সময় তো খেলেছি ভালো ভালো দলে। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ হওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে। যখন আপনি চ্যাম্পিয়ন দলে খেলবেন, তখন ওই সুযোগটা কম আসে। এবার একটা চ্যাম্পিয়ন দলে খেললে হয়তো ছয়-সাতে ব্যাটিং করতাম। সাতে ব্যাটিং করলে আমি কী পারফর্ম করতাম? বোলিংয়েও একই বিষয় হতো। মূল বোলাররা থাকে, বোলিংয়ের সুযোগও ওভাবে আসত না। এ বছর আমাদের দল ওভাবে ভালো করতে পারেনি বা সেভাবে বোলারও ছিল না। খেয়াল করবেন, অফ স্পিনার বলতে শুধু আমিই ছিলাম। এ কারণে সুযোগ বেশি এসেছে, আমি শুধু সেটি কাজে লাগিয়েছি। এমন নয় যে আমি দিন-রাত অনুশীলন করে খেলেছি, এমন নয়। আগে একটু সুযোগ কম পেয়েছি, কাজে ওভাবে লাগত না। 

প্রশ্ন: আপনার একটা লম্বা বিরতি পড়েছিল। আপনি কি চ্যালেঞ্জ অনুভব করেছিলেন যে দুর্দান্তভাবে আপনাকে ফিরতে হবে? 
নাসির: অনেক দিন পর বিপিএলে ফিরেছি, আমার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছিল। এমন কিছুই ছিল না যে পারফর্ম করে ফাটায়ে ফেলব—সেটা ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ে। যদি প্রস্তুতির কথা বলেন, এ বছর প্রস্তুতি সবচেয়ে খারাপ ছিল। আমরা চার দিনের ম্যাচ খেলার কদিন পরই খেলেছি বিপিএল। বিপিএলে শুরুতে নেটে এমনও হয়েছে, অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাট এমনিই ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে চলে যাচ্ছে! আমরা যারা চার দিনের ম্যাচ খেলে বিপিএল শুরু করেছি, তাদের প্রস্তুতি ভালো ছিল না। একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এটাকে অজুহাত হিসেবে দেখলে চলবে না। আপনাকে মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে ভালো খেলার। 

প্রশ্ন: আপনি দুর্দান্ত খেললেও আপনার দলের পারফরম্যান্স বলার মতো নয়। একজন অধিনায়ককে তো দিন শেষে দলের পারফরম্যান্স দিয়েই মূল্যায়ন করা হয়। এটা নিয়ে কি একটু আফসোস কাজ করছে? 
নাসির: ক্রিকেট তো গলফ, টেনিস, অ্যাথলেটিকসের মতো একক খেলোয়াড়ের খেলা নয়। এটা দলীয় খেলা, মানে অনেকটা পরিবারের মতো। খেলোয়াড়দের জেলিং (মিশ্রণ) যত ভালো থাকবে, নিজেদের মধ্যে যত ভালো বোঝাপোড়া থাকবে, ফল তত ভালো হবে। মাঠের পারফরম্যান্স পরের কথা। দলটা তাঁরা (স্বত্বাধিকারী) শেষের দিকে করেছেন। এতে হয়েছে কী, যদি আমাকে অধিনায়ক হিসেবে আগেই চিন্তা করতেন এবং সেভাবে আলোচনা করতেন, কেমন দেশি-বিদেশি খেলোয়াড় নেব। তাসকিন-সৌম্য ছিল। এরকম সিনিয়র খেলোয়াড়দের যদি কথাও বলত, তাহলে আমরা কিছু ভালো পরামর্শ বা দিকনির্দেশনা দিতে পারতাম। কিন্তু এরকম হয়নি। ওনারা যেটা মনে করেছেন, সেটাই করেছেন। যেহেতু তাঁরা প্রথমবারের মতো এসেছেন, কিছু জায়গায় ভুল হয়েছে। 

এবারের বিপিএলে ১২ ম্যাচে ৩৬৬ রানের সঙ্গে বোলিংয়ে ১৬ উইকেট নিয়েছেন নাসির হোসেনপ্রশ্ন: টুর্নামেন্ট চলার সময় ঢাকাকে ঘিরে অনেক আলোচনাই হয়েছে। বিশেষ করে পারিশ্রমিকের ইস্যু নিয়ে। এসব কি নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে বাধাগ্রস্ত করেছে? 
নাসির: এসব কোনো ডিস্টার্বই না। আপনি যখন মাঠে বা ২২ গজে যাবেন, তখন কে টাকা পেয়েছে বা কী হয়েছে, এসব কিছুই মাথায় থাকে না। তখন সব মনোযোগ বলটার দিকেই থাকে। কেউ যদি বলে, পারিশ্রমিক পাইনি—এসব কিছুই তখন গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনি যখন মাঠে নেমে যাবেন, তখন আর কিছুই আপনার মাথায় আসে না। খারাপ খেললে তখন এসব অজুহাত হিসেবেই আসে। কেউ যদি বলে খেলব নাকি টাকার চিন্তা করব, এসব তখন অজুহাত। যখন বল হাতে নিই বা ব্যাটিংয়ে নামি তখন দুনিয়ার কিছুই মনে থাকে না। 

প্রশ্ন: এবারের বিপিএলে অধিনায়ক হিসেবে কোন কাজটা সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে? 
নাসির: দল তো ভালো করেনি। দল ভালো করলে সত্যি খুব ভালো লাগত। যদি আমরা সেমিফাইনালও (প্লে অফ) খেলতাম, ভালো হতো। চ্যালেঞ্জিং তো ছিলই, চেষ্টা করেছি জিততে। তবে অবশ্যই উপভোগ করেছি। দল তো অনেকটা পরিবারের মতো। যদি মন মরা হয়ে থাকেন, উপভোগ করা বন্ধ করে দেন, তাহলে তো ওভাবে ভালো খেলতে পারবেন না। প্রতিটি মানুষ একেকভাবে জীবন উপভোগ করে। আমরা একসঙ্গে প্রায় দেড় মাস ছিলাম। উপভোগের বিষয়গুলো বন্ধ করে দিলে তখন দেড় মাস দেড় বছরের মতো মনে হবে। খেলা আর ভালো লাগবে না। 

প্রশ্ন: মাঝে একটা আপনার বিরতি ছিল, এটাই কি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় মনে হয়েছে? 
নাসির: কঠিন সময় তো অবশ্যই ছিল। গত বছর আমি বিপিএল খেলিনি। চোটে পড়েছিলাম। অনেকে হাবিজাবিও ভেবেছে আমাকে নিয়ে। পারিবারিকভাবেও কিছু সমস্যা ছিল। সব মিলিয়ে আমার কঠিন সময়ই গেছে। কিন্তু এটা বলার সুযোগ নেই যে এসব কারণে ভালো খেলতে পারছি না। তাহলে মিথ্যা বলা হবে। মাঠে যখন নামি, তখন এসব কিছুই মাথায় থাকে না। 

প্রশ্ন: এই কঠিন সময়ে নিজেকে উদ্বুদ্ধ বা তৈরি করেছেন কীভাবে? 
নাসির: এখানে ভালো খেললে জাতীয় দলে সুযোগ পাব, এটা ভেবে কখনোই ক্রিকেট খেলিনি। এবার চেয়েছি অধিনায়ক হিসেবে ভালো খেলতে, যেন দলের উপকার হয়, দল যেন জেতে। বলেকয়ে ভালো করতে পারবেন না। যখন কিছুর আশায় ভালো করতে চাইবেন, তখনই কাজটা কঠিন হয়ে যাবে। এখানে ভালো করলে জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন, ওখানে ডাক পাবেন—যখন এটা মাথায় ঢুকিয়ে ফেলবেন, কাজ কঠিন হয়ে যাবে। 

আবারো জাতীয় দলে ফেরার আশা দেখেন নাসির হোসেন।প্রশ্ন: তবু যদি জিজ্ঞেস করি, বিপিএলে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশ দলে ফেরার একটা আশা কি তৈরি হয়েছে মনে? 
নাসির: সব খেলোয়াড়েরই এই আশা, স্বপ্ন থাকেই। এমন নয়, আমার আশা বা ইচ্ছা নেই (জাতীয় দলে ফেরার)। কিন্তু এটা আমার হাতে নেই। আমার হাতে যেটা ছিল সে চেষ্টাই করেছি। আমার হাতে ১২টা ম্যাচ ছিল, ১২টিতেই চেষ্টা করেছি ভালো করার। কোনো ম্যাচে হয়েছে, কোনো ম্যাচে হয়নি। শতভাগ এফোর্ট দিয়ে ভালো করার বিষয়টি আমার হাতে। তবে জাতীয় দলে ফেরার বিষয়টি আমার হাতে নেই। ওটা নিয়ে এত চিন্তাও করতে চাই না। চিন্তা করা মানে সময় নষ্ট। 

প্রশ্ন: গত দুই-তিন বছরে আপনার জীবনে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। ব্যক্তিগত জীবনের এই পরিবর্তনের প্রভাব খেলায় কতটা পড়েছে? 
নাসির: বিষয়টা হচ্ছে, একটা সময় মানুষ আমাকে নিয়ে বলেছে, ও কত রিল্যাক্স, মাঠে শিস বাজায়, গান গায়, কত এনজয় করে খেলে বলেই পারফর্ম করে। আবার যখন ভালো খেলতে পারিনি, তখন বলেছে, ও খেলবে কী, মাঠেই তো সিরিয়াস না! গান গেয়ে বেড়ায়। হাসাহাসি, ফাজলামো করে বেড়ায়। আমি আসলে আগে যেমন ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। 

প্রশ্ন: জীবনে কিছু পরিবর্তন তো এসেছেই, আপনি এখন সন্তানের বাবা...
নাসির: সে তো বটেই। এই যে আমার শরীর খারাপ, তবু সকালে টিম হোটেল থেকে বাসায় এসেছি শুধু বাচ্চাটাকে দেখতে। ওর সঙ্গে সময় কাটালাম, খেললাম। এখন (সন্ধ্যায়) যাচ্ছি রংপুরে। পরিবর্তন এতটুকুই। 

প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুর তিন-চার বছর পরে আপনার এত উত্থান-পতন, এটা নিয়ে আফসোস কাজ করে না? 
নাসির: গাছে যেমন পানি দেবেন, যেমন পরিচর্যা করবেন, সেটা তেমনই ফল দেবে। গাছে সার-পানি দেবেন না, অথচ কচুগাছে খুঁজছেন আপেল! তাহলে তো সমস্যা। 

প্রশ্ন: জাতীয় দলের বাইরে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না পাওয়াটাই কি তবে মূল কারণ? 
নাসির: সুযোগ-সুবিধা আবার কী? এসবের কিছুই পাইনি। পাইনি বলতে, আমাদেরও কিছু সমস্যা আছে। ব্যক্তিগত কোচ নেই, এটা-ওটা নেই। জাতীয় দলের বাইরে চলে গেলে বিষয়টা পুরোই অন্যরকম হয়ে যায়। এমনই টিম বয়ের কথাই বলি, জাতীয় দলে থাকলে ওরা একভাবে দেখবে, না থাকলে আরেকভাবে। আর বাকি সব তো বাদই দিলাম। 

প্রশ্ন: চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আসছেন, কী মনে হচ্ছে এবার, কেমন হতে পারেন তিনি? 
নাসির: তাঁর সময়েই আমি বাদ পড়েছি। তবে তাঁকে নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই। বোবার কোনো শত্রু নেই। আমি বোবা হয়ে গেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশকে হ্যাটট্রিক ফাইনাল খেলতে দিল না পাকিস্তান

ক্রীড়া ডেস্ক    
শুরুতে উইকেট ফেললেও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে হেরে সেমি থেকেই বিদায় বাংলাদেশের। ছবি: এসিসি
শুরুতে উইকেট ফেললেও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে হেরে সেমি থেকেই বিদায় বাংলাদেশের। ছবি: এসিসি

নকআউট পর্বে যেমন প্রত্যাশা ছিল, আজিজুল হাকিম তামিমের বাংলাদেশ সেটা পূরণ করতে পারেনি। দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তামিম-জাওয়াদ আবরারদের হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে পাকিস্তান।

২০২৩, ২০২৪ সালে টানা দুইবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপজয়ী বাংলাদেশ এবার নেমেছিল শিরোপা ধরে রাখার মিশনে। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল তামিমের দল। তবে বাংলাদেশকে হ্যাটট্রিক ফাইনাল খেলতে দিল না পাকিস্তান। ৮ উইকেটে জিতে চতুর্থবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল পাকিস্তান।

দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে আজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে চার ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল। ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৫০ ওভার থেকে কমিয়ে ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। ২৭ ওভারে ১২২ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় ১ রানেই। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে ইকবাল হোসেন ইমনের অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল খোঁচা দিতে যান পাকিস্তানি ওপেনার হামজা জহুর। বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সহজেই সেটা তালুবন্দী করেছেন। দুই বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি হামজা।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির কারণে সময়মতো শুরু হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে শুরু হলে ম্যাচটা ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১২১ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সামিউন বশির রাতুল। ৩৭ বলের ইনিংসে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন তিনি।

পাকিস্তানের সুবহান ৬ ওভারে ২০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। হুজাইফা আহসান নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সায়েম, আহমেদ হুসেইন ও আলী রাজা। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রাতুল রানআউট হওয়াতেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের বিপক্ষে এলোমেলো ব্যাটিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৯
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি

গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে ওঠা বাংলাদেশকে আজ বড্ড অচেনা লেগেছে। পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ল আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। বলের লাইন না বুঝে খেলতে গিয়েই বেশির ভাগ উইকেট হারিয়েছে তামিমের দল।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির কারণে সময়মতো শুরু হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে যখন ম্যাচ শুরু হয়, তখন দৈর্ঘ্য ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১২১ রানে।

পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫.১ ওভারে ২ উইকেটে ২৪ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। দুই ওপেনারই দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন। রিফাত বেগ ১৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেছেন ১৪ রান। ওপেনিংয়ে তাঁর আরেক সঙ্গী জাওয়াদ আবরার করেছেন ৯ রান। দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক তামিম ও কালাম সিদ্দিকী। ৪৩ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা (তামিম-কালাম)। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে তামিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আব্দুল সুবহান। ২৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তামিমের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। বড় শট খেলতে গিয়েই আকাশে বল তুলে দেন আবরার-শেখ পারভেজ জীবনরা। পাকিস্তানি ফিল্ডাররা সেই ক্যাচগুলো তালুবন্দী করেছেন। ২৬.৩ ওভারে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে তামিমের বাংলাদেশ। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সামিউন বশির রাতুল। ৩৭ বলের ইনিংসে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন তিনি।

পাকিস্তানের সুবহান ৬ ওভারে ২০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। হুজাইফা নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সায়েম, আহমেদ হুসেইন ও আলী রাজা। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রাতুল রানআউট হওয়াতেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেয়েদের বিসিএলে রোমাঞ্চের এক দিন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আজ তিনটি ফিফটি এসেছে। ছবি: বিসিবি
আজ তিনটি ফিফটি এসেছে। ছবি: বিসিবি

মেয়েদের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) আজ তিনটি ফিফটি হয়েছে। অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন দিলারা দোলা, সোবহানা মোস্তারি ও রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। এর মধ্যে বৃথা গেছে ঝিলিকের ফিফটি। তবে ঠিকই জিতেছে দোলা ও মোস্তারির দল। তিন ফিফটি ছাপিয়ে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে আলোচনায় এসেছে দুটি ম্যাচ।

টানটান উত্তেজনার পর শেষ বলে মীমাংসা হয়েছে সেন্ট্রাল জোন এবং ইস্ট জোনের ম্যাচ। রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে ১ রানে জিতেছে সেন্ট্রাল জোন। তাদের করা ১৫৬ রানের জবাবে ১৫৫ রানে থামে ইস্ট জোন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে তাদের সামনে ১২ রানের সমীকরণ ছিল। জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনার করা সে ওভারে ১০ রানের বেশি নিতে পারেননি ইস্ট জোনের দুই ব্যাটার ফাহিমা খাতুন ও মুরশিদা খাতুন।

প্রথম ৪ বলে সমান রান দেন সুমনা। তাঁর করা পঞ্চম বল থেকে বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ফাহিমা। জেতার জন্য শেষ বলে করতে হতো ৪ রান। এ যাত্রায় ২ রানের বেশি নিতে পারেননি ফাহিমা। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সেন্ট্রাল জোন। এর আগে দোলা ও নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাটে চড়ে এই পুঁজি পায় তারা। ৫৫ বলে ১৩ চারে ৮৫ রান করেন দোলা। জ্যোতির অবদান ৪৬ রান।

একই ভেন্যুতে সাউথ জোনকে ৪ রানে হারিয়েছে নর্থ জোন। মোস্তারির ৬৯ রানের ইনিংসে ভর করে ১৩১ রানের সংগ্রহ পায় তারা। শারমিন সুলতানার অবদান ৩৭ রান। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি সাউথ জোন। ৬ উইকেট হাতে রেখে শেষ ওভারে তাদের করতে হতো ১৩ রান। উইকেটে লতা মন্ডল ও সুলতানা খাতুনের মতো দুই সেট ব্যাটার থাকায় জেতার স্বপ্ন বুনছিল সাউথ জোন।

সানজিদা আক্তার মেঘলার প্রথম বলে চার মেরে দারুণ শুরু করেন সুলতানা। দ্বিতীয় বলে নেন ২ রান। শেষ ৪ বলে তাদের সামনে সমীকরণ ছিল ৭ রানের। এমন সময়ই ছন্দপতন। তৃতীয় বলে রান আউট হন ১৬ বলে ২৬ রান করা সুলতানা। পরের বলে মারুফা আক্তারকে ফেরান মেঘলা। পঞ্চম বলে ২ রান নেন আয়শা আক্তার। শেষ বলে তাঁকেও আউট করেন মেঘলা। শেষ ওভারে ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মেঘলা। ৪ ওভারে ২২ রান দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইরানে ম্যাচ না খেলে দুই বছর নিষিদ্ধ ভারতের মোহনবাগান

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
মোহনবাগানকে শাস্তি দিল এএফসি। ছবি: সংগৃহীত
মোহনবাগানকে শাস্তি দিল এএফসি। ছবি: সংগৃহীত

সেপ্টেম্বরে ইরানে ম্যাচ খেলার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু তিন মাস আগে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের টুর্নামেন্টের ম্যাচ খেলতে যায়নি ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। সেই ঘটনার কঠিন শাস্তি পেল মোহনবাগান। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা গুনতে হবে তাদের।

এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা কমিটি পরশু মোহনবাগানকে কঠিন শাস্তি দিয়েছে। ২০২৭-২৮ মৌসুম পর্যন্ত কোনো এশিয়ান প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবে না। একই সঙ্গে তাদের ১ লাখ ৭২৯ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এই ১ লাখ ডলারের মধ্যে ৫০ হাজার ডলারের (৬১ লাখ টাকা) জরিমানার শাস্তিটা মূলত সেপ্টেম্বরে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে। এএফসি ও ইরানি ক্লাব সেপাহান এসসি’র যে ক্ষতিপূরণ হয়েছে, সেক্ষেত্রে আরও বেশি ৫০৭২৯ ডলার দিতে হবে বলে এএফসির নির্দেশ। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ৬২ লাখ টাকা।

সেপাহানের বিপক্ষে সেপ্টেম্বরে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় গ্রুপের ম্যাচ খেলতে ইরানে যাওয়ার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু ইরানে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও চিকিৎসা বিমা কভারেজের সমস্যার কথা উল্লেখ করেছিল মোহনবাগান। এএফসি এরপর তাদের সব ম্যাচ বাতিল করেছে। এএফসির দ্বিতীয় স্তরের এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কোনো ধরনের ভর্তুকিও পাবে না ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব।

মোহনবাগান ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সেপাহান এসসির বিপক্ষে খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছিল সিএএস। গত বছর ইরানের আরেক ক্লাব ট্র্যাকটর এসসির বিপক্ষে খেলেনি মোহনবাগান। ট্র্যাকটর এসসি-মোহনবাগান ম্যাচটি ইরানেই হওয়ার কথা ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত