ফুটবল ম্যাচ তো নয়, যেন কুরুক্ষেত্র

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৩, ১৭: ৫৮

ফাইনাল বলে কথা। ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’—সেই কথার প্রচলন তো আর এমনি এমনি হয়নি। অনূর্ধ্ব-২২ সাউথইস্ট এশিয়ান গেমসের ফাইনালেও তার প্রমাণ মেলল। গোলবন্যার ম্যাচে মারামারি ও লাল কার্ড—কী হয়নি ম্যাচটিতে! 

গতকাল মঙ্গলবার কম্বোডিয়ার নম পেনে এমন আগুনে ফাইনালই হয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে। যেখানে অতিরিক্ত সময়ে ইন্দোনেশিয়া ৫-২ গোলে হারিয়েছে থাইল্যান্ডকে। 

থাইল্যান্ড স্টপেজ বা অতিরিক্ত সময়ে সমতায় ফেরার পর দুই দলের বেঞ্চে মারামারি শুরু হয়। তবে ইন্দোনেশিয়া আবারও এগিয়ে যায় অতিরিক্ত ১৫ মিনিটের শুরুতে। ব্যবধান করে নেয়ে ৩-২। 

রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সময় মাঠে থাইল্যান্ডের খেলোয়াড় ছিল ৮ জন। তিনজনই লাল কার্ড দেখেন তাদের। হলুদ কার্ড হয়েছে ১১ টি। যেখানে চারটি দেখেছে ইন্দোনেশিয়ার খেলোয়াড়েরা। মাঠে এমন রেসলিং খেলার জন্য ম্যাচ শেষে অবশ্য ক্ষমা চেয়েছে দুই দলই। 

থাইল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ‘মাঠের মধ্যে যে বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেছে তার জন্য অ্যাসোসিয়েশন হতাশ ও ক্ষমাপ্রার্থী।’ 

এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দিতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করার কথাও জানিয়েছে থাইল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। অভিযুক্তদের কোনো সুরক্ষা দেবে না জানিয়েছে তারা। 

এমন ঘটনায় অনুতপ্ত ইন্দোনেশিয়ার প্রধান কোচ ইন্দ্রা সিয়াফ্রিও। তিনি বলেছেন, ‘দুই পক্ষের কাছেই আমি অনুতপ্ত। তবে এটা এখানেই শেষ। আমরা ইতিমধ্যে একজন আরেকজনের সঙ্গে আলিঙ্গন করেছি। এটাই ফুটবল।’ 

ফাইনাল ম্যাচটিতে রামাধান সানানটার জোড়া গোলে প্রথমার্ধেই দুই গোলে এগিয়ে যায় ইন্দোনেশিয়া। তবে দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল শোধ দিয়ে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় থাইল্যান্ড। এ সময় একটি ফ্রি-কিক নিয়ে রেফারি বাঁশি বাজালে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। ৬৫ মিনিটে ইয়োদসাংওয়ালের ফ্রি-কিক থেকে একটি গোল শোধ দিলে থাইল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা উদ্যাপনের জন্য দৌড়ে ইন্দোনেশিয়ার বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যায়। এরপরই দুই পক্ষ প্রথমবার হাতাহাতিতে জড়ায়। 

এরপর অতিরিক্ত সময়ের সপ্তম মিনিটে ইন্দোনেশিয়া নাটকীয়ভাবে সমতায় ফেরে। পরে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। যেখানে শুরুর চতুর্থ মিনিটে ইন্দোনেশিয়া ব্যবধানটা ৩-২ করে নেয়। ইরফান জাওহারের গোলটির পর মাঠেই ঘুষি-লাথিতে জড়িয়ে পড়ে দুই দলের খেলোয়াড়েরা। পরে নিরাপত্তাকর্মীদের হস্তক্ষেপে শান্ত করতে হয় তাদের। 

প্রথম ঘটনায় দুই দলের একজন করে লাল কার্ড দেখেন। দ্বিতীয় ঘটনায় মাঠ থেকে বরখাস্ত হোন দুই দলের কোচিং স্টাফের সদস্যরাও। পরে ফজর রহমান ও বেকম্যান পুত্রর গোলে ব্যবধানটা ৫-২ করে ১৯৯১ সালের পর প্রথমবার সাউথইস্ট এশিয়ান গেমসের মেডেল নিশ্চিত করে ইন্দোনেশিয়া। 

এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত