শেষ সময়ের গোলে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ১৯: ১৫

সাইড বেঞ্চে বসে নিশ্চয় আক্ষেপে পুড়েছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। হাঁটুর চোট তাঁকে দর্শক বানিয়ে না রাখলে হয়তো ম্যাচের চিত্রটা ভিন্ন কিছুও হতে পারত। কিন্তু হয়নি। সাইড বেঞ্চে বসে শামসুন্নাহার দেখেছেন সতীর্থদের সুযোগ নষ্টের মহড়া। দেখেছেন একটা দল হয়ে ইরানের ম্যাচের ফল ঘুরিয়ে দেওয়া এক গোল। 

এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় পর্বে খেলতে হলে র‍্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা ইরানকে হারাতেই হতো বাংলাদেশকে। ৮৪ মিনিট পর্যন্ত সুযোগও ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু ৮৫ মিনিটে স্বাগতিকদের হৃদয় ভেঙেছেন ইরানি ফরোয়ার্ড নেগিন জানদি। তাঁর গোলে বাংলাদেশকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় পর্বে উঠে গেছে ইরান। 

আজ কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে জিততে পারলে ইতিহাসই গড়তো বাংলাদেশ। অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে এর আগে দুবার এশিয়ান কাপে খেলেছে লাল-সবুজরা। অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে প্রথমবারের মতো সুযোগ ছিল প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার। তুর্কমিনিস্তানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে জেগে ছিল সম্ভাবনা কিন্তু সম্ভাবনা ভেস্তে গেল ইরানের কাছে হেরে। বাছাইপর্বের প্রথম পর্বে দুই ম্যাচ জিতে ‘এইচ’ গ্রুপ থেকে গ্রুপসেরা ইরান। এক ম্যাচ জিতে রানার্সআপ বাংলাদেশ। 

ইরানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশ আজকেও পায়নি দলের সেরা খেলোয়াড় শামসুন্নাহার জুনিয়রকে। হাঁটুর চোটে লাল-সবুজ অধিনায়ক এ ম্যাচেও ছিলেন একাদশের বাইরে। পরিবর্তন আসেনি তুর্কমিনিস্তানের বিপক্ষে একাদশেও। শামসুন্নাহারের এই অভাবটা ভীষণ ভোগাল স্বাগতিকদের। প্রথমার্ধে নষ্ট হয়েছে দারুণ দুই সুযোগ। 

র‍্যাঙ্কিংয়ে পার্থক্য থাকলেও সমানে সমানে লড়াইয়ের প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ-ইরান ম্যাচে। ম্যাচে হলোও তাই। দুই দলই খেলেছে গতিময় ফুটবল। তবে আক্রমণে যেখানে ইরান খেলেছে গোছানো ফুটবল সেখানে আক্রমণে ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখাতে গিয়ে সুযোগ হাতছাড়া বাংলাদেশের। 

গোছানো ফুটবলে ম্যাচের প্রথম সুযোগটা ইরানের। ১০ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে ফরোয়ার্ড নাসতারান মোহাম্মদখানির মাটি কামড়ানো শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। তিন মিনিট পর আরেক ফরোয়ার্ড হাসতি ফরোজানদেহর ফ্রি-কিকও হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। 

 ১৭ মিনিটে আবারও আক্রমণে ইরান। হাসতি ফরোজানদেহের পাস থেকে নেগিন জানদি বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে একা পেয়েও বল ঠেলতে পারেননি জালে। 

ইরানের আক্রমণ ঠেকিয়ে ধীরে ধীরে আক্রমণে উঠতে শুরু করে বাংলাদেশও। ম্যাচের ২০ মিনিটে দুইবার পোস্টের সামনে গোলের সুযোগ হারিয়েছেন স্বপ্না রানীরা। প্রথম সুযোগে স্বপ্নার শট থেকে আকলিমা খাতুন বলে পা ছোঁয়াতে পারলেই গোল পেত বাংলাদেশ। ফিরতি বলে শট নেন স্বপ্না, তাঁর সেই শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। 

বাংলাদেশ গোল এগিয়ে যেতে পারত ৩২ মিনিটেও। বক্সের ভেতর থেকে স্বপ্নার পাসে বলে পা গলাতে ব্যর্থ হোন আকলিমা খাতুন। বল পান আইরিন খাতুন। ডান পোস্টে নেওয়া আইরিনের শটে ইরানি গোলরক্ষক হার মানলেও বল পৌঁছায়নি জাল অবদি। 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও হয়েছে ইরানের আক্রমণ দিয়ে। ৪৮ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে রওজিন তামরিনের শট পোস্টে থাকলে বিপদে পড়তে পারত বাংলাদেশ।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিপদ এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে স্বাগতিকদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় ইরান। গোল কিক থেকে এক সতীর্থের হেড থেকে বাংলাদেশের রক্ষণভাগে বিরাট শূন্যস্থান খুঁজে নেন ইরানি ফরোয়ার্ড নেগিন জানদি। সামনে ছিলেন কেবল বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। সামনে এসে নেগিনের আক্রমণ ঠেকাতে চেষ্টা করেছিলেন রুপনা তবে লাভ হয়নি। তাঁকে পরাস্ত করে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়িয়ে খেলার ফল ঘুরিয়ে দেয় ইরান। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত