মরক্কোর রূপকথার নায়কদের থামিয়ে ফাইনালে ফরাসিরা

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০৩: ৫৪

কাতার বিশ্বকাপে নতুন নতুন রূপকথা লেখার গল্পটা আর দীর্ঘায়িত হলো মরক্কোর। একের পর এক জায়ান্ট বধ করে সেমিফাইনালে ওঠা যে আকস্মিক সাফল্য নয় তার প্রমাণ আরেকবার দিল তারা। কিন্তু আল বায়েত স্টেডিয়ামে মরক্কোকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়াবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ফ্রান্স। 

টানা দ্বিতীয় শিরোপা জেতার আশায় আগামী রোববার লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। এই জয় দিয়ে এক অনন্য রেকর্ডও গড়লেন ফরাসি কোচ। বিশ্বকাপ ইতিহাসে চতুর্থ কোচ হিসেবে কোনো দলকে টানা দুটি ফাইনালে পৌঁছে দিলেন দেশম। 

আফ্রিকা ও আরব অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে শেষ চারে ওঠেছিল মরক্কো। ফাইনালে ওঠে ইতিহাসটা আরেকটু রাঙাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি তারা। কিন্তু প্রতিপক্ষ যেখানে দুইবারের বিশ্বজয়ী ফ্রান্স, ফরাসি সৌরভের মায়াজালে বন্দী হতে হলো মরক্কোর রূপকথার নায়কদের। 

ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। পঞ্চম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে রাফায়েল ভারানের বাড়ানো বল ধরে মরক্কোর বিপৎসীমায় ঢুকে পড়া আঁতোয়া গ্রিজমান বল ঠেলে দেন ডি-বক্সে থাকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে। জটলার ভেতর থেকে ফরাসি ফরোয়ার্ড দুইবার শট নিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু মরোক্কান ডিফেন্ডারদের বাধায় তিনি সফল না হলেও দুর্দান্ত এক অ্যাক্রোবেটিক হাফ ভলিতে গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনুকে পরাস্ত করেন থিও এরনান্দেজ। 

এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আক্রমণে ধার বাড়ায় মরক্কো। ১০ মিনিটে আজেদিন উনাহির শট ঝাঁপিয়ে পড়ে হুগো লরিস না ঠেকালে সমতায় ফিরতে পারত মরক্কো। এই ম্যাচ দিয়ে গোলরক্ষকদের মধ্যে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১৯ ম্যাচ খেলা জার্মানির ম্যানুয়েল নয়্যারকে ছুঁয়ে ফেললেন ফরাসি গোলরক্ষক।

১৭ মিনিটে ঝোড়ো গতিতে ছুটে গোলপোস্টের বাইরে শট নেন হাকিম জিয়েশ। পরের মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় ফ্রান্স। মরক্কোর ডিফেন্ডার রোমেইন সাইসকে ফাঁকি দিয়ে উড়ে আসা বলে জোরালো শট নিয়েছিলেন অলিভিয়ের জিরু। কিন্তু সেই শটে বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট।  

৩৬ মিনিটে ফের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় কোচ দেশমের দল। মাঝমাঠ থেকে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনির বাড়ানো বলে শট নেন এমবাপ্পে। কিন্তু সেই শট গোলপোস্টের সামনে থেকে মুক্ত করেন আশরাফ হাকিমি। ফিরতি বলে শট নিলেও জালে পাঠাতে পারেননি জিরু। 

৪৪ মিনিটে ফরাসিদের হাসি প্রায় কেড়ে নিয়েছিলেন জাওয়াদ এল ইয়ামিক। কর্নার কিক থেকে জিরুর মাথা ছুঁয়ে আসা বলে চোখ ধাঁধানো বাইসাইকেল কিক নেন মরক্কোন ডিফেন্ডার। লরিসও ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তবে বল গোলপোস্টে লাগায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে দেশমের দল। প্রথমার্ধের যোগ করা পরের দুই মিনিটে লরিসের আরও দুটি পরীক্ষা নেন রেগরাগুইর শিষ্যরা। 

বিরতির পর পর গোলের দুটি সুযোগ পান এমবাপ্পে। ৫০তম মিনিট জিয়েশের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে ফ্রান্সের বক্সে ঢুকে পড়েন হাকিমি। কিন্তু ভাঙতে পারেননি ফরাসিদের রক্ষণদেয়াল। ৫২ মিনিটে সমতায় ফেরার পরপর দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে মরক্কো। ৪ মিনিট পর আরও একটি সুযোগ ব্যর্থ হয়ে যায় হাকিমির। 

৭২ মিনিটে গ্রিজমানের ফ্রি-কিক থেকে মার্কাস থুরামের হেড চলে যায় গোলপোস্টের বাইরে। ৪ মিনিট পর গোল শোধের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও সদ্ব্যবহার করতে পারেননি আবদেররাজ্জাক হামদাল্লাহ। দুই মিনিট পর তাঁর আরেকটি শট চলে যায় গোলপোস্টের বাইরে। একের পর এক সুযোগ হারানোর প্রতিদানই দিতে হয় মরক্কোকে। ৭৯ মিনিটে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তেঁড়েফুঁড়ে বক্সে ঢুকে শট নেন এমবাপ্পে। কিন্তু মরক্কোর ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল চলে যায় গোলপোস্টের পাশে দাঁড়ানো রান্দাল কোলো মুয়ানির কাছে। ওসমানে দেম্বেলের বদলি হিসেবে মাঠে নামার মাত্র ৪৪ সেকেন্ডের মাথায় জালের দেখা পান তিনি। তাঁর গোল দেখে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে দেখা যায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁকে। 

অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে উনাহির শট গোললাইন থেকে জুলস কুন্দে মুক্ত না করলে ব্যবধান কমাতে পারত মরক্কো। ফাইনালের টিকিট না পেলেও পুরো আসরজুড়ে হাকিমি-জিয়েশদের মনভুলানো পারফরম্যান্সও ঠিকই মন জিতে নিয়েছে লাখো ফুটবলপ্রেমীর। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত