রেফারির ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ সিদ্ধান্তে আবারও কপাল পুড়ল বসুন্ধরার 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

ম্যাচের পর রেফারিকে ঘিরে ধরলেন বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে সেই প্রথমার্ধেই! ভিয়েতানামিজ রেফারি এনগো দুই লানের তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তার এক সিদ্ধান্তে বসুন্ধরার হৃদয় যে আবারও ভাঙল, সেটা তার বোঝার কথাও না অবশ্য। 

 ২০২১ এএফসি কাপের শেষ ম্যাচে মোহনবাগানের বিপক্ষে জিততেই হতো বসুন্ধরাকে। সেই ম্যাচে সুশান্ত ত্রিপুরাকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দিয়েছিলেন রেফারি। ম্যাচটা ড্র করে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে বাদ পড়েছিল বাংলাদেশ সেরা দলটা। ওডিশা এএফসির বিপক্ষে আবারও এমন কিছু হতে পারে সেই শঙ্কা থেকে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষ রেফারিং চেয়েছিলেন বসুন্ধরা কোচ। 

শেষ পর্যন্ত কোচ অস্কার ব্রুজোনের শঙ্কাটাই সত্যি হলো। ওডিশার বিপক্ষে আজ প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বসুন্ধরা মিডফিল্ডার আসরোর গফুরভকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে দিলেন রেফারি। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওডিশার কাছে ১০ জনের দল নিয়ে ১-০ গোলে হেরে গেল বসুন্ধরা। ২০২১,২২ সালের পর ২০২৩ এএফসি কাপে শেষ ম্যাচে গিয়ে আবারও হৃদয় ভাঙল বসুন্ধরার। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে সেরা হয়ে পরের পর্বে ওডিশা। 

অথচ সহজ সমীকরণ নিয়েই আজ ওডিশার মুখোমুখি হয়েছিল বসুন্ধরা। এক পয়েন্ট হলেই আঞ্চলিক সেমিফাইনালে খেলত বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। চোট থেকে সেরে এই ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন দলের সেরা তারকা রবসন রবিনহো। চোট থেকে এই ম্যাচ দিয়ে ফেরেন চার্লস দিদিয়েরও। 

ম্যাচের প্রথমার্ধ তুলনামূলক আক্রমণাত্মক খেললেও বসুন্ধরাকে তেমন কোনো বিপদে ফেলতে পারেনি ওডিশা। গোলশূন্য ড্র হলো প্রথম ৪৫ মিনিট। কিন্তু ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিল অতিরিক্ত সময়ে গফুরভের লাল কার্ড। ওডিশার মরোক্কায়ান মিডফিল্ডার আহমেদ জাহুকে পেছন থেকে ট্যাকল করেছিলেন পুরো টুর্নামেন্ট কোনো কার্ড না দেখা গফুরভ, রেফারি তাঁকেই দেখালেন লাল কার্ড। টিভি রিপ্লেতে দেখে মনে হয়েছে, লাল কার্ড দেখার মতো কোনো ফাউল করেননি গফুরভ। তাই রেফারির এমন সিদ্ধান্ত মানতে পারছিলেন না তিনি নিজেও। চোখের পানিতে মাঠ ছাড়তে হলো তাকে। 

প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে অভাবনীয় এক দৃশ্য। দুই হাত ‘আত্মসমর্পণ’ ভঙ্গিতে ওঠানো কোচ ব্রুজোনের। বিশ্বনাথ ঘোষ এসে কোচকে শান্ত করার চেষ্টা করলেন। একই ভঙ্গিতে ডাগ আউটে বসুন্ধরার পুরো কোচিং প্যানেল তখন প্রতিবাদে সরব। 

১০ জনের বসুন্ধরাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে চেপে ধরে ওডিশা। স্বাগতিকদের আক্রমণ ঠেকিয়ে ৫৪ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন দরিয়েলতন। বল পায়ে একাই বক্সে ঢুকে পড়লেও শটটা লক্ষ্য বরাবর নিতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। 

৬০ মিনিটে গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণের কল্যাণে বেঁচে গিয়েছিল বসুন্ধরা। রয় কৃষ্ণার শট এক হাতে ফিরিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই কর্নার থেকেই কপাল পুড়ল বসুন্ধরার। আহমেদ জাহুর স্পটকিকে মউরতাদা ফলের হেড থেকে বল শ্রাবণকে ফাঁকি দিয়ে সোজা জালে। 

১০ জনের দল নিয়ে সেই ধাক্কাটা আর সামলে ওঠা হয়নি ব্রুজোনের দলের। টুর্নামেন্টে একের পর ভুল করা গোলরক্ষক শ্রাবণ এই ম্যাচে বাধার দেয়াল হলেন ওডিশা রক্ষণে। স্বাগতিকেরা আর গোল না পেলেও সমতায় ফিরতে পারেনি বসুন্ধরা। শেষ দিকে আক্রমণাত্মক চেহারায় ফিরলেও গোলটা পেলেন না রবসনরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত