Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

এই প্রাপ্তিতে আমি খুব একটা খুশি নই

এই প্রাপ্তিতে আমি খুব একটা খুশি নই

নিউজিল্যান্ডের মাঠে প্রথমবারের মতো টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। যদিও ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের শেষ টেস্টটা ভালো করতে পারেনি তারা। তবু সফরে প্রাপ্তি কম নয়। আগামীকাল দেশে ফেরার আগে এবার নিউজিল্যান্ড সফরটা ফিরে দেখলেন মুমিনুল হক। গতকাল ক্রাইস্টচার্চ থেকে ফোনে দেওয়া বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

রানা আব্বাস
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ১৮

প্রশ্ন: এবার নিউজিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা তাহলে কেমন হলো? 
মুমিনুল হক: জিতলে সব ঠিক, না জিতলে সব বেঠিক। সফরের অভিজ্ঞতা ভালো। ম্যাচ জিতলে সবই ভালো লাগে। একটা জিতেছি। তবে পরের টেস্টটা হেরে গেছি। 

প্রশ্ন: ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগে বলা হচ্ছিল টস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটিতে জিতেছেন, আগে বোলিং নিয়েছেন। যে বোলিং বিভাগ আগের টেস্টে দুর্দান্ত করেছে, তারাই আবার হ্যাগলি ওভালের সবুজ উইকেটে হতাশ করেছে। কারণটা কী? 
মুমিনুল: এখানে দুটি কারণ হতে পারে। সিরিজের প্রথম টেস্ট জেতার পর সিরিজ জিততে হবে—এমন একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। সিরিজ জিতব এমন ভাবনায় যখন টসও জিতে গেলাম, তখন সবাই বেশ এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা অবশ্য জাতিগতভাবেই যেকোনো ব্যাপারে একটু এক্সাইটেড থাকি। ওখানেই নিজেদের আসল কাজের ব্যাপারে একটু ভুল করে ফেলেছি। আগের টেস্টে যেভাবে বোলিং করেছি, যে প্রক্রিয়ায় বোলিং করেছি, যে পরিকল্পনাটা ছিল—রান কম দিয়ে ওদের ওপর চাপ তৈরি করে বোলিং করব। ওই জায়গা থেকে সরে গিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে হয়তো ভাবনায় ঢুকে গিয়েছিল, বলে বলে উইকেট নিতে হবে, ম্যাচ জিততে হবে। আমরা আসলে ফলকেন্দ্রিক চিন্তা বেশি করেছি দ্বিতীয় টেস্টে। আরেকটা কারণ হতে পারে, আমাদের পেস বোলারদের যদি দেখেন ৩–১০–১১টা টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তারা এতটা ঘাসের উইকেটে বোলিং করে অভ্যস্তও নয়। কোথায় বলটা ফেলতে হবে, কোন লেংথে, কত মিটারে বলটা পিচ করাব—এ ব্যাপারে তারা অনভিজ্ঞ কিংবা অভ্যস্ত নয়। যে কারণে তারা লেংথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আমাদের যে প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছিলাম, সেটা ধরে রাখতে পারিনি। এ কারণে টেস্টটা হাত থেকে বেরিয়ে গেছে।

প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ড যখন প্রথম ইনিংসে ৫০০ রানের ওপর করে ফেলল, মনস্তাত্ত্বিকভাবে তখনই নিশ্চয়ই অনেক পিছিয়ে পড়তে হয়েছে?  
মুমিনুল: হ্যাঁ, অবশ্যই, প্রতিপক্ষ যখন বড় স্কোর করে ফেলে তখন মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপে পড়ে যেতে হয়। সেটিও আবার এমন কন্ডিশনে। যদিও পরে আবার উইকেট ভালো হয়ে গেছে। অবশ্যই আমাদের বোলাররা ভালো বোলিং করতে পারেনি। পরে আমাদের ব্যাটিং বিভাগও ভালো করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে আমরা যে ব্যাটিং করেছি, একেবারেই বাজে! বোলাররা প্রতিদিন ভালো বোলিং করবে না। আমাদের ব্যাটারদের কাজ ছিল ওদের ওই ব্যর্থতা পুষিয়ে দেওয়া। যদি ভালো একটা স্কোর গড়তে পারতাম, পরে উইকেট অনেক ভালো হয়ে গিয়েছিল। তাহলে ওটা (বাজে বোলিং) অনেক পুষিয়ে নেওয়া যেত। এতে বোলাররা দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ভালোভাবে ফিরে আসতে পারত। আমরা সেটা পারিনি। প্রথম ইনিংসেই আমরা ম্যাচের বাইরে চলে গেছি। প্রথম ইনিংস সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আপনি ব্যাটিং কিংবা বোলিং বলুন।  

প্রশ্ন: অথচ এই ব্যাটিং বিভাগই মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ১৭৬ ওভার ব্যাটিং করেছে। ক্রাইস্টচার্চে তারাই টেস্টের ব্যাটিং ভুলে গেল! 
মুমিনুল: এটা দুইভাবে চিন্তা করতে পারেন। প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। আরেকটি হতে পারে, আমরা একটা টেস্ট জিতেছি, আমাদের মন ভরে গেছে, অনেক খুশি হয়ে গেছি। আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগেছি। অধিনায়ক হিসেবে আমার এটাই মনে হয়েছে। আমরা হয়তো একটা টেস্ট খুব ভালো খেলি কিংবা একটা ইনিংস খুব ভালো খেলি। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ, দুটি ইনিংসেই ভালো খেলতে হবে। দুটো ইনিংসেই ভালো বোলিং করতে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই আমরা বড় দল হওয়ার দিকে এগোব। একটা টেস্ট জিতে দুনিয়া উদ্ধার করে ফেললাম, বিষয়টা তা নয়। আমার সামনে আরও বড় বড় চ্যালেঞ্জ আছে। বড় বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। এসব চ্যালেঞ্জ জিততে হলে এক টেস্টে জিতে পরেরটাও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। একটা জিতেই আত্মতৃপ্তিতে ভোগা যাবে না। একটা চ্যাম্পিয়ন দল এভাবে গড়ে ওঠে না। না হলে আজীবন আমাদের ৯ নম্বরে থাকতে হবে। 

প্রশ্ন: যে প্রক্রিয়ার কথা বলছিলেন, সেটি ঠিকঠাক ধারাবাহিক করতে আপনাদের আরও কোথায় কোথায় কাজ করতে হবে? 
মুমিনুল: দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ের ওই ক্ষুধা থাকতে হবে। দলের, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স—সব দিকেই ওই ক্ষুধা থাকতে হবে। যেটা বলছিলাম, প্রথম টেস্টে যে প্রসেসে ছিলাম পরেরটায় সেটিতে ছিলাম না। অনেক বেশি ফল নিয়ে ভেবেছি।  

প্রশ্ন: তবু সব মিলিয়ে প্রাপ্তি একেবারে কম নয় এই নিউজিল্যান্ড সফরে, তাই না? 
মুমিনুল: প্রাপ্তি একটু আছে। তবে এই প্রাপ্তিতে আমি খুব একটা খুশি নই। ৬ বছর, ১০ বছর পর একটা টেস্ট জিতবেন—এতেই খুশি হয়ে গেলেন আবার পরের টেস্টে বাজেভাবে হারলেন, তাহলে সেই একই কথা হলো। বিদেশের মাঠে একটা টেস্ট জিতেছেন, অবশ্যই এটা একটা প্রাপ্তি।  শেষ টেস্ট যদি ভালোভাবে শেষ করতে পারতাম...ম্যাচ হারতেই পারি, তবে খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারলে বুঝতাম যে না, ভালো প্রাপ্তি আছে। এই সফরে আমাদের প্রাপ্তি এটাই, সিরিজটা ড্র করতে পেরেছি, লিটন দেশের বাইরে সেঞ্চুরি করেছে। ধারাবাহিক রান পেয়েছে। প্রাপ্তি এটাই, পেসাররা ম্যাচ জেতাতে পারে, এটা প্রমাণ হয়েছে। ইবাদত ৬ উইকেট নিয়েছে। 

প্রশ্ন: লিটনের ব্যাটিং নিয়ে আলাদাভাবে যদি বলতেন।  
মুমিনুল: লিটন গত তিনটা টেস্ট সিরিজেই ধারাবাহিক ভালো খেলছে। এখন অনেক বেশি মনোযোগী সে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর তার মনোযাগ আরও বেড়েছে। সে এখন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে অনেক ভাবে। এখন সে অনেক পরিণত। টেকনিক্যালিও অনেক ভালো। 

প্রশ্ন: কদিন আগে শেষ হওয়া ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের মৌসুম দেখে মনে হলো, দেশের উইকেটে পেসারদের পুরোনো হাহাকারটা থেকেই গেছে। 
মুমিনুল: বিশ্বের সেরা পেসারদের যদি ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিং করতে বলেন, সেখানে কোন লেংথে বোলিং করতে হবে, তারা সেটা জানে। সেরা পেসাররা জানে কোন উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হয়। ধীরে ধীরে আমাদের বোলাররাও শিখছে। হয়তো একটু সময় লাগবে। আরও ৫-১০ টেস্ট হয়তো লেগে যাবে। এতটুকু সময় একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা এই ধৈর্য ধরতে পারি না। দ্রুত বলে ফেলি—ওকে দিয়ে হচ্ছে না, চলে না ইত্যাদি। 

প্রশ্ন: অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই বাস্তবতা থেকে আপনার শিক্ষাটা কী? 
মুমিনুল: কেউ চোটে পড়ল, কেউ বিরতি নিল—এসব আমার হাতে নেই। আমার হাতে যে রিসোর্স আছে, সেটা নিয়েই খেলতে হবে। ওই বিশ্বাসটাই রাখি, এই রিসোর্স নিয়েই আমাকে নামতে হবে, লড়তে হবে। এতে ফল অনেক সময় পক্ষে আসবে, কখনো আসবে না। 

প্রশ্ন: গত আড়াই বছরে অধিনায়ক হিসেবে কতটা গুছিয়ে নিতে পারলেন? 
মুমিনুল: আগেই বললাম, ম্যাচ জিতলে সব ঠিক থাকে। এখন মনে হচ্ছে, দলটা একটা স্থিতিশীল জায়গায় আছে। কারণ, যারা টেস্ট ক্রিকেট খেলে তারাই ঘুরেফিরে আসছে। খুব একটা পরিবর্তন হয় না। সামনে সিরিজে হয়তো সাকিব–তামিম ভাই ফিরবেন। দল তখন আরও শক্তিশালী হবে। 

প্রশ্ন: পরের সফর দক্ষিণ আফ্রিকায়, মার্চে। আরেকটি কঠিন সফর। সেখানে ভালো করতে এবার নিউজিল্যান্ড সফর থেকে কতটা আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন? 
মুমিনুল: আমরা যেটা দেখি, সেটাই সাধারণত বিশ্বাস করি। যেহেতু একটা টেস্ট জিতেছি, ফল দেখেছি, আপনারা (সংবাদমাধ্যম) বিশ্বাস করেন কি না জানি না, আমরা খেলোয়াড়েরা বিশ্বাস করি যে আমরা পারি। বিদেশে ভালো খেলতে পারি, টেস্ট জিততে পারি—এই বিশ্বাস সবার মধ্যে এসেছে। এটাই দরকার ছিল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুশীলনে ক্রিকেট খেললেন হামজা চৌধুরী

ক্রীড়া ডেস্ক    
সতীর্থদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছেন হামজা। ছবি: সংগৃহীত
সতীর্থদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছেন হামজা। ছবি: সংগৃহীত

ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির হয়ে খেলার সুবাদে ফুটবল অঙ্গনে হামজা চৌধুরীর বেশ পরিচিত আছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি ভক্তদের কাছে তো তিনি এখন সবচেয়ে বড় নাম। তাঁর আগমনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে এদেশের ফুটবলে। ফুটবল ঘিরে যার পেশা এবং নেশা সেই হামজা চৌধুরী এবার নেমে পড়লেন ব্যাট-বলের খেলায়।

ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে লেস্টার। তার আগে দলীয় অনুশীলনে ক্রিকেটে মেতে উঠতে দেখা গেল হামজাকে। সতীর্থদের সঙ্গে ব্যাট-বল হাতে কিছুক্ষণের জন্য ক্রীড়াঙ্গনের আরেক জগতে হারিয়ে যান এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।

হামজার ক্রিকেট খেলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, এক সতীর্থ তাঁকে পাঁচটি বল করেন। প্রথম বলে উড়িয়ে মারতে চাইলেও ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারেননি হামজা। দ্বিতীয় বল দারুণ টাইমিং করেন। উড়িয়ে বেশ দূরে বল পাঠান তিনি।

তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ব্যাটে লাগাতে পারেননি হামজা। টানা তিন বলে হতাশ হয়ে সতীর্থদের মতো এই ফুটবলারও হেসে দেন। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দলীয় অনুশীলনে বোলিং করতেও দেখা গেছে তাঁকে। ফুটবলের বাইরে গিয়ে মনে রাখার মতো একটি অনুশীলন সেশনই যেন কাটালেন হামজা।

এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গত মার্চে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় হামজার। এরপর একে একে লাল-সবুজ জার্সিতে সিঙ্গাপুর, হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ফিরতি লেগে গত মাসে জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। মে ম্যাচেও দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন হামজা। আগামী মার্চে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। বাছাইপর্ব থেকে বাদ পড়লেও সে ম্যাচেও মাঠে নামার কথা রয়েছে হামজার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে চমক

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫২
দলে জায়গা হয়নি শুবমান গিলের। ছবি: এক্স
দলে জায়গা হয়নি শুবমান গিলের। ছবি: এক্স

২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। দলে জায়গা হয়নি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা শুবমান গিলের। যথারীতি সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বেই সংক্ষিপ্ত ওভারের বিশ্বকাপ খেলবে ভারত। তাঁর ডেপুটি হিসেবে থাকবেন অক্ষর প্যাটেল।

সবশেষ এশিয়া কাপের আগে টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় গিলকে। কিন্তু ব্যাট হাতে রানখরায় এই সংস্করণের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হলো না তাঁর। সবশেষ ১৮ ইনিংসে কোনো ফিফটি করতে পারেননি তারকা ব্যাটার। গিলের পাশাপাশি বাদ পড়েছেন জিতেশ শর্মা। তাঁর বদলি হিসেবে নেওয়া হয়েছে সঞ্জু স্যামসনকে। অভিষেক শর্মার সঙ্গে ওপেনিং করতে দেখা যাবে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে।

স্যামসনের সঙ্গে ফেরানো হয়েছে ইশান কিশানকেও। এর আগে সবশেষ ২০২৩ সালের নভেম্বরে ভারতের জার্সিতে খেলেছেন এই তরুণ ব্যাটার। ২৫ মাস পর ফেরানো হলো তাঁকে। সদ্য শেষ হওয়া সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে দারুণ ব্যাটিং করে দলে ফিরলেন কিশান। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৫১৭ রান করেন তিনি।

বোলিং বিভাগে কোনো পরিবর্তন আনেনি ভারত। পেস বিভাগ সামলাবেন জাসপ্রিত বুমরাহ, হর্ষিত রানা ও আর্শদিপ সিং। সঙ্গে থাকছেন কুলদিপ যাদব ও বরুন চক্রবর্তীর মতো তারকা স্পিনার। এছাড়া অলরাউন্ডার ক্যাটাগরিতে প্যাটেল ছাড়াও থাকছেন হার্দিক পান্ডিয়া, শিভম দুবে ও ওয়াশিংটন সুন্দরের মতো পরিচিত মুখ।

লম্বা সময় ধরে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হচ্ছেন সূর্য। এরপরও বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে তাঁর কাঁধেই নেতৃত্বভার দিয়েছে বিসিসিআইয়ের নির্বাচক প্যানেল। আগামী মাসে নিজেদের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে ভারত। সে সিরিজেও একই দল নিয়ে খেলবে স্বাগতিকেরা।

ভারত ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ার। প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মাঠে নামবে স্বাগতিকেরা। 'এ' গ্রুপে তাদের বাকি তিন প্রতিপক্ষ নামিবিয়া, নেদারল্যান্ডস ও পাকিস্তান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতের স্কোয়াড: সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মা, সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), ইশান কিশান (উইকেটরক্ষক), বরুণ চক্রবর্তী, শিবম দুবে, হার্দিক পান্ডিয়া, রিঙ্কু সিং, অক্ষর প্যাটেল (সহ–অধিনায়ক), ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদব, হর্ষিত রানা, আর্শদীপ সিং, যশপ্রিত বুমরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লায়ন-কামিন্সের দাপুটে বোলিংয়ে অ্যাশেজ হারের দ্বারপ্রান্তে ইংল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৪
৪ উইকেট হাতে রেখে আরও ২২৮ রান করতে হবে অতিথিদের। ছবি: ক্রিকইনফো
৪ উইকেট হাতে রেখে আরও ২২৮ রান করতে হবে অতিথিদের। ছবি: ক্রিকইনফো

হাতে থাকা ৬ উইকেট নিয়ে আজ নিজেদের সংগ্রহটা খুব বেশি বাড়িয়ে নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। এরপরও তাদের পুঁজি এবং লিড মিলিয়ে বড় লক্ষ্য দাঁড়ায় ইংল্যান্ডের সামনে। লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ব্যাটিং ব্যর্থতায় অ্যাডিলেড টেস্টে হারের শঙ্কায় আছে বেন স্টোকসের দল। এই ম্যাচ হারলে অ্যাশেজ সিরিজ হারবে সফরকারীরা।

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ২৭১ রান। বাকি ৬ উইকেটে আজ ৭৮ রান যোগ করে ৩৪৯ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকেরা। প্রথম ইনিংসে তারা ৮৫ রানে এগিয়ে থাকায় ইংল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৩৫ রানের। এর আগে এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ৪১৭ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিল ক্যারিবীয়রা।

২২ বছর আগের সে রেকর্ড ভাঙার জন্য দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে হতো ইংল্যান্ডকে। কিন্তু তাদের শুরুটা হয়েছে খুবই বাজে। ২০৭ রান করতেই হারিয়েছে ৬ ব্যাটারকে। ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খাওয়া অতিথিদের হয়ে এক জ্যাক ক্রলি ছাড়া আর কেউ সেভাবে ব্যাটং করতে পারেননি। ৮ বাউন্ডারিতে ৮৫ রান করা এই ওপেনারকে ফেরান লায়ন। দলীয় ৩২ রানে বেন ডাকেট ও ওলি পোপকে হারানোর পর জো রুট ও হ্যারি ব্রুককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন ক্রলি।

তৃতীয় উইকেটে রুটকে নিয়ে ৭৮ এবং চতুর্থ উইকেট জুটিতে ব্রুকের সঙ্গে ৬৮ রান যোগ করেন ক্রলি। এই ব্যাটার সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগালেও রুট ও ব্রুক থামেন ৩৯ ও ৩০ রান করে। দলকে বিপদে রেখে সাজঘরে ফেরেন স্টোকস। লায়নের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে করেন মাত্র ৫ রান।

শেষ দিনে ইংল্যান্ডের ভরসা হয়ে টিকে আছেন উইল জ্যাকস ও জেমি স্মিথ। তাঁরা দুজন ১১ ও ২ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামবেন। জেতার জন্য আরও ২২৮ রান করতে হবে ইংল্যান্ডকে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৪ উইকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘অবিশ্বাস্য’, পেনাল্টি ঠেকিয়ে হাত ভাঙা গোলরক্ষক প্রসঙ্গে পিএসজি কোচ

ক্রীড়া ডেস্ক    
চারটি পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন সাফোনভ। ছবি: এক্স
চারটি পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন সাফোনভ। ছবি: এক্স

টাইব্রেকারে হতে পারতো যেকোনো কিছুই। কিন্তু ফলটা এসেছে পিএসজির পক্ষেই। সেটার নায়ক দলটির রাশিয়ান গোলরক্ষক মাতভেই সাফোনভ। টাইব্রেকারে ফ্ল্যামঙ্গোর সামনে রীতিমতো দেয়াল হয়ে ওঠেন তিনি। দল জিতলেও হাত ভেঙেছে সাফোনভের। দলের জন্য তাঁর এমন কৃতিত্বকে অবিশ্বাস্য বলে মনে করছেন পিএসজির প্রধান কোচ লুইস এনরিকে।

পিএসজির সঙ্গে ফ্ল্যামেঙ্গোর ফিফা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের ফাইনাল ম্যাচের নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। নিষ্পত্তির জন্য ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। ভাগ্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ব্রাজিলিয়ান ক্লাবের চারটি শট ঠেকান সাফোনভ। ফ্রেঞ্চ কাপে আজ রাত দুইটায় ফন্তেনের বিপক্ষে মাঠে নামবে পিএসজি। তার আগে সাফোনভের হাত ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত কো হয়েছে ক্লাবের পক্ষ থেকে।

পরে সংবাদ সম্মেলনে এনে হাত ভাঙার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন এনরিকে। তিনি বলেন, ‘টাইব্রেকারের সময় সাফোনভ লড়াইয়ের ভঙ্গিতে ছিল। তাই হয়তো সে ড্রেনালিনে (উত্তেজনাকর বিশেষ হরমোন) প্রভাবে সে ভাঙা হাত নিয়েই শুটআউট শেষ করেছে। ভাঙা হাত নিয়েই সে দুটি শট ঠেকিয়েছে। কোনো ব্যথা অনুভব করেনি। যেকোনো সময় দলকে সাহায্য করার জন্য সে প্রস্তুত। এটা রীতিমতো তা অবিশ্বাস্য। আমরা এই মানসিকতাই চাই। সবসময় পরিশ্রম করতে হবে।’

সাফোনভের এই অদম্য মানসিকতার কোনো ব্যাখ্যা নেই পিএসজি কোচের কাছে, ‘আমি এটা ব্যাখ্যা করতে পারব না। সত্যিই অবিশ্বাস্য ছিল। সাফোনভ নিজেও জানে না কীভাবে এটা হলো। তৃতীয় পেনাল্টি বাঁচানোর সময় সে একটু অস্বাভাবিক মুভমেন্ট করেছিল। আমাদের মনে হয় তখনই সসসসে চোট পেয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত