চ্যাটজিপিটির ভয়েস মোডের ওপর মানসিকভাবে নির্ভরশীল হচ্ছে ব্যবহারকারীরা, ওপেনএআইয়ের উদ্বেগ 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২: ০৬
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২: ২৬

সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে ভয়েস মোডের নতুন সংস্করণ নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে প্রায় মানুষের মতো করে জবাব দেয় চ্যাটবটটি। আর সঙ্গ পাওয়ার জন্য চ্যাটজিপিটির ভয়েস মোডের ওপর মানসিকভাবে বেশি ‘নির্ভরশীল’ হচ্ছে অনেক ব্যবহারকারী। তাই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওপেনএআই। সিএনএনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। 

গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) কোম্পানিটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। ভয়েস মোড টুলটির নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের বিষয় নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গত সপ্তাহে টুলটি পেইড ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মোচন করা হয়। এআই লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ টুলটি পরিচালনা করে। 

চ্যাটজিপিটির ভয়েস মোডের নতুন উন্নত সংস্করণটি একদম মানুষের মতো কথা বলে। একে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করা হলে এটি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেয়। চ্যাটজিপিটির কথা বলার মাঝখানে ব্যবহারকারীরা বাধা দেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। মানুষেরই মতো আলাপ আলোচনা করতে পারে। যেমন—কথা বলার মাঝে ‘হাসা’ বা ‘হুম’ বলা। 

এই বছরের শুরুর দিকে এক ইভেন্টে ফিচারটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষণার কয়েক মিনিটের মধ্যেই একে ২০১৩ সালের মুভি ‘হার’–এর এআই ডিজিটাল সহকারী বা অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। এই মুভি নায়ক এই অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে প্রেমে পড়ে। 

এখন কাল্পনিক গল্প বাস্তবে পরিণত হতে পারে বলে ওপেনএআই উদ্বিগ্ন। কোম্পানি পর্যবেক্ষণ করে দেখেন যে, ‘সঙ্গীর সঙ্গে যেভাবে কথা বলে ব্যবহারকারীরা এই টুলের সঙ্গে সেভাবে কথা বলছে। 

প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওপেনএআই বলে, এআই এর সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারে ব্যবহারকারীরা। এর ফলে মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। সম্ভাব্য একাকী ব্যক্তিদের উপকার করলেও এটি সুস্থ সম্পর্ককে প্রভাবিত করে। 

মানুষের মতো কণ্ঠস্বর ও কথা বলার ভঙ্গিতে চ্যাটবটের দেওয়া তথ্য শোনা গেলে ব্যবহারকারীরা টুলটির ওপর বেশি আস্থা রাখতে পারবে বলে মনে করে ওপেনএআই। এ জন্য এই কৌশল অবলম্বন করেছে কোম্পানিটি। 

প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায় যে, বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বেশি পরীক্ষা–নিরীক্ষা না করেই এআই টুলগুলো দ্রুত উন্মোচন করছে। অপরদিকে কোম্পানিগুলো বলে, জীবনযাপন, কাজ, সামাজিকীকরণ এবং তথ্য খোঁজার উপায়কে উন্নত করতে পারে এসব টুল। তবে এর প্রভাব সম্পর্কে না বুঝেই দ্রুত এসব টুল চালু করা হচ্ছে। 

অন্যান্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মতো, তাদের টুলগুলো কীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং কীভাবে ব্যবহার করা উচিত, সে সম্পর্কে একটি ধারণা থাকে কোম্পানিগুলোর। তবে ব্যবহারকারীরা অ্যাপ্লিকেশনগুলো সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে ব্যবহার করতে পারে। 

ইতিমধ্যেই এআই চ্যাটবটগুলোর সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে কিছু ব্যবহারকারী। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গত জুনে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রযুক্তি এবং মানবিক যোগাযোগের বিষয়ে অধ্যয়নরত অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লিজেল শারাবি বলেন, একে নৈতিক ও দায়িত্বশীল উপায়ে পরিচালিত করার জন্য কোম্পানিগুলোর অনেক দায়িত্ব রয়েছে এবং এটি এখনো একটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই এমন একটি প্রযুক্তির সঙ্গে সত্যিই গভীর সম্পর্ক তৈরি করছে যা দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যমান নাও হতে পারে। তাদের নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন এবং এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে।’ 

ওপেনএআই বলেছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চ্যাটজিপিটি ভয়েস মোডের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের মিথস্ক্রিয়া সামাজিকভাবে স্বাভাবিক বলে মনে হতে পারে। তবে কোম্পানিটি এআই ‘নিরাপদভাবে’ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও টুলগুলো ওপর ব্যবহারকারীদের ‘মানসিক নির্ভরতা’ এর সম্ভাব্যতা অধ্যয়ন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত