গুগল ও স্যামসাংয়ের বিরুদ্ধে এপিক গেমসের ষড়যন্ত্রের মামলা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১১: ৫৯
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ২৯

ফোর্টনাইট ভিডিও গেম নির্মাতা এপিক গেমস গত সোমবার অ্যালফাবেটের গুগল এবং বিশ্বের বৃহত্তম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্র্যান্ড স্যামসাংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গুগলের প্লে স্টোরকে প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করতে দুই কোম্পানি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য বলা হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে ক্যালিফোর্নিয়ায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্যামসাংয়ের স্মার্টফোনে ‘অটো ব্লকার’ নামের একটি নিরাপত্তা ফিচার চালু করেছে, যা ব্যবহারকারীদের প্লে স্টোর বা স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি স্টোর ছাড়া অন্য উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করতে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। এটি গুগলের বিরুদ্ধে এপিকের দ্বিতীয় অ্যান্টি ট্রাস্ট মামলা। 

এপিক বলছে, স্যামসাং ও গুগল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টি ট্রাস্ট আইন লঙ্ঘন করছে, কারণ তারা ব্যবহারকারীদের অ্যাপ নির্বাচনের সুযোগ কমাচ্ছে এবং প্রতিযোগিতাকে বাধা দিচ্ছে, যা অ্যাপের দাম কমাতে সহায়ক হতে পারত। 

এপিকের প্রধান নির্বাহী টিম সুইনি বলেন, ‘এটি একটি অযৌক্তিক প্রতিযোগিতার বিষয়। কোম্পানিগুলো ব্যবহারকারীদের মিথ্যা ধারণা দেয় যে, অন্য প্রতিযোগীদের পণ্য তাদের পণ্যের তুলনায় নিম্নমানের। গুগল ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখার অভিনয় করে বলছে যে, আপনি অজানা উৎস থেকে অ্যাপ ইনস্টল করতে পারবেন না। তবে গুগল জানে ফোর্টনাইট কী, কারণ এর আগে গুগল প্লে স্টোরে ফোর্টনাইট ডাউনলোড করা যেত।’ 

তবে মামলাটি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি গুগল। 

অন্যদিকে স্যামসাং বলছে, কোম্পানিটি এপিক গেমসের ভিত্তিহীন অভিযোগগুলো কঠোরভাবে মোকাবিলার পরিকল্পনা করছে। 
স্যামসাং একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘এদের ডিভাইসে যুক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো স্যামসাংয়ের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা এবং ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণের মূল নীতিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিজাইন করা হয়েছে এবং আমরা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেকোনো সময় অটো ব্লকার বন্ধ করার বিকল্পও রয়েছে।’ 

এপিক বলেছে, স্যামসাংয়ের অটো ব্লকারটি মার্কিন আদালতের একটি রায়ের প্রভাব কমানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কারণ এপিক ডিসেম্বর ২০২৩-এ গুগলের বিরুদ্ধে একটি মামলা জিতেছিল। রায়টি গুগলকে অন্য উৎস থেকে অ্যাপ পাওয়া সহজ করতে বাধ্য করবে বলে ভাবা হয়েছিল। 

এপিক বলেছে, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রকদের কাছে তাদের প্রতিযোগিতামূলক উদ্বেগগুলোও তুলে ধরবে, যেটি দীর্ঘদিন ধরে গুগলের ব্যবসায়িক অনুশীলনগুলো পর্যালোচনা করছে। 

এর আগে অ্যাপ স্টোরের পেমেন্টে ৩০ শতাংশ কমিশন চার্জ করার নিয়ম নিয়ে গুগল ও অ্যাপলের সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হয়েছিল এপিক। প্রায় চার বছর নিষিদ্ধ থাকার পর গত মাসে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নে আইফোন এবং গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোতে আবার চালু হয়েছে। 

২০২৩ সালের শেষের দিকে স্মার্টফোনে অটো ব্লকার ফিচার চালু করে স্যামসাং। ফিচারটি ম্যালওয়্যার সমৃদ্ধ অ্যাপ থেকে ব্যবহারকারীদের ডিভাইসকে নিরাপত্তা দেবে বলে চালু করা হয়। 

এপিক বলছে, এই ফিচারটি বন্ধের প্রক্রিয়া কঠিন করতে গত জুলাইয়ে স্যামসাং অটো ব্লকার ফিচারটিকে ডিফল্ট হিসেবে রাখে। 

নর্থ ক্যারোলিনায় অবস্থিত এপিক গেমস ২০২০ সালে গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলার অভিযোগে এপিক গেমস বলে, অ্যাপ বিতরণ এবং পেমেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাকে দমন করেছে গুগল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত