এআই ও অটোমেশনে এরিকসনের সঙ্গে গ্রামীণফোনের চুক্তি

অনলাইন ডেস্ক    
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ০৮
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৪৩
বিভিন্ন খাতে নতুন নতুন উদ্ভাবনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সঙ্গে কাজ করবে এরিকসন ও গ্রামীণফোন। ফাইল ছবি

শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরিকসনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল টেলিযোগাযোগ অপারেটর গ্রামীণফোন। এই চুক্তির মাধ্যমে কোম্পানিগুলো একযোগে বাংলাদেশের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং অটোমেশন ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।

বিভিন্ন খাতে নতুন নতুন উদ্ভাবনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সঙ্গে কাজ করবে এরিকসন ও গ্রামীণফোন। এর মধ্যে টেলিযোগাযোগ, বিভিন্ন শিল্প খাত এবং সরকারি খাত অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এরিকসনের মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ শাখার প্রধান ডেভিড হ্যাগারব্রো বলেন, ‘এই উদ্ভাবনী উদ্যোগে গ্রামীণফোনের সঙ্গে সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমাদের জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং অটোমেশন সমাধানগুলো গ্রামীণফোনকে তার গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তার প্রতি আরও ভালোভাবে সাড়া দিতে সাহায্য করবে এবং নেটওয়ার্কের ওপর চাপ বাড়ানোর মতো আরও জটিল সমস্যাগুলো সমাধানেও সাহায্য করবে’।

গ্রামীণফোনের চিফ ইনফরমেশন অফিসার নিরঞ্জন শ্রীনিবাসন বলেন, ‘এরিকসনের সঙ্গে অংশীদারত্ব গ্রামীণফোনের টেলকো প্রযুক্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যে প্রযুক্তির জন্য আমরা অংশীদারত্ব করতে যাচ্ছি, তা গ্রাহকদের একটি উন্নত অভিজ্ঞতা দেবে। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিতে প্রথম প্রচেষ্টা এবং কোম্পানির উচ্চাকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হবে।’

মুঠোফোন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘মোবাইলাম’-এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক রাজস্ব নিশ্চয়তা এবং প্রতারণা ব্যবস্থাপনা (আরএএফএম) সমাধান গ্রহণ করার মাত্র কয়েক মাস পরই গ্রামীণফোনের নতুন সমঝোতা স্মারকটি (এমওইউ) স্বাক্ষর হলো।

রাজস্ব পাচার চিহ্নিত এবং প্রতারণা শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধে গ্রামীণফোনকে আরও দক্ষ করে তুলবে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম, উন্নত বিশ্লেষণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি। সেই সঙ্গে এ সম্পর্কে গ্রাহকদের আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদানে সাহায্য করবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পর্কিত কাজগুলো গ্রামীণফোনের ‘টেলকো টেক’ কৌশলের অংশ হওয়ার পাশাপাশি বিগত সরকারের ‘ভিশন ২০৪১’-এর লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সুসংহত। এই লক্ষ্যের মধ্য রয়েছে স্বাধীনতার ৭০তম বার্ষিকীর আগেই বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার মহাপরিকল্পনা।

এটি পূর্ববর্তী ‘ডিজিটাল ভিশন ২০২১’-এর পরবর্তী পরিকল্পনা, যা মূলত বাংলাদেশের আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) খাতের উন্নয়ন নিয়ে ছিল। এই পরিকল্পনার বিশেষ লক্ষ্য ছিল—ডিজিটাল সরকার প্রতিষ্ঠা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রচার এবং নাগরিকদের একত্রিত করা।

ভিশন ২০৪১-এ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কানেকটিভিটি, অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং অন্যান্য প্রযুক্তি। বাংলাদেশের শিল্প ৪.০-এর উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং নাগরিকদের প্রয়োজনীয় ডিজিটাল দক্ষতা প্রদান করতে এসব উদ্যোগ নেওয়া হবে।

টেলিযোগাযোগ লক্ষ্যগুলোর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হলো—শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট অ্যাকসেস, ফিক্সড ও মোবাইল ব্রডব্যান্ডের সাবস্ক্রিপশন এবং ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের মতো ক্ষেত্রগুলোতে বিশ্বের শীর্ষ ৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান থাকা।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গ্লোবাল প্রতিযোগিতা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট অ্যাকসেসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১১৫তম, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দিক থেকে ১১১তম, এবং ফিক্সড ও মোবাইল ব্রডব্যান্ড ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৮৮তম ও ১০৬তম অবস্থানে ছিল।

যেহেতু অন্যান্য দেশও পরবর্তী দুই দশকে তাদের অর্থনীতি উন্নত করতে চায়, তাই গ্রামীণফোনের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশকে বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে নিয়ে আসতে অনেক কাজ বাকি রয়েছে।

তথ্যসূত্র: টেলিকমস ডট কম

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত