জাহাঙ্গীর আলম

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড। বাংলাদেশেও তাই। ভিসা কার্ডের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে গ্রাহক কেনাকাটা করতে পারেন। আবার এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থও উত্তোলন করা যায়। তবে এর জন্য ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪৫ দিন) বিনা সুদ বা মাশুলে সেই অর্থ পরিশোধ করা যায়। সোজা কথা, এটি একপ্রকার ঋণ।
এ ছাড়া বিনা সুদে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ, নগদ অর্থ ফেরত, নির্দিষ্ট খুচরা বিক্রেতার কাছে কেনাকাটা করার সময় বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি অফারও থাকে।
ডেবিট কার্ড: ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের তাদের সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগ দেয়। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানেও নানা অফার থাকতে পারে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অবশ্যই ব্যালেন্স থাকতে হয়।
প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড: প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা যায়।
প্রিপেইড কার্ডগুলো ডিপোজিট ব্যালেন্স বা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। এই কার্ডগুলোর বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আগে থেকেই ভরা থাকে। এটি ক্রেডিট সীমা হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ কার্ডধারী এই সীমার বেশি খরচ করতে পারেন না।
গিফট কার্ডও একই রকম। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতার কাছে সুবিধা দিতে এই কার্ড ইস্যু করা হয়।
এসব কার্ড ব্যবহারের জন্য লেনদেন প্রক্রিয়ার পেছনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা কিন্তু মোটেও আবশ্যক নয়। কারণ এক ঘষাতেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। কার্ডের মালিককে আক্ষরিক অর্থে কিছুই করতে হয় না। কিন্তু বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয় সে সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা থাকা ভালো। কারণ এখানে পুরো সিস্টেমের বিভিন্ন পর্যায়ে ফি কেটে নেওয়া হয়। লেনদেন প্রক্রিয়ার স্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে কীভাবে এসব কার্ড নেওয়া যায়, কোথায় কীভাবে ব্যবহার করলে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে এবং ন্যূনতম খরচে এই সেবা পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে জানা হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংক্ষেপে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়- ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কগুলো মার্চেন্ট, প্রসেসর এবং ব্যাংকের মধ্যে শত শত কোটি টাকার লেনদেন করে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার কার্ডের চিপটি একটি প্রসেসরের কাছে লেনদেনের তথ্য পাঠায়, এরপর কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য ইস্যুকারী ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রসেসরের কাছে অনুমোদন পাঠায়। সর্বশেষ চূড়ান্ত ভাবে সেই নির্দেশনা মার্চেন্টের টার্মিনাল বা সফটওয়্যারে পৌঁছায়। আর তখনই লেনদেন সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি ঘটে নিমেষের মধ্যে।
পুরো লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন (অথোরাইজেশন) পাওয়া কেবল প্রথম ধাপ। মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদার অর্থ জমা হওয়ার আগে অনুমোদনগুলো নিষ্পত্তি করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড লেনদেন অনুমোদন এবং নিষ্পত্তি এই দুই-ধাপে প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পরিমাণে ফি নির্ধারিত থাকে। আর উভয় ধাপে বা আংশিক ব্যর্থতার ফলে খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং/অথবা লেনদেন সম্পন্ন নাও হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় কীভাবে: মূল ভূমিকা কাদের
অনুমোদন এবং নিষ্পত্তিতে জড়িত মূল পক্ষগুলো হলো- কার্ডধারী, মার্চেন্ট (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান), অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (মার্চেন্ট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক), ইস্যুকারী ব্যাংক (কার্ডধারীর ব্যাংক) এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার ইত্যাদি)।
কার্ডধারী
আপনার যদি একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কার্ডধারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। তবে বিস্তারিত বলতে গেলে—একজন কার্ডধারী হলেন এমন একজন যিনি কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক থেকে একটি ব্যাংক কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) পান। এরপর পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যে লেনদেনের জন্য তিনি কার্ডটি উপস্থাপন করেন।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট বলতে বোঝায় যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। কিন্তু কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেয় যারা এখানে শুধু সেই মার্চেন্টের কথা বলা হচ্ছে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আছে, যেটির মাধ্যমে তারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের পণ্য বা পরিষেবার বিনিময়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিতে পারে তারাই মার্চেন্ট। ব্যবসার মালিক হিসেবে আপনি একজন মার্চেন্ট বলে গণ্য হতে পারেন।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা মার্চেন্ট’স ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক হলো কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা বা মাস্টারকার্ড) নিবন্ধিত সদস্য। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে সাধারণত মার্চেন্ট ব্যাংক বলা হয়। এই ধরনের ব্যাংক এমন একটি অ্যাকাউন্ট (যেটিকে বলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট) পরিচালনার জন্য মার্চেন্টদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে, যা মার্চেন্টকে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকগুলো মার্চেন্টদের কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করে। এ ছাড়া গ্রাহক পরিষেবা এবং কার্ড গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোও তারা পরিচালনা করে। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ ডিপোজিট (তহবিল) জমা করে।
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক
অবশ্য নাম দেখেই বুঝতে পারার কথা- ইস্যুকারী ব্যাংক গ্রাহকদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ইস্যুকারী ব্যাংক একই সঙ্গে কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড) সদস্যও।
ইস্যুকারী ব্যাংকগুলো তাদের কার্ডধারীরা যে কেনাকাটা করেন তার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে। এরপরে কার্ডধারীর দায়িত্ব হয় তাঁদের ক্রেডিট কার্ড চুক্তির শর্তাবলির অধীনে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে সেই অর্থ পরিশোধ করা।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড)
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড কিন্তু কোনো ব্যাংক নয়। তারা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ইস্যু করে না। বরং তারা নিজ নিজ কার্ড ব্র্যান্ডের জন্য অভিভাবক (কাস্টডিয়ান) এবং ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করে। তারা ক্রেডিট কার্ড বা ইলেকট্রনিক লেনদেন প্রক্রিয়াকরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিপেনডেন্ট সেলস অর্গানাইজেশন (আইএসও) এবং মেম্বারশিপ সার্ভিস প্রভাইডার্সের (এমএসপি) সঙ্গে একটি গভর্নিং বডি হিসেবেও কাজ করে। এখান থেকে ‘কার্ড অ্যাসোসিয়েশন’ নাম এসেছে।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পরিচালনা করা। যার মধ্যে রয়েছে ইস্যুকারী এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিনিময় ফি এবং যোগ্যতা নির্দেশিকা নির্ধারণ করা, কার্ড নেটওয়ার্ক এবং নিজ ব্র্যান্ডের উন্নয়ন এবং অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া থেকে মুনাফা করা। মুনাফার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলত ভিসা এবং মাস্টারকার্ড এখন পাবলিক কোম্পানি (পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত)।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের জন্য ভিসা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ভিসানেট প্ল্যাটফর্ম। আর এ কাজে মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে তাদের ব্যাংকনেট নেটওয়ার্ক।
ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন (অথোরাইজেশন) প্রক্রিয়া
অথোরাইজেশন প্রক্রিয়ায় ওপরে উল্লিখিত সব পক্ষই নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। নিচে কোন পক্ষের কী ভূমিকা থাকে তা তুলে ধরা হলো:
কার্ডধারী
একজন কার্ডধারী পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে একটি মার্চেন্টের কাছে তাঁর কার্ডটি উপস্থাপন করেন। এরপরই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের সূচনা হয়।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট তাদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন, সফটওয়্যার বা গেটওয়ে ব্যবহার করে কার্ডধারীর তথ্য এবং লেনদেনের বিশদ বিবরণ তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক বা লেনদেন প্রক্রিয়াকারী ব্যাংকের কাছে পাঠায়।
অ্যাকোয়ারিং বা প্রসেসর
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) লেনদেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং যথাযথ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য কার্ডধারীর ইস্যুকারী ব্যাংকে পাঠায়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
মাস্টারকার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের নিজস্ব ব্যাংকনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক এবং প্রক্রিয়াকারীর (অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা এর প্রসেসর) মধ্যে বিনিময় করে। আর ভিসা কার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের ভিসানেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই কাজটি করে।
ইস্যুকারী
ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক ব্যাংকনেট বা ভিসানেটের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের (বা এর প্রসেসর) কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য পায়। এরপর সে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে। সেই সঙ্গে লেনদেনটি বৈধ কি-না, কার্ডধারীর যথেষ্ট ব্যালেন্স আছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর লেনদেনের অনুমোদন দেয় বা প্রত্যাখ্যান করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক যথাযথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা এর প্রসেসর) একটি কোড পাঠায়।
মার্চেন্ট
কোডটি মার্চেন্টের টার্মিনাল, সফটওয়্যার বা গেটওয়েতে পৌঁছায় এবং লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি ব্যাচ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়।
ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি যেভাবে সম্পন্ন হয়
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড লেনদেন যেভাবে কাজ করে সেই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় অংশ হলো ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট)। অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও সঞ্চালিত হওয়ার পরে এটি ঘটে। নিষ্পত্তির জন্য মার্চেন্ট প্রসেসরে অনুমোদনের জন্য একটি ‘ব্যাচ’ পাঠায়। সাধারণত দিনে একবার এই কাজটি হয়। প্রসেসর অনুমোদন প্রক্রিয়ার পুনঃসমন্বয় করে এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কে ব্যাচ জমা দেয়। প্রসেসর তখন পণ্য বা সেবা বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির (পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী মার্চেন্ট) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে। পাশাপাশি প্রসেসিং ফি কেটে নেয়। এই পর্যায়ে লেনদেনটি সম্পন্ন হয়।
এদিকে কার্ড ইস্যুকারী এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক যোগাযোগ এবং অর্থ স্থানান্তর অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ডধারীর কেনাকাটার অর্থ অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে পাঠায়। অবশেষে কার্ডধারীকে সেই অর্থ সেই কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককেই দিতে হয়। এই পদক্ষেপগুলোর কোনটির সঙ্গেই আসলে কার্ডধারীর কোনো সম্পৃক্ততা লাগে না।
মার্চেন্ট
এবার মার্চেন্ট তাদের অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা ব্যাংকের প্রসেসর) অনুমোদিত অথোরাইজেশনের একটি ব্যাচ পাঠিয়ে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। অনুমোদনের ব্যাচগুলো সাধারণত প্রতি কার্যদিবসের শেষে পাঠানো হয়। কার্ড থেকে একাধিক লেনদেন হলে সব মিলে একটি ব্যাচ তৈরি হয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) যথাযথ কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের (ভিসানেট বা ব্যাংকনেট) মাধ্যমে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যাচগুলো পুনরায় একত্রিত করে এবং পাঠিয়ে দেয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক অটোমেটেড ক্লিয়ারিংহাউসের (এসিএইচ) মাধ্যমে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করে এবং মার্চেন্টের সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মাসিক, দৈনিক বা উভয় হিসাবে নির্দিষ্ট প্রসেসিং ফি কেটে নেয়।
কার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফি কেটে নেয় এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাদের পাওনা পাঠিয়ে দেয়।
ইস্যুকারী
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক মূলত তার কার্ডধারীর কেনাকাটার জন্য অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে।
কার্ডধারী
কার্ডধারী তার কেনাকাটার জন্য ইস্যুকারী ব্যাংক এবং কার্ড চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সুদ এবং ফি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন।
তহবিল এবং ফি
ওপরে নিষ্পত্তি এবং ক্লিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রসেসর ক্রেডিট কার্ডে বিক্রয় থেকে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা করবে এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেবে। যাইহোক, ঠিক কীভাবে ফি কেটে নেওয়া হয় এবং কখন তহবিল জমা করা হয় তাতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ডিপোজিট
আজকাল, বেশির ভাগ প্রসেসর পণ্য কেনার পরের দিন তহবিল জমা করে। এর অর্থ মার্চেন্ট আজকের ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবে আগামীকাল।
কিছু ক্ষেত্রে, প্রসেসরেরা মার্চেন্টের তহবিল আটকে দিতে পারে। লেনদেনে জালিয়াতির সন্দেহ বা অন্য কোনো কারণে লেনদেনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাৎক্ষণিক তহবিল জমা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক কার্ড ঘষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট জমা হওয়া দেখতে পাবেন না মার্চেন্ট।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড। বাংলাদেশেও তাই। ভিসা কার্ডের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে গ্রাহক কেনাকাটা করতে পারেন। আবার এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থও উত্তোলন করা যায়। তবে এর জন্য ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪৫ দিন) বিনা সুদ বা মাশুলে সেই অর্থ পরিশোধ করা যায়। সোজা কথা, এটি একপ্রকার ঋণ।
এ ছাড়া বিনা সুদে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ, নগদ অর্থ ফেরত, নির্দিষ্ট খুচরা বিক্রেতার কাছে কেনাকাটা করার সময় বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি অফারও থাকে।
ডেবিট কার্ড: ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের তাদের সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগ দেয়। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানেও নানা অফার থাকতে পারে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অবশ্যই ব্যালেন্স থাকতে হয়।
প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড: প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা যায়।
প্রিপেইড কার্ডগুলো ডিপোজিট ব্যালেন্স বা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। এই কার্ডগুলোর বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আগে থেকেই ভরা থাকে। এটি ক্রেডিট সীমা হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ কার্ডধারী এই সীমার বেশি খরচ করতে পারেন না।
গিফট কার্ডও একই রকম। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতার কাছে সুবিধা দিতে এই কার্ড ইস্যু করা হয়।
এসব কার্ড ব্যবহারের জন্য লেনদেন প্রক্রিয়ার পেছনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা কিন্তু মোটেও আবশ্যক নয়। কারণ এক ঘষাতেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। কার্ডের মালিককে আক্ষরিক অর্থে কিছুই করতে হয় না। কিন্তু বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয় সে সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা থাকা ভালো। কারণ এখানে পুরো সিস্টেমের বিভিন্ন পর্যায়ে ফি কেটে নেওয়া হয়। লেনদেন প্রক্রিয়ার স্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে কীভাবে এসব কার্ড নেওয়া যায়, কোথায় কীভাবে ব্যবহার করলে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে এবং ন্যূনতম খরচে এই সেবা পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে জানা হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংক্ষেপে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়- ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কগুলো মার্চেন্ট, প্রসেসর এবং ব্যাংকের মধ্যে শত শত কোটি টাকার লেনদেন করে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার কার্ডের চিপটি একটি প্রসেসরের কাছে লেনদেনের তথ্য পাঠায়, এরপর কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য ইস্যুকারী ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রসেসরের কাছে অনুমোদন পাঠায়। সর্বশেষ চূড়ান্ত ভাবে সেই নির্দেশনা মার্চেন্টের টার্মিনাল বা সফটওয়্যারে পৌঁছায়। আর তখনই লেনদেন সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি ঘটে নিমেষের মধ্যে।
পুরো লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন (অথোরাইজেশন) পাওয়া কেবল প্রথম ধাপ। মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদার অর্থ জমা হওয়ার আগে অনুমোদনগুলো নিষ্পত্তি করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড লেনদেন অনুমোদন এবং নিষ্পত্তি এই দুই-ধাপে প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পরিমাণে ফি নির্ধারিত থাকে। আর উভয় ধাপে বা আংশিক ব্যর্থতার ফলে খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং/অথবা লেনদেন সম্পন্ন নাও হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় কীভাবে: মূল ভূমিকা কাদের
অনুমোদন এবং নিষ্পত্তিতে জড়িত মূল পক্ষগুলো হলো- কার্ডধারী, মার্চেন্ট (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান), অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (মার্চেন্ট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক), ইস্যুকারী ব্যাংক (কার্ডধারীর ব্যাংক) এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার ইত্যাদি)।
কার্ডধারী
আপনার যদি একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কার্ডধারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। তবে বিস্তারিত বলতে গেলে—একজন কার্ডধারী হলেন এমন একজন যিনি কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক থেকে একটি ব্যাংক কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) পান। এরপর পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যে লেনদেনের জন্য তিনি কার্ডটি উপস্থাপন করেন।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট বলতে বোঝায় যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। কিন্তু কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেয় যারা এখানে শুধু সেই মার্চেন্টের কথা বলা হচ্ছে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আছে, যেটির মাধ্যমে তারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের পণ্য বা পরিষেবার বিনিময়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিতে পারে তারাই মার্চেন্ট। ব্যবসার মালিক হিসেবে আপনি একজন মার্চেন্ট বলে গণ্য হতে পারেন।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা মার্চেন্ট’স ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক হলো কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা বা মাস্টারকার্ড) নিবন্ধিত সদস্য। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে সাধারণত মার্চেন্ট ব্যাংক বলা হয়। এই ধরনের ব্যাংক এমন একটি অ্যাকাউন্ট (যেটিকে বলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট) পরিচালনার জন্য মার্চেন্টদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে, যা মার্চেন্টকে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকগুলো মার্চেন্টদের কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করে। এ ছাড়া গ্রাহক পরিষেবা এবং কার্ড গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোও তারা পরিচালনা করে। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ ডিপোজিট (তহবিল) জমা করে।
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক
অবশ্য নাম দেখেই বুঝতে পারার কথা- ইস্যুকারী ব্যাংক গ্রাহকদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ইস্যুকারী ব্যাংক একই সঙ্গে কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড) সদস্যও।
ইস্যুকারী ব্যাংকগুলো তাদের কার্ডধারীরা যে কেনাকাটা করেন তার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে। এরপরে কার্ডধারীর দায়িত্ব হয় তাঁদের ক্রেডিট কার্ড চুক্তির শর্তাবলির অধীনে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে সেই অর্থ পরিশোধ করা।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড)
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড কিন্তু কোনো ব্যাংক নয়। তারা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ইস্যু করে না। বরং তারা নিজ নিজ কার্ড ব্র্যান্ডের জন্য অভিভাবক (কাস্টডিয়ান) এবং ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করে। তারা ক্রেডিট কার্ড বা ইলেকট্রনিক লেনদেন প্রক্রিয়াকরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিপেনডেন্ট সেলস অর্গানাইজেশন (আইএসও) এবং মেম্বারশিপ সার্ভিস প্রভাইডার্সের (এমএসপি) সঙ্গে একটি গভর্নিং বডি হিসেবেও কাজ করে। এখান থেকে ‘কার্ড অ্যাসোসিয়েশন’ নাম এসেছে।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পরিচালনা করা। যার মধ্যে রয়েছে ইস্যুকারী এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিনিময় ফি এবং যোগ্যতা নির্দেশিকা নির্ধারণ করা, কার্ড নেটওয়ার্ক এবং নিজ ব্র্যান্ডের উন্নয়ন এবং অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া থেকে মুনাফা করা। মুনাফার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলত ভিসা এবং মাস্টারকার্ড এখন পাবলিক কোম্পানি (পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত)।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের জন্য ভিসা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ভিসানেট প্ল্যাটফর্ম। আর এ কাজে মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে তাদের ব্যাংকনেট নেটওয়ার্ক।
ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন (অথোরাইজেশন) প্রক্রিয়া
অথোরাইজেশন প্রক্রিয়ায় ওপরে উল্লিখিত সব পক্ষই নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। নিচে কোন পক্ষের কী ভূমিকা থাকে তা তুলে ধরা হলো:
কার্ডধারী
একজন কার্ডধারী পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে একটি মার্চেন্টের কাছে তাঁর কার্ডটি উপস্থাপন করেন। এরপরই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের সূচনা হয়।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট তাদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন, সফটওয়্যার বা গেটওয়ে ব্যবহার করে কার্ডধারীর তথ্য এবং লেনদেনের বিশদ বিবরণ তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক বা লেনদেন প্রক্রিয়াকারী ব্যাংকের কাছে পাঠায়।
অ্যাকোয়ারিং বা প্রসেসর
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) লেনদেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং যথাযথ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য কার্ডধারীর ইস্যুকারী ব্যাংকে পাঠায়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
মাস্টারকার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের নিজস্ব ব্যাংকনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক এবং প্রক্রিয়াকারীর (অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা এর প্রসেসর) মধ্যে বিনিময় করে। আর ভিসা কার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের ভিসানেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই কাজটি করে।
ইস্যুকারী
ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক ব্যাংকনেট বা ভিসানেটের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের (বা এর প্রসেসর) কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য পায়। এরপর সে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে। সেই সঙ্গে লেনদেনটি বৈধ কি-না, কার্ডধারীর যথেষ্ট ব্যালেন্স আছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর লেনদেনের অনুমোদন দেয় বা প্রত্যাখ্যান করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক যথাযথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা এর প্রসেসর) একটি কোড পাঠায়।
মার্চেন্ট
কোডটি মার্চেন্টের টার্মিনাল, সফটওয়্যার বা গেটওয়েতে পৌঁছায় এবং লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি ব্যাচ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়।
ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি যেভাবে সম্পন্ন হয়
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড লেনদেন যেভাবে কাজ করে সেই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় অংশ হলো ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট)। অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও সঞ্চালিত হওয়ার পরে এটি ঘটে। নিষ্পত্তির জন্য মার্চেন্ট প্রসেসরে অনুমোদনের জন্য একটি ‘ব্যাচ’ পাঠায়। সাধারণত দিনে একবার এই কাজটি হয়। প্রসেসর অনুমোদন প্রক্রিয়ার পুনঃসমন্বয় করে এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কে ব্যাচ জমা দেয়। প্রসেসর তখন পণ্য বা সেবা বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির (পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী মার্চেন্ট) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে। পাশাপাশি প্রসেসিং ফি কেটে নেয়। এই পর্যায়ে লেনদেনটি সম্পন্ন হয়।
এদিকে কার্ড ইস্যুকারী এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক যোগাযোগ এবং অর্থ স্থানান্তর অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ডধারীর কেনাকাটার অর্থ অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে পাঠায়। অবশেষে কার্ডধারীকে সেই অর্থ সেই কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককেই দিতে হয়। এই পদক্ষেপগুলোর কোনটির সঙ্গেই আসলে কার্ডধারীর কোনো সম্পৃক্ততা লাগে না।
মার্চেন্ট
এবার মার্চেন্ট তাদের অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা ব্যাংকের প্রসেসর) অনুমোদিত অথোরাইজেশনের একটি ব্যাচ পাঠিয়ে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। অনুমোদনের ব্যাচগুলো সাধারণত প্রতি কার্যদিবসের শেষে পাঠানো হয়। কার্ড থেকে একাধিক লেনদেন হলে সব মিলে একটি ব্যাচ তৈরি হয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) যথাযথ কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের (ভিসানেট বা ব্যাংকনেট) মাধ্যমে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যাচগুলো পুনরায় একত্রিত করে এবং পাঠিয়ে দেয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক অটোমেটেড ক্লিয়ারিংহাউসের (এসিএইচ) মাধ্যমে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করে এবং মার্চেন্টের সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মাসিক, দৈনিক বা উভয় হিসাবে নির্দিষ্ট প্রসেসিং ফি কেটে নেয়।
কার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফি কেটে নেয় এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাদের পাওনা পাঠিয়ে দেয়।
ইস্যুকারী
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক মূলত তার কার্ডধারীর কেনাকাটার জন্য অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে।
কার্ডধারী
কার্ডধারী তার কেনাকাটার জন্য ইস্যুকারী ব্যাংক এবং কার্ড চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সুদ এবং ফি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন।
তহবিল এবং ফি
ওপরে নিষ্পত্তি এবং ক্লিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রসেসর ক্রেডিট কার্ডে বিক্রয় থেকে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা করবে এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেবে। যাইহোক, ঠিক কীভাবে ফি কেটে নেওয়া হয় এবং কখন তহবিল জমা করা হয় তাতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ডিপোজিট
আজকাল, বেশির ভাগ প্রসেসর পণ্য কেনার পরের দিন তহবিল জমা করে। এর অর্থ মার্চেন্ট আজকের ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবে আগামীকাল।
কিছু ক্ষেত্রে, প্রসেসরেরা মার্চেন্টের তহবিল আটকে দিতে পারে। লেনদেনে জালিয়াতির সন্দেহ বা অন্য কোনো কারণে লেনদেনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাৎক্ষণিক তহবিল জমা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক কার্ড ঘষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট জমা হওয়া দেখতে পাবেন না মার্চেন্ট।

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১৪ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১৫ ঘণ্টা আগেপল্লব শাহরিয়ার

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ। এই প্রযুক্তির ময়দানেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দুই পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে বহু দশক ধরে। অন্যদিকে চীন দেখিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা আর গতির সমন্বয়ে কত দ্রুত প্রযুক্তিকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই দুই দেশের প্রযুক্তি ব্যবসা আর উদ্ভাবনের চিত্র দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, এটা কোনো একতরফা লড়াই নয়। যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে মৌলিক গবেষণা, এআই সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে। আবার চীন এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন, বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রযুক্তিকে জাতীয় কৌশলের অংশ বানানোয়।
এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, পিছিয়ে থেকেও বিপজ্জনক চীন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন প্রযুক্তির বড় যুদ্ধক্ষেত্র। কে আগে ভালো এআই বানাবে, সেটা এখন আর শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়; এটা ক্ষমতা, নিরাপত্তা আর ভবিষ্যৎ প্রভাবেরও প্রশ্ন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের দিকে তাকাই, তাহলে একটা অদ্ভুত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা চোখে পড়ে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া চীন পিছিয়েও ভীষণভাবে বিপজ্জনক!এআই উদ্ভাবনের মূল শিকড় এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রে। বড় ভাষা মডেল, জেনারেটিভ এআই, মাল্টিমোডাল সিস্টেম—এই ধারণাগুলোর জন্ম, বিকাশ আর পরিপক্বতা বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে আরও আছে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পের সংযোগ, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং বিশাল বিনিয়োগ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এআই দ্রুত গবেষণা থেকে পণ্যে রূপ নেয়। নতুন কোনো ধারণা জন্মানোর পর সেটাকে স্টার্টআপ, সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে খুব বেশি সময় লাগে না।
এআই সফটওয়্যারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্ল্যাটফর্ম, ডেভেলপার টুলস আর ক্লাউড অবকাঠামোর বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এর মানে শুধু ভালো এআই বানানো নয়, বরং বিশ্ব কীভাবে এআই ব্যবহার করবে, সেটার মানদণ্ডও তারা ঠিক করছে। কিন্তু চীনের এআই যাত্রা একেবারে ভিন্ন পথে। চীন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে উন্নত কিংবা সৃজনশীল এআই এখনো বানাতে পারেনি। কিন্তু তারা যেটা করেছে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এআই প্রযুক্তিকে তারা দ্রুত, ব্যাপক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবে নামিয়েছে।
চীনে এআই কোনো পরীক্ষাগারের বিষয় নয়; এটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায়, কারখানায় উৎপাদনে, সরকারি প্রশাসনে, নজরদারি ব্যবস্থায় আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেছে। বিশাল জনসংখ্যা আর ডেটার সুবিধা নিয়ে চীন এআই প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে এমন স্কেল তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ব্যবসার হাতে নেই। রাষ্ট্র সরাসরি এই খেলায় আছে। এতে গতি বেড়েছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হয়েছে, আর প্রযুক্তি সরাসরি জাতীয় কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ঠিক এখানেই চীন পিছিয়ে থেকেও হয়ে গেছে বিপজ্জনক।
চিপ যুদ্ধ: এই লড়াই এআইয়ের ভবিষ্যৎ কেন ঠিক করবে
এআই নিয়ে সব কথা এসে ঠেকে যায় যে বিষয়ে, তার নাম চিপ। যত বুদ্ধিমান অ্যালগরিদমই বানানো হোক, শক্তিশালী চিপ ছাড়া এআই আসলে অচল। তাই যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল যুদ্ধটা হচ্ছে এই সেমিকন্ডাক্টর কিংবা চিপ নিয়ে।
এ মুহূর্তে বাস্তবতা হলো, চিপের দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আছে; বিশেষ করে এআইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর, ডিজাইন সফটওয়্যার আর আর্কিটেকচারের বড় অংশ এখনো আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। ফলে বিশ্বজুড়ে যত আধুনিক এআই তৈরি হচ্ছে, তার মস্তিষ্কের বড় অংশই কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
এই এগিয়ে থাকার কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম। গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার টুল, ক্লাউড অবকাঠামো—দেশটিতে সব একসঙ্গে কাজ করছে। ফলে নতুন এআই মডেল তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে দ্রুততা ও স্থায়িত্ব—দুটোই।
চীনের সমস্যা শুরু এখানেই, আর তাই এখান থেকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কারণ, চীন খুব ভালোভাবে বুঝে গেছে যে তারা যদি চিপের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এআইতে সত্যিকারের স্বাধীনতা কখনোই আসবে না। তাই ২০২৫ সালে চীন যা করছে, সেটা হলো সরাসরি প্রযুক্তিগত বাধা ভাঙার চেষ্টা না করে; বরং বিকল্প পথ তৈরি করা।
চীন এখন চিপের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে স্বনির্ভর হওয়ার কৌশল নিয়েছে। উন্নত চিপে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা মাঝারি ক্ষমতার চিপকে বড় পরিসরে ব্যবহার করে এআই চালানোর পদ্ধতি তৈরি করছে। এটা আপাতদৃষ্টে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে এটা ভিন্নধর্মী শক্তি। এতে চীন এমন এআই সিস্টেম বানাতে শিখছে, যেগুলো কম খরচে, কম রিসোর্সে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এই দক্ষতাই বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে উন্নয়নশীল বাজারে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। চীনে চিপ উন্নয়ন শুধু বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সরাসরি অর্থ, নীতি আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রাষ্ট্র। এতে ফল আসতে সময় লাগলেও ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে না। এই চিপ যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এআইয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। কারণ, যে দেশ বেশি শক্তিশালী ও সহজলভ্য চিপ বানাতে পারবে, সে দেশই বেশি এআই প্রশিক্ষণ চালাতে পারবে, দ্রুত নতুন মডেল আনতে পারবে এবং বিশ্ববাজারে নিজের মানদণ্ড চাপিয়ে দিতে পারবে।
ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা
প্রযুক্তির আরও একটি ক্ষেত্র আছে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক প্রভাবকে আঘাত বা শক্তি দিতে পারে। এটি হলো ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা এখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এখানে এসেছে দুটো দিক থেকে। প্রথমত, উচ্চমানের গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এআই-চালিত ড্রোন, নজরদারি প্রযুক্তি, আধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সেন্সর—এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বনেতা। দ্বিতীয়ত হলো, অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ইতিহাস এবং বহুজাতিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রেখেছে; বিশেষ করে জটিল সাইবার ডিফেন্স এবং মহাকাশভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে চীনের কৌশল আলাদা। তারা এখানে দ্রুততা ও পরিসরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তায় চীন এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। এটি শুধু আক্রমণাত্মক নয়, প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতেও সমানভাবে শক্তিশালী।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি দৌড়ে কারা এগিয়ে
২০২৫ সালে প্রযুক্তি লড়াই শুধু উদ্ভাবনের নয়; এটি ক্ষমতা, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটা দুই ভিন্ন পথের গল্প—একটি দেশ স্বাধীন উদ্ভাবন ও স্টার্টআপের ওপর নির্ভরশীল, অন্যটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশলে এগিয়ে।
এই দ্বন্দ্ব একে অপরকে বাতিল করে না; বরং দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা আরও ধারালো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন + বাস্তবায়ন + নিরাপত্তা—এই তিনের সমন্বয় যে দেশ ভালো করতে পারবে, সেই দেশ আগামী দশকের প্রযুক্তিগত প্রভাব নির্ধারণ করবে। সংক্ষেপে, ২০২৫ সালের প্রযুক্তি মানচিত্র বলছে, উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, বাস্তব প্রয়োগের দিক থেকে চীন, আর বিশ্ব এই দুই শক্তির প্রতিযোগিতার মধ্যে টেকসই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।

একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ। এই প্রযুক্তির ময়দানেই মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দুই পরাশক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে বহু দশক ধরে। অন্যদিকে চীন দেখিয়ে দিয়েছে পরিকল্পনা আর গতির সমন্বয়ে কত দ্রুত প্রযুক্তিকে বাস্তব শক্তিতে রূপ দেওয়া যায়। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই দুই দেশের প্রযুক্তি ব্যবসা আর উদ্ভাবনের চিত্র দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, এটা কোনো একতরফা লড়াই নয়। যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে মৌলিক গবেষণা, এআই সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ সংস্কৃতিতে। আবার চীন এগিয়ে রয়েছে উৎপাদন, বাস্তব প্রয়োগ এবং প্রযুক্তিকে জাতীয় কৌশলের অংশ বানানোয়।
এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, পিছিয়ে থেকেও বিপজ্জনক চীন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন প্রযুক্তির বড় যুদ্ধক্ষেত্র। কে আগে ভালো এআই বানাবে, সেটা এখন আর শুধু ব্যবসার প্রশ্ন নয়; এটা ক্ষমতা, নিরাপত্তা আর ভবিষ্যৎ প্রভাবেরও প্রশ্ন। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের দিকে তাকাই, তাহলে একটা অদ্ভুত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা চোখে পড়ে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে এআই প্রযুক্তিতে এগিয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া চীন পিছিয়েও ভীষণভাবে বিপজ্জনক!এআই উদ্ভাবনের মূল শিকড় এখনো মূলত যুক্তরাষ্ট্রে। বড় ভাষা মডেল, জেনারেটিভ এআই, মাল্টিমোডাল সিস্টেম—এই ধারণাগুলোর জন্ম, বিকাশ আর পরিপক্বতা বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। শুধু প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে আরও আছে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পের সংযোগ, ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং বিশাল বিনিয়োগ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এআই দ্রুত গবেষণা থেকে পণ্যে রূপ নেয়। নতুন কোনো ধারণা জন্মানোর পর সেটাকে স্টার্টআপ, সফটওয়্যার বা প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে খুব বেশি সময় লাগে না।
এআই সফটওয়্যারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বের প্রভাবশালী এআই প্ল্যাটফর্ম, ডেভেলপার টুলস আর ক্লাউড অবকাঠামোর বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এর মানে শুধু ভালো এআই বানানো নয়, বরং বিশ্ব কীভাবে এআই ব্যবহার করবে, সেটার মানদণ্ডও তারা ঠিক করছে। কিন্তু চীনের এআই যাত্রা একেবারে ভিন্ন পথে। চীন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মতো সবচেয়ে উন্নত কিংবা সৃজনশীল এআই এখনো বানাতে পারেনি। কিন্তু তারা যেটা করেছে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে। এআই প্রযুক্তিকে তারা দ্রুত, ব্যাপক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাস্তবে নামিয়েছে।
চীনে এআই কোনো পরীক্ষাগারের বিষয় নয়; এটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায়, কারখানায় উৎপাদনে, সরকারি প্রশাসনে, নজরদারি ব্যবস্থায় আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে গেছে। বিশাল জনসংখ্যা আর ডেটার সুবিধা নিয়ে চীন এআই প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে এমন স্কেল তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চীনে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ব্যবসার হাতে নেই। রাষ্ট্র সরাসরি এই খেলায় আছে। এতে গতি বেড়েছে, সিদ্ধান্ত দ্রুত হয়েছে, আর প্রযুক্তি সরাসরি জাতীয় কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। ঠিক এখানেই চীন পিছিয়ে থেকেও হয়ে গেছে বিপজ্জনক।
চিপ যুদ্ধ: এই লড়াই এআইয়ের ভবিষ্যৎ কেন ঠিক করবে
এআই নিয়ে সব কথা এসে ঠেকে যায় যে বিষয়ে, তার নাম চিপ। যত বুদ্ধিমান অ্যালগরিদমই বানানো হোক, শক্তিশালী চিপ ছাড়া এআই আসলে অচল। তাই যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল যুদ্ধটা হচ্ছে এই সেমিকন্ডাক্টর কিংবা চিপ নিয়ে।
এ মুহূর্তে বাস্তবতা হলো, চিপের দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আছে; বিশেষ করে এআইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর, ডিজাইন সফটওয়্যার আর আর্কিটেকচারের বড় অংশ এখনো আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। ফলে বিশ্বজুড়ে যত আধুনিক এআই তৈরি হচ্ছে, তার মস্তিষ্কের বড় অংশই কোনো না কোনোভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।
এই এগিয়ে থাকার কারণ শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম। গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার টুল, ক্লাউড অবকাঠামো—দেশটিতে সব একসঙ্গে কাজ করছে। ফলে নতুন এআই মডেল তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে দ্রুততা ও স্থায়িত্ব—দুটোই।
চীনের সমস্যা শুরু এখানেই, আর তাই এখান থেকে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কারণ, চীন খুব ভালোভাবে বুঝে গেছে যে তারা যদি চিপের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে, তাহলে এআইতে সত্যিকারের স্বাধীনতা কখনোই আসবে না। তাই ২০২৫ সালে চীন যা করছে, সেটা হলো সরাসরি প্রযুক্তিগত বাধা ভাঙার চেষ্টা না করে; বরং বিকল্প পথ তৈরি করা।
চীন এখন চিপের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে স্বনির্ভর হওয়ার কৌশল নিয়েছে। উন্নত চিপে সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা মাঝারি ক্ষমতার চিপকে বড় পরিসরে ব্যবহার করে এআই চালানোর পদ্ধতি তৈরি করছে। এটা আপাতদৃষ্টে দুর্বলতা মনে হলেও আসলে এটা ভিন্নধর্মী শক্তি। এতে চীন এমন এআই সিস্টেম বানাতে শিখছে, যেগুলো কম খরচে, কম রিসোর্সে কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এই দক্ষতাই বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে উন্নয়নশীল বাজারে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। চীনে চিপ উন্নয়ন শুধু বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সরাসরি অর্থ, নীতি আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে রাষ্ট্র। এতে ফল আসতে সময় লাগলেও ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে না। এই চিপ যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এআইয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। কারণ, যে দেশ বেশি শক্তিশালী ও সহজলভ্য চিপ বানাতে পারবে, সে দেশই বেশি এআই প্রশিক্ষণ চালাতে পারবে, দ্রুত নতুন মডেল আনতে পারবে এবং বিশ্ববাজারে নিজের মানদণ্ড চাপিয়ে দিতে পারবে।
ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা
প্রযুক্তির আরও একটি ক্ষেত্র আছে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক প্রভাবকে আঘাত বা শক্তি দিতে পারে। এটি হলো ডিফেন্স টেক ও সাইবার নিরাপত্তা। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা এখানেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি এখানে এসেছে দুটো দিক থেকে। প্রথমত, উচ্চমানের গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এআই-চালিত ড্রোন, নজরদারি প্রযুক্তি, আধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত সেন্সর—এসব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বনেতা। দ্বিতীয়ত হলো, অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ইতিহাস এবং বহুজাতিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রেখেছে; বিশেষ করে জটিল সাইবার ডিফেন্স এবং মহাকাশভিত্তিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে।
অন্যদিকে চীনের কৌশল আলাদা। তারা এখানে দ্রুততা ও পরিসরকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন দ্রুত নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তায় চীন এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। এটি শুধু আক্রমণাত্মক নয়, প্রতিরক্ষা ও নজরদারিতেও সমানভাবে শক্তিশালী।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি দৌড়ে কারা এগিয়ে
২০২৫ সালে প্রযুক্তি লড়াই শুধু উদ্ভাবনের নয়; এটি ক্ষমতা, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় কৌশলের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটা দুই ভিন্ন পথের গল্প—একটি দেশ স্বাধীন উদ্ভাবন ও স্টার্টআপের ওপর নির্ভরশীল, অন্যটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশলে এগিয়ে।
এই দ্বন্দ্ব একে অপরকে বাতিল করে না; বরং দুই দেশের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা আরও ধারালো ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন + বাস্তবায়ন + নিরাপত্তা—এই তিনের সমন্বয় যে দেশ ভালো করতে পারবে, সেই দেশ আগামী দশকের প্রযুক্তিগত প্রভাব নির্ধারণ করবে। সংক্ষেপে, ২০২৫ সালের প্রযুক্তি মানচিত্র বলছে, উদ্ভাবনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, বাস্তব প্রয়োগের দিক থেকে চীন, আর বিশ্ব এই দুই শক্তির প্রতিযোগিতার মধ্যে টেকসই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১৪ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১৫ ঘণ্টা আগেটি এইচ মাহির

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

ডিসকো
ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।
এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।
ভাইব কোডিং
গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

মিক্সবোর্ড
গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা
ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।
গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।
সূত্র: গুগল ব্লগ

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

ডিসকো
ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।
এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।
ভাইব কোডিং
গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

মিক্সবোর্ড
গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা
ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।
গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।
সূত্র: গুগল ব্লগ

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ
বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।
কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি
গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।
গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ
বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।
কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি
গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।
গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১৪ ঘণ্টা আগে
এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে।
১৫ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।
মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি
ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।
ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।
ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।
স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।
সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়
এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।
আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।
এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।
ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।
মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি
ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।
ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।
ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।
স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।
আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।
সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়
এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।
আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।
এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।
ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
একসময় বিশ্বক্ষমতার হিসাব কষা হতো অস্ত্রের সংখ্যা কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই সমীকরণ বদলে গেছে। এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চিপ, রোবট, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা।
১৪ ঘণ্টা আগে
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে।
১৪ ঘণ্টা আগে