নয়ন রহমান
প্রাণিকুলের মধ্যে মানুষ এগিয়ে আছে তার উর্বর মস্তিষ্কের জন্য। বলা হয়ে থাকে, চিন্তা ও উদ্ভাবনের অসীম ক্ষমতার জন্য অন্য প্রাণী থেকে মানুষের এই এগিয়ে থাকা। ইতিহাসের পাতায় যার ছাপ দেখা যায় শিল্প তৈরিতে, চাকার উদ্ভাবনে কিংবা চন্দ্রবিজয়ের সাফল্যে।
তবে গবেষণা বলছে, আধুনিক মানুষের মস্তিষ্ক ১ লাখ বছর আগে বসবাসকারী হোমো সেপিয়েন্সদের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ ছোট।
একই আকারের প্রাণীদের সঙ্গে তুলনা করলে অবশ্য মানুষের মস্তিষ্ক বিশাল। কিন্তু প্রজাতিগত সাদৃশ্যের বিচারে অন্যদের তুলনায় গত ১ লাখ বছরে মস্তিষ্কের গড় আকার বিবেচনায় মানুষ পিছিয়েছে কয়েক গুণ।
ইয়ান ট্যাটারসালের গবেষণা
২০২৩ সালের একটি গবেষণায় জীবাশ্মবিদ ও আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির কিউরেটর ইমেরিটাস ইয়ান ট্যাটারসাল সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রাচীন হোমিনিনের ব্রেনকেস ভলিউমগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ পর্যবেক্ষণ তিনি প্রাচীনতম পরিচিত প্রজাতি দিয়ে শুরু করে আধুনিক মানুষে এসে শেষ করেছিলেন। তিনি দেখতে পান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রজাতির হোমিনিনগুলোতে স্বাধীনভাবে দ্রুত মস্তিষ্কের প্রসারণ ঘটেছে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকাজুড়ে। সময়ের সঙ্গে মস্তিষ্কের আকার বেড়েছে অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস, হোমো ইরেক্টাস, হোমো হাইডেলবার্গেনসিস ও হোমো নিয়ান্ডারথালেনসিসদের। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধির প্রবণতা আধুনিক মানুষের বেলায় উল্টো হয়েছে। বরফ যুগে বসবাসকারী হোমো সেপিয়েন্সদের তুলনায় এ সময়ের পুরুষ ও নারীদের মাথার খুলি গড়ে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ ছোট।
ট্যাটারসালের মতে, মস্তিষ্কের আকারের এই সংকোচন শুরু হয়েছিল প্রায় ১ লাখ বছর আগে, যখন মানুষের চিন্তার ধরন বদলে যাওয়া শুরু করেছিল। সে স্তরকে অনুসন্ধানী চিন্তা থেকে বিমূর্ত চিন্তার জগতে বোধের পরিবর্তন বলা যেতে পারে।
ট্যাটারসাল বিশ্বাস করেন, যে অনুঘটক চিন্তাশৈলীতে এই পরিবর্তন ঘটায়, তা ছিল প্রধানত ভাষার স্বতঃস্ফূর্ত উদ্ভাবন। এটি মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলোকে আরও বিপাকীয়ভাবে দক্ষ উপায়ে পুনর্গঠিত করার দিকে পরিচালিত করে। চিন্তার বেলায় ছোট ও ভালোভাবে সংগঠিত মস্তিষ্ক আগের চেয়ে জটিল গণনায় সক্ষম হয়েছিল বলে বিপাকীয়ভাবে ব্যয়বহুল বড় মস্তিষ্কগুলো অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। এটি ছিল মস্তিষ্কের আকার সংকোচনের একটি সূত্র।
তবে ট্যাটারসালের এ মত যে সবাই মেনে নিয়েছেন, তা বলা যায় না। অনেকে বলছেন, ১ লাখ বছর আগে মস্তিষ্কের সংকোচন শুরু হয়ে তা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সময়ের পরিবর্তনে এই হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়মিত ছিল, এমন কোনো প্রমাণ নেই।
ট্যাটারসালের এই অনুসন্ধানের আগেও বেশ কিছু গবেষক এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম গেরহার্ড ভন বনিন। ১৯৩৪ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মান বংশোদ্ভূত এ বিজ্ঞানী লিখেছিলেন, অন্তত ইউরোপে গত ১০ বা ২০ হাজার বছরের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কের আকার কমে যাওয়ার নির্দিষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
তবে আমাদের সংকুচিত মস্তিষ্কের ব্যাখ্যায় ট্যাটারসালের এ তত্ত্ব সম্ভবত শক্তিশালী তত্ত্ব নয়। বলা হয়ে থাকে, মস্তিষ্কের সংকোচন শুরু হয়েছিল আমাদের পূর্বপুরুষেরা যখন শিকারি-সংগ্রাহক থেকে ধীরে ধীরে জটিল সমাজ তৈরি করতে শুরু করেছিল, সেই সময় থেকে।
আমরা কি কম স্মার্ট হয়ে উঠছি
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে, মস্তিষ্ক ছোট হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের স্মার্টনেসে কি ঘাটতি দেখা দিচ্ছে? কিংবা মস্তিষ্ক সংকুচিত হওয়ার সঙ্গে কি মানুষের বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়ার সম্পর্ক আছে? আমরা আসলে কোন তত্ত্বে বিশ্বাস করব? এটি পরীক্ষিত যে মস্তিষ্কের আকারই সবকিছু নয়। বড় শরীরের আকারের কারণে পুরুষের মস্তিষ্ক নারীর মস্তিষ্কের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বড়। গবেষণায় দেখা গেছে, বড় হওয়া সত্ত্বেও নারী ও পুরুষের একই রকম জ্ঞানীয় ক্ষমতা রয়েছে। ছোট মস্তিষ্কের হোমিনিন প্রজাতি, যেমন হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস এবং হোমো নেলেডি জটিল আচরণে সক্ষম ছিল, এর অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়।
যাহোক, সাধারণভাবে দেখা যায় শরীরের আকারের তুলনায় একটি বড় মস্তিষ্ক থাকা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমরা একটি প্রজাতি হিসেবে সম্মিলিতভাবে কম স্মার্ট হয়ে যাচ্ছি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
প্রাণিকুলের মধ্যে মানুষ এগিয়ে আছে তার উর্বর মস্তিষ্কের জন্য। বলা হয়ে থাকে, চিন্তা ও উদ্ভাবনের অসীম ক্ষমতার জন্য অন্য প্রাণী থেকে মানুষের এই এগিয়ে থাকা। ইতিহাসের পাতায় যার ছাপ দেখা যায় শিল্প তৈরিতে, চাকার উদ্ভাবনে কিংবা চন্দ্রবিজয়ের সাফল্যে।
তবে গবেষণা বলছে, আধুনিক মানুষের মস্তিষ্ক ১ লাখ বছর আগে বসবাসকারী হোমো সেপিয়েন্সদের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ ছোট।
একই আকারের প্রাণীদের সঙ্গে তুলনা করলে অবশ্য মানুষের মস্তিষ্ক বিশাল। কিন্তু প্রজাতিগত সাদৃশ্যের বিচারে অন্যদের তুলনায় গত ১ লাখ বছরে মস্তিষ্কের গড় আকার বিবেচনায় মানুষ পিছিয়েছে কয়েক গুণ।
ইয়ান ট্যাটারসালের গবেষণা
২০২৩ সালের একটি গবেষণায় জীবাশ্মবিদ ও আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির কিউরেটর ইমেরিটাস ইয়ান ট্যাটারসাল সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রাচীন হোমিনিনের ব্রেনকেস ভলিউমগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ পর্যবেক্ষণ তিনি প্রাচীনতম পরিচিত প্রজাতি দিয়ে শুরু করে আধুনিক মানুষে এসে শেষ করেছিলেন। তিনি দেখতে পান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রজাতির হোমিনিনগুলোতে স্বাধীনভাবে দ্রুত মস্তিষ্কের প্রসারণ ঘটেছে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকাজুড়ে। সময়ের সঙ্গে মস্তিষ্কের আকার বেড়েছে অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস, হোমো ইরেক্টাস, হোমো হাইডেলবার্গেনসিস ও হোমো নিয়ান্ডারথালেনসিসদের। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধির প্রবণতা আধুনিক মানুষের বেলায় উল্টো হয়েছে। বরফ যুগে বসবাসকারী হোমো সেপিয়েন্সদের তুলনায় এ সময়ের পুরুষ ও নারীদের মাথার খুলি গড়ে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ ছোট।
ট্যাটারসালের মতে, মস্তিষ্কের আকারের এই সংকোচন শুরু হয়েছিল প্রায় ১ লাখ বছর আগে, যখন মানুষের চিন্তার ধরন বদলে যাওয়া শুরু করেছিল। সে স্তরকে অনুসন্ধানী চিন্তা থেকে বিমূর্ত চিন্তার জগতে বোধের পরিবর্তন বলা যেতে পারে।
ট্যাটারসাল বিশ্বাস করেন, যে অনুঘটক চিন্তাশৈলীতে এই পরিবর্তন ঘটায়, তা ছিল প্রধানত ভাষার স্বতঃস্ফূর্ত উদ্ভাবন। এটি মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলোকে আরও বিপাকীয়ভাবে দক্ষ উপায়ে পুনর্গঠিত করার দিকে পরিচালিত করে। চিন্তার বেলায় ছোট ও ভালোভাবে সংগঠিত মস্তিষ্ক আগের চেয়ে জটিল গণনায় সক্ষম হয়েছিল বলে বিপাকীয়ভাবে ব্যয়বহুল বড় মস্তিষ্কগুলো অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। এটি ছিল মস্তিষ্কের আকার সংকোচনের একটি সূত্র।
তবে ট্যাটারসালের এ মত যে সবাই মেনে নিয়েছেন, তা বলা যায় না। অনেকে বলছেন, ১ লাখ বছর আগে মস্তিষ্কের সংকোচন শুরু হয়ে তা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সময়ের পরিবর্তনে এই হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়মিত ছিল, এমন কোনো প্রমাণ নেই।
ট্যাটারসালের এই অনুসন্ধানের আগেও বেশ কিছু গবেষক এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম গেরহার্ড ভন বনিন। ১৯৩৪ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মান বংশোদ্ভূত এ বিজ্ঞানী লিখেছিলেন, অন্তত ইউরোপে গত ১০ বা ২০ হাজার বছরের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কের আকার কমে যাওয়ার নির্দিষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
তবে আমাদের সংকুচিত মস্তিষ্কের ব্যাখ্যায় ট্যাটারসালের এ তত্ত্ব সম্ভবত শক্তিশালী তত্ত্ব নয়। বলা হয়ে থাকে, মস্তিষ্কের সংকোচন শুরু হয়েছিল আমাদের পূর্বপুরুষেরা যখন শিকারি-সংগ্রাহক থেকে ধীরে ধীরে জটিল সমাজ তৈরি করতে শুরু করেছিল, সেই সময় থেকে।
আমরা কি কম স্মার্ট হয়ে উঠছি
স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে, মস্তিষ্ক ছোট হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের স্মার্টনেসে কি ঘাটতি দেখা দিচ্ছে? কিংবা মস্তিষ্ক সংকুচিত হওয়ার সঙ্গে কি মানুষের বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়ার সম্পর্ক আছে? আমরা আসলে কোন তত্ত্বে বিশ্বাস করব? এটি পরীক্ষিত যে মস্তিষ্কের আকারই সবকিছু নয়। বড় শরীরের আকারের কারণে পুরুষের মস্তিষ্ক নারীর মস্তিষ্কের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বড়। গবেষণায় দেখা গেছে, বড় হওয়া সত্ত্বেও নারী ও পুরুষের একই রকম জ্ঞানীয় ক্ষমতা রয়েছে। ছোট মস্তিষ্কের হোমিনিন প্রজাতি, যেমন হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস এবং হোমো নেলেডি জটিল আচরণে সক্ষম ছিল, এর অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়।
যাহোক, সাধারণভাবে দেখা যায় শরীরের আকারের তুলনায় একটি বড় মস্তিষ্ক থাকা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমরা একটি প্রজাতি হিসেবে সম্মিলিতভাবে কম স্মার্ট হয়ে যাচ্ছি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানো স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে সারা বিশ্বে মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে স্টারলিংক। এবার কম্পিউটারের পাশাপাশি স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার ও কল করার সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। নতুন এ সুবিধা চালুর জন্য বিভিন্ন দেশে
৭ ঘণ্টা আগেদেশের বাজারে ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে অনার বাংলাদেশ। ব্র্যান্ডটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আজকের পত্রিকা প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অবস্থা, ব্র্যান্ড ও ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছে অনার বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে।
১৮ ঘণ্টা আগেঅস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড ২১ নভেম্বর সংসদে ইতিহাস সৃষ্টিকারী এক আইন উত্থাপন করেছেন। এই আইন পাস হলে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।
১৮ ঘণ্টা আগেঅ্যানিমেশন ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বা ভিএফএক্স বর্তমান সময়ে অনেক শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গেমিং, কনটেন্ট তৈরি, ব্র্যান্ডিং, ভার্চুয়াল সিমুলেশনসহ অনেক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে অ্যানিমেশনের।
১৯ ঘণ্টা আগে