এআই ডেটা সেন্টারের জন্য বিশ্বে প্রথম পরমাণু শক্তি ব্যবহারে যাচ্ছে গুগল

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) বিভিন্ন প্রযুক্তি ও ডেটা সেন্টার পরিচালনার জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। এই ক্রমবর্ধমান শক্তির চাহিদা মেটাতে ‘বিশ্বের প্রথম’ পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল। এই চুক্তির মাধ্যমে  ছোট পারমাণবিক চুল্লির একটি বহর থেকে শক্তি কিনবে কোম্পানিটি। 

ক্যালিফোর্নিয়ার ‘কাইরোস পাওয়ার’ কোম্পানিতে ছয় বা সাতটি স্মল নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর (এসএমআর) বা ছোট পারমাণবিক চুল্লি অর্ডার দিয়েছে গুগল। প্রথম ধাপের চুল্লিগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে প্রস্তুত হবে এবং বাকি চুল্লিগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রস্তুত হবে। 

গুগল আশা করছে, চুক্তিটি তাদের ডেটা সেন্টারগুলোর জন্য একটি কম-কার্বন শক্তির সমাধান নিশ্চিত করবে, যেগুলো বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে। 

গুগল জানিয়েছে, ‘২৪ ঘণ্টার বিশুদ্ধ শক্তি একটি উৎস’ হল নিউক্লিয়ার শক্তি, যা তাদের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে নির্ভরযোগ্য সাহায্য করতে পারে। 

জেনারেটিভ এআই ও ক্লাউড সেবার জন্য প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। এ জন্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

গত মাসে থ্রি মাইল আইল্যান্ড এনার্জি প্ল্যান্ট নামের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২০ বছরের একটি চুক্তিও করেছে মাইক্রোসফট। প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের ২৮ মার্চ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পেনসিলভানিয়ার অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি চুল্লিতে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এতে হতাহতের কোনা ঘটনা না ঘটলেও পরে চুল্লিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ চুক্তির আওতায় ২০২৮ সালে পারমাণবিক কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করা হবে বলে জানা গেছে। 
 
আবার গত মার্চ মাসে অ্যালেন এনার্জির কাছ থেকে অ্যামাজন একটি ডেটাসেন্টার কিনেছে যা নিউক্লিয়ার শক্তি দিয়ে পরিচালিত হয়। 

গুগলের নতুন পারমাণবিক প্ল্যান্টগুলোর অবস্থান এবং চুক্তির আর্থিক বিস্তারিত তথ্য প্রতাশ করা হয়নি। গুগল কাইরোস থেকে মোট ৫০০ মেগাওয়াট শক্তি কিনতে সম্মত হয়েছে। কাইরোস ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কোম্পানিটি টেনেসিতে চুল্লী নির্মাণ করছে, যা ২০২৭ সালে সম্পন্ন হওয়ার কথা। 

গুগলের এনার্জি এবং ক্লাইমেটের সিনিয়র ডিরেক্টর মাইকেল টেরেল বলেন, গ্রিডে নতুন বিদ্যুৎ উৎসের প্রয়োজন, যা এআই প্রযুক্তিগুলোকে সমর্থন দেবে। এসব প্রযুক্তি বড় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি সাধন করছে, ব্যবসা, গ্রাহকদের সেবা উন্নত করছে এবং জাতীয় প্রতিযোগিতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।’ 

কাইরোসের চিফ এক্সিকিউটিভ এবং কো-ফাউন্ডার মাইক লফার বলেছেন, আমরা নিশ্চিত যে এই নতুন পদ্ধতি আমাদের প্রকল্পগুলোর নির্ধারিত খরচ এবং সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করার সম্ভাবনাকে উন্নত করবে।’ 

তবে চুক্তিটি নিয়ন্ত্রক অনুমতির ওপর নির্ভরশীল। ছোট কারখানা নির্মিত পারমাণবিক চুল্লিগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে বড় প্ল্যান্ট তৈরির সাধারণত যেসব অতিরিক্ত খরচ এবং দেরি হয় তা কমানো যায়। 

সমালোচকেরা যুক্তি দিচ্ছেন যে, এই এসএমআরগুলো ব্যয়বহুল হতে পারে কারণ এগুলো বড় প্ল্যান্টগুলোর মতো একই পরিমাণে শক্তি উৎপাদন করতে পারবে না। 

যুক্তরাজ্যে কিছু কোম্পানি সরকারের কাছে এসএমআর প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য দরপত্র দিচ্ছে। কারণ মন্ত্রীরা নিউক্লিয়ার শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। এদের মধ্যে রোলস-রয়েস কোম্পানিকে এসএমআর প্রযুক্তি তৈরি ও পরিচালনার জন্য চেক সরকার নির্বাচিত করেছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত