ইমরান খান
পদ্মা ও সেতু ছোট্টবেলার বন্ধু। পরস্পরের প্রতি তাদের আবেগের অন্ত নাই। কিন্তু কী করে যেন সেতু নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল। আর ফেরে না। ফেরে না। বন্ধু বিহনে দীর্ঘ অদেখায় এদিকে পদ্মার বুকে বেদনার বালুচর পড়তে থাকে। বন্ধুর এই বিরহে অবশেষে ফেরার মন হলো সেতুর। পদ্মার বুকেই এল ফিরে সে। কিন্তু এ কী? মহাভারতের সেই দুঃশাসনের মতো ফেরিরা তার পিছে লেগেছে। সংখ্যায়ও কম নয় তারা। এমন অবস্থায় উদ্বেগে পদ্মার ঘুম হারাম। অবশেষে আর সইতে না পেরে প্রাণ–সইকে লিখেছে সে চিঠি—
প্রিয় সেতু,
কেমন আছ? জানি প্রশ্নটি অবান্তর, তাও তোমার মনের অবস্থাটা জানতে বড় ইচ্ছে হচ্ছে। একের পর এক লিড নিউজের বদৌলতে জানতে পারছি, তোমার ওপর নানা নামের ফেরির ধকল যাচ্ছে। এ দেখে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। থেকে থেকে মনে শুধু একটি প্রশ্নই উঠছে, বারবারই কেন তোমার ওপরে; কেন...কেন? কিন্তু জানোই তো বন্ধু? যে গাছের ফল বড় বেশি মিষ্টি, তাকে ঢিলটাও একটু বেশিই সহ্য করতে হয়। তবে তোমার ওপর আমার এটুকু বিশ্বাস আছে, ধাক্কা খেতে খেতে তুমি আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এর মাঝেও কখনো হতাশা এলে স্মরণ করবে, ‘যতবার ধাক্কা দাও, ফিরিয়ে দেব সমান। ধাক্কা সামলেই আমি জিতে নেব জনমন।’
বন্ধু আমার,
হিংসা-ঈর্ষা শুধু মানুষের নয়, ফেরির মনেও থাকতে পারে। তুমি চালু হয়ে গেলে নিজেদের কী হবে ভেবে ফেরিরা এখন হয়তো পাগলপ্রায়। মেসি ১০ নম্বর জার্সি হারানোয় অতি উৎসাহী সমর্থকদের উসকানিতেও এমন হতে পারে। কিন্তু, তুমি ভেব না বন্ধু, তোমার সঙ্গে লাগতে এসে ওরাই বরং কপাল ফাটিয়ে ফিরে যাচ্ছে, যাবে। তবে ওদের এগিয়ে আসতে দেখলে তুমি ডানে বামে সরে আত্মরক্ষাটা অন্তত করবে—এটুকু আশা করতেই পারি। চীনা ট্রেইনারের প্রশিক্ষণ পেলে এ কাজটি যে তোমার জন্য খুব কঠিন হবে না, সে বিশ্বাস আমার আছে।
প্রিয় সুজনেষু,
অনেক দিন তোমার খবর পাইনি। বিশেষ করে তোমার স্প্যানগুলো বসানো শেষ হওয়ার পর কেউ তোমাকে মনে রাখেনি। তবে ধাক্কা শুরুর পর আবার নিয়মিত খোঁজ পাচ্ছি। তোমার খোঁজ পেতে ভালো লাগলেও এভাবে খোঁজ পাওয়াটা যে আমার জন্য সুখের নয়, তা নিশ্চয়ই তুমিও বুঝতে পারো।
প্রিয় সুচরিতেষু,
সাবধানে থেকো। তোমাকে নায়িকা ভেবে প্রেমের আশায় তোমার সঙ্গে নানা নামের ফেরিরা ধাক্কা খাচ্ছে কিনা, সে সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ো না। মনে রেখো, স্থাপনের সময় নিউজে নিউজে তোমার পাগুলো যেভাবে সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছিলে, তাতে তোমার স্পর্শ পেতে অনেকেই চাইবে। কিন্তু, আমি তো তোমাকে জানি। আলাভোলা তুমি যে এই ফাঁদে পা দিয়ে বহুগামিতায় জড়াবে না, সে বিশ্বাসও আমার আছে। এরপরও অবস্থা বেশি বেগতিক হলে ‘আমাকে চেন? আমি দেশের “একমাত্র” সব ব্র্যান্ডের সিমেন্টে তৈরি’, বলে হালকা হুমকি দিয়ে দিয়ো।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
কল্যাণীয়েষু,
তারপরও যদি ষড়যন্ত্র চলে, আর যদি কেউ ধাক্কা দেয়; আমাকে জানিও। হেলমেট, হাতুড়ি, লাঠিসহ পুরো টিম নিয়ে আমি প্রস্তুত আছি। তুমি ডাকামাত্র দলবল নিয়ে হাজির হব। তবে ছোট্ট একটা আরজি; ঈদের আগে ডেকো না যেন বন্ধু। ঈদ পর্যন্ত আমার বাহিনীকে ‘বন্ধু রুমে’ হালকা কিছু ‘ম্যানার’ শেখানো এখন আমার এক বিরাট প্রক্টোরিয়াল দায়িত্ব।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি বন্ধু। ভালোবাসা নিয়ো।
ইতি
পদ্মা
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
পদ্মা ও সেতু ছোট্টবেলার বন্ধু। পরস্পরের প্রতি তাদের আবেগের অন্ত নাই। কিন্তু কী করে যেন সেতু নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল। আর ফেরে না। ফেরে না। বন্ধু বিহনে দীর্ঘ অদেখায় এদিকে পদ্মার বুকে বেদনার বালুচর পড়তে থাকে। বন্ধুর এই বিরহে অবশেষে ফেরার মন হলো সেতুর। পদ্মার বুকেই এল ফিরে সে। কিন্তু এ কী? মহাভারতের সেই দুঃশাসনের মতো ফেরিরা তার পিছে লেগেছে। সংখ্যায়ও কম নয় তারা। এমন অবস্থায় উদ্বেগে পদ্মার ঘুম হারাম। অবশেষে আর সইতে না পেরে প্রাণ–সইকে লিখেছে সে চিঠি—
প্রিয় সেতু,
কেমন আছ? জানি প্রশ্নটি অবান্তর, তাও তোমার মনের অবস্থাটা জানতে বড় ইচ্ছে হচ্ছে। একের পর এক লিড নিউজের বদৌলতে জানতে পারছি, তোমার ওপর নানা নামের ফেরির ধকল যাচ্ছে। এ দেখে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। থেকে থেকে মনে শুধু একটি প্রশ্নই উঠছে, বারবারই কেন তোমার ওপরে; কেন...কেন? কিন্তু জানোই তো বন্ধু? যে গাছের ফল বড় বেশি মিষ্টি, তাকে ঢিলটাও একটু বেশিই সহ্য করতে হয়। তবে তোমার ওপর আমার এটুকু বিশ্বাস আছে, ধাক্কা খেতে খেতে তুমি আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এর মাঝেও কখনো হতাশা এলে স্মরণ করবে, ‘যতবার ধাক্কা দাও, ফিরিয়ে দেব সমান। ধাক্কা সামলেই আমি জিতে নেব জনমন।’
বন্ধু আমার,
হিংসা-ঈর্ষা শুধু মানুষের নয়, ফেরির মনেও থাকতে পারে। তুমি চালু হয়ে গেলে নিজেদের কী হবে ভেবে ফেরিরা এখন হয়তো পাগলপ্রায়। মেসি ১০ নম্বর জার্সি হারানোয় অতি উৎসাহী সমর্থকদের উসকানিতেও এমন হতে পারে। কিন্তু, তুমি ভেব না বন্ধু, তোমার সঙ্গে লাগতে এসে ওরাই বরং কপাল ফাটিয়ে ফিরে যাচ্ছে, যাবে। তবে ওদের এগিয়ে আসতে দেখলে তুমি ডানে বামে সরে আত্মরক্ষাটা অন্তত করবে—এটুকু আশা করতেই পারি। চীনা ট্রেইনারের প্রশিক্ষণ পেলে এ কাজটি যে তোমার জন্য খুব কঠিন হবে না, সে বিশ্বাস আমার আছে।
প্রিয় সুজনেষু,
অনেক দিন তোমার খবর পাইনি। বিশেষ করে তোমার স্প্যানগুলো বসানো শেষ হওয়ার পর কেউ তোমাকে মনে রাখেনি। তবে ধাক্কা শুরুর পর আবার নিয়মিত খোঁজ পাচ্ছি। তোমার খোঁজ পেতে ভালো লাগলেও এভাবে খোঁজ পাওয়াটা যে আমার জন্য সুখের নয়, তা নিশ্চয়ই তুমিও বুঝতে পারো।
প্রিয় সুচরিতেষু,
সাবধানে থেকো। তোমাকে নায়িকা ভেবে প্রেমের আশায় তোমার সঙ্গে নানা নামের ফেরিরা ধাক্কা খাচ্ছে কিনা, সে সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ো না। মনে রেখো, স্থাপনের সময় নিউজে নিউজে তোমার পাগুলো যেভাবে সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছিলে, তাতে তোমার স্পর্শ পেতে অনেকেই চাইবে। কিন্তু, আমি তো তোমাকে জানি। আলাভোলা তুমি যে এই ফাঁদে পা দিয়ে বহুগামিতায় জড়াবে না, সে বিশ্বাসও আমার আছে। এরপরও অবস্থা বেশি বেগতিক হলে ‘আমাকে চেন? আমি দেশের “একমাত্র” সব ব্র্যান্ডের সিমেন্টে তৈরি’, বলে হালকা হুমকি দিয়ে দিয়ো।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
কল্যাণীয়েষু,
তারপরও যদি ষড়যন্ত্র চলে, আর যদি কেউ ধাক্কা দেয়; আমাকে জানিও। হেলমেট, হাতুড়ি, লাঠিসহ পুরো টিম নিয়ে আমি প্রস্তুত আছি। তুমি ডাকামাত্র দলবল নিয়ে হাজির হব। তবে ছোট্ট একটা আরজি; ঈদের আগে ডেকো না যেন বন্ধু। ঈদ পর্যন্ত আমার বাহিনীকে ‘বন্ধু রুমে’ হালকা কিছু ‘ম্যানার’ শেখানো এখন আমার এক বিরাট প্রক্টোরিয়াল দায়িত্ব।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি বন্ধু। ভালোবাসা নিয়ো।
ইতি
পদ্মা
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
১২ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
১৪ ঘণ্টা আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
২ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৩ দিন আগে