ইশতিয়াক হাসান
অনেকের কাছেই বলিভিয়ার উত্তর ইয়াংগাস সড়ক পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা। এখানে ঘটা বিভিন্ন দুর্ঘটনা, রাস্তার নানা বাঁক আর ঢালের কারণে এটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ডেথ রোড’ বা মৃত্যুসড়ক নামে। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সড়কটির নিরাপত্তার ব্যাপারে কিছু উদ্যোগ নেওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে জানা গেছে।
সড়কটি বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজের সঙ্গে যুক্ত করেছে আমাজনের জঙ্গলের মধ্যকার এলাকা ইয়াংগাসকে। আর এটি করতে গিয়ে বিশাল, দুরারোহ করডিলেরা ওরিয়েন্টাল পর্বতমালা অতিক্রম করতে হয়েছে রাস্তাটিকে। হঠাৎ খাড়া নেমে যাওয়া, ওঠা কিংবা কড়া মোচড়—সব মিলিয়ে ভয়ানক এক রাস্তায় পরিণত হয়েছে এটি।
পথের শুরু লা পাজ থেকে, ৩ হাজার ৬৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত শহরটি পৃথিবীর উচ্চতম রাজধানী। এখান থেকে শুরুতে ওপর দিকে উঠে রাস্তাটি পৌঁছে ৪ হাজার ৬৫০ মিটার উচ্চতায় লা কুমবরে পাসে। তারপর একেবারে খাড়া নামতে শুরু করে করোইকো শহরে, এর উচ্চতা ১ হাজার ২০০ মিটার। আর এই সাড়ে তিন হাজার মিটারের বেশি পতন একে পৃথিবীর বিপজ্জনক রাস্তাগুলোর একটিতে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। একটা সময় পর্যন্ত ফি বছর এ রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটত।
১৯৩০-এর দশকে চাকো যুদ্ধের সময় প্যারাগুয়ের কয়েদিদের দিয়ে বানানো হয় সড়কটি। কোথাও কোথাও পর্বতের খাড়া ঢাল কেটে তৈরি করা হয়েছে পথটি। রাস্তার এক পাশে কঠিন পাথুরে তাক, আরেক পাশে ৬০০ মিটার খাড়া গিরিখাদ। রাস্তাটির বেশির ভাগ অংশ সাড়ে তিন মিটার বা প্রায় ১১ ফুট চওড়া। অনেক জায়গায় নেই রেলিং।
আমাজনের দিক থেকে আসা উষ্ণ, ভেজা বাতাস আন্দিজের পুবের ঢালে বাধা পেয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই সঙ্গে জন্ম দেয় কুয়াশার। এতে আরও বিপজ্জনক রূপ নেয় রাস্তাটি। গোদের ওপর বিষফোড়া হিসেবে মাঝেমধ্যেই পাহাড় থেকে কাদা বা পাথর ঝরতে শুরু করে, কোথাও কোথাও ওপরের কোনো জলপ্রপাতের পানিতেও সিক্ত হয় রাস্তাটি।
এমনিতে বলিভিয়ার অন্য সব সড়কে সড়কের ডান পাশে গাড়ি চালানোর নিয়ম থাকলেও এই সড়কে গাড়ি চলে বাম ঘেঁষে। বামে থাকা একজন চালক রাস্তার কিনারগুলো ভালো দেখতে পান। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত এ রাস্তার পাড়ি দিতে গিয়ে কয়েক শ মানুষের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
পৃথিবীর রোমাঞ্চপ্রেমীদের কাছে এ পথ পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বিগত বছরগুলোতে সড়কটির আধুনিকায়ন করা হয়। এখন কারও কারও মতে, রাস্তাটি এখন আগের চেয়ে নিরাপদ। সত্যি কি তাই?
২০০৬ সাল পর্যন্ত উত্তর ইয়াংগাস রাস্তাটি ছিল করোইকো থেকে লা পাজ যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। তখন এর লেন ছিল কেবল একটি, আর যেকোনো যানবাহনই এটি দিয়ে চলাচল করতে পারত। ২০০৯ সালে বলিভীয় সরকার কাছের একটি পার্বত্য এলাকায় নতুন একটি রাস্তা তৈরি করে। নতুন রাস্তায় দুটি লেন আছে। এখন অবশ্য উত্তর ইয়াংগাসেও দুটি লেন করা হয়েছে। সড়কের কোথাও কোথাও নিরাপত্তা দেয়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও এখনো এ পথে দুর্ঘটনা থেমে নেই। এর বিভিন্ন জায়গায় এখনো নিহতদের স্মরণে শোভা পাচ্ছে ক্রুশ।
তবে সৌভাগ্যক্রমে সবকিছু মিলিয়ে হয়তো এখন রাস্তাটির পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তার তকমা হারাতে বসেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি রাস্তার বামে থাকছেন, আর সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাচ্ছেন যাত্রাটা আশা করা যায় নিরাপদ হবে।
এখন বেশির ভাগ দুর্ঘটনার শিকার স্থানীয় শ্রমিক ও সাইক্লিস্টরা। তাঁরা এখনো এ রাস্তা ব্যবহার করেন। ট্যুর অপারেটররা সাইকেল রাইডের ব্যবস্থা করেন। রোমাঞ্চপিয়াসী সাইকেলচালকদের জন্য সাবধানতা তাই বেশি জরুরি, যেন ফিরে এসে আশ্চর্য সে ভ্রমণের গল্পটা বলতে পারেন।
নতুন রাস্তা তৈরির পর উত্তর ইয়াংগাস সড়কে যান চলাচল কমায় প্রকৃতির জন্যও ভালো হয়েছে। ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি নামে বন্য প্রাণী নিয়ে কাজ করা এক সংগঠনের জরিপে জানা গেছে, গাড়ির মাধ্যমে শব্দ ও বায়ুদূষণ কমে যাওয়ায় এই এলাকায় বন্য প্রাণীর আনাগোনা বেড়েছে। তারা ৩৫টি ক্যামেরা ট্র্যাপ বসিয়ে ১৬ জাতের স্তন্যপায়ী ও ৯৪ জাতের পাখির খোঁজ পেয়েছে রাস্তার আশপাশের এলাকায়।
এটলাস অবসকিউরা, ডিসকভারি ডটকম, রয়টার্স
অনেকের কাছেই বলিভিয়ার উত্তর ইয়াংগাস সড়ক পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা। এখানে ঘটা বিভিন্ন দুর্ঘটনা, রাস্তার নানা বাঁক আর ঢালের কারণে এটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ডেথ রোড’ বা মৃত্যুসড়ক নামে। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সড়কটির নিরাপত্তার ব্যাপারে কিছু উদ্যোগ নেওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে জানা গেছে।
সড়কটি বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজের সঙ্গে যুক্ত করেছে আমাজনের জঙ্গলের মধ্যকার এলাকা ইয়াংগাসকে। আর এটি করতে গিয়ে বিশাল, দুরারোহ করডিলেরা ওরিয়েন্টাল পর্বতমালা অতিক্রম করতে হয়েছে রাস্তাটিকে। হঠাৎ খাড়া নেমে যাওয়া, ওঠা কিংবা কড়া মোচড়—সব মিলিয়ে ভয়ানক এক রাস্তায় পরিণত হয়েছে এটি।
পথের শুরু লা পাজ থেকে, ৩ হাজার ৬৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত শহরটি পৃথিবীর উচ্চতম রাজধানী। এখান থেকে শুরুতে ওপর দিকে উঠে রাস্তাটি পৌঁছে ৪ হাজার ৬৫০ মিটার উচ্চতায় লা কুমবরে পাসে। তারপর একেবারে খাড়া নামতে শুরু করে করোইকো শহরে, এর উচ্চতা ১ হাজার ২০০ মিটার। আর এই সাড়ে তিন হাজার মিটারের বেশি পতন একে পৃথিবীর বিপজ্জনক রাস্তাগুলোর একটিতে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। একটা সময় পর্যন্ত ফি বছর এ রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটত।
১৯৩০-এর দশকে চাকো যুদ্ধের সময় প্যারাগুয়ের কয়েদিদের দিয়ে বানানো হয় সড়কটি। কোথাও কোথাও পর্বতের খাড়া ঢাল কেটে তৈরি করা হয়েছে পথটি। রাস্তার এক পাশে কঠিন পাথুরে তাক, আরেক পাশে ৬০০ মিটার খাড়া গিরিখাদ। রাস্তাটির বেশির ভাগ অংশ সাড়ে তিন মিটার বা প্রায় ১১ ফুট চওড়া। অনেক জায়গায় নেই রেলিং।
আমাজনের দিক থেকে আসা উষ্ণ, ভেজা বাতাস আন্দিজের পুবের ঢালে বাধা পেয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই সঙ্গে জন্ম দেয় কুয়াশার। এতে আরও বিপজ্জনক রূপ নেয় রাস্তাটি। গোদের ওপর বিষফোড়া হিসেবে মাঝেমধ্যেই পাহাড় থেকে কাদা বা পাথর ঝরতে শুরু করে, কোথাও কোথাও ওপরের কোনো জলপ্রপাতের পানিতেও সিক্ত হয় রাস্তাটি।
এমনিতে বলিভিয়ার অন্য সব সড়কে সড়কের ডান পাশে গাড়ি চালানোর নিয়ম থাকলেও এই সড়কে গাড়ি চলে বাম ঘেঁষে। বামে থাকা একজন চালক রাস্তার কিনারগুলো ভালো দেখতে পান। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত এ রাস্তার পাড়ি দিতে গিয়ে কয়েক শ মানুষের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
পৃথিবীর রোমাঞ্চপ্রেমীদের কাছে এ পথ পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বিগত বছরগুলোতে সড়কটির আধুনিকায়ন করা হয়। এখন কারও কারও মতে, রাস্তাটি এখন আগের চেয়ে নিরাপদ। সত্যি কি তাই?
২০০৬ সাল পর্যন্ত উত্তর ইয়াংগাস রাস্তাটি ছিল করোইকো থেকে লা পাজ যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। তখন এর লেন ছিল কেবল একটি, আর যেকোনো যানবাহনই এটি দিয়ে চলাচল করতে পারত। ২০০৯ সালে বলিভীয় সরকার কাছের একটি পার্বত্য এলাকায় নতুন একটি রাস্তা তৈরি করে। নতুন রাস্তায় দুটি লেন আছে। এখন অবশ্য উত্তর ইয়াংগাসেও দুটি লেন করা হয়েছে। সড়কের কোথাও কোথাও নিরাপত্তা দেয়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও এখনো এ পথে দুর্ঘটনা থেমে নেই। এর বিভিন্ন জায়গায় এখনো নিহতদের স্মরণে শোভা পাচ্ছে ক্রুশ।
তবে সৌভাগ্যক্রমে সবকিছু মিলিয়ে হয়তো এখন রাস্তাটির পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তার তকমা হারাতে বসেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি রাস্তার বামে থাকছেন, আর সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাচ্ছেন যাত্রাটা আশা করা যায় নিরাপদ হবে।
এখন বেশির ভাগ দুর্ঘটনার শিকার স্থানীয় শ্রমিক ও সাইক্লিস্টরা। তাঁরা এখনো এ রাস্তা ব্যবহার করেন। ট্যুর অপারেটররা সাইকেল রাইডের ব্যবস্থা করেন। রোমাঞ্চপিয়াসী সাইকেলচালকদের জন্য সাবধানতা তাই বেশি জরুরি, যেন ফিরে এসে আশ্চর্য সে ভ্রমণের গল্পটা বলতে পারেন।
নতুন রাস্তা তৈরির পর উত্তর ইয়াংগাস সড়কে যান চলাচল কমায় প্রকৃতির জন্যও ভালো হয়েছে। ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি নামে বন্য প্রাণী নিয়ে কাজ করা এক সংগঠনের জরিপে জানা গেছে, গাড়ির মাধ্যমে শব্দ ও বায়ুদূষণ কমে যাওয়ায় এই এলাকায় বন্য প্রাণীর আনাগোনা বেড়েছে। তারা ৩৫টি ক্যামেরা ট্র্যাপ বসিয়ে ১৬ জাতের স্তন্যপায়ী ও ৯৪ জাতের পাখির খোঁজ পেয়েছে রাস্তার আশপাশের এলাকায়।
এটলাস অবসকিউরা, ডিসকভারি ডটকম, রয়টার্স
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
১৭ ঘণ্টা আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে