উত্তাল সাগরে বৃষ্টির পানি আর কাঁচা মাছ খেয়ে দুই মাস টিকে ছিলেন অস্ট্রেলীয় নাবিক ও তাঁর কুকুর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৩, ১২: ২৯
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৩, ১২: ৩৫

বিক্ষুব্ধ সাগরে ছোট্ট একটা নৌকা নিয়ে দিনের পর দিন টিকে থাকা মোটেই সহজ কাজ নয়। তারপর আবার যদি খাবার-দাবারও ফুরিয়ে যায়, তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু কাঁচা মাছ খেয়ে আর বৃষ্টির পানি পান করে দুটি মাস দিব্যি প্রশান্ত মহাসাগরে কাটিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক নাবিক। তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা ৫১ বছর বয়স্ক টিম শ্যাডক অবশ্য এ অভিযানে একেবারে একা ছিলেন না। সঙ্গে ছিল তাঁর কুকুর বেলা। তাঁরা মেক্সিকো থেকে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন গত এপ্রিলে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রবল এক ঝড়ের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁদের নৌকাটি। একটি হেলিকপ্টার নৌকাটিকে দেখতে পাওয়ার পর একটি ট্রলার এ সপ্তাহে উদ্ধার করে টিম এবং বেলাকে। টুনা মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ট্রলারটিতে থাকা চিকিৎসক অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম নাইন নিউজকে জানিয়েছেন, টিমের শরীরের সবকিছু স্বাভাবিক আছে।

টিম শ্যাডক ৬ হাজার কিলোমিটার সাগরপথ পাড়ি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেন মেক্সিকোর লা পাজ শহর থেকে। কিন্তু বিধি বাম। ঝড়ের কবলে পড়েন। আর এতে নৌকার বিভিন্ন সরঞ্জাম বিকল হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ফলে বিশাল, বৈরী উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে নৌকা নিয়ে ভাসতে থাকেন নাবিক এবং তাঁর কুকুরটি।

দুই মাস পর যখন তাঁদের মেক্সিকো উপকূলে খুঁজে পায় টুনা মাছ অহরণ করা ট্রলারটি, তখন বেশ কিছুটা পাতলা হয়ে গেছে টিমের শরীর, মুখে দাড়ি অনেক বড় হয়েছে।

শারীরিকভাবে বেশ সুস্থ আছেন শ্যাডক।‘সাগরে বেশ কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে’ নাইন নিউজের সংগৃহীত ও উদ্ধারকারীদের করা এক ভিডিওতে বলেন টিম, ‘আমার শুধু বিশ্রাম আর খাবার প্রয়োজন। কারণ দীর্ঘ সময় সাগরে একাকী ছিলাম।  এ ছাড়া আমার স্বাস্থ্য চমৎকার আছে।’

যদিও কেবল বৃষ্টির পানি এবং সাগর থেকে ধরা কাঁচা মাছ খেয়ে দুই মাস বেঁচে থাকতে হয়েছে, সাগরে বড় কোনো অসুস্থতা বা আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি টিমের, জানিয়েছেন চিকিৎসক।

টিম শ্যাডক জানান, তাঁর মাছ ধরার সরঞ্জামগুলো বৈরী সাগরে টিকে থাকতে সাহায্য করেছে। নৌকার ওপরে টাঙানো শামিয়ানা ও আচ্ছাদন সূর্যের তাপ থেকে বাঁচায় তাঁকে।

উদ্ধারের পরপরই টিমকে হাসতে দেখা যায়। হালকা খাবারও খেতে পারছিলেন। টুনা মাছ ধরার ট্রলারটি এখন মেক্সিকোর দিকে এগোচ্ছে। সেখানে টিম শ্যাডকের আরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত