রজত কান্তি রায়
‘খাচুয়া মানে খচ্চর, জানিস তো?’
‘কয়েক লাখবার শুনেছি আপনার মুখেই। ডায়লগ চেঞ্জ করেন এবার।’
মুখের ওপরের মাছি তাড়াবার মতো করে হাত নেড়ে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলেন তিনি। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। মনে হলো, মাথার ভেতরের রক্ত চলাচলও দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এ রকম সময় এক ধরনের অস্বস্তি হয়। আমারও হলো।
‘এমনে তাকানোর মানে কী? আমার অস্বস্তি হয়।’
‘গভীর অভিমান হচ্ছে রে। বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অভিমান।’
‘কত হবে এই শ্রাবণে?’
আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া বহুবার আমাকে বলেছেন, তাঁর বয়স দেড় শ বছর। আমি প্রবলভাবে প্রতিবাদ করেছি প্রতিবারই। কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে কয়েক দিন আগে আমাকে বলেছেন, ‘তোকে খুশি করার জন্য কিছু তথ্য গোপন করেছি। তাতে কী হলো?’ সেদিন থেকে তাঁর বয়স নিয়ে আমি আর কিছু বলি না। তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন, কোনো এক শ্রাবণ মাসের ঘোর বৃষ্টিবাদলের ঠিক মধ্যরাতে তাঁর জন্ম হয়েছিল। দিবাগত রাত শেষে পুরুত ঠিকুজি করতে এলে বেদম চমকে যান শিশু পূর্ণচন্দ্রের ভাগ্যরেখা দেখে। পুরুত নাকি বলেছিলেন, এ ছেলের জীবনে প্রচুর ফিফটি–ফিফটি আসবে।
পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া বললেন, ‘বললে কি আর বিশ্বাস করবি? এই শ্রাবণে এক শ বাহান্ন হবে।’ আমি মনে মনে হাসি। তিনি এবার হিসাব কষতে বসলেন। ‘তোর বাপের বয়স কত?’ বললাম, ‘বাহাত্তর।’ তিনি বললেন, ‘তোর ঠাকুরদা বেঁচে থাকলে কত বছর হতো?’ একটু হিসাব করে বললাম, ‘নব্বই।’ তিনি বললেন, ‘নব্বই দুকুনে এক শ আশি। আমি তার কয়েক বছর বাদ দিয়ে বলছি এক শ বাহান্ন। তাতেও তোর সমস্যা? মাইনাস তো করলাম আটাশ বছর।’ বললাম, ‘না, ঠিক আছে। মাইনাস করতে হবে না।’
পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া মুখ ঘুরিয়ে রইলেন। বুঝলাম, ভীষণ অভিমান করেছেন তিনি। এবার একটু পটানো দরকার। বললাম, ‘জ্যেঠু। তোমার এত অভিমান করে কেন, বল তো?’ আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার দিকে ফিরে তাকালেন। তাঁর চোখের কোণে চিকচিক করছে জল। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে আছি এক ইতিহাসের সামনে। জানি, এবার তিনি মুখ খুলবেন। আর আমার সামনে টুপটাপ ঝরে পড়বে ইতিহাসের কোনো গল্প, যে গল্প কোথাও লেখা নেই, যে গল্প মানুষের মুখে মুখে ফেরে জনপদ থেকে জনপদে, যে গল্প আসলে মহাকালের। আমি সে গল্প বলব আমার সন্তানকে, সে তার সন্তানকে, তার সন্তানও বলবে তার সন্তানকে।
‘ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশ—তিন আমলই দেখলাম। আজও একটা জিনিস বুঝলাম না।’
‘কী?’
‘দেশ আর রাষ্ট্র। দেশে মানুষ থাকে, বুঝলি। তারা সম্পর্কে আত্মীয়, পড়শি। তাদের মধ্যে এজমালি ছাদের রোদের ভাগাভাগি নিয়ে ঝগড়া হয়, বিবাদ হয়। তাতে কারও ঠিক অপমান হয় না। রাষ্ট্রে থাকে জনগণ। এদের কপালে থাকে অপমান। ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল। বাংলাদেশও… দেখ। আচ্ছা, জনগণ অপমানিত হলে তার দায় কে নেবে?’
আরও পড়ুন
‘খাচুয়া মানে খচ্চর, জানিস তো?’
‘কয়েক লাখবার শুনেছি আপনার মুখেই। ডায়লগ চেঞ্জ করেন এবার।’
মুখের ওপরের মাছি তাড়াবার মতো করে হাত নেড়ে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলেন তিনি। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। মনে হলো, মাথার ভেতরের রক্ত চলাচলও দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এ রকম সময় এক ধরনের অস্বস্তি হয়। আমারও হলো।
‘এমনে তাকানোর মানে কী? আমার অস্বস্তি হয়।’
‘গভীর অভিমান হচ্ছে রে। বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অভিমান।’
‘কত হবে এই শ্রাবণে?’
আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া বহুবার আমাকে বলেছেন, তাঁর বয়স দেড় শ বছর। আমি প্রবলভাবে প্রতিবাদ করেছি প্রতিবারই। কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে কয়েক দিন আগে আমাকে বলেছেন, ‘তোকে খুশি করার জন্য কিছু তথ্য গোপন করেছি। তাতে কী হলো?’ সেদিন থেকে তাঁর বয়স নিয়ে আমি আর কিছু বলি না। তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন, কোনো এক শ্রাবণ মাসের ঘোর বৃষ্টিবাদলের ঠিক মধ্যরাতে তাঁর জন্ম হয়েছিল। দিবাগত রাত শেষে পুরুত ঠিকুজি করতে এলে বেদম চমকে যান শিশু পূর্ণচন্দ্রের ভাগ্যরেখা দেখে। পুরুত নাকি বলেছিলেন, এ ছেলের জীবনে প্রচুর ফিফটি–ফিফটি আসবে।
পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া বললেন, ‘বললে কি আর বিশ্বাস করবি? এই শ্রাবণে এক শ বাহান্ন হবে।’ আমি মনে মনে হাসি। তিনি এবার হিসাব কষতে বসলেন। ‘তোর বাপের বয়স কত?’ বললাম, ‘বাহাত্তর।’ তিনি বললেন, ‘তোর ঠাকুরদা বেঁচে থাকলে কত বছর হতো?’ একটু হিসাব করে বললাম, ‘নব্বই।’ তিনি বললেন, ‘নব্বই দুকুনে এক শ আশি। আমি তার কয়েক বছর বাদ দিয়ে বলছি এক শ বাহান্ন। তাতেও তোর সমস্যা? মাইনাস তো করলাম আটাশ বছর।’ বললাম, ‘না, ঠিক আছে। মাইনাস করতে হবে না।’
পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া মুখ ঘুরিয়ে রইলেন। বুঝলাম, ভীষণ অভিমান করেছেন তিনি। এবার একটু পটানো দরকার। বললাম, ‘জ্যেঠু। তোমার এত অভিমান করে কেন, বল তো?’ আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে আমার পূর্বপুরুষ পূর্ণচন্দ্র খাচুয়া আমার দিকে ফিরে তাকালেন। তাঁর চোখের কোণে চিকচিক করছে জল। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে আছি এক ইতিহাসের সামনে। জানি, এবার তিনি মুখ খুলবেন। আর আমার সামনে টুপটাপ ঝরে পড়বে ইতিহাসের কোনো গল্প, যে গল্প কোথাও লেখা নেই, যে গল্প মানুষের মুখে মুখে ফেরে জনপদ থেকে জনপদে, যে গল্প আসলে মহাকালের। আমি সে গল্প বলব আমার সন্তানকে, সে তার সন্তানকে, তার সন্তানও বলবে তার সন্তানকে।
‘ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশ—তিন আমলই দেখলাম। আজও একটা জিনিস বুঝলাম না।’
‘কী?’
‘দেশ আর রাষ্ট্র। দেশে মানুষ থাকে, বুঝলি। তারা সম্পর্কে আত্মীয়, পড়শি। তাদের মধ্যে এজমালি ছাদের রোদের ভাগাভাগি নিয়ে ঝগড়া হয়, বিবাদ হয়। তাতে কারও ঠিক অপমান হয় না। রাষ্ট্রে থাকে জনগণ। এদের কপালে থাকে অপমান। ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল। বাংলাদেশও… দেখ। আচ্ছা, জনগণ অপমানিত হলে তার দায় কে নেবে?’
আরও পড়ুন
ওনলিফ্যানস মডেল বনি ব্লু’র চাঞ্চল্যকর দাবি ইন্টারনেটে আলোচনার ঝড় তুলেছে। ২৫ বছর বয়সী এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর জানিয়েছেন, তিনি ১২ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৭ জন পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
৩ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বসবাসকারী এক নারী সম্প্রতি ৫০ হাজার ডলারের একটি লটারি জিতেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থ ৬০ লাখ টাকার বেশি। মজার বিষয় হলো, যে সংখ্যা ব্যবহার করে এই লটারি বিজয়, সেই সংখ্যা স্বপ্নে পেয়েছিলেন ওই নারী!
৮ দিন আগেদক্ষিণ আফ্রিকান একটি নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান সেখানকার একটি বাড়ি থেকে বিপৎসংকেত বা সতর্কতামূলক অ্যালার্ম পায়। প্রতিষ্ঠানটি দেরি না করে সেখানে একটি দল পাঠায়। তখনই ফাঁস হয় রহস্য। এই অ্যালার্ম বাজিয়েছিল ওই বাড়ির বাসিন্দারা নয়, বরং একটি বানর।
২১ দিন আগেমাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে বাসা। রাত হয়ে যাওয়ায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারই ভরসা। ২০ মিনিটেই চলে যাওয়া যায়। তবে যানজটে সময় লাগল ২ ঘণ্টা। গন্তব্যে পৌঁছে সোফি দেখলেন ৫ কিলোমিটার রাস্তার জন্য তাঁর বিল এসেছে ৩২১ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮১৯৭ টাকা)। উবার বুক করার সময় দেখানো প্রাথমিক বিলের প্রায় চার গুণ!
২২ ডিসেম্বর ২০২৪