ইশতিয়াক হাসান
ভালুকদের নিরামিষের দিকে একটু ঝোঁক থাকলেও অন্য খাবারে তাদের অরুচি আছে, এটা কেউ বলতে পারবে না। বিশেষ করে আলাস্কার বাদামি ভালুকদের তো মাছ আছে পছন্দের মেন্যুতে একেবারে ওপরের দিকে। আর এই বাদামি ভালুকদের মাছ শিকারের প্রিয় একটি জায়গা হলো ব্রুকস জলপ্রপাত। দল বেঁধে সেখানে মাছ ধরতে দেখবেন এই ভালুকদের।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার কাতমাই জাতীয় উদ্যানের ব্রুকস নদীতে এই জলপ্রপাতের অবস্থান। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের গোড়া পর্যন্ত এই ব্রুকস জলপ্রপাতে আসে স্যামন মাছেরা। আসলে এই মাছেরা ডিম পাড়তে ব্রুকস নদী থেকে যায় ব্রুকস হ্রদে। কিন্তু জলপ্রপাত পেরিয়ে আরও আড়াই কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার পরই কেবল হ্রদটিতে পৌঁছাতে পারে তারা। তার মানে, সেখানে যেতে চাইলে ব্রুকস জলপ্রপাত না পেরিয়ে তাদের উপায় নেই।
স্যামন মাছের সৌভাগ্য, ব্রুকস জলপ্রপাতের উচ্চতা একবারেই কম, মোটে ছয় ফুট। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর স্যামনের জন্য এই উচ্চতা লাফিয়ে পেরোনো তেমন কঠিন কাজ নয়। তবে তাদের দুর্ভাগ্য, এটা করতে গিয়ে স্যামন মাছ আলাস্কার বাদামি ভালুকদের খাবারে পরিণত হয়।
জলপ্রপাতের ওপরে বসে মাছের অপেক্ষায় থাকে ভালুকেরা। যখনই জলপ্রপাত টপকানোর জন্য লাফ দেয়, তখনই খপ করে ধরে ফেলে ভালুকেরা। অনেক ভালুককেই থাবার সাহায্যে স্যামন মাছ সরাসরি মুখে চালান করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। ব্রুকস নদীর আশপাশে বাস করা ভালুকেরা যত দিন গড়ায় ক্রমেই এই কৌশল শেখায় পরিপক্ব হয়ে ওঠে।
ভালুকদের এই মাছ শিকারের কারণে ব্রুকস নদী ও জলপ্রপাত পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। তেমনি আলোকচিত্রীরাও ভিড় জমান দুর্দান্ত সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে। ভালুকদের এই মাছ শিকার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক প্রামাণ্যচিত্রও।
ভালুকদের বসতি কাতামাই ন্যাশনাল পার্কের গহিনে। স্যামনেরা যখন ডিম পাড়তে রওনা দেয়, তখনই ব্রুকস জলপ্রপাতে ভিড় জমাতে দেখা যায় তাদের। কারণ বছরের বাদবাকি সময় জলপ্রপাত এলাকায় খাবার পাওয়া কঠিন তাদের জন্য। তাই ভালুকের আনাগোনা থাকে একেবারেই সীমিত।
কাতামাই অরণ্যের ভালুকদের খাবারের ব্যাপারেও একটি মজার বিষয় আছে। খাবার প্রচুর থাকার সময়ে ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে মোটামুটি গোটা বছরের খাবার খেয়ে নিতে হয় তাদের। যেন খাবার দুষ্প্রাপ্য থাকে যে সময়টায়, তখন টিকে থাকতে সমস্যা না হয়। জুলাই মাসে যখন স্যামন মাছের উপস্থিতি চূড়ান্ত সীমায় থাকে, তখন বলা চলে ব্রুকস নদীর বড় একটা অংশজুড়েই শিকারে ব্যস্ত থাকে ভালুকেরা। তবে তাদের মূল লক্ষ্য থাকে ব্রুকস জলপ্রপাত। যেখানে মোটামুটি কষ্ট ছাড়াই মাছ ধরতে পারে তারা। এ সময় গোটা চল্লিশ-পঞ্চাশেক ভালুককেও মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়।
স্যামন একধরনের মাছ, যার শরীরে প্রচুর চর্বি আছে। তার মানে, ছোট্ট একটা খাবার থেকেই প্রচুর ক্যালরির জোগান হয় ভালুকদের শরীরে।
এই ভালুকদের মাছ শিকার নিয়ে আরেকটি মজার ব্যাপার আছে। যেসব ভালুককে জলপ্রপাতে মাছ শিকার করতে দেখা যায়, দেখবেন এরা গায়ে-গতরে অন্যদের চেয়ে বড়। তেমনি এগুলো দলের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। তাদের এমনকি মাছ শিকারের পছন্দের জায়গাও আছে। অন্য ভালুকদের মধ্যে যারা জলপ্রপাতে মাছ শিকারের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না, তারা নদীর ভাটির দিকে শিকার করে। একটু নিরীহ ধরনের ভালুকদের মাছ কখনো কখনো শক্তিশালী আর দস্যু ভালুকেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করতে দেখা যায়।
আগস্টের শেষ দিকে এসে স্যামন মাছেদের ডিম পাড়ার সময় শেষ হয়ে আসে। আর ডিম পাড়া শেষ হলে মরতে শুরু করে স্যামনেরা। মাছ যখন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যেতে শুরু করে, ভালুকেরা নদীর ভাটির মন্থর গতিতে প্রবাহিত পানির মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে মৃত কিংবা মৃতপ্রায় স্যামন মাছের খোঁজে। তবে কোনো কোনো বছর সেপ্টেম্বর এমনকি অক্টোবরেও ব্রুকস জলপ্রপাত ও নদীর উজানে মাছ শিকার করতে দেখা যায় ভালুকদের।
১৯৫০-এর দশকে ব্রুকস ক্যাম্প ওপেন করার আগে ব্রুকস জলপ্রপাতে এখনকার মতো এত বেশি সংখ্যায় ভালুক দেখা যেত না। সাধারণত ছয়-সাতটা ভালুক দেখা যেত একবারে। তবে ভালুক শিকার বন্ধ ও পর্যটকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার পর হু হু করে বাড়তে থাকে মাছ শিকারি ভালুকের আগমন।
তবে ব্রুকস জলপ্রপাত বেশ দুর্গম জায়গা। ভালুকের মাছ শিকার দেখতে সেখানে যাওয়াটা খুব সহজ নয়। পৌঁছানোর জন্য হয় ব্রুকস নদী ধরে নৌকায় যেতে হয়, নতুবা ছোট্ট বুশ প্লেনে চাপতে হয়। রাস্তার মূল নেটওয়ার্কেরও বাইরে জায়গাটি। তবে একবার ব্রুকস ক্যাম্পে পৌঁছে গেলে সেখান থেকে পায়ে হেঁটেই চলে যাওয়া যায় ব্রুকস জলপ্রপাত কিংবা ভালুকের মাছ শিকার দেখার মঞ্চ বা প্ল্যাটফর্মগুলোয়।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, অ্যাকটিভ ট্রাভেল এক্সপেরিয়েন্স ডট কম, দ্য ট্রাভেল ডট কম
ভালুকদের নিরামিষের দিকে একটু ঝোঁক থাকলেও অন্য খাবারে তাদের অরুচি আছে, এটা কেউ বলতে পারবে না। বিশেষ করে আলাস্কার বাদামি ভালুকদের তো মাছ আছে পছন্দের মেন্যুতে একেবারে ওপরের দিকে। আর এই বাদামি ভালুকদের মাছ শিকারের প্রিয় একটি জায়গা হলো ব্রুকস জলপ্রপাত। দল বেঁধে সেখানে মাছ ধরতে দেখবেন এই ভালুকদের।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার কাতমাই জাতীয় উদ্যানের ব্রুকস নদীতে এই জলপ্রপাতের অবস্থান। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের গোড়া পর্যন্ত এই ব্রুকস জলপ্রপাতে আসে স্যামন মাছেরা। আসলে এই মাছেরা ডিম পাড়তে ব্রুকস নদী থেকে যায় ব্রুকস হ্রদে। কিন্তু জলপ্রপাত পেরিয়ে আরও আড়াই কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার পরই কেবল হ্রদটিতে পৌঁছাতে পারে তারা। তার মানে, সেখানে যেতে চাইলে ব্রুকস জলপ্রপাত না পেরিয়ে তাদের উপায় নেই।
স্যামন মাছের সৌভাগ্য, ব্রুকস জলপ্রপাতের উচ্চতা একবারেই কম, মোটে ছয় ফুট। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর স্যামনের জন্য এই উচ্চতা লাফিয়ে পেরোনো তেমন কঠিন কাজ নয়। তবে তাদের দুর্ভাগ্য, এটা করতে গিয়ে স্যামন মাছ আলাস্কার বাদামি ভালুকদের খাবারে পরিণত হয়।
জলপ্রপাতের ওপরে বসে মাছের অপেক্ষায় থাকে ভালুকেরা। যখনই জলপ্রপাত টপকানোর জন্য লাফ দেয়, তখনই খপ করে ধরে ফেলে ভালুকেরা। অনেক ভালুককেই থাবার সাহায্যে স্যামন মাছ সরাসরি মুখে চালান করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। ব্রুকস নদীর আশপাশে বাস করা ভালুকেরা যত দিন গড়ায় ক্রমেই এই কৌশল শেখায় পরিপক্ব হয়ে ওঠে।
ভালুকদের এই মাছ শিকারের কারণে ব্রুকস নদী ও জলপ্রপাত পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। তেমনি আলোকচিত্রীরাও ভিড় জমান দুর্দান্ত সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে। ভালুকদের এই মাছ শিকার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক প্রামাণ্যচিত্রও।
ভালুকদের বসতি কাতামাই ন্যাশনাল পার্কের গহিনে। স্যামনেরা যখন ডিম পাড়তে রওনা দেয়, তখনই ব্রুকস জলপ্রপাতে ভিড় জমাতে দেখা যায় তাদের। কারণ বছরের বাদবাকি সময় জলপ্রপাত এলাকায় খাবার পাওয়া কঠিন তাদের জন্য। তাই ভালুকের আনাগোনা থাকে একেবারেই সীমিত।
কাতামাই অরণ্যের ভালুকদের খাবারের ব্যাপারেও একটি মজার বিষয় আছে। খাবার প্রচুর থাকার সময়ে ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে মোটামুটি গোটা বছরের খাবার খেয়ে নিতে হয় তাদের। যেন খাবার দুষ্প্রাপ্য থাকে যে সময়টায়, তখন টিকে থাকতে সমস্যা না হয়। জুলাই মাসে যখন স্যামন মাছের উপস্থিতি চূড়ান্ত সীমায় থাকে, তখন বলা চলে ব্রুকস নদীর বড় একটা অংশজুড়েই শিকারে ব্যস্ত থাকে ভালুকেরা। তবে তাদের মূল লক্ষ্য থাকে ব্রুকস জলপ্রপাত। যেখানে মোটামুটি কষ্ট ছাড়াই মাছ ধরতে পারে তারা। এ সময় গোটা চল্লিশ-পঞ্চাশেক ভালুককেও মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়।
স্যামন একধরনের মাছ, যার শরীরে প্রচুর চর্বি আছে। তার মানে, ছোট্ট একটা খাবার থেকেই প্রচুর ক্যালরির জোগান হয় ভালুকদের শরীরে।
এই ভালুকদের মাছ শিকার নিয়ে আরেকটি মজার ব্যাপার আছে। যেসব ভালুককে জলপ্রপাতে মাছ শিকার করতে দেখা যায়, দেখবেন এরা গায়ে-গতরে অন্যদের চেয়ে বড়। তেমনি এগুলো দলের মধ্যে সবচেয়ে বেপরোয়া। তাদের এমনকি মাছ শিকারের পছন্দের জায়গাও আছে। অন্য ভালুকদের মধ্যে যারা জলপ্রপাতে মাছ শিকারের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না, তারা নদীর ভাটির দিকে শিকার করে। একটু নিরীহ ধরনের ভালুকদের মাছ কখনো কখনো শক্তিশালী আর দস্যু ভালুকেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করতে দেখা যায়।
আগস্টের শেষ দিকে এসে স্যামন মাছেদের ডিম পাড়ার সময় শেষ হয়ে আসে। আর ডিম পাড়া শেষ হলে মরতে শুরু করে স্যামনেরা। মাছ যখন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যেতে শুরু করে, ভালুকেরা নদীর ভাটির মন্থর গতিতে প্রবাহিত পানির মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে মৃত কিংবা মৃতপ্রায় স্যামন মাছের খোঁজে। তবে কোনো কোনো বছর সেপ্টেম্বর এমনকি অক্টোবরেও ব্রুকস জলপ্রপাত ও নদীর উজানে মাছ শিকার করতে দেখা যায় ভালুকদের।
১৯৫০-এর দশকে ব্রুকস ক্যাম্প ওপেন করার আগে ব্রুকস জলপ্রপাতে এখনকার মতো এত বেশি সংখ্যায় ভালুক দেখা যেত না। সাধারণত ছয়-সাতটা ভালুক দেখা যেত একবারে। তবে ভালুক শিকার বন্ধ ও পর্যটকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার পর হু হু করে বাড়তে থাকে মাছ শিকারি ভালুকের আগমন।
তবে ব্রুকস জলপ্রপাত বেশ দুর্গম জায়গা। ভালুকের মাছ শিকার দেখতে সেখানে যাওয়াটা খুব সহজ নয়। পৌঁছানোর জন্য হয় ব্রুকস নদী ধরে নৌকায় যেতে হয়, নতুবা ছোট্ট বুশ প্লেনে চাপতে হয়। রাস্তার মূল নেটওয়ার্কেরও বাইরে জায়গাটি। তবে একবার ব্রুকস ক্যাম্পে পৌঁছে গেলে সেখান থেকে পায়ে হেঁটেই চলে যাওয়া যায় ব্রুকস জলপ্রপাত কিংবা ভালুকের মাছ শিকার দেখার মঞ্চ বা প্ল্যাটফর্মগুলোয়।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, অ্যাকটিভ ট্রাভেল এক্সপেরিয়েন্স ডট কম, দ্য ট্রাভেল ডট কম
দাতব্য তহবিল সংগ্রহে অভিনব এক নিলামের আয়োজন করতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিশেষ নম্বরের যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন প্লেট আর মোবাইল নম্বর তোলা হবে নিলামে। এসব নম্বরকে বলা হচ্ছে ‘মোস্ট নোবল নাম্বার’।
১৫ ঘণ্টা আগেনেই অফিসে যাওয়ার ঝক্কি। তবে, আছে অফিসের কাজ। বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় একটি ধারণা এই ‘হোম অফিস’। যুক্তরাষ্ট্রে আজ ‘অর্গানাইজ ইওর হোম অফিস ডে’, অর্থাৎ নিজের কাজের জায়গা ও পরিবেশকে সুশৃঙ্খল করার দিন এটি।
২ দিন আগেফ্যাশন জগৎ সব সময়ই নতুনত্বের খোঁজে থাকে। কখনো ক্ল্যাসিক, কখনো আবার উদ্ভট—ফ্যাশনের এই বিবর্তন যেন থামেই না কখনো। তবে মাঝে মাঝে এমন কিছু ট্রেন্ড সামনে আসে, যা দেখে চোখ কপালে ওঠে যায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এক পায়ের জিনস। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন—এক পায়ের জিনস!
৪ দিন আগেএক টুকরো টোস্টে যিশুর অবয়ব দেখার কথা হয়তো শুনেছেন, কিন্তু একটি চিটো বা চিপস যদি দেখতে হয় জনপ্রিয় কার্টুন পোকেমন চরিত্রের মতো? সম্প্রতি চারিজার্ডের আকৃতির একটি ফ্লেমিন হট চিটো নিলামে ৮৭ হাজার ৮৪০ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা সংগ্রহশালার দুনিয়ায় আলোড়ন তুলেছে।
৪ দিন আগে