ইশতিয়াক হাসান
জার্মানির ক্রোমলাউয়ের ক্রোমলাউ জাতীয় উদ্যানে অবস্থান রেকোৎজব্রুক সেতুর। ঘন গাছগাছালির মধ্যে অবস্থিত আশ্চর্য সুন্দর সেতুটিকে দেখলে চমকে উঠবেন। মনে হবে রূপকথার জগতে হাজির হয়ে গিয়েছেন। ভাববেন, এমন বৃত্তাকার সেতুও কি কোথাও থাকতে পরে? তবে ভালোভাবে খেয়াল করতেই রহস্যটা ফাঁস হবে। সেতুটি আসলে ধনুকাকার। নিচের পানিতে প্রতিফলিত হওয়ার কারণেই একে বৃত্তাকার মনে হয়। সত্যি বলতে, সেতুটি তৈরি করা হয়েছে মানুষকে এমন বিভ্রান্তিতে ফেলার কথা ভেবেই।
এবার বরং সেতুটি তৈরির ইতিহাসের দিকে একটু নজর দেওয়া যাক। ১৮৬০ সালের দিকে ফ্রেডরিক হারম্যান রটশক নামের প্রকৃতিপ্রেমিক স্থানীয় এক নাইটের মাথায় এমন একটা কিছু করার চিন্তা আসে। সে সময়ই ভাবনাটাকে বাস্তবে রূপ দিতে নেমে পড়লেন তিনি। রেকোৎজব্রুক হ্রদের ওপর ধনুকাকার কাঠামোটি তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের পাথর দিয়ে। এসব পাথরের বেশির ভাগ স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হলেও কিছু কিছু আনা হয়েছিল স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো থেকে।
ইউরোপের এ ধরনের ধনুকাকার আরও কিছু সেতুর মতো এটিও পরিচিত ডেভিলস ব্রিজ বা শয়তানের সেতু নামে। এমন সেতুগুলো দেখতে এত সুন্দর আর বানানো এত কঠিন যে স্থানীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের ধারণা, এগুলো তৈরিতে কোনো না কোনোভাবে শয়তানের হাত আছে! ডেভিল বা শয়তানকে ঘিরে প্রত্যেকটি সেতুর আলাদা আলাদা কল্পকথাও আছে। এই সেতু নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে আরও নানা ধরনের গল্প। এগুলোর একটি হলো, এটি আসলে অন্য এক পৃথিবীর প্রবেশদ্বার।
তবে বাস্তবতা হলো, মানুষ হাত দিয়ে সাধারণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেই এটি তৈরি করেছেন। আর সেতুটি পার হতে যে নাভিশ্বাস উঠতে পারে, সেদিকে খেয়াল ছিল না কারিগরদের। বরং তাঁদের মনোযোগ ছিল সেতুটিকে দেখতে যেন সুন্দর লাগে সেদিকেই। শেষ পর্যন্ত প্রায় দশ বছর সময় লাগিয়ে যে জিনিসটি তৈরি করলেন তাঁরা, নির্মাণের ১৬০ বছর পরও মানুষকে বিস্মিত করে এটি। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে যান তাঁরা একে এক নজর দেখতে।
রেকোৎজব্রুক সেতুর দুই প্রান্ত পাথরের সরু মোচাকৃতি চূড়া দিয়ে সজ্জিত, যেন একে দেখে ব্যাসাল্টের প্রাকৃতিক কলামের মতো মনে হয়। পাশাপাশি সেতুটাকে এভাবে বাঁকানো হয়েছে যেন এটি বৃত্তের ঠিক অর্ধেকটা হয়। ফলে যখন পানি থাকে এবং আলো ঠিকভাবে পড়ে, এটি পাথরের একটি বৃত্তাকার সেতু বলেই ভ্রম তৈরি করে।
নির্মাণের পর ১৬০ বছরের বেশি পেরিয়ে গেলেও সেতুটি বহাল তবিয়তে টিকে আছে এখনো। ২০১৯ সালের আগস্টের দিকে সেতুটির কিছু সংস্কার শুরু হয়। এ সময় নিচের পানিও সরিয়ে নেওয়া হয়। সংস্কার শেষ হয়ে যায় ২০২১ সালের মে মাসে।
বছরের যেকোনো সময় সেতু এলাকা ভ্রমণে যেতে পারেন। তবে শরৎ আদর্শ। এ সময় চারপাশের সবুজ প্রকৃতি সাজে অপরূপ সাজে। এর মাঝে সেতুটি আরও বেশি সুন্দর লাগে।
সেতুটির অবস্থান পূর্ব জার্মানির ক্রোমলাউ পার্কে। গাড়িতে যাতায়াতই সহজ সেখানে। বার্লিন থেকে ট্রেনে যাবেন কটবাসে। এখান থেকে আরেক ট্রেনে ওয়েবওয়াসার। তারপর বাসে চেপে ক্রোমলাউ। বাসস্টেশন থেকে এক কিলোমিটার হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন পার্কটিতে। বার্লিন থেকে ক্রোমলাউ পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগবে তিন ঘণ্টা।
রেকোৎজব্রুক সেতুর স্থায়িত্বের কথা ভেবে এর ওপর দিয়ে সাধারণের চলাচল বারণ। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কখনো কখনো সেতুর ওপর ওঠা কোনো পর্যটকের ছবি দেখে চমকে উঠতে পারেন! সে ক্ষেত্রে পার্কের গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে নিয়ম অমান্য করে কেউ এতে চড়ে বসেছিলেন, কিংবা গোটা বিষয়টি ফটোশপের কারসাজি। অবশ্য সেতুতে চড়ায় যদি কোনো বাধা নাও থাকত, এতে চড়া মোটেই সহজ হতো না। বরং এই চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে আহত হওয়ার আশঙ্কা কম নয়! তাই এই লেখা পড়ে কেউ সেতুটি দেখতে গেলে এর সৌন্দর্য উপভোগ আর কেবল সেতুর ছবি তোলায় সীমাবদ্ধ থাকবেন আশা করি!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, দ্য ট্রাভেল. কম
জার্মানির ক্রোমলাউয়ের ক্রোমলাউ জাতীয় উদ্যানে অবস্থান রেকোৎজব্রুক সেতুর। ঘন গাছগাছালির মধ্যে অবস্থিত আশ্চর্য সুন্দর সেতুটিকে দেখলে চমকে উঠবেন। মনে হবে রূপকথার জগতে হাজির হয়ে গিয়েছেন। ভাববেন, এমন বৃত্তাকার সেতুও কি কোথাও থাকতে পরে? তবে ভালোভাবে খেয়াল করতেই রহস্যটা ফাঁস হবে। সেতুটি আসলে ধনুকাকার। নিচের পানিতে প্রতিফলিত হওয়ার কারণেই একে বৃত্তাকার মনে হয়। সত্যি বলতে, সেতুটি তৈরি করা হয়েছে মানুষকে এমন বিভ্রান্তিতে ফেলার কথা ভেবেই।
এবার বরং সেতুটি তৈরির ইতিহাসের দিকে একটু নজর দেওয়া যাক। ১৮৬০ সালের দিকে ফ্রেডরিক হারম্যান রটশক নামের প্রকৃতিপ্রেমিক স্থানীয় এক নাইটের মাথায় এমন একটা কিছু করার চিন্তা আসে। সে সময়ই ভাবনাটাকে বাস্তবে রূপ দিতে নেমে পড়লেন তিনি। রেকোৎজব্রুক হ্রদের ওপর ধনুকাকার কাঠামোটি তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের পাথর দিয়ে। এসব পাথরের বেশির ভাগ স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হলেও কিছু কিছু আনা হয়েছিল স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো থেকে।
ইউরোপের এ ধরনের ধনুকাকার আরও কিছু সেতুর মতো এটিও পরিচিত ডেভিলস ব্রিজ বা শয়তানের সেতু নামে। এমন সেতুগুলো দেখতে এত সুন্দর আর বানানো এত কঠিন যে স্থানীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের ধারণা, এগুলো তৈরিতে কোনো না কোনোভাবে শয়তানের হাত আছে! ডেভিল বা শয়তানকে ঘিরে প্রত্যেকটি সেতুর আলাদা আলাদা কল্পকথাও আছে। এই সেতু নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে আরও নানা ধরনের গল্প। এগুলোর একটি হলো, এটি আসলে অন্য এক পৃথিবীর প্রবেশদ্বার।
তবে বাস্তবতা হলো, মানুষ হাত দিয়ে সাধারণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেই এটি তৈরি করেছেন। আর সেতুটি পার হতে যে নাভিশ্বাস উঠতে পারে, সেদিকে খেয়াল ছিল না কারিগরদের। বরং তাঁদের মনোযোগ ছিল সেতুটিকে দেখতে যেন সুন্দর লাগে সেদিকেই। শেষ পর্যন্ত প্রায় দশ বছর সময় লাগিয়ে যে জিনিসটি তৈরি করলেন তাঁরা, নির্মাণের ১৬০ বছর পরও মানুষকে বিস্মিত করে এটি। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে যান তাঁরা একে এক নজর দেখতে।
রেকোৎজব্রুক সেতুর দুই প্রান্ত পাথরের সরু মোচাকৃতি চূড়া দিয়ে সজ্জিত, যেন একে দেখে ব্যাসাল্টের প্রাকৃতিক কলামের মতো মনে হয়। পাশাপাশি সেতুটাকে এভাবে বাঁকানো হয়েছে যেন এটি বৃত্তের ঠিক অর্ধেকটা হয়। ফলে যখন পানি থাকে এবং আলো ঠিকভাবে পড়ে, এটি পাথরের একটি বৃত্তাকার সেতু বলেই ভ্রম তৈরি করে।
নির্মাণের পর ১৬০ বছরের বেশি পেরিয়ে গেলেও সেতুটি বহাল তবিয়তে টিকে আছে এখনো। ২০১৯ সালের আগস্টের দিকে সেতুটির কিছু সংস্কার শুরু হয়। এ সময় নিচের পানিও সরিয়ে নেওয়া হয়। সংস্কার শেষ হয়ে যায় ২০২১ সালের মে মাসে।
বছরের যেকোনো সময় সেতু এলাকা ভ্রমণে যেতে পারেন। তবে শরৎ আদর্শ। এ সময় চারপাশের সবুজ প্রকৃতি সাজে অপরূপ সাজে। এর মাঝে সেতুটি আরও বেশি সুন্দর লাগে।
সেতুটির অবস্থান পূর্ব জার্মানির ক্রোমলাউ পার্কে। গাড়িতে যাতায়াতই সহজ সেখানে। বার্লিন থেকে ট্রেনে যাবেন কটবাসে। এখান থেকে আরেক ট্রেনে ওয়েবওয়াসার। তারপর বাসে চেপে ক্রোমলাউ। বাসস্টেশন থেকে এক কিলোমিটার হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন পার্কটিতে। বার্লিন থেকে ক্রোমলাউ পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগবে তিন ঘণ্টা।
রেকোৎজব্রুক সেতুর স্থায়িত্বের কথা ভেবে এর ওপর দিয়ে সাধারণের চলাচল বারণ। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কখনো কখনো সেতুর ওপর ওঠা কোনো পর্যটকের ছবি দেখে চমকে উঠতে পারেন! সে ক্ষেত্রে পার্কের গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে নিয়ম অমান্য করে কেউ এতে চড়ে বসেছিলেন, কিংবা গোটা বিষয়টি ফটোশপের কারসাজি। অবশ্য সেতুতে চড়ায় যদি কোনো বাধা নাও থাকত, এতে চড়া মোটেই সহজ হতো না। বরং এই চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে আহত হওয়ার আশঙ্কা কম নয়! তাই এই লেখা পড়ে কেউ সেতুটি দেখতে গেলে এর সৌন্দর্য উপভোগ আর কেবল সেতুর ছবি তোলায় সীমাবদ্ধ থাকবেন আশা করি!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, দ্য ট্রাভেল. কম
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
১৪ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
১৫ ঘণ্টা আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
৩ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৩ দিন আগে