রাকিব হাসান
ভাবছি ও ব্যাটা মাথার ওপর না থাকলে আমার জীবনটাই এত দিনে ‘ভাতসেদ্ধ’ কিংবা ‘ভ্যাতভ্যাতে’ হয়ে যেত। তিনি না থাকলে আমার ঘুম হয় না। মাথা ঝিমঝিম করে। কী যেন নেই, কী যেন নেই মনে হয়। শূন্য শূন্য লাগে সব। বুকের ভেতর হু হু করে বাতাস বয়ে যায়। সাফোকেটেড লাগে, চোখে ঝাপসা দেখি, গলা শুকিয়ে যায়। শীতে অবশ্য এসব একটু কমই হয়। তবু তার মাথার ওপর থাকা চাই। অবাক করা হলেও মাঘ মাসের শীতেও তিনি হালকা ঘ্যানর ঘ্যানর করে না ঘুরলে আমার ঘুম হয় না। তারও ভীষণ কষ্ট। তবু কখনো অভিযোগ করেন না। দিব্যি ঘুরে চলেছেন। ঠিক আমার প্রয়োজন মতো কখনো আস্তে, সামান্য রয়েসয়ে; কখনো আবার বেশ জোরে।
তার ঘোরার ভঙ্গিমাটাও বেশ রাজসিক। রুমে ঢুকে সুইচ অন করতেই প্রথমে খট করে একটা শব্দ করে জানান দেবেন যে তিনি এখন চালু হবেন। আস্তে ধীরে পাক খেতে থাকেন। এরপর তাল-লয় ঠিক রেখে মোহনীয় ভঙ্গিমায় ঘুরতে থাকেন। শঙ্কা হয়, কবে যে রেগেমেগে বলে ওঠেন, ‘আমি আর পারছি না বাপু। সিলিং ফ্যান দেখে আমি কী যন্ত্র না, নাকি? আমারও তো বয়স হচ্ছে দিনকে দিন।’
তিনি বলেন হয়তো, আমি বুঝতে পারি না। সেটা অবশ্যি আমারই ব্যর্থতা। মাঝেমধ্যে মনে হয়, আহা! এই যে সিলিং ফ্যান মাথার ওপর ঘুরে চলেছে। তিনি হয়তো প্রায়ই তার কষ্টের কথা আমাকে বলেন। আমি তার ভাষা বুঝতে পারি না কেন?
এখন এই যে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে ২৭ নম্বর বাসে উঠে উত্তরা রওনা হলাম বাঁদর ঝোলা ঝুলতে ঝুলতে। তার কথা খুব বেশি মনে পড়ছে। মনে না পড়ারও তো কোনো কারণ নেই। মানুষ নামের এই প্রাণীগুলো যে এত গুতাগুতি আর চিল্লাচিল্লি করতে পারে! উফফ...বড় ক্লান্ত লাগছে। এই জীবনে এর চেয়ে বেশি গরম মনে হয় আর কখনো পড়েনি! শরমের কথা, এক্সট্যাসির ৩২ সাইজের ভারী জিনসের ভেতরে থাকা সিকে ব্র্যান্ডের পাতলা প্যান্টটিও ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে গেছে। একটু এদিক সেদিক নড়চড় করলেই ভেজাটা টের পাচ্ছি। কেমন যেন ঘিনঘিন করছে। গা গুলিয়ে আসছে। আর না নড়ে উপায় আছে কোনো? এই কন্ডাক্টর ব্যাটা একবার এই মাথা যাচ্ছে তো আবার সেই মাথা। প্রতিবারই সে এসে বলবে, ‘মামা কই যাইবেন? ভাড়া হইসে?’ মুখে একটা চোর চোর ভাব নিয়ে বলবে, ‘একটু পেছনে যান!’ ‘কী আশ্চর্য! আর কত পেছনে যাব? ব্যাটা আহাম্মক; তুই যা। পেছনে গিয়া দিগম্বর হয়া শুইয়া থাক। যা খুশি তা কর। পেছনে গিয়া নৃত্য কর। সানি লিওনের ছবি দ্যাখ। ফুর্তি কর...’ মনে মনে এসব বলি ঠিকই কিন্তু মুখে আনতে পারি না। বলে কিছু হবে না, তাই হয়তো।
এরচে বরং সিলিং ফ্যান নিয়ে ভাবি, ‘সিলিং ফ্যানটা জানি কী করছে? আচ্ছা এখন বাসায় গিয়ে যদি দেখি তিনি রাগ করে আছেন, কিংবা অভিমানে গাল ফুলিয়ে হাপুস কাঁদছেন? অথবা যদি কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আওড়াতে আওড়াতে নিজেই বিদ্রোহ করে বসেন? কিংবা বিরোধী দলের মতো ধুম করে হরতাল বলে ঘোরা বন্ধ করে দেন? তখন কী হবে আমার?’ নাহ এমনটা তিনি করতে পারেন না। কখনো করেননি। আজও করবেন না। কেন করবেন? নিয়মিত তার সব চাহিদা পূরণ করছি। যখন যেটার দাবি কিংবা আবদার করেছেন, পূরণ করেছি। কী সুন্দর টাইলস লাগানো ঝকঝকে চকচকে বাড়িতে নিয়ে ঝুলিয়েছি। তার সামনেই বারান্দা, বিস্তর খোলা মাঠ। বাতাস টেনে আনতে খুব একটা খাটাখাটনি করতে হয় না। তাহলে এমন হাঙ্গামা করবেন কেন শুনি! বললেই হলো? হ্যাঁ, শরীর-টরির খারাপ করলে সেটা ভিন্ন কথা। তবে সেটারও সম্ভাবনা খুব কম। আসার সময় তো ঠিকই দেখে এসেছিলাম। তিনি তো আর মনিস্যি না। যে মাথা ব্যথা, জ্বর, সর্দি-কাশি এসব আজাইরা অসুখ হবে। তিনি যন্ত্র, মেশিন...
ঠিক আমার মতো। ঘুরছে তো ঘুরছেই।
ভাবছি ও ব্যাটা মাথার ওপর না থাকলে আমার জীবনটাই এত দিনে ‘ভাতসেদ্ধ’ কিংবা ‘ভ্যাতভ্যাতে’ হয়ে যেত। তিনি না থাকলে আমার ঘুম হয় না। মাথা ঝিমঝিম করে। কী যেন নেই, কী যেন নেই মনে হয়। শূন্য শূন্য লাগে সব। বুকের ভেতর হু হু করে বাতাস বয়ে যায়। সাফোকেটেড লাগে, চোখে ঝাপসা দেখি, গলা শুকিয়ে যায়। শীতে অবশ্য এসব একটু কমই হয়। তবু তার মাথার ওপর থাকা চাই। অবাক করা হলেও মাঘ মাসের শীতেও তিনি হালকা ঘ্যানর ঘ্যানর করে না ঘুরলে আমার ঘুম হয় না। তারও ভীষণ কষ্ট। তবু কখনো অভিযোগ করেন না। দিব্যি ঘুরে চলেছেন। ঠিক আমার প্রয়োজন মতো কখনো আস্তে, সামান্য রয়েসয়ে; কখনো আবার বেশ জোরে।
তার ঘোরার ভঙ্গিমাটাও বেশ রাজসিক। রুমে ঢুকে সুইচ অন করতেই প্রথমে খট করে একটা শব্দ করে জানান দেবেন যে তিনি এখন চালু হবেন। আস্তে ধীরে পাক খেতে থাকেন। এরপর তাল-লয় ঠিক রেখে মোহনীয় ভঙ্গিমায় ঘুরতে থাকেন। শঙ্কা হয়, কবে যে রেগেমেগে বলে ওঠেন, ‘আমি আর পারছি না বাপু। সিলিং ফ্যান দেখে আমি কী যন্ত্র না, নাকি? আমারও তো বয়স হচ্ছে দিনকে দিন।’
তিনি বলেন হয়তো, আমি বুঝতে পারি না। সেটা অবশ্যি আমারই ব্যর্থতা। মাঝেমধ্যে মনে হয়, আহা! এই যে সিলিং ফ্যান মাথার ওপর ঘুরে চলেছে। তিনি হয়তো প্রায়ই তার কষ্টের কথা আমাকে বলেন। আমি তার ভাষা বুঝতে পারি না কেন?
এখন এই যে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে ২৭ নম্বর বাসে উঠে উত্তরা রওনা হলাম বাঁদর ঝোলা ঝুলতে ঝুলতে। তার কথা খুব বেশি মনে পড়ছে। মনে না পড়ারও তো কোনো কারণ নেই। মানুষ নামের এই প্রাণীগুলো যে এত গুতাগুতি আর চিল্লাচিল্লি করতে পারে! উফফ...বড় ক্লান্ত লাগছে। এই জীবনে এর চেয়ে বেশি গরম মনে হয় আর কখনো পড়েনি! শরমের কথা, এক্সট্যাসির ৩২ সাইজের ভারী জিনসের ভেতরে থাকা সিকে ব্র্যান্ডের পাতলা প্যান্টটিও ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে গেছে। একটু এদিক সেদিক নড়চড় করলেই ভেজাটা টের পাচ্ছি। কেমন যেন ঘিনঘিন করছে। গা গুলিয়ে আসছে। আর না নড়ে উপায় আছে কোনো? এই কন্ডাক্টর ব্যাটা একবার এই মাথা যাচ্ছে তো আবার সেই মাথা। প্রতিবারই সে এসে বলবে, ‘মামা কই যাইবেন? ভাড়া হইসে?’ মুখে একটা চোর চোর ভাব নিয়ে বলবে, ‘একটু পেছনে যান!’ ‘কী আশ্চর্য! আর কত পেছনে যাব? ব্যাটা আহাম্মক; তুই যা। পেছনে গিয়া দিগম্বর হয়া শুইয়া থাক। যা খুশি তা কর। পেছনে গিয়া নৃত্য কর। সানি লিওনের ছবি দ্যাখ। ফুর্তি কর...’ মনে মনে এসব বলি ঠিকই কিন্তু মুখে আনতে পারি না। বলে কিছু হবে না, তাই হয়তো।
এরচে বরং সিলিং ফ্যান নিয়ে ভাবি, ‘সিলিং ফ্যানটা জানি কী করছে? আচ্ছা এখন বাসায় গিয়ে যদি দেখি তিনি রাগ করে আছেন, কিংবা অভিমানে গাল ফুলিয়ে হাপুস কাঁদছেন? অথবা যদি কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আওড়াতে আওড়াতে নিজেই বিদ্রোহ করে বসেন? কিংবা বিরোধী দলের মতো ধুম করে হরতাল বলে ঘোরা বন্ধ করে দেন? তখন কী হবে আমার?’ নাহ এমনটা তিনি করতে পারেন না। কখনো করেননি। আজও করবেন না। কেন করবেন? নিয়মিত তার সব চাহিদা পূরণ করছি। যখন যেটার দাবি কিংবা আবদার করেছেন, পূরণ করেছি। কী সুন্দর টাইলস লাগানো ঝকঝকে চকচকে বাড়িতে নিয়ে ঝুলিয়েছি। তার সামনেই বারান্দা, বিস্তর খোলা মাঠ। বাতাস টেনে আনতে খুব একটা খাটাখাটনি করতে হয় না। তাহলে এমন হাঙ্গামা করবেন কেন শুনি! বললেই হলো? হ্যাঁ, শরীর-টরির খারাপ করলে সেটা ভিন্ন কথা। তবে সেটারও সম্ভাবনা খুব কম। আসার সময় তো ঠিকই দেখে এসেছিলাম। তিনি তো আর মনিস্যি না। যে মাথা ব্যথা, জ্বর, সর্দি-কাশি এসব আজাইরা অসুখ হবে। তিনি যন্ত্র, মেশিন...
ঠিক আমার মতো। ঘুরছে তো ঘুরছেই।
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
১ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে