Ajker Patrika

গাছে উঠে নারিকেল পেড়ে খায় বিশাল কাঁকড়ারা

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২: ১০
গাছে উঠে নারিকেল পেড়ে খায় বিশাল কাঁকড়ারা

একটি কাঁকড়া কত বড় হতে পারে? আর যাই হোক, এটা নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না যে তিন ফুটের চেয়ে বড় হবে। কিন্তু কোকোনাট ক্র্যাব বা নারিকেল কাঁকড়াদের বেলায় এটাই সত্যি। এক পায়ের ডগা থেকে আরেক পায়ের ডগা পর্যন্ত এক মিটার তিন ফুটের বেশি হয় এরা। ওজন কমছে কম চার কেজি। ডাঙা বা স্থলে বাস করা কাঁকড়াদের মধ্যে নারিকেল কাঁকড়ারাই সবচেয়ে বড়। শুনে চমকাবেন, গাছ থেকে নারিকেল পেড়ে খায় বিশালাকায় এই কাঁকড়ারা। 
 
এই কাঁকড়াদের দেখা পাওয়া যায় ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপে। একসময় নাকি অস্ট্রেলিয়া আর মাদাগাস্কারের দ্বীপেও ছিল। কিন্তু এখন আর সেখানে নেই। বালুর গর্ত বা পাথরের খাঁজে বাস এদের। 

অনায়াসে চার কেজি হয় এই কাঁকড়াদের ওজন। ছবি: টুইটারনারিকেল কাঁকড়াদের বেড়ে ওঠাটাও বেশ মজার। মা কাঁকড়ারা সাগরে ডিম পাড়ে। ওই ডিম লার্ভায় পরিণত হওয়ার পর কিছুদিন ভেসে থাকে সাগরে। তারপর ছোট্ট নারিকেল কাঁকড়াদের একটি আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়। সে জন্য বেছে নেয় শামুক বা এজাতীয় কোনো প্রাণীর খোল। তারপর ভেসে চলে আসে ডাঙায়। এই খোল বয়ে নিয়েই এখানে-সেখানে যায়। এ ধরনের খোলে বাস করা ছোট্ট প্রাণীটির জন্য নিরাপদ। তবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। তখন এরা খোল থেকে বের হয়ে আসে। অবশ্য এরপর এরা সামুদ্রিক আগাছা বা নারিকেলের খোলের মতো কিছু একটা জোগাড় করে এগুলো বয়ে বেড়ায় কিছুদিন। একপর্যায়ে এর থেকেও মুক্ত হয়ে যায় এবং বাধাহীনভাবে বড় হতে থাকে। একসময় বিশাল হয়ে ওঠে। 

কোকোনাট ক্র্যাব না নারিকেল কাঁকড়ারা রবার বা ডাকাত কাঁকড়া নামেও পরিচিত। এদের বড় হাতিয়ার বিশাল দাঁড়াগুলো। গবেষকদের মতে, এই দাঁড়ার চিমটির সঙ্গে তুলনা চলতে পারে সিংহের কামড়ের। কাজেই বুঝতে পারছেন এর সাহায্যে ভয়ংকর সব কাণ্ড ঘটাতে পারে নারিকেল কাঁকড়ারা। তবে শুনে আনন্দিত হবেন, কাঁকড়ারা সাধারণত তাদের এই দাঁড়া মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে না। 

এই কাঁকড়াদের দেখা পাওয়া যায় ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপে। ছবি: ফেসবুকএই কাঁকড়াদের অবশ্য ডাকাত না বলে চোরও বলতে পারেন। কারণ তাদের নয় এমন জিনিস যেমন সসপেন, বোতল, জুতা, ঘড়িসহ নানা কিছু নিয়ে যাওয়ার অভ্যাস আছে। এটা করে কারণ, সম্ভবত স্বাদ নেওয়ার আগে জিনিসটা খাবার যোগ্য নাকি তা বোঝে না নারিকেল কাঁকড়ারা। অন্য কাঁকড়ারা টের পাওয়ার আগেই তাই এটা নিয়ে সটকে পড়ে। 

এদের নাম যেহেতু কোকোনাট ক্র্যাব, তার মানে, এই কাঁকড়াদের পছন্দের খাবারের তালিকায় ওপরের দিকে থাকে কোকোনাট বা নারিকেল। আর যেহেতু এদের বেশির ভাগের বাস প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপে, তাই পছন্দের খাবার খুঁজে পেতে মোটেই বেগ পেতে হয় না। শুধু তা-ই নয়, গাছে উঠে নারিকেল পাড়েও। এদের পা বা দাঁড়াগুলো এত শক্তিশালী যে ওগুলোর সাহায্যে নারিকেল ভেঙে ভেতরের শাঁস খেতেও পারে। তবে নারিকেল ভাঙার কাজটা যে খুব সহজ হয়, তা নয়। কখনো কখনো নারিকেল ভাঙার জন্য নিচে ছুড়ে ফেলে গাছ থেকে। 

নারিকেলের ওপর একটি কাঁকড়া। ছবি: উইকিপিডিয়াদাঁড়ার সাহায্যে নারিকেল ভাঙার দৃশ্যটা রীতিমতো ভয়ংকরই বলতে পারেন। দাঁড়ার সাহায্যে শুধু যে নারিকেল আলাদা করে তা নয়, আরও অনেক কিছুই করে। সর্বভুক হওয়ায় উদ্ভিদের সঙ্গে প্রাণীও খায়। পাখি, মুরগির বাচ্চাও খাওয়ার কথা শোনা যায়। এমনকি শক্তিশালী দাঁড়া দিয়ে হরিণ বা বুনো শূকরের মতো প্রাণীর মাংস ছিঁড়ে খেতে পারে। যদিও এসব বড় প্রাণী এমনিতে এদের শিকারের সুযোগ নেই। মৃত অবস্থায় পেলে তবেই খেতে পারে। নারিকেল কাঁকড়াদের সুযোগ পেলে একে অপরের মাংস খেতেও আপত্তি নেই। 

এরা গাছে ওঠে শুধু নারিকেল খেতেই নয়, কখনো কখনো পাখি শিকারের জন্যও। একেবারে মগডালে উঠে এদের আক্রমণ করে, তারপর টেনে নিয়ে আসে নিচের গর্তে। ২০১৭ সালে মার্ক লেইডরি নামের এক বিজ্ঞানী এদের ভয়ানক আক্রমণের বর্ণনা দিয়েছিলেন। এক দ্বীপের ঘটনা সেটি, যেখানে গাছের উঁচু ডালগুলোতে অবস্থান নিত পাখিরা নারিকেল কাঁকড়াদের কবল থেকে বাঁচতে। তবে এদের শেষ রক্ষা হতো না সব সময়। 

কোকোনাট ক্র্যাব না নারিকেল কাঁকড়ারা রবার বা ডাকাত কাঁকড়া নামেও পরিচিত। ছবি: ফেসবুকমার্ক লেইডরির বর্ণনা অনুসারে, মধ্যরাতে নারিকেল কাঁকড়া আক্রমণ করে একটি রেড ফুটেড বা লাল পায়ের বুবি পাখিকে। এক কেজি কিংবা এর বেশি হয় এমন একেকটি পাখির ওজন। গাছের মোটামুটি নিচের দিকের একটি ডালেই শুয়ে ছিল পাখিটি। কাঁকড়াটা ধীরে-সুস্থে গাছে উঠে ওটার ডানা আঁকড়ে ধরে, তারপর ওটার হাড় ভেঙে ফেলে। এতে পাখিটা নিচে পড়ে যায়। তারপর নিচে নেমে পাখিটির অন্য ডানাও ভেঙে ফেলে। তারপর আরও কয়েকটি কাঁকড়া এসে পড়লে সবগুলো মিলে একে মেরে নিয়ে যায় নিজেদের গর্তে বড় একটি ভোজের জন্য। 

বিভিন্ন আকার ও রঙের হয় নারিকেল কাঁকড়া। ছবি: উইকিপিডিয়াএ ছাড়া ফলমূল, বাদাম, এমনকি বিভিন্ন মৃত প্রাণীর মাংসও খায়। এদের ঘ্রাণশক্তি খুব প্রখর। তাই অনেক দূর থেকেও খাবারের গন্ধ পেয়ে সেখানে হাজির হয়ে যায়। আর রাতে চলাফেরাই কোকোনাট ক্র্যাবদের পছন্দ । মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর হাতে মারা না পড়লে অবলীলায় পঞ্চাশ-ষাট বছরও বাঁচতে পারে একেকটা নারিকেল কাঁকড়া। 

সূত্র: অল দেট ইন্টারেস্টিং ডট কম, ফ্যাক্ট অ্যানিমেল ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

৬ বছর একই নম্বরের লটারির টিকিট কিনে অবশেষে জিতলেন কোটি টাকা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

টানা ছয় বছরের অধ্যবসায়! নাছোড়বান্দা মন নিয়ে এক সেট লটারির নম্বরেই বিশ্বাস রেখেছিলেন। ফল শেষমেশ হাতেনাতে পেলেন উত্তর ক্যারোলিনার বাসিন্দা বারবারা মুনফোর্ড। সামান্য ধৈর্য আর বোনের ভরসায় ভাগ্য খুলে গেল বৃদ্ধার। সম্প্রতি ক্যাশ ৫ লটারিতে ১ লাখ ৫৪ হাজার ১৬৮ (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি টাকার বেশি)-এর বাম্পার জ্যাকপট জিতেছেন তিনি।

পেশায় শিক্ষিকা এবং চার নাতি-নাতনির দাদি বারবারা মুনফোর্ড টানা ছয় বছর ধরে একই নম্বরের টিকিট কিনছিলেন। নর্থ ক্যারোলিনা এডুকেশন লটারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বারবারা তাঁর এই অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য তাঁর বোনকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। বারবারা বলেন, ‘আমার বোন আমাকে একই নম্বরগুলো খেলতে থাকতে বলেছিল। সে বলেছিল, আমি একদিন ঠিকই জিতব।’ বারবারা জানান, বোনের সেই বিশ্বাসই আজ সত্যি হলো।

গত সোমবার রাতে ড্র হওয়ার পর মধ্যরাতের ঠিক পরে বারবারা তাঁর লটারির নম্বর মিলিয়ে দেখেন। তাঁর টিকিটটিই সমস্ত বিজয়ী নম্বরের সঙ্গে মিলে যায়। উত্তেজিত বারবারা সেই মুহূর্তের কথা মনে করে বলেন, ‘ওহ গড, ওটা তো আমিই, ওটা তো আমিই, আমি জিতে গেছি!’ বিপুল আনন্দের পরে আসে আবেগের পালা। বারবারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি তখন ড্রয়িংরুমে বসে কাঁদছিলাম।’

তিনি হোপ মিলসের লিজিয়ন রোডের ‘লাকি স্টপ’ থেকে মাত্র এক ডলার দিয়ে এই ভাগ্য বদলকারী টিকিটটি কিনেছিলেন। এই লটারি জেতার সম্ভাবনা ছিল ৯ লাখ ৬২ হাজার ৫৯৮-এ মাত্র ১।

গতকাল মঙ্গলবার বারবারা তাঁর পুরস্কারের অর্থ গ্রহণ করেন। সব ধরনের ফেডারেল এবং রাজ্য কর কাটার পর তাঁর হাতে এসেছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬১৬ ডলার।

বিপুল অঙ্কের এই টাকা দিয়ে কী করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বারবারা হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমি এখন ক্যাশ ৫-কে ভালোবাসি!’ তবে সব থেকে জরুরি যে কাজটি তিনি করবেন, তা হলো—বাকি থাকা সমস্ত বিল পরিশোধ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

পা ব্যথার কারণে ছুটি নিয়ে হাঁটলেন ১৬০০০ কদম, হারাতে হলো চাকরি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পা ব্যথার কথা বলে ছুটি নিয়ে হেঁটেছেন ১৬ হাজার কদম! প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
পা ব্যথার কথা বলে ছুটি নিয়ে হেঁটেছেন ১৬ হাজার কদম! প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

পা ব্যথার কথা বলে নিয়েছিলেন ছুটি। অফিস দেখল ছুটি নিয়ে হেঁটেছেন ১৬ হাজার কদম! ব্যস সঙ্গে সঙ্গে ছাঁটাই! তারপর কর্মী মামলা করে দিলেন অফিসের নামে। জিতলেনও। এই অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে চীনের জিয়াংসু প্রদেশে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে জানা যায়, চেন নামের ওই ব্যক্তি জিয়াংসুর এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চেন দুইবার অসুস্থতাজনিত ছুটির আবেদন করেন। প্রথমবারে কর্মস্থলে পিঠে টান লাগার কারণে ছুটি চান তিনি। প্রেসক্রিপশন জমা দিয়ে ছুটির অনুমোদনও পান।

এক মাস বিশ্রামের পর কাজে ফিরে অর্ধবেলা না পেরোতেই আবার অসুস্থতাজনিত ছুটির আবেদন করলেন। এবার কারণ হিসেবে বললেন ডান পায়ে ব্যথা। চিকিৎসক তাঁকে এক সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।

পরে ধরা পড়ে তাঁর গোড়ালির হাড় বৃদ্ধি (heel spur) হয়েছে। এ কারণ দেখিয়ে চেন কয়েক দিন আরও ছুটি বাড়ান।

দীর্ঘদিন কাজে অনুপস্থিত থাকায় অফিস কর্তৃপক্ষ চেনকে হাসপাতালের নথি জমা দিতে বলে। কিন্তু তিনি অফিসে আসলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন। কয়েক দিন পর কোম্পানিটি অনুপস্থিতির অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করে। অভিযোগ ছিল, চেন তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন।

চাকরিচ্যুতির পর চেন শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর ছুটি বৈধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রমাণও তিনি জমা দিয়েছেন। তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষ চেনের পক্ষে রায় দেন এবং কোম্পানিকে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৭৯ ইউয়ান (প্রায় ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন।

এরপর কোম্পানি চেনের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। তারা আদালতে সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিও দেখায়, যেখানে দেখা যায় চেন পা ব্যথার অসুস্থতায় ছুটি নেওয়ার দিনই অফিসে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে দৌড়ে আসছিলেন। পাশাপাশি, তাঁরা একটি চ্যাট সফটওয়্যারের রেকর্ডও আদালতে তুলে ধরেন যেখানে দেখা যায়, চেন ওই দিন ১৬ হাজারের বেশি কদম হেঁটেছেন।

চেন পাল্টা দাবি করেন, কোম্পানির প্রমাণগুলো ভিত্তিহীন। তিনি সম্পূর্ণ চিকিৎসা প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, যেখানে কোমর ও পায়ের স্ক্যান রিপোর্টও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

শেষ পর্যন্ত আদালত চেনের পক্ষে রায় দেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, কোম্পানিটি অবৈধভাবে তাঁকে বরখাস্ত করেছে। ফলে দুই দফায় কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

৮৩ বছরের দাম্পত্যজীবন, বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন শতবর্ষী মার্কিন দম্পতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪২
এই দীর্ঘ পথচলার পেছনে রয়েছে শুধু একে অপরের প্রতি ভালোবাসা। ছবি: লংজেভিকোয়েস্ট
এই দীর্ঘ পথচলার পেছনে রয়েছে শুধু একে অপরের প্রতি ভালোবাসা। ছবি: লংজেভিকোয়েস্ট

১৯৪২ সালে বিয়ে। একসঙ্গে ৮৩ বছর পার করলেন যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী দম্পতি এলিনর ও লাইল গিটেনস। এই দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের মধ্য দিয়ে গড়লেন বিশ্বরেকর্ডও। বিশ্বের দীর্ঘতম বিবাহিত জুটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০৭ বছর বয়সী এলিনর ও ১০৮ বছর বয়সী লাইল গিটেনস।

যেখানে বিশ্বজুড়ে বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের হার সেখানে দীর্ঘ এই দাম্পত্য জীবনের পথচলা বিস্ময়েরই। তবে এই দম্পতি বলেন, তাঁদের এই দীর্ঘ পথচলায় রয়েছে শুধু একে অপরের প্রতি ভালোবাসা।

১০০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের তথ্য সংরক্ষণ করে এমন একটি সংস্থা লংজেভিকোয়েস্ট ওয়েবসাইট এলিনর-লাইল দম্পতির বিয়ের শংসাপত্র, মার্কিন আদমশুমারি নথি ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করেছে।

এর আগে এই রেকর্ড ছিল ৮৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের অধিকারী ব্রাজিলের ম্যানোয়েল অ্যাঞ্জেলিম দিনো (১০৬) এবং তাঁর স্ত্রী মারিয়া দে সোসা দিনো (১০২)-এর দখলে। তাঁদের মৃত্যুর পর গিটেনস দম্পতি এই খেতাব পান।

এলিনর ও লাইলের প্রথম দেখা ১৯৪১ সালে একটি কলেজ বাস্কেটবল ম্যাচে। লাইল ক্লার্ক আটলান্টা ইউনিভার্সিটির পক্ষে খেলছিলেন। আর এলিনর ছিলেন দর্শকের সারিতে।

এই পরিচয় ১৯৪২ সালের ৪ জুন পরিণয়ে গড়াল। জর্জিয়ার সেনা প্রশিক্ষণ থেকে মাত্র তিন দিন ছুটি পেয়ে লাইল বিয়ে করেন এলিনরকে। লাইল যখন ইউএস আর্মির ৯২ তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনে ইতালিতে দায়িত্বরত, এলিনর ভাবছিলেন আর কি হবে দেখা!

প্রথম সন্তানকে গর্ভে। এ সময় এলিনর চলে যান নিউইয়র্ক সিটিতে। সেখানে লাইলের পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হন। কাজের পাশাপাশি চিঠির মাধ্যমে লাইলের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছিলেন এলিনর। স্মৃতিচারণ করে এলিনর জানান, প্রত্যেকটা চিঠি সেনাবাহিনী পরীক্ষা করত। তাই সব কথা বলাও যেত না।

যুদ্ধের পর নিউইয়র্কের স্থায়ী বাসিন্দা হন গিটেনস দম্পতি। একসঙ্গে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন।

৬৯ বছর বয়সে ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবান এডুকেশনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন এলিনর। এরপর তারা ক্লার্ক আটলান্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কয়েক দশক কাটান। পরে তিন সন্তানের একজন অ্যাঞ্জেলার কাছাকাছি থাকতে মিয়ামিতে চলে যান।

লাইল জানান, তিনি এলিনরের সঙ্গে সময় কাটানো ভালোবাসেন। তাঁর সঙ্গে থাকতে পেরে খুশি। তাঁদের দুজনই একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন এবং জীবনে একসঙ্গে অনেক কিছু করেছেন।

লংজেভিকোয়েস্ট সংস্থা জানায়, গিটেনস দম্পতির সম্মিলিত বয়স ২১৮ বছরেরও বেশি। তাঁরা বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে বয়স্ক বিবাহিত দম্পতিও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

সোনার দানা গিলে ফেলল শিশু, বাইরে যেতে নিষেধ মায়ের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৯
১০ হাজার ইউয়ান মূল্যের সোনার দানা গিলে ফেলেছে শিশু। ছবি: এআই নির্মিত প্রতীকী ছবি
১০ হাজার ইউয়ান মূল্যের সোনার দানা গিলে ফেলেছে শিশু। ছবি: এআই নির্মিত প্রতীকী ছবি

শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এদিকে চীনের ১১ বছর বয়সী এক শিশু গিলে ফেলেছে সোনার দানা (গোল্ড বিন)। যার বাজারমূল্য ১০ হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫ টাকা)।

দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশানের বাসিন্দা জি গত ১৭ অক্টোবর ১০ গ্রামের একটি সোনার দানা কেনেন। কয়েক দিন পর ২২ অক্টোবর তাঁর ছেলে সোনার দানাটি হাতে পেয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ গিলে ফেলে।

এ সময় জি বারান্দায় কাপড় ধুচ্ছিলেন। তাঁর ছেলে আতঙ্কিত হয়ে ছুটে এসে জানায়, সে গোল্ড বিনটি গিলে ফেলেছে। তার ভয় হচ্ছে সে কি এখন মারা যাবে!

জিকে তাঁর ছেলে আরও জানায়, জিব দিয়ে স্বাদ পরীক্ষা করার সময় সে সোনার দানাটি গিলে ফেলেছে।

প্রথমে জি ভেবেছিলেন, ছেলে মজা করছে। পরে দেখেন সোনার দানাটি নেই। তখন তিনি চিন্তায় পড়ে যান।

জির তখন মনে পড়ে, তাঁর ভাগনিও একবার একটি কয়েন গিলে ফেলেছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেছিলেন, এটি গুরুতর কিছু নয়। মলের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।

জি মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে থাকেন কী করা যায়। ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে তিনি দেখেন, সোনার জিনিসও একইভাবে মলের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।

এরপর জি ছেলেকে চোখে চোখে রাখতে থাকেন হারানো এই মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের আশায়। ছেলেকে সতর্ক করতে থাকেন বাইরে মলত্যাগ না করে ঘরে নির্ধারিত স্থানে করতে। কারণ, মলের সঙ্গে সোনার দানাটি বের হয়ে আসবে। তা সত্ত্বেও টানা পাঁচ দিন ধরে দিনে দুবার পরীক্ষা করেও সোনাটি পাওয়া যায়নি।

পরে গত ২৬ অক্টোবর ছেলেকে কুনশান ফিফথ পিপলস হাসপাতালে নিয়ে যান জি। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, শিশুটির পেটে একটি বস্তু রয়েছে। তবে শিশুটির কোনো ব্যথা বা বমির লক্ষণ ছিল না।

পরে সেদিন সন্ধ্যায় সোনার দানাটি নিরাপদে বের হয়। তবে এটি কি স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে নাকি চিকিৎসার মাধ্যমে বের করা হয়েছে, তা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত