অর্ণব সান্যাল
জীবনে মাঝে মাঝে এমন মুহূর্ত আসে, বুঝলেন। তখন কেমন জানি লাগে! একেবারে হতাশার চূড়ান্ত অবস্থা। ওই সময়টায় দুঃখে কখনো কখনো এমনটাই মনে হয় যে, আগামীকালই ‘একটা সেলাই মেশিন কিনে শাবানা হয়ে যাব’!
শাবানা এ দেশের কিংবদন্তিতুল্য অভিনয়শিল্পী। শৈশব থেকে বিটিভিতে তাঁর অভিনীত প্রচুর চলচ্চিত্র দেখা হয়েছে। একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য যে, শাবানা অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়েই আমরা ছোটরা এবং অনেক বড়রাও লাঞ্ছনা-গঞ্জনা-শোক-দুঃখ সহ্য করে অবিচল থাকার শিক্ষা পেতাম। এগুলো কাজেও লেগেছে বটে। এই যে এখন হাজারো কিছু সহ্য করে আদর্শ ‘সহনশীল’ প্রাণী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি, তার জন্য অনেকটা ধন্যবাদ ওই ছবিগুলোর প্রাপ্য।
তবে তারপরও হতাশা আসে। এমন জোরেশোরেই আসে যে, মনে হয় রাস্তায় নেমে যাই সন্ন্যাসীর মতো। সন্ন্যাস গ্রহণ করে সবাই তো টিকে থাকতে পারে না। সেই টিকে না থাকা ব্যক্তিরাই সৎ সাহসের অভাবে একপর্যায়ে সেলাই মেশিন কিনে শাবানা হতে চায়! ওই যতটা পারা যায় আর কী।
বলে ফেলা ভালো, শিরোনামের বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে নেওয়া। কোনো এক সৃষ্টিশীল মানুষের প্রোফাইলেই হয়তো পাওয়া গিয়েছিল। পরে দেখা গেল এ প্রক্রিয়ায় সবাই-ই ট্রোলে অংশ নিচ্ছে। তা ভাবলাম, আমিই বা বাদ থাকি কেন?
যদিও মনকে চোখ মেরেছে এই নির্দিষ্ট লাইনটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও দর্শন। নিজের হতাশা প্রকাশ করার জন্য এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? ‘অন্তর্নিহিত তাৎপর্য’–এর বিষয়টির সঙ্গে স্কুল থেকেই আমরা বেশ পরিচিত। কিন্তু সত্যি বলছি, এতটা গভীর ‘অন্তর্নিহিত তাৎপর্য’ আর কোনো কথায় খুঁজে পাইনি। দ্বিমত থাকলে আমার সীমাবদ্ধতা মেনে ক্ষমা করে দেবেন, প্লিজ।
প্রথমে ভেবেছিলাম, এ লাইনটা শুনেই বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি বুঝি আমি একাই। পরে দেখলাম, না না, এ দেশে এমন অনেকেই আছে। সেটি নিশ্চিত করল বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান গ্যালপ। কিছুদিন আগে বিশ্বে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সূচকে থাকা দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনমত জরিপকারী সংস্থা গ্যালপ। নাম ‘গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্ট-২০২২’। সেখানে সর্বোচ্চ নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সূচকে প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।
গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্টে চারটি বিভাগ রয়েছে—সর্বনিম্ন ইতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক, সর্বোচ্চ ইতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক, সর্বনিম্ন নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক ও সর্বোচ্চ নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক। এসব সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে মানুষের রাগ-ক্ষোভ-ক্রোধ, মানসিক চাপ ও বিষাদের অভিজ্ঞতার আলোকে।
গ্যালপের প্রতিবেদন বলছে, রাগ-ক্ষোভ-ক্রোধ, মানসিক চাপ ও বিষাদের দিক থেকে একেবারে শীর্ষে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান। দেশটির স্কোর ৫৯। সেখানে সপ্তম স্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর ৪৫। একই স্কোর নিয়ে সপ্তম অবস্থানে আছে ইকুয়েডর ও গিনি।
অর্থাৎ, আমার মতো সেলাই মেশিন কিনে হতাশা প্রকাশ করার মতো অনেক মানুষ এ দেশে আছে। তাদের দুঃখ, হতাশা, রাগ, ক্ষোভের কারণগুলো কী আসলে? আরে সব কি আর বলা যায় নাকি! পকেটের টান বড় টান, প্রেমের টানের চেয়েও শক্তিশালী। বর্তমান বিশ্বে পকেট খালি তো মন বসবে না পড়ার (বা কাজের) টেবিলে! এবার দয়া করে জিজ্ঞেস করে বসবেন না যেন, পকেটে কেন টান লাগছে। সব কথা এভাবে বলা যায় না যে! যদিও দুঃখের কথা ভাগাভাগি করলে মন হালকা হয়, তবে মাথাব্যথা বলে মাথা কাটার মতো কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করে হালকা হওয়ার কোনো ইচ্ছা এই অধমের নেই।
শেষটা করি নাসিরুদ্দিন হোজ্জাকে দিয়ে। মোল্লা নাসিরুদ্দিন একটা সময় নাকি চিকিৎসা করতেন মানুষের। এ নিয়ে আশ্চর্য হতেই পারেন, তবে হোজ্জাকে দিয়ে সবই সম্ভব। তো এক দিন এক লোক তাঁর বাড়ির কাছে এসে ‘বাবা গো, মা গো’ চিৎকার শুরু করে দিল। চিকিৎসকরূপী মোল্লা স্বভাবতই জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হয়েছে?’ জবাবে ওই ব্যক্তি জানাল তাঁর পেটে ব্যাপক ব্যথা। জানা গেল, রোগী খেয়েছিল পচা পিঠা। আর এই না শুনে কালবিলম্ব না করে মোল্লা নাসিরুদ্দিন গেলেন রোগীর চোখে ওষুধ দিতে। সঙ্গে সঙ্গে রোগী জানাল—চোখে নয়, চোখে নয়, ব্যথা পেটে।
তখন হোজ্জা বললেন, ‘আসল রোগ তো চোখে। চোখ খারাপ না হলে কি আর কেউ পচা পিঠা খায়?’
আমরাও সবাই জানি যে, রোগটা আসলে কোথায়! কিন্তু পেট ঠিক করার আশায় চোখ কানা করার শখ কার হয়, বলুন!
সে যাক গে। জেনে রাখুন, গ্যালপের জরিপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ইতিবাচক অভিজ্ঞতা তথা সবচেয়ে কম নেতিবাচক অভিজ্ঞতার দেশের তালিকায় শীর্ষে আছে পানামা, স্কোর ৮৫। এবার কি তবে হতাশ বোধ করলে একটা জাহাজ কিনে পানামা চলে যাব?
ভেবে দেখতে পারেন কিন্তু। আইডিয়া একেবারে খারাপ না!
জীবনে মাঝে মাঝে এমন মুহূর্ত আসে, বুঝলেন। তখন কেমন জানি লাগে! একেবারে হতাশার চূড়ান্ত অবস্থা। ওই সময়টায় দুঃখে কখনো কখনো এমনটাই মনে হয় যে, আগামীকালই ‘একটা সেলাই মেশিন কিনে শাবানা হয়ে যাব’!
শাবানা এ দেশের কিংবদন্তিতুল্য অভিনয়শিল্পী। শৈশব থেকে বিটিভিতে তাঁর অভিনীত প্রচুর চলচ্চিত্র দেখা হয়েছে। একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য যে, শাবানা অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়েই আমরা ছোটরা এবং অনেক বড়রাও লাঞ্ছনা-গঞ্জনা-শোক-দুঃখ সহ্য করে অবিচল থাকার শিক্ষা পেতাম। এগুলো কাজেও লেগেছে বটে। এই যে এখন হাজারো কিছু সহ্য করে আদর্শ ‘সহনশীল’ প্রাণী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি, তার জন্য অনেকটা ধন্যবাদ ওই ছবিগুলোর প্রাপ্য।
তবে তারপরও হতাশা আসে। এমন জোরেশোরেই আসে যে, মনে হয় রাস্তায় নেমে যাই সন্ন্যাসীর মতো। সন্ন্যাস গ্রহণ করে সবাই তো টিকে থাকতে পারে না। সেই টিকে না থাকা ব্যক্তিরাই সৎ সাহসের অভাবে একপর্যায়ে সেলাই মেশিন কিনে শাবানা হতে চায়! ওই যতটা পারা যায় আর কী।
বলে ফেলা ভালো, শিরোনামের বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে নেওয়া। কোনো এক সৃষ্টিশীল মানুষের প্রোফাইলেই হয়তো পাওয়া গিয়েছিল। পরে দেখা গেল এ প্রক্রিয়ায় সবাই-ই ট্রোলে অংশ নিচ্ছে। তা ভাবলাম, আমিই বা বাদ থাকি কেন?
যদিও মনকে চোখ মেরেছে এই নির্দিষ্ট লাইনটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও দর্শন। নিজের হতাশা প্রকাশ করার জন্য এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? ‘অন্তর্নিহিত তাৎপর্য’–এর বিষয়টির সঙ্গে স্কুল থেকেই আমরা বেশ পরিচিত। কিন্তু সত্যি বলছি, এতটা গভীর ‘অন্তর্নিহিত তাৎপর্য’ আর কোনো কথায় খুঁজে পাইনি। দ্বিমত থাকলে আমার সীমাবদ্ধতা মেনে ক্ষমা করে দেবেন, প্লিজ।
প্রথমে ভেবেছিলাম, এ লাইনটা শুনেই বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি বুঝি আমি একাই। পরে দেখলাম, না না, এ দেশে এমন অনেকেই আছে। সেটি নিশ্চিত করল বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান গ্যালপ। কিছুদিন আগে বিশ্বে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সূচকে থাকা দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনমত জরিপকারী সংস্থা গ্যালপ। নাম ‘গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্ট-২০২২’। সেখানে সর্বোচ্চ নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সূচকে প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।
গ্লোবাল ইমোশনস রিপোর্টে চারটি বিভাগ রয়েছে—সর্বনিম্ন ইতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক, সর্বোচ্চ ইতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক, সর্বনিম্ন নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক ও সর্বোচ্চ নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সূচক। এসব সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে মানুষের রাগ-ক্ষোভ-ক্রোধ, মানসিক চাপ ও বিষাদের অভিজ্ঞতার আলোকে।
গ্যালপের প্রতিবেদন বলছে, রাগ-ক্ষোভ-ক্রোধ, মানসিক চাপ ও বিষাদের দিক থেকে একেবারে শীর্ষে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান। দেশটির স্কোর ৫৯। সেখানে সপ্তম স্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর ৪৫। একই স্কোর নিয়ে সপ্তম অবস্থানে আছে ইকুয়েডর ও গিনি।
অর্থাৎ, আমার মতো সেলাই মেশিন কিনে হতাশা প্রকাশ করার মতো অনেক মানুষ এ দেশে আছে। তাদের দুঃখ, হতাশা, রাগ, ক্ষোভের কারণগুলো কী আসলে? আরে সব কি আর বলা যায় নাকি! পকেটের টান বড় টান, প্রেমের টানের চেয়েও শক্তিশালী। বর্তমান বিশ্বে পকেট খালি তো মন বসবে না পড়ার (বা কাজের) টেবিলে! এবার দয়া করে জিজ্ঞেস করে বসবেন না যেন, পকেটে কেন টান লাগছে। সব কথা এভাবে বলা যায় না যে! যদিও দুঃখের কথা ভাগাভাগি করলে মন হালকা হয়, তবে মাথাব্যথা বলে মাথা কাটার মতো কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করে হালকা হওয়ার কোনো ইচ্ছা এই অধমের নেই।
শেষটা করি নাসিরুদ্দিন হোজ্জাকে দিয়ে। মোল্লা নাসিরুদ্দিন একটা সময় নাকি চিকিৎসা করতেন মানুষের। এ নিয়ে আশ্চর্য হতেই পারেন, তবে হোজ্জাকে দিয়ে সবই সম্ভব। তো এক দিন এক লোক তাঁর বাড়ির কাছে এসে ‘বাবা গো, মা গো’ চিৎকার শুরু করে দিল। চিকিৎসকরূপী মোল্লা স্বভাবতই জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হয়েছে?’ জবাবে ওই ব্যক্তি জানাল তাঁর পেটে ব্যাপক ব্যথা। জানা গেল, রোগী খেয়েছিল পচা পিঠা। আর এই না শুনে কালবিলম্ব না করে মোল্লা নাসিরুদ্দিন গেলেন রোগীর চোখে ওষুধ দিতে। সঙ্গে সঙ্গে রোগী জানাল—চোখে নয়, চোখে নয়, ব্যথা পেটে।
তখন হোজ্জা বললেন, ‘আসল রোগ তো চোখে। চোখ খারাপ না হলে কি আর কেউ পচা পিঠা খায়?’
আমরাও সবাই জানি যে, রোগটা আসলে কোথায়! কিন্তু পেট ঠিক করার আশায় চোখ কানা করার শখ কার হয়, বলুন!
সে যাক গে। জেনে রাখুন, গ্যালপের জরিপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ইতিবাচক অভিজ্ঞতা তথা সবচেয়ে কম নেতিবাচক অভিজ্ঞতার দেশের তালিকায় শীর্ষে আছে পানামা, স্কোর ৮৫। এবার কি তবে হতাশ বোধ করলে একটা জাহাজ কিনে পানামা চলে যাব?
ভেবে দেখতে পারেন কিন্তু। আইডিয়া একেবারে খারাপ না!
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
১ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
২ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৪ দিন আগে