রজত কান্তি রায়, ঢাকা
রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের উল্টো দিকে তাজমহল রোডের সি ব্লক। এই ব্লকের ২৩/১৬ নম্বর বাড়িটিতে একটি রেস্টুরেন্ট আছে, নাম ‘মজা’। ইংরেজি বানানে অনেকেই একে ‘মাজা’ বলে ভুল করলেও খাবারের স্বাদ আর আতিথেয়তায় কোনো কমতি নেই রেস্তোরাঁটিতে।
এখানে হঠাৎ করে পেয়ে যেতে পারেন ইলিশ মাছের কাচ্চি কিংবা দারুণ স্বাদের খিচুড়ি। আর নিয়মিত পাবেন সাদা ভাত, কাচ্চি বিরিয়ানি, তন্দুরি পরোটা, নানান পদের ভর্তা, চাপ কিংবা কাবাব। ‘ওপেন কিচেন’ ধারণায় এখানে রান্নাঘরটি একেবারে রেস্তোরাঁর প্রবেশমুখে। তাই দেখা যায় কোন পরিবেশে খাবার রান্না হচ্ছে। তাজা মসলা আর তাজা উপকরণের কারণে এখানকার খাবার বেশ সুস্বাদু। ‘মজার খাবার মজাদার’—এ রকম একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে মোহাম্মদপুরে। প্রায় দেড় দশক ধরে চলছে রেস্তোরাঁটি। এর মালিকের নাম সাদাফ হাসনাইন মানজুর। কিন্তু তাঁর অবর্তমানে এই রেস্তোরাঁর ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন তাঁর বড় মেয়ে জেরিয়া হাসনাইন ইরমা।
এই জ্যৈষ্ঠ শেষের এক মেঘ মেঘ সকালে ইরমার সঙ্গে কথা হয় তাঁর রেস্তোরাঁয় বসে। এলাচি সুবাসিত দুধ চা পান করতে করতে ইরমার মুখোমুখি বসি। জানতে চাই, ব্যাংকের নিশ্চিত চাকরি ছেড়ে ‘প্রায় অনিশ্চিত’ ব্যবসার পথে পা বাড়ালেন কেন? ইরমা একটু হাসলেন। তারপর জানালেন দুই-তিন মাসের চাকরির অভিজ্ঞতা। ট্রেনিং শেষে তাঁর ‘বস’ যেদিন তাঁকে জানালেন, ব্যবসা আনতে হবে, সেদিনই তিনি চাকরি ছাড়ার কথা ভাবেন। ইরমা জানান, ব্যবসাই যদি আনতে হয়, তাহলে নিজের ব্যবসায় সময় দেওয়াটা কেন নয়? তিনি নিজের ইচ্ছার কথা জানান বাবাকে। বাবা কি রাজি হয়েছিলেন এক কথায়? সে রকম কোনো নজির আমাদের সমাজে নেই বলে জানান ইরমা। তারপর একগাল হেসে বললেন, প্রথমে বাবা তাঁকে বোঝাতে শুরু করেন ব্যবসাটা কীভাবে চলে, এর ঝুঁকি কোথায়। সবকিছুই স্বীকার করে নেন ইরমা। কিন্তু ব্যবসাটাই তিনি করবেন বলে মনস্থির করেন এবং ইন্টার্নের পর চাকরি ছেড়ে দেন।
প্রথম এক মাস তিনি বেশ কষ্ট করেছেন। এর মধ্যে বাবা চলে গেছেন দুবাই, নতুন ব্যবসার কাজে। মাথার ওপর ম্যানেজার। ইরমা ধীরে ধীরে বুঝে নিতে শুরু করেন তাঁর দায়িত্ব। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় দিতে থাকেন রেস্তোরাঁয়। এ সময় একটা দারুণ অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। সপ্তাহের তিন দিন খুব ভালো বেচাবিক্রি হলেও চার দিন সেটা হয় বেশ কম। টাকা-পয়সার দিক দিয়ে সেই তিন দিন আর বাকি চার দিনের পার্থক্য বিশাল। প্রথম প্রথম বেশ হতাশ হয়ে যান ইরমা। অল্প দিনেই বুঝে নেন, রেস্তোরাঁ ব্যবসার ধরন এমনই। তারপর নিজের পরিকল্পনামতো এগোতে থাকেন।
চ্যালেঞ্জটা নিজের সঙ্গে, ইরমা চোয়াল শক্ত করে কথাটা বলেন। চাকরি করতে গিয়ে নিজের বেতন হলেই তিনি খুশি থাকতেন। সে বেতনও আবার মাসের ২৫ তারিখ অ্যাকাউন্টে ঢুকে যেত। কিন্তু এখন বিষয়টি উল্টো। আগে চিন্তা করতে হয় তাঁর ৩২ জন স্টাফের বেতনের কথা। এরপর বাজার ও দোকানদারদের বিলের কথা। তারপর লাভ করার কথা। এই চ্যালেঞ্জ ধীরে ধীরে মোকাবিলা করে এগোচ্ছেন বলে জানালেন। জানালেন, রেস্তোরাঁর স্টাফ আর ম্যানেজার তাঁকে বেশ সহযোগিতা করছেন এ কাজে।
ইরমা জানেন, সবার ‘টেস্ট বাড’ এক নয়। তিনি এটাও জানেন, সবার টেস্ট বাড অনুসারে খাবার বানাতেও তিনি পারবেন না। কিন্তু ‘মজা’ নামের এ রেস্তোরাঁটির খ্যাতি আবার তার সুস্বাদু খাবারের জন্যই। জিজ্ঞেস করলাম, এই প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকা সম্ভব? ইরমা তাকিয়ে থাকলেন আমার চোখের দিকে। তারপর বললেন, সম্ভব।
বেরিয়ে আসি রেস্তোরাঁ থেকে। দুপুরের খাবারের রান্না চলছে। তার সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে তাজমহল রোডের সি ব্লকের বেশ অনেকটা জায়গাজুড়ে। আকাশে মেঘ। জানি, একটু পর সেই মেঘ সরে যাবে।
রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের উল্টো দিকে তাজমহল রোডের সি ব্লক। এই ব্লকের ২৩/১৬ নম্বর বাড়িটিতে একটি রেস্টুরেন্ট আছে, নাম ‘মজা’। ইংরেজি বানানে অনেকেই একে ‘মাজা’ বলে ভুল করলেও খাবারের স্বাদ আর আতিথেয়তায় কোনো কমতি নেই রেস্তোরাঁটিতে।
এখানে হঠাৎ করে পেয়ে যেতে পারেন ইলিশ মাছের কাচ্চি কিংবা দারুণ স্বাদের খিচুড়ি। আর নিয়মিত পাবেন সাদা ভাত, কাচ্চি বিরিয়ানি, তন্দুরি পরোটা, নানান পদের ভর্তা, চাপ কিংবা কাবাব। ‘ওপেন কিচেন’ ধারণায় এখানে রান্নাঘরটি একেবারে রেস্তোরাঁর প্রবেশমুখে। তাই দেখা যায় কোন পরিবেশে খাবার রান্না হচ্ছে। তাজা মসলা আর তাজা উপকরণের কারণে এখানকার খাবার বেশ সুস্বাদু। ‘মজার খাবার মজাদার’—এ রকম একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে মোহাম্মদপুরে। প্রায় দেড় দশক ধরে চলছে রেস্তোরাঁটি। এর মালিকের নাম সাদাফ হাসনাইন মানজুর। কিন্তু তাঁর অবর্তমানে এই রেস্তোরাঁর ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন তাঁর বড় মেয়ে জেরিয়া হাসনাইন ইরমা।
এই জ্যৈষ্ঠ শেষের এক মেঘ মেঘ সকালে ইরমার সঙ্গে কথা হয় তাঁর রেস্তোরাঁয় বসে। এলাচি সুবাসিত দুধ চা পান করতে করতে ইরমার মুখোমুখি বসি। জানতে চাই, ব্যাংকের নিশ্চিত চাকরি ছেড়ে ‘প্রায় অনিশ্চিত’ ব্যবসার পথে পা বাড়ালেন কেন? ইরমা একটু হাসলেন। তারপর জানালেন দুই-তিন মাসের চাকরির অভিজ্ঞতা। ট্রেনিং শেষে তাঁর ‘বস’ যেদিন তাঁকে জানালেন, ব্যবসা আনতে হবে, সেদিনই তিনি চাকরি ছাড়ার কথা ভাবেন। ইরমা জানান, ব্যবসাই যদি আনতে হয়, তাহলে নিজের ব্যবসায় সময় দেওয়াটা কেন নয়? তিনি নিজের ইচ্ছার কথা জানান বাবাকে। বাবা কি রাজি হয়েছিলেন এক কথায়? সে রকম কোনো নজির আমাদের সমাজে নেই বলে জানান ইরমা। তারপর একগাল হেসে বললেন, প্রথমে বাবা তাঁকে বোঝাতে শুরু করেন ব্যবসাটা কীভাবে চলে, এর ঝুঁকি কোথায়। সবকিছুই স্বীকার করে নেন ইরমা। কিন্তু ব্যবসাটাই তিনি করবেন বলে মনস্থির করেন এবং ইন্টার্নের পর চাকরি ছেড়ে দেন।
প্রথম এক মাস তিনি বেশ কষ্ট করেছেন। এর মধ্যে বাবা চলে গেছেন দুবাই, নতুন ব্যবসার কাজে। মাথার ওপর ম্যানেজার। ইরমা ধীরে ধীরে বুঝে নিতে শুরু করেন তাঁর দায়িত্ব। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় দিতে থাকেন রেস্তোরাঁয়। এ সময় একটা দারুণ অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। সপ্তাহের তিন দিন খুব ভালো বেচাবিক্রি হলেও চার দিন সেটা হয় বেশ কম। টাকা-পয়সার দিক দিয়ে সেই তিন দিন আর বাকি চার দিনের পার্থক্য বিশাল। প্রথম প্রথম বেশ হতাশ হয়ে যান ইরমা। অল্প দিনেই বুঝে নেন, রেস্তোরাঁ ব্যবসার ধরন এমনই। তারপর নিজের পরিকল্পনামতো এগোতে থাকেন।
চ্যালেঞ্জটা নিজের সঙ্গে, ইরমা চোয়াল শক্ত করে কথাটা বলেন। চাকরি করতে গিয়ে নিজের বেতন হলেই তিনি খুশি থাকতেন। সে বেতনও আবার মাসের ২৫ তারিখ অ্যাকাউন্টে ঢুকে যেত। কিন্তু এখন বিষয়টি উল্টো। আগে চিন্তা করতে হয় তাঁর ৩২ জন স্টাফের বেতনের কথা। এরপর বাজার ও দোকানদারদের বিলের কথা। তারপর লাভ করার কথা। এই চ্যালেঞ্জ ধীরে ধীরে মোকাবিলা করে এগোচ্ছেন বলে জানালেন। জানালেন, রেস্তোরাঁর স্টাফ আর ম্যানেজার তাঁকে বেশ সহযোগিতা করছেন এ কাজে।
ইরমা জানেন, সবার ‘টেস্ট বাড’ এক নয়। তিনি এটাও জানেন, সবার টেস্ট বাড অনুসারে খাবার বানাতেও তিনি পারবেন না। কিন্তু ‘মজা’ নামের এ রেস্তোরাঁটির খ্যাতি আবার তার সুস্বাদু খাবারের জন্যই। জিজ্ঞেস করলাম, এই প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকা সম্ভব? ইরমা তাকিয়ে থাকলেন আমার চোখের দিকে। তারপর বললেন, সম্ভব।
বেরিয়ে আসি রেস্তোরাঁ থেকে। দুপুরের খাবারের রান্না চলছে। তার সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে তাজমহল রোডের সি ব্লকের বেশ অনেকটা জায়গাজুড়ে। আকাশে মেঘ। জানি, একটু পর সেই মেঘ সরে যাবে।
তখনো স্নাতক শেষ হয়নি তাঁর। ইচ্ছা হলো, ব্যবসায়ী বাবার প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন। গেলেন বাবার সঙ্গে কথা বলতে। বাবা বললেন, আগে অন্য কোথাও কাজ শিখে এসো। এরপর তিনি নামলেন চাকরির খোঁজে। সে যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালে। ওই বছরই কাজ পান একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে।
৩ দিন আগেরাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা। এখানে প্রধান সড়কের পাশে একটি দালানের দ্বিতীয় তলার ছাদের দিকে চোখ গেলে একটু ঘোর লাগে সবার। গাছপালায় ঘেরা, সূর্যের আলোয় উজ্জ্বল এই ছাদে আছে একটি ক্যাফে। এর নাম ওরেন্ডা অ্যান্ড বিনস।
৩ দিন আগেস্কুল, কলেজ ও নারীদের উন্নয়নে উদার হাতে অর্থ দান করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন এক নারী। তাঁর নাম মেরি গ্যারেট। তিনি ১৮৯৩ সালে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুলকে একটি শর্ত দিয়ে অর্থ দান করেছিলেন। মেরি গ্যারেটের শর্ত ছিল, এই প্রতিষ্ঠানকে নারী...
৩ দিন আগেমৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা যায়, এমন প্রমাণাদি নেই বলে মন্তব্য করেছেন ব্লাস্টের (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে লিঙ্গভিত্তিক...
৮ দিন আগে