কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

-আমরা খুব সাধারণ শিশু আর ১০ জন যেমন হয়।
-তোমরা তোমাদের বাবা মাকে খুন করেছ আর নিজেদের সাধারণ শিশু বলে মনে করছ?
প্রশ্নগুলো করা হচ্ছিল বাবা মাকে খুনের দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত দুই ভাইকে। প্রশ্নকর্তার নাম বারবারা ওয়াল্টার্স। শেষ লাইনটি বলার সময় বারবারার মুখের অভিব্যক্তি ছিল দেখার মতো। এমন নৃশংসতা যারা করেছেন শুধু তারাই নন বারবারার মুখোমুখি হয়েছেন মডেল অভিনেত্রী থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক পর্যন্ত। বারবারার সাংবাদিকতার বয়স পঞ্চাশ বছর। এই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য একজন।
বারবারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তাঁর কথা বলার ধরণ। তিনি যখন প্রশ্ন করতেন তখন সেই প্রশ্ন যেন দর্শক তার নিজের বলে মনে করতে বাধ্য হবেন।
বারবারা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি সাক্ষাৎকার নিতে ভয় পাই না।’ তার এই কথার প্রমাণ মেলে যখন তিনি ট্রাম্প, পুতিন, বাশার আল আসাদের মতো মানুষদের এমনসব প্রশ্ন করেন যা সচরাচর কেউ করার সাহস পায় না। তবে প্রশ্নগুলো কখনই আক্রমণাত্মক ছিল না। ছিল খুবই সরল আর সাবলীল। ২০০১ সালে নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি চান কাউকে হত্যা করা হোক?’
পারমাণবিক অস্ত্র থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য প্রশ্ন তৈরি থাকত বারবারার সাক্ষাৎকারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের মতো রাজনীতিকেরাও সাক্ষাৎকার দিতে বসেছিলেন বারবারার সামনে।
জিমি কার্টার, রোজালিন কার্টারের যৌথ সাক্ষাৎকার, মিসরীয় রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিনের যৌথ সাক্ষাৎকার নেন বারবারা। বারবারা ইরানের শাহ, মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং তার স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ফারাহ পাহলভিসহ রাশিয়ার বরিস ইয়েলৎসিন, চীনের জিয়াং জেমিন, যুক্তরাজ্যের মার্গারেট থ্যাচার, ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, চেকোস্লোভাকিয়ার ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল, লিবিয়ার মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি, জর্ডানের রাজা হুসেন, সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজসহ আরও অনেকের সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
বারবারা পপ আইকন মাইকেল জ্যাকসন, গায়ক-অভিনেত্রী বারব্রা স্ট্রিস্যান্ড, ক্যাথরিন হেপবার্নসহ জনপ্রিয় বিভিন্ন গায়ক, অভিনেত্রী, মডেলদের দারুণ সব সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ভোগ সম্পাদক আনা উইন্টুর, স্যার লরেন্স অলিভিয়ার সহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন বারবারা।
বারবারা তাঁর কাজ ও অবস্থানকে ব্যবহার করতেন সমাজের কাজে, মানুষের উপকারের জন্য। তার পরিচালিত অনুষ্ঠানগুলোর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। এই অনুষ্ঠানগুলোতে কখনো বারবারা করেছেন মারাত্মক প্রশ্ন, কখনো বের করে এনেছেন সমাজের কিছু অপ্রিয় সত্য কথা। তিনি বেছে নিতেন বিতর্কিত বিষয়গুলো। যখন এইডস নিয়ে মানুষের মনে অসম্ভব ভয় আর আতঙ্ক বিরাজ করত সেই সময়ে বারবারা তার অনুষ্ঠানে এইডসে আক্রান্ত একটি শিশুকে নিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে টিভির পর্দায় দেখানো হয় বারবারা একটি এইডস আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে খেলছেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, আপনি কিংবা আমি কখনই এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চুমু খেলে কিংবা তাঁকে ছুলে রোগটিতে আক্রান্ত হব না। এমনকি, পার্কিনসন নিয়েও তিনি কথা বলেন তার অনুষ্ঠানে।
সেখানে তার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে যে উত্তরগুলো আসে সেখান থেকে মানুষ বুঝতে পারেন এই রোগে আক্রান্ত একজন মানুষ তার অসুস্থতার কাছে অসহায়। তাই তার আশপাশের মানুষের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।
বারবারা প্রথম মানুষ যিনি ট্রান্সজেন্ডারদের টেলিভিশনের পর্দায় এনেছেন তার দেশের মানুষদের সামনে। বারবারার দর্শকেরা তাঁকে বিশ্বাস করতেন আর এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই তিনি প্রতিনিয়ত ভেঙেছেন সবকিছু, আলোকিত করেছেন সমাজের অন্ধকার দিকগুলোকে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজে দীর্ঘদিন সংবাদ উপস্থাপক এবং প্রাইমটাইম শো ‘২০ / ২০’ উপস্থাপনা করেছিলেন বারবারা। ডলি রেবেকা পার্টন থেকে শুরু করে টেইলর সুইফটের প্রজন্ম পর্যন্ত তারকারা এসেছেন তার অনুষ্ঠানে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয়কারী ক্রিস্টোফার ডি‘অলিয়ের রিভ একটি দুর্ঘটনায় প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর এসেছিলেন বারবারার অনুষ্ঠানে। যেখানে তিনি তুলে ধরেছিলেন তার প্রতিবন্ধকতা ও জীবনের কথা।
নারীদের নিয়ে ১৯৯৭ সালে ‘দ্য ভিউ’ নামের একটি শো উপস্থাপনা করেন তিনি। সেখানে মনিকা লিউনস্কি, যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি, ক্যাথরিন হেপবার্ন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের মতো মানুষদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। দ্য ভিউ’ র উপস্থাপক হিসেবে বারবারা কাজ করেছেন ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত।
তিনি চলচ্চিত্র তারকা, রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্য ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত জীবন এবং আবেগময় অবস্থার তথ্য অত্যন্ত ভদ্রতার সঙ্গে তুলে আনতে দক্ষ ছিলেন। বারবারা ২০০০ সালে এনএটিএএস থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে ১২ বার এমি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।
বারবারা ওয়াল্টার্সের পুরো নাম বারবারা জিল ওয়াল্টার্স। ১৯২৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বোস্টনে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন বারবারা। তাই কারও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ভয় কিংবা সংশয় কখনোই কাজ করেনি তাঁর চোখমুখে। প্রায় এক বছর নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি ছোট বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করেছিলেন তিনি।
বারবারা ১৯৬১ সালে লেখক ও গবেষক হিসেবে এনবিসি এর দ্য টুডে শো-তে যোগ দেন। টুকটাক অ্যাসাইনমেন্ট এবং আবহাওয়ার সংবাদ পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপরে। এক বছরের মধ্যে, তিনি একজন রিপোর্টার হয়ে ওঠেন। তখন তিনি তাঁর নিজস্ব প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকার গ্রহণ, লেখা এবং সম্পাদনা শুরু করেন।
বারবারা তাঁর আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন যখন তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তখন এটি বিশ্বাস করা হতো যে 'কঠিন সংবাদ' রিপোর্ট করা একজন নারীকে কেউ গুরুত্ব সহকারে নেবে না। ১৯৭১ সালের শুরুতে, ওয়াল্টার্স তার নিজের স্থানীয় এনবিসি অ্যাফিলিয়েট শো, নট ফর উইমেন-এর হোস্ট করেন।
এরপর ১৯৭৪ সালে এনবিসির একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী সহ-উপস্থাপক হিসেবে নাম লেখান তিনি। ওয়াল্টারস এবিসি এর সঙ্গে একটি পাঁচ বছরের জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সেই সময়ে এই অঙ্কের বেতন কোনো পুরুষ বা নারী সংবাদ উপস্থাপক নিতেন না। বারবারা ওয়াল্টার্স ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ৯৩ বছর বয়সে মারা যান।

-আমরা খুব সাধারণ শিশু আর ১০ জন যেমন হয়।
-তোমরা তোমাদের বাবা মাকে খুন করেছ আর নিজেদের সাধারণ শিশু বলে মনে করছ?
প্রশ্নগুলো করা হচ্ছিল বাবা মাকে খুনের দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত দুই ভাইকে। প্রশ্নকর্তার নাম বারবারা ওয়াল্টার্স। শেষ লাইনটি বলার সময় বারবারার মুখের অভিব্যক্তি ছিল দেখার মতো। এমন নৃশংসতা যারা করেছেন শুধু তারাই নন বারবারার মুখোমুখি হয়েছেন মডেল অভিনেত্রী থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক পর্যন্ত। বারবারার সাংবাদিকতার বয়স পঞ্চাশ বছর। এই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য একজন।
বারবারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তাঁর কথা বলার ধরণ। তিনি যখন প্রশ্ন করতেন তখন সেই প্রশ্ন যেন দর্শক তার নিজের বলে মনে করতে বাধ্য হবেন।
বারবারা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি সাক্ষাৎকার নিতে ভয় পাই না।’ তার এই কথার প্রমাণ মেলে যখন তিনি ট্রাম্প, পুতিন, বাশার আল আসাদের মতো মানুষদের এমনসব প্রশ্ন করেন যা সচরাচর কেউ করার সাহস পায় না। তবে প্রশ্নগুলো কখনই আক্রমণাত্মক ছিল না। ছিল খুবই সরল আর সাবলীল। ২০০১ সালে নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি চান কাউকে হত্যা করা হোক?’
পারমাণবিক অস্ত্র থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য প্রশ্ন তৈরি থাকত বারবারার সাক্ষাৎকারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের মতো রাজনীতিকেরাও সাক্ষাৎকার দিতে বসেছিলেন বারবারার সামনে।
জিমি কার্টার, রোজালিন কার্টারের যৌথ সাক্ষাৎকার, মিসরীয় রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিনের যৌথ সাক্ষাৎকার নেন বারবারা। বারবারা ইরানের শাহ, মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং তার স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ফারাহ পাহলভিসহ রাশিয়ার বরিস ইয়েলৎসিন, চীনের জিয়াং জেমিন, যুক্তরাজ্যের মার্গারেট থ্যাচার, ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, চেকোস্লোভাকিয়ার ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল, লিবিয়ার মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি, জর্ডানের রাজা হুসেন, সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজসহ আরও অনেকের সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
বারবারা পপ আইকন মাইকেল জ্যাকসন, গায়ক-অভিনেত্রী বারব্রা স্ট্রিস্যান্ড, ক্যাথরিন হেপবার্নসহ জনপ্রিয় বিভিন্ন গায়ক, অভিনেত্রী, মডেলদের দারুণ সব সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ভোগ সম্পাদক আনা উইন্টুর, স্যার লরেন্স অলিভিয়ার সহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন বারবারা।
বারবারা তাঁর কাজ ও অবস্থানকে ব্যবহার করতেন সমাজের কাজে, মানুষের উপকারের জন্য। তার পরিচালিত অনুষ্ঠানগুলোর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। এই অনুষ্ঠানগুলোতে কখনো বারবারা করেছেন মারাত্মক প্রশ্ন, কখনো বের করে এনেছেন সমাজের কিছু অপ্রিয় সত্য কথা। তিনি বেছে নিতেন বিতর্কিত বিষয়গুলো। যখন এইডস নিয়ে মানুষের মনে অসম্ভব ভয় আর আতঙ্ক বিরাজ করত সেই সময়ে বারবারা তার অনুষ্ঠানে এইডসে আক্রান্ত একটি শিশুকে নিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে টিভির পর্দায় দেখানো হয় বারবারা একটি এইডস আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে খেলছেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, আপনি কিংবা আমি কখনই এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চুমু খেলে কিংবা তাঁকে ছুলে রোগটিতে আক্রান্ত হব না। এমনকি, পার্কিনসন নিয়েও তিনি কথা বলেন তার অনুষ্ঠানে।
সেখানে তার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে যে উত্তরগুলো আসে সেখান থেকে মানুষ বুঝতে পারেন এই রোগে আক্রান্ত একজন মানুষ তার অসুস্থতার কাছে অসহায়। তাই তার আশপাশের মানুষের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।
বারবারা প্রথম মানুষ যিনি ট্রান্সজেন্ডারদের টেলিভিশনের পর্দায় এনেছেন তার দেশের মানুষদের সামনে। বারবারার দর্শকেরা তাঁকে বিশ্বাস করতেন আর এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই তিনি প্রতিনিয়ত ভেঙেছেন সবকিছু, আলোকিত করেছেন সমাজের অন্ধকার দিকগুলোকে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজে দীর্ঘদিন সংবাদ উপস্থাপক এবং প্রাইমটাইম শো ‘২০ / ২০’ উপস্থাপনা করেছিলেন বারবারা। ডলি রেবেকা পার্টন থেকে শুরু করে টেইলর সুইফটের প্রজন্ম পর্যন্ত তারকারা এসেছেন তার অনুষ্ঠানে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয়কারী ক্রিস্টোফার ডি‘অলিয়ের রিভ একটি দুর্ঘটনায় প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর এসেছিলেন বারবারার অনুষ্ঠানে। যেখানে তিনি তুলে ধরেছিলেন তার প্রতিবন্ধকতা ও জীবনের কথা।
নারীদের নিয়ে ১৯৯৭ সালে ‘দ্য ভিউ’ নামের একটি শো উপস্থাপনা করেন তিনি। সেখানে মনিকা লিউনস্কি, যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি, ক্যাথরিন হেপবার্ন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের মতো মানুষদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। দ্য ভিউ’ র উপস্থাপক হিসেবে বারবারা কাজ করেছেন ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত।
তিনি চলচ্চিত্র তারকা, রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্য ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত জীবন এবং আবেগময় অবস্থার তথ্য অত্যন্ত ভদ্রতার সঙ্গে তুলে আনতে দক্ষ ছিলেন। বারবারা ২০০০ সালে এনএটিএএস থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে ১২ বার এমি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।
বারবারা ওয়াল্টার্সের পুরো নাম বারবারা জিল ওয়াল্টার্স। ১৯২৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বোস্টনে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন বারবারা। তাই কারও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ভয় কিংবা সংশয় কখনোই কাজ করেনি তাঁর চোখমুখে। প্রায় এক বছর নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি ছোট বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করেছিলেন তিনি।
বারবারা ১৯৬১ সালে লেখক ও গবেষক হিসেবে এনবিসি এর দ্য টুডে শো-তে যোগ দেন। টুকটাক অ্যাসাইনমেন্ট এবং আবহাওয়ার সংবাদ পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপরে। এক বছরের মধ্যে, তিনি একজন রিপোর্টার হয়ে ওঠেন। তখন তিনি তাঁর নিজস্ব প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকার গ্রহণ, লেখা এবং সম্পাদনা শুরু করেন।
বারবারা তাঁর আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন যখন তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তখন এটি বিশ্বাস করা হতো যে 'কঠিন সংবাদ' রিপোর্ট করা একজন নারীকে কেউ গুরুত্ব সহকারে নেবে না। ১৯৭১ সালের শুরুতে, ওয়াল্টার্স তার নিজের স্থানীয় এনবিসি অ্যাফিলিয়েট শো, নট ফর উইমেন-এর হোস্ট করেন।
এরপর ১৯৭৪ সালে এনবিসির একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী সহ-উপস্থাপক হিসেবে নাম লেখান তিনি। ওয়াল্টারস এবিসি এর সঙ্গে একটি পাঁচ বছরের জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সেই সময়ে এই অঙ্কের বেতন কোনো পুরুষ বা নারী সংবাদ উপস্থাপক নিতেন না। বারবারা ওয়াল্টার্স ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ৯৩ বছর বয়সে মারা যান।
কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

-আমরা খুব সাধারণ শিশু আর ১০ জন যেমন হয়।
-তোমরা তোমাদের বাবা মাকে খুন করেছ আর নিজেদের সাধারণ শিশু বলে মনে করছ?
প্রশ্নগুলো করা হচ্ছিল বাবা মাকে খুনের দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত দুই ভাইকে। প্রশ্নকর্তার নাম বারবারা ওয়াল্টার্স। শেষ লাইনটি বলার সময় বারবারার মুখের অভিব্যক্তি ছিল দেখার মতো। এমন নৃশংসতা যারা করেছেন শুধু তারাই নন বারবারার মুখোমুখি হয়েছেন মডেল অভিনেত্রী থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক পর্যন্ত। বারবারার সাংবাদিকতার বয়স পঞ্চাশ বছর। এই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য একজন।
বারবারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তাঁর কথা বলার ধরণ। তিনি যখন প্রশ্ন করতেন তখন সেই প্রশ্ন যেন দর্শক তার নিজের বলে মনে করতে বাধ্য হবেন।
বারবারা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি সাক্ষাৎকার নিতে ভয় পাই না।’ তার এই কথার প্রমাণ মেলে যখন তিনি ট্রাম্প, পুতিন, বাশার আল আসাদের মতো মানুষদের এমনসব প্রশ্ন করেন যা সচরাচর কেউ করার সাহস পায় না। তবে প্রশ্নগুলো কখনই আক্রমণাত্মক ছিল না। ছিল খুবই সরল আর সাবলীল। ২০০১ সালে নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি চান কাউকে হত্যা করা হোক?’
পারমাণবিক অস্ত্র থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য প্রশ্ন তৈরি থাকত বারবারার সাক্ষাৎকারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের মতো রাজনীতিকেরাও সাক্ষাৎকার দিতে বসেছিলেন বারবারার সামনে।
জিমি কার্টার, রোজালিন কার্টারের যৌথ সাক্ষাৎকার, মিসরীয় রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিনের যৌথ সাক্ষাৎকার নেন বারবারা। বারবারা ইরানের শাহ, মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং তার স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ফারাহ পাহলভিসহ রাশিয়ার বরিস ইয়েলৎসিন, চীনের জিয়াং জেমিন, যুক্তরাজ্যের মার্গারেট থ্যাচার, ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, চেকোস্লোভাকিয়ার ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল, লিবিয়ার মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি, জর্ডানের রাজা হুসেন, সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজসহ আরও অনেকের সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
বারবারা পপ আইকন মাইকেল জ্যাকসন, গায়ক-অভিনেত্রী বারব্রা স্ট্রিস্যান্ড, ক্যাথরিন হেপবার্নসহ জনপ্রিয় বিভিন্ন গায়ক, অভিনেত্রী, মডেলদের দারুণ সব সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ভোগ সম্পাদক আনা উইন্টুর, স্যার লরেন্স অলিভিয়ার সহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন বারবারা।
বারবারা তাঁর কাজ ও অবস্থানকে ব্যবহার করতেন সমাজের কাজে, মানুষের উপকারের জন্য। তার পরিচালিত অনুষ্ঠানগুলোর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। এই অনুষ্ঠানগুলোতে কখনো বারবারা করেছেন মারাত্মক প্রশ্ন, কখনো বের করে এনেছেন সমাজের কিছু অপ্রিয় সত্য কথা। তিনি বেছে নিতেন বিতর্কিত বিষয়গুলো। যখন এইডস নিয়ে মানুষের মনে অসম্ভব ভয় আর আতঙ্ক বিরাজ করত সেই সময়ে বারবারা তার অনুষ্ঠানে এইডসে আক্রান্ত একটি শিশুকে নিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে টিভির পর্দায় দেখানো হয় বারবারা একটি এইডস আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে খেলছেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, আপনি কিংবা আমি কখনই এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চুমু খেলে কিংবা তাঁকে ছুলে রোগটিতে আক্রান্ত হব না। এমনকি, পার্কিনসন নিয়েও তিনি কথা বলেন তার অনুষ্ঠানে।
সেখানে তার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে যে উত্তরগুলো আসে সেখান থেকে মানুষ বুঝতে পারেন এই রোগে আক্রান্ত একজন মানুষ তার অসুস্থতার কাছে অসহায়। তাই তার আশপাশের মানুষের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।
বারবারা প্রথম মানুষ যিনি ট্রান্সজেন্ডারদের টেলিভিশনের পর্দায় এনেছেন তার দেশের মানুষদের সামনে। বারবারার দর্শকেরা তাঁকে বিশ্বাস করতেন আর এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই তিনি প্রতিনিয়ত ভেঙেছেন সবকিছু, আলোকিত করেছেন সমাজের অন্ধকার দিকগুলোকে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজে দীর্ঘদিন সংবাদ উপস্থাপক এবং প্রাইমটাইম শো ‘২০ / ২০’ উপস্থাপনা করেছিলেন বারবারা। ডলি রেবেকা পার্টন থেকে শুরু করে টেইলর সুইফটের প্রজন্ম পর্যন্ত তারকারা এসেছেন তার অনুষ্ঠানে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয়কারী ক্রিস্টোফার ডি‘অলিয়ের রিভ একটি দুর্ঘটনায় প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর এসেছিলেন বারবারার অনুষ্ঠানে। যেখানে তিনি তুলে ধরেছিলেন তার প্রতিবন্ধকতা ও জীবনের কথা।
নারীদের নিয়ে ১৯৯৭ সালে ‘দ্য ভিউ’ নামের একটি শো উপস্থাপনা করেন তিনি। সেখানে মনিকা লিউনস্কি, যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি, ক্যাথরিন হেপবার্ন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের মতো মানুষদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। দ্য ভিউ’ র উপস্থাপক হিসেবে বারবারা কাজ করেছেন ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত।
তিনি চলচ্চিত্র তারকা, রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্য ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত জীবন এবং আবেগময় অবস্থার তথ্য অত্যন্ত ভদ্রতার সঙ্গে তুলে আনতে দক্ষ ছিলেন। বারবারা ২০০০ সালে এনএটিএএস থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে ১২ বার এমি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।
বারবারা ওয়াল্টার্সের পুরো নাম বারবারা জিল ওয়াল্টার্স। ১৯২৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বোস্টনে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন বারবারা। তাই কারও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ভয় কিংবা সংশয় কখনোই কাজ করেনি তাঁর চোখমুখে। প্রায় এক বছর নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি ছোট বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করেছিলেন তিনি।
বারবারা ১৯৬১ সালে লেখক ও গবেষক হিসেবে এনবিসি এর দ্য টুডে শো-তে যোগ দেন। টুকটাক অ্যাসাইনমেন্ট এবং আবহাওয়ার সংবাদ পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপরে। এক বছরের মধ্যে, তিনি একজন রিপোর্টার হয়ে ওঠেন। তখন তিনি তাঁর নিজস্ব প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকার গ্রহণ, লেখা এবং সম্পাদনা শুরু করেন।
বারবারা তাঁর আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন যখন তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তখন এটি বিশ্বাস করা হতো যে 'কঠিন সংবাদ' রিপোর্ট করা একজন নারীকে কেউ গুরুত্ব সহকারে নেবে না। ১৯৭১ সালের শুরুতে, ওয়াল্টার্স তার নিজের স্থানীয় এনবিসি অ্যাফিলিয়েট শো, নট ফর উইমেন-এর হোস্ট করেন।
এরপর ১৯৭৪ সালে এনবিসির একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী সহ-উপস্থাপক হিসেবে নাম লেখান তিনি। ওয়াল্টারস এবিসি এর সঙ্গে একটি পাঁচ বছরের জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সেই সময়ে এই অঙ্কের বেতন কোনো পুরুষ বা নারী সংবাদ উপস্থাপক নিতেন না। বারবারা ওয়াল্টার্স ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ৯৩ বছর বয়সে মারা যান।

-আমরা খুব সাধারণ শিশু আর ১০ জন যেমন হয়।
-তোমরা তোমাদের বাবা মাকে খুন করেছ আর নিজেদের সাধারণ শিশু বলে মনে করছ?
প্রশ্নগুলো করা হচ্ছিল বাবা মাকে খুনের দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত দুই ভাইকে। প্রশ্নকর্তার নাম বারবারা ওয়াল্টার্স। শেষ লাইনটি বলার সময় বারবারার মুখের অভিব্যক্তি ছিল দেখার মতো। এমন নৃশংসতা যারা করেছেন শুধু তারাই নন বারবারার মুখোমুখি হয়েছেন মডেল অভিনেত্রী থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক পর্যন্ত। বারবারার সাংবাদিকতার বয়স পঞ্চাশ বছর। এই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য একজন।
বারবারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তাঁর কথা বলার ধরণ। তিনি যখন প্রশ্ন করতেন তখন সেই প্রশ্ন যেন দর্শক তার নিজের বলে মনে করতে বাধ্য হবেন।
বারবারা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি সাক্ষাৎকার নিতে ভয় পাই না।’ তার এই কথার প্রমাণ মেলে যখন তিনি ট্রাম্প, পুতিন, বাশার আল আসাদের মতো মানুষদের এমনসব প্রশ্ন করেন যা সচরাচর কেউ করার সাহস পায় না। তবে প্রশ্নগুলো কখনই আক্রমণাত্মক ছিল না। ছিল খুবই সরল আর সাবলীল। ২০০১ সালে নেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি চান কাউকে হত্যা করা হোক?’
পারমাণবিক অস্ত্র থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য প্রশ্ন তৈরি থাকত বারবারার সাক্ষাৎকারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের মতো রাজনীতিকেরাও সাক্ষাৎকার দিতে বসেছিলেন বারবারার সামনে।
জিমি কার্টার, রোজালিন কার্টারের যৌথ সাক্ষাৎকার, মিসরীয় রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিনের যৌথ সাক্ষাৎকার নেন বারবারা। বারবারা ইরানের শাহ, মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং তার স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ফারাহ পাহলভিসহ রাশিয়ার বরিস ইয়েলৎসিন, চীনের জিয়াং জেমিন, যুক্তরাজ্যের মার্গারেট থ্যাচার, ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, চেকোস্লোভাকিয়ার ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল, লিবিয়ার মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি, জর্ডানের রাজা হুসেন, সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজসহ আরও অনেকের সাক্ষাৎকার নেন তিনি।
বারবারা পপ আইকন মাইকেল জ্যাকসন, গায়ক-অভিনেত্রী বারব্রা স্ট্রিস্যান্ড, ক্যাথরিন হেপবার্নসহ জনপ্রিয় বিভিন্ন গায়ক, অভিনেত্রী, মডেলদের দারুণ সব সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ভোগ সম্পাদক আনা উইন্টুর, স্যার লরেন্স অলিভিয়ার সহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন বারবারা।
বারবারা তাঁর কাজ ও অবস্থানকে ব্যবহার করতেন সমাজের কাজে, মানুষের উপকারের জন্য। তার পরিচালিত অনুষ্ঠানগুলোর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। এই অনুষ্ঠানগুলোতে কখনো বারবারা করেছেন মারাত্মক প্রশ্ন, কখনো বের করে এনেছেন সমাজের কিছু অপ্রিয় সত্য কথা। তিনি বেছে নিতেন বিতর্কিত বিষয়গুলো। যখন এইডস নিয়ে মানুষের মনে অসম্ভব ভয় আর আতঙ্ক বিরাজ করত সেই সময়ে বারবারা তার অনুষ্ঠানে এইডসে আক্রান্ত একটি শিশুকে নিয়ে আসেন।
অনুষ্ঠানে টিভির পর্দায় দেখানো হয় বারবারা একটি এইডস আক্রান্ত শিশুর সঙ্গে খেলছেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, আপনি কিংবা আমি কখনই এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চুমু খেলে কিংবা তাঁকে ছুলে রোগটিতে আক্রান্ত হব না। এমনকি, পার্কিনসন নিয়েও তিনি কথা বলেন তার অনুষ্ঠানে।
সেখানে তার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে যে উত্তরগুলো আসে সেখান থেকে মানুষ বুঝতে পারেন এই রোগে আক্রান্ত একজন মানুষ তার অসুস্থতার কাছে অসহায়। তাই তার আশপাশের মানুষের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।
বারবারা প্রথম মানুষ যিনি ট্রান্সজেন্ডারদের টেলিভিশনের পর্দায় এনেছেন তার দেশের মানুষদের সামনে। বারবারার দর্শকেরা তাঁকে বিশ্বাস করতেন আর এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই তিনি প্রতিনিয়ত ভেঙেছেন সবকিছু, আলোকিত করেছেন সমাজের অন্ধকার দিকগুলোকে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজে দীর্ঘদিন সংবাদ উপস্থাপক এবং প্রাইমটাইম শো ‘২০ / ২০’ উপস্থাপনা করেছিলেন বারবারা। ডলি রেবেকা পার্টন থেকে শুরু করে টেইলর সুইফটের প্রজন্ম পর্যন্ত তারকারা এসেছেন তার অনুষ্ঠানে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয়কারী ক্রিস্টোফার ডি‘অলিয়ের রিভ একটি দুর্ঘটনায় প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর এসেছিলেন বারবারার অনুষ্ঠানে। যেখানে তিনি তুলে ধরেছিলেন তার প্রতিবন্ধকতা ও জীবনের কথা।
নারীদের নিয়ে ১৯৯৭ সালে ‘দ্য ভিউ’ নামের একটি শো উপস্থাপনা করেন তিনি। সেখানে মনিকা লিউনস্কি, যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি, ক্যাথরিন হেপবার্ন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের মতো মানুষদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। দ্য ভিউ’ র উপস্থাপক হিসেবে বারবারা কাজ করেছেন ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত।
তিনি চলচ্চিত্র তারকা, রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্য ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত জীবন এবং আবেগময় অবস্থার তথ্য অত্যন্ত ভদ্রতার সঙ্গে তুলে আনতে দক্ষ ছিলেন। বারবারা ২০০০ সালে এনএটিএএস থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে ১২ বার এমি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।
বারবারা ওয়াল্টার্সের পুরো নাম বারবারা জিল ওয়াল্টার্স। ১৯২৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বোস্টনে জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন বারবারা। তাই কারও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ভয় কিংবা সংশয় কখনোই কাজ করেনি তাঁর চোখমুখে। প্রায় এক বছর নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি ছোট বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করেছিলেন তিনি।
বারবারা ১৯৬১ সালে লেখক ও গবেষক হিসেবে এনবিসি এর দ্য টুডে শো-তে যোগ দেন। টুকটাক অ্যাসাইনমেন্ট এবং আবহাওয়ার সংবাদ পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপরে। এক বছরের মধ্যে, তিনি একজন রিপোর্টার হয়ে ওঠেন। তখন তিনি তাঁর নিজস্ব প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকার গ্রহণ, লেখা এবং সম্পাদনা শুরু করেন।
বারবারা তাঁর আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন যখন তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তখন এটি বিশ্বাস করা হতো যে 'কঠিন সংবাদ' রিপোর্ট করা একজন নারীকে কেউ গুরুত্ব সহকারে নেবে না। ১৯৭১ সালের শুরুতে, ওয়াল্টার্স তার নিজের স্থানীয় এনবিসি অ্যাফিলিয়েট শো, নট ফর উইমেন-এর হোস্ট করেন।
এরপর ১৯৭৪ সালে এনবিসির একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী সহ-উপস্থাপক হিসেবে নাম লেখান তিনি। ওয়াল্টারস এবিসি এর সঙ্গে একটি পাঁচ বছরের জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সেই সময়ে এই অঙ্কের বেতন কোনো পুরুষ বা নারী সংবাদ উপস্থাপক নিতেন না। বারবারা ওয়াল্টার্স ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ৯৩ বছর বয়সে মারা যান।

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে বেগম রোকেয়াকে নিয়ে ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য রাষ্ট্রীয় আইন এবং পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন বলে মনে করে সংগঠনগুলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজ সংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ-কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দেন। এর নিন্দা জানিয়ে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলা ও বাঙালি নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি। তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা এবং প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।’
আসক মনে করে, ‘এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়। যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন। বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে বাঙালির সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।’
নারী অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তাদের বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যারা ধর্মের অপব্যাখ্যার ওপর ভর করে নারীদের সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক তাদেরই একজন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৫০ বছর আগে নারী মুক্তির যে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, তাঁর আদর্শ এখনো প্রাসঙ্গিক হওয়ায় নারী প্রগতিবিরোধী একটি গোষ্ঠী তাঁকে ভয় পায়। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে যখন দেশের মেয়েরা সকল ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন শিক্ষক নামধারী একজন ব্যক্তির এই অপপ্রচার, তার শিক্ষকতার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।’
মহিলা পরিষদ মনে করে, ‘যখন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোকেয়া দিবস পালন করা হচ্ছে, রোকেয়া পদকের প্রবর্তন করা হয়েছে, তখন এ ধরনের অপপ্রচার রাষ্ট্রীয় নীতিবিরোধী কাজ। এ ধরনের অপচেষ্টা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করার একটি ষড়যন্ত্র এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপতৎপরতা। এই অপপ্রচার সুস্থ সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমাজের মধ্যে বসবাসকারী নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীর এ ধরনের সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার।’
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বেগম রোকেয়া কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না। বরং তিনি আজীবন অন্ধ কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ধর্মের ব্যবহার করে নারীকে অসম্মান-অপদস্থ করা, নারীর অধিকার খর্ব করা এবং নারীকে চার দেয়ালের অন্ধকারে আবদ্ধ করে রাখার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন।’
নারীপক্ষের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কাউকে অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় শব্দ-বাক্য ব্যবহার করা অন্যায় এবং সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়। রোকেয়াসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো মানুষের প্রতিই এমন বক্তব্য ও আচরণের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানায় নারীপক্ষ।’

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে বেগম রোকেয়াকে নিয়ে ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য রাষ্ট্রীয় আইন এবং পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন বলে মনে করে সংগঠনগুলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজ সংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ-কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দেন। এর নিন্দা জানিয়ে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলা ও বাঙালি নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি। তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা এবং প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।’
আসক মনে করে, ‘এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়। যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন। বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে বাঙালির সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।’
নারী অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তাদের বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যারা ধর্মের অপব্যাখ্যার ওপর ভর করে নারীদের সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক তাদেরই একজন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৫০ বছর আগে নারী মুক্তির যে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, তাঁর আদর্শ এখনো প্রাসঙ্গিক হওয়ায় নারী প্রগতিবিরোধী একটি গোষ্ঠী তাঁকে ভয় পায়। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে যখন দেশের মেয়েরা সকল ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন শিক্ষক নামধারী একজন ব্যক্তির এই অপপ্রচার, তার শিক্ষকতার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।’
মহিলা পরিষদ মনে করে, ‘যখন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোকেয়া দিবস পালন করা হচ্ছে, রোকেয়া পদকের প্রবর্তন করা হয়েছে, তখন এ ধরনের অপপ্রচার রাষ্ট্রীয় নীতিবিরোধী কাজ। এ ধরনের অপচেষ্টা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করার একটি ষড়যন্ত্র এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপতৎপরতা। এই অপপ্রচার সুস্থ সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমাজের মধ্যে বসবাসকারী নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীর এ ধরনের সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার।’
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বেগম রোকেয়া কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না। বরং তিনি আজীবন অন্ধ কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ধর্মের ব্যবহার করে নারীকে অসম্মান-অপদস্থ করা, নারীর অধিকার খর্ব করা এবং নারীকে চার দেয়ালের অন্ধকারে আবদ্ধ করে রাখার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন।’
নারীপক্ষের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কাউকে অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় শব্দ-বাক্য ব্যবহার করা অন্যায় এবং সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়। রোকেয়াসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো মানুষের প্রতিই এমন বক্তব্য ও আচরণের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানায় নারীপক্ষ।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রে
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি। বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, এমন সহিংসতার কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এইডস এবং অন্যান্য ক্রনিক রোগের সংক্রমণের হারও বেশি।
এই গবেষণার জন্য ২০২৩ সালের ‘গ্লোবাল বার্ডেন ডিজিজের’ (জিবিডি) তথ্য নেওয়া হয়েছে। গবেষণায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনসহ ৬০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। ল্যানসেটের ওই গবেষণায় বলা হচ্ছে, জীবনসঙ্গীর ওপর চালানো নির্যাতন ও শিশুদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন সহিংসতা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম একটি উপায়। এটি সমাজে এবং ভুক্তভোগীদের ওপর দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলছে। এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব ভয়ংকর।
তবে এটি জানার পরও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিকারে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এই নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এমন সহিসংতার কারণে ভুক্তভোগীরা যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি ও প্রতিবন্ধিতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এর চিত্র উঠে এসেছে গবেষণায়। নারীরা যে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছেন এর অন্যতম আটটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত রোগ। সহিংসতার শিকার নারীরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে তাদের অনেকে প্রতিবন্ধিতা বরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া শিশুরা যারা এমন যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে, তারা মানসিক এবং এইডস, ডায়াবেটিসসহ ক্রনিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে জীবনসঙ্গীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বিশ্বজুড়ে ২০২৩ সালে মারা গেছে ১ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে অনেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অনেকে আত্মহত্যা করেছে। আবার নির্যাতনের কারণে এইডসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কেউ কেউ। ল্যানসেট বলছে, ২০২৩ সালে ৩০ হাজার নারীকে হত্যা করেছেন তাঁর সঙ্গী। ২০২৩ সালে যৌন সহিংসতার কারণে মারা গেছে ২ লাখ ৯০ হাজার শিশু। এর একটি বড় অংশ আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া এইডস, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অনেকে। এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণও ছিল যৌন সহিংসতা।
দক্ষিণ এশিয়ায় এখন যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, যারা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের অনেকের মধ্যে আত্মঘাতী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অনেকে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর নারীরা যাঁরা কিনা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুশ্চিন্তাজনিত রোগ বেড়েছে।
ল্যানসেটের এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সহকারী অধ্যাপক লুইসা সোরিও ফ্লোর। তিনি বলেন, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে দীর্ঘ সময় ধরে যেভাবে সমাজ দেখে আসছে, নতুন এই গবেষণা সেটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এমন ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা কী, সেটাও সামনে এনেছে।

বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি। বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, এমন সহিংসতার কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এইডস এবং অন্যান্য ক্রনিক রোগের সংক্রমণের হারও বেশি।
এই গবেষণার জন্য ২০২৩ সালের ‘গ্লোবাল বার্ডেন ডিজিজের’ (জিবিডি) তথ্য নেওয়া হয়েছে। গবেষণায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনসহ ৬০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। ল্যানসেটের ওই গবেষণায় বলা হচ্ছে, জীবনসঙ্গীর ওপর চালানো নির্যাতন ও শিশুদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন সহিংসতা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম একটি উপায়। এটি সমাজে এবং ভুক্তভোগীদের ওপর দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলছে। এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব ভয়ংকর।
তবে এটি জানার পরও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিকারে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এই নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এমন সহিসংতার কারণে ভুক্তভোগীরা যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি ও প্রতিবন্ধিতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এর চিত্র উঠে এসেছে গবেষণায়। নারীরা যে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছেন এর অন্যতম আটটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত রোগ। সহিংসতার শিকার নারীরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে তাদের অনেকে প্রতিবন্ধিতা বরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া শিশুরা যারা এমন যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে, তারা মানসিক এবং এইডস, ডায়াবেটিসসহ ক্রনিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে জীবনসঙ্গীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বিশ্বজুড়ে ২০২৩ সালে মারা গেছে ১ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে অনেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অনেকে আত্মহত্যা করেছে। আবার নির্যাতনের কারণে এইডসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কেউ কেউ। ল্যানসেট বলছে, ২০২৩ সালে ৩০ হাজার নারীকে হত্যা করেছেন তাঁর সঙ্গী। ২০২৩ সালে যৌন সহিংসতার কারণে মারা গেছে ২ লাখ ৯০ হাজার শিশু। এর একটি বড় অংশ আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া এইডস, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অনেকে। এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণও ছিল যৌন সহিংসতা।
দক্ষিণ এশিয়ায় এখন যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, যারা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের অনেকের মধ্যে আত্মঘাতী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অনেকে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর নারীরা যাঁরা কিনা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুশ্চিন্তাজনিত রোগ বেড়েছে।
ল্যানসেটের এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সহকারী অধ্যাপক লুইসা সোরিও ফ্লোর। তিনি বলেন, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে দীর্ঘ সময় ধরে যেভাবে সমাজ দেখে আসছে, নতুন এই গবেষণা সেটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এমন ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা কী, সেটাও সামনে এনেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রে
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেমুহাম্মদ শফিকুর রহমান

মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছিলেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
মা, বাবা, ভাই, ভাবি এবং তাঁদের সন্তানদের নিয়ে মাহমুদার পরিবার। সেখানে আর কেউ ছবি তোলে না; তাই ফটোগ্রাফি নিয়ে তাঁর যে জগৎ, সেটি পুরোপুরি নিজের হাতে গড়া। একাকী এই পথচলাই যেন তাঁকে আরও বিশেষ মনোযোগী করে তুলেছে, আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
শুরুটা খুব সাধারণ, তারপরও বিশেষ
‘সুন্দর মুহূর্ত ধরে রাখতে ভালো লাগে’—এমনই এক সাধারণ অনুভূতি থেকে মাহমুদা ছবি তুলতে শুরু করেন। সময়কে কেউ থামাতে পারে না। কিন্তু ছবি সেই সময়ের ছাপকে ধরে রাখতে পারে। এই টান থেকে তাঁর ফটোগ্রাফির যাত্রা।
প্রথম ক্যামেরা? ক্যামেরা বলা যাবে না। কারণ, এখন পর্যন্ত তিনি মোবাইল ফোন দিয়েই ছবি তোলেন। এই মোবাইল যেন তাঁর হাতে এক জাদুর বাক্স।

স্বীকৃতির প্রথম ধাপ
মোবাইল ফোন দিয়ে তোলা তাঁর ছবি প্রথমবার জায়গা করে নেয় ‘তরুণেরাই পরিবর্তনের প্রভাবক’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল প্রদর্শনী। সেখান থেকে তিনি পেয়েছেন একটি সার্টিফিকেট। এটি তাঁর কাছে শুধু একটি কাগজ নয়, নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার সাহস।
অনলাইন প্রতিযোগিতায় তাঁর সাফল্য রয়েছে। ‘প্রাণোচ্ছ্বাস আত্মসেবা নয়, মানবসেবা’-এর ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ফটোগ্রাফি কনটেস্টে তিনি দ্বিতীয় হয়েছেন।

যেসব ছবি ছুঁয়ে যায়
প্রিয় ছবির কথা উঠলে তিনি স্মরণ করেন এই নভেম্বরের এক ভোরের স্মৃতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশাঘেরা পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখেছিলেন, একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে কুয়াশা, ভোরের ঠান্ডা, নিস্তব্ধতা আর দুই বন্ধুর পথচলার মিষ্টি স্মৃতি। তিনি মোবাইল ফোনে মুহূর্তটাকে বন্দী করেছিলেন।
ভয়ের দিক
যে কাজ মানুষকে আনন্দ দেয়, সেটির পেছনেও ভয় থাকে। মাহমুদার ভয় খুব সাধারণ, কিন্তু বাস্তব। তা হলো, সব সময় অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা যায় না। কেউ যদি বিরক্ত হয়! কেউ রাগ করলে? এসব মাঝে মাঝে তাঁকে থামিয়ে দেয়।

নারী ফটোগ্রাফার হওয়ার বাড়তি চ্যালেঞ্জ
বাইরের মানুষ বাজে কথা না বললেও অনেক জায়গায় শুনতে হয়, মেয়ে হয়ে ছবি তুলছেন? বিষয়টি সবাই ভালো চোখে দেখে না। তার ওপর বিশেষ চ্যালেঞ্জ হলো, বাড়ির লোকজন এখনো জানেই না, তিনি ছবি তোলেন! তাই নিজের ভালোবাসার কাজটুকু তাঁকে চুপিচুপি, নিজের মতো করে করতে হয়।
পাখির ছবি, প্রকৃতির ছবি
মাহমুদার ভালো লাগে ল্যান্ডস্কেপ, স্ট্রিট ফটোগ্রাফি ও পোর্ট্রেট। বারান্দায় এসে ডেকে ওঠা শালিক পাখিগুলো তাঁর ছবি তোলার নিয়মিত বিষয়। খেলা করতে করতে শালিকদের যে স্বচ্ছন্দ ভঙ্গি, সেগুলো তিনি ক্যামেরায় ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

অভাববোধ করেন একজন গাইডের
মাহমুদার বড় আফসোস, কেউ নেই যিনি বলে দেবেন, কোন ছবি ভালো, কোনটা নয়, কোথায় ভুল, কীভাবে আরও ভালো হওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে পথনির্দেশনা পেলে তিনি বিশ্বাস করেন, গল্প আরও গভীরভাবে বলতে পারবেন।
স্বপ্ন এখনো চলমান
একদিন চাকরি হবে, ব্যস্ততা তখন নিশ্চয় বাড়বে। কিন্তু ছবি তোলার নেশা কখনো হারিয়ে যাবে না। সুযোগ পেলে নিজের একটি ক্যামেরা কিনবেন; তখন আরও দক্ষভাবে, আরও গল্পময় ছবি তুলবেন। নতুন নতুন গল্পের সন্ধানে পথচলা অব্যাহত থাকবে— মাহমুদার স্বপ্ন আপাতত এতটুকুই।

মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছিলেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
মা, বাবা, ভাই, ভাবি এবং তাঁদের সন্তানদের নিয়ে মাহমুদার পরিবার। সেখানে আর কেউ ছবি তোলে না; তাই ফটোগ্রাফি নিয়ে তাঁর যে জগৎ, সেটি পুরোপুরি নিজের হাতে গড়া। একাকী এই পথচলাই যেন তাঁকে আরও বিশেষ মনোযোগী করে তুলেছে, আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
শুরুটা খুব সাধারণ, তারপরও বিশেষ
‘সুন্দর মুহূর্ত ধরে রাখতে ভালো লাগে’—এমনই এক সাধারণ অনুভূতি থেকে মাহমুদা ছবি তুলতে শুরু করেন। সময়কে কেউ থামাতে পারে না। কিন্তু ছবি সেই সময়ের ছাপকে ধরে রাখতে পারে। এই টান থেকে তাঁর ফটোগ্রাফির যাত্রা।
প্রথম ক্যামেরা? ক্যামেরা বলা যাবে না। কারণ, এখন পর্যন্ত তিনি মোবাইল ফোন দিয়েই ছবি তোলেন। এই মোবাইল যেন তাঁর হাতে এক জাদুর বাক্স।

স্বীকৃতির প্রথম ধাপ
মোবাইল ফোন দিয়ে তোলা তাঁর ছবি প্রথমবার জায়গা করে নেয় ‘তরুণেরাই পরিবর্তনের প্রভাবক’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল প্রদর্শনী। সেখান থেকে তিনি পেয়েছেন একটি সার্টিফিকেট। এটি তাঁর কাছে শুধু একটি কাগজ নয়, নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার সাহস।
অনলাইন প্রতিযোগিতায় তাঁর সাফল্য রয়েছে। ‘প্রাণোচ্ছ্বাস আত্মসেবা নয়, মানবসেবা’-এর ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ফটোগ্রাফি কনটেস্টে তিনি দ্বিতীয় হয়েছেন।

যেসব ছবি ছুঁয়ে যায়
প্রিয় ছবির কথা উঠলে তিনি স্মরণ করেন এই নভেম্বরের এক ভোরের স্মৃতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশাঘেরা পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখেছিলেন, একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে কুয়াশা, ভোরের ঠান্ডা, নিস্তব্ধতা আর দুই বন্ধুর পথচলার মিষ্টি স্মৃতি। তিনি মোবাইল ফোনে মুহূর্তটাকে বন্দী করেছিলেন।
ভয়ের দিক
যে কাজ মানুষকে আনন্দ দেয়, সেটির পেছনেও ভয় থাকে। মাহমুদার ভয় খুব সাধারণ, কিন্তু বাস্তব। তা হলো, সব সময় অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা যায় না। কেউ যদি বিরক্ত হয়! কেউ রাগ করলে? এসব মাঝে মাঝে তাঁকে থামিয়ে দেয়।

নারী ফটোগ্রাফার হওয়ার বাড়তি চ্যালেঞ্জ
বাইরের মানুষ বাজে কথা না বললেও অনেক জায়গায় শুনতে হয়, মেয়ে হয়ে ছবি তুলছেন? বিষয়টি সবাই ভালো চোখে দেখে না। তার ওপর বিশেষ চ্যালেঞ্জ হলো, বাড়ির লোকজন এখনো জানেই না, তিনি ছবি তোলেন! তাই নিজের ভালোবাসার কাজটুকু তাঁকে চুপিচুপি, নিজের মতো করে করতে হয়।
পাখির ছবি, প্রকৃতির ছবি
মাহমুদার ভালো লাগে ল্যান্ডস্কেপ, স্ট্রিট ফটোগ্রাফি ও পোর্ট্রেট। বারান্দায় এসে ডেকে ওঠা শালিক পাখিগুলো তাঁর ছবি তোলার নিয়মিত বিষয়। খেলা করতে করতে শালিকদের যে স্বচ্ছন্দ ভঙ্গি, সেগুলো তিনি ক্যামেরায় ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

অভাববোধ করেন একজন গাইডের
মাহমুদার বড় আফসোস, কেউ নেই যিনি বলে দেবেন, কোন ছবি ভালো, কোনটা নয়, কোথায় ভুল, কীভাবে আরও ভালো হওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে পথনির্দেশনা পেলে তিনি বিশ্বাস করেন, গল্প আরও গভীরভাবে বলতে পারবেন।
স্বপ্ন এখনো চলমান
একদিন চাকরি হবে, ব্যস্ততা তখন নিশ্চয় বাড়বে। কিন্তু ছবি তোলার নেশা কখনো হারিয়ে যাবে না। সুযোগ পেলে নিজের একটি ক্যামেরা কিনবেন; তখন আরও দক্ষভাবে, আরও গল্পময় ছবি তুলবেন। নতুন নতুন গল্পের সন্ধানে পথচলা অব্যাহত থাকবে— মাহমুদার স্বপ্ন আপাতত এতটুকুই।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রে
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন

প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
নুসরাত জিনিয়া, মুন্সিগঞ্জ
উত্তর: দীর্ঘ ১৪ বছরের মানসিক-শারীরিক নির্যাতন, অর্থনৈতিক চাপ এবং ইঙ্গিতে যৌতুক দাবি করা—এ সবই আইনের চোখে অপরাধ।
যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী
এ ক্ষেত্রে যা করতে পারেন, তা হলো:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার সুযোগ যদি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন থাকে—
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এ শাস্তির বিধান আছে।
যৌতুক মামলা করতে চাইলে কী হয়
যৌতুক মামলায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করবে এবং প্রমাণ পেলে মামলাটি আদালতে যাবে।
সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য সুবিধা
ভরণপোষণ ও সন্তানের হেফাজতের অধিকার
আপনি পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণ মামলা এবং সন্তানের হেফাজত মামলা করতে পারবেন। ৮ বছর বয়সী সন্তানের হেফাজত সাধারণত মায়ের পক্ষেই যায়, যদিও পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচারক সিদ্ধান্ত নেন।
মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয়, নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে কি না? তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
নিরাপদ আশ্রয় বা জরুরি সহায়তা যদি আপনি বিপদের মুখে থাকেন—
তবে মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয় নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে কি না?
তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
পরিস্থিতি অনুযায়ী মামলা করা আপনার প্রতি চলমান নির্যাতন এবং যৌতুকের চাপ থেকে মুক্তির উপায় হতে পারে। তবে এ ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।

প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
নুসরাত জিনিয়া, মুন্সিগঞ্জ
উত্তর: দীর্ঘ ১৪ বছরের মানসিক-শারীরিক নির্যাতন, অর্থনৈতিক চাপ এবং ইঙ্গিতে যৌতুক দাবি করা—এ সবই আইনের চোখে অপরাধ।
যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী
এ ক্ষেত্রে যা করতে পারেন, তা হলো:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার সুযোগ যদি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন থাকে—
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এ শাস্তির বিধান আছে।
যৌতুক মামলা করতে চাইলে কী হয়
যৌতুক মামলায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করবে এবং প্রমাণ পেলে মামলাটি আদালতে যাবে।
সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য সুবিধা
ভরণপোষণ ও সন্তানের হেফাজতের অধিকার
আপনি পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণ মামলা এবং সন্তানের হেফাজত মামলা করতে পারবেন। ৮ বছর বয়সী সন্তানের হেফাজত সাধারণত মায়ের পক্ষেই যায়, যদিও পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচারক সিদ্ধান্ত নেন।
মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয়, নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে কি না? তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
নিরাপদ আশ্রয় বা জরুরি সহায়তা যদি আপনি বিপদের মুখে থাকেন—
তবে মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয় নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে কি না?
তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
পরিস্থিতি অনুযায়ী মামলা করা আপনার প্রতি চলমান নির্যাতন এবং যৌতুকের চাপ থেকে মুক্তির উপায় হতে পারে। তবে এ ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে বারবারার প্রশ্ন ছিল, ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ পপস্টার থেকে শুরু করে স্বৈরশাসক, রাজপরিবারের সদস্য পর্যন্ত বারবারার প্রশ্নের ছুরির নিচে এসেছেন অনেকেই। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিক্সন, ফিদেল কাস্ত্রো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রে
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে