শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা
আইএসের অসংখ্য চেকপয়েন্ট ফাঁকি দিয়ে বন্দশিবির থেকে পালাচ্ছেন ২১ বছরের এক তরুণী। রাত গভীর। পথে পথে আইএসের অস্ত্রধারী সেনা। সেসবের চোখ ফাঁকি দিয়ে অপরিচিত এক বাড়ির দরজায় ভয়ে ভয়ে কড়া নাড়লেন। দরজার ওপাশে কে দাঁড়িয়ে কিংবা দরজা খুলে গেলে কী হবে, নির্যাতন আর অনিশ্চয়তায় সঁপে দেওয়া জীবনের ভার টেনে নিয়ে যাওয়া তরুণীটির তা ভাবার অবসর ছিল না।
তবে সেই রাতে খুলে যাওয়া দরজাটা বদলে দিয়েছিল তাঁর জীবন। আইএসের হাতে বন্দী যৌনদাসীর বীভৎস জীবন থেকে বেঁচে তো গিয়েছিলেনই, পরে পরিচিত হয়ে ওঠেন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে। তারও কিছু পরে, ২০১৮ সালে পান নোবেল পুরস্কার। তিনি নাদিয়া মুরাদ, আইএসের বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে আসা এক ইয়াজিদি তরুণী।
আইএসের হাত থেকে পালিয়ে আসার ঘটনা সেটাই প্রথম নয়। তবে নাদিয়ার আগে বা পরে যাঁরা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই দু-এক দিনের মধ্যে আবার ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি অনন্য হয়ে উঠেছিলেন পালিয়ে এসে চুপ করে না থেকে আইএসের বর্বরতার বিরুদ্ধে কথা বলে।
২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ইরাকের সিনজার শহরে আক্রমণ চালায় জঙ্গি সংগঠন আইএস। সেখানকার হাজার হাজার ইয়াজিদিকে কাফের ঘোষণা করে তারা। ইয়াজিদি পুরুষদের হত্যা করে এবং নারী ও শিশুদের বন্দী করে নিয়ে যায়। ২১ বছর বয়সী নাদিয়া মুরাদ ছিলেন সেই বন্দীদের একজন। তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যা করে তাঁকে দাসী হিসেবে বিক্রি করা হয় একাধিকবার। প্রতিবারই তাঁর ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। তাতে দমে যাননি তিনি। বারবার খুঁজেছেন পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা। প্রথমবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে শাস্তি হিসেবে কপালে জুটেছিল গণধর্ষণ। তারপরও সাহস হারাননি নাদিয়া।
কিছুদিন পর আবারও চেষ্টা করলেন পালানোর। এবার সফল হলেন নাদিয়া। পালিয়ে ঢুকে পড়েন মসুল শহরে। সেই শহরের অধিকাংশ মানুষ সুন্নি হওয়ায় আইএসের বর্বরতা অপেক্ষাকৃত কম ছিল। কিন্তু তবু শহরের প্রতি বাঁকে বাঁকে ছিল তাদের চেকপোস্ট। এ কারণেই বন্দিশিবির থেকে পালাতে পারলেও মসুলও নাদিয়ার জন্য নিরাপদ ছিল না। তাই উপায় না দেখে অপরিচিত এক বাড়ির দরজায় কড়া নেড়েছিলেন তিনি। বাড়িটি ছিল ওমর আবদুল জব্বারের।
নেহাত কপালগুণে সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন নাদিয়া। তখন পালিয়ে যাওয়া যৌনদাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল আইএস। আর যাঁরা তাঁদের আশ্রয় দিতেন, তাঁদের জন্যও বরাদ্দ ছিল কঠোর শাস্তি। নাদিয়াকে আশ্রয় দেওয়া ওমরের পরিবারের জন্যও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েও নাদিয়াকে আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি। পরে তাঁর সাহায্যেই ইরাক ত্যাগ করেছিলেন নাদিয়া। ওমর তাঁর জন্য একটি নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে নাদিয়ার নাম দেওয়া হয় সুজান। ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয় ১৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী শহর কিরকুকের নাম। নাদিয়ার পরিচয় হয় ওমরের স্ত্রী। সারা রাত জেগে নতুন নাম, পরিচয় এবং সাজানো গল্প বারবার মুখস্থ করেছিলেন নাদিয়া।
মসুল ছাড়ার উদ্দেশ্যে সে যাত্রায় প্রথম চেকপয়েন্টেই জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল নাদিয়া আর ওমরকে। ওমর নিজেদের নকল পরিচয় যখন আইএস সৈনিকদের কাছে দিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, তখন নিকাব পরে নিশ্বাস আটকে গাড়িতে বসে ছিলেন নাদিয়া। কারণ, বাইরের সাইনবোর্ডে ওয়ান্টেড লেখা তিন নারীর ছবির মধ্যে একটি ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোনো ঝামেলা ছাড়াই তাঁরা দুজন আইএসের এলাকা থেকে বেরিয়ে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছান। পরদিন সকালে নাদিয়াকে আশ্রয় দেয় কুর্দি কর্তৃপক্ষ। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আইএসের বিরুদ্ধে ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন।
২০১৫ সালে জার্মানির একটি সংগঠনের উদ্যোগে আইএসের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া এক হাজার ইয়াজিদি নারীর সঙ্গে জার্মানি যাওয়ার সুযোগ পান নাদিয়া। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তিনি নারীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হন। ২০১৮ সালে যৌন নির্যাতনকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান নাদিয়া।
আইএসের অসংখ্য চেকপয়েন্ট ফাঁকি দিয়ে বন্দশিবির থেকে পালাচ্ছেন ২১ বছরের এক তরুণী। রাত গভীর। পথে পথে আইএসের অস্ত্রধারী সেনা। সেসবের চোখ ফাঁকি দিয়ে অপরিচিত এক বাড়ির দরজায় ভয়ে ভয়ে কড়া নাড়লেন। দরজার ওপাশে কে দাঁড়িয়ে কিংবা দরজা খুলে গেলে কী হবে, নির্যাতন আর অনিশ্চয়তায় সঁপে দেওয়া জীবনের ভার টেনে নিয়ে যাওয়া তরুণীটির তা ভাবার অবসর ছিল না।
তবে সেই রাতে খুলে যাওয়া দরজাটা বদলে দিয়েছিল তাঁর জীবন। আইএসের হাতে বন্দী যৌনদাসীর বীভৎস জীবন থেকে বেঁচে তো গিয়েছিলেনই, পরে পরিচিত হয়ে ওঠেন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে। তারও কিছু পরে, ২০১৮ সালে পান নোবেল পুরস্কার। তিনি নাদিয়া মুরাদ, আইএসের বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে আসা এক ইয়াজিদি তরুণী।
আইএসের হাত থেকে পালিয়ে আসার ঘটনা সেটাই প্রথম নয়। তবে নাদিয়ার আগে বা পরে যাঁরা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই দু-এক দিনের মধ্যে আবার ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি অনন্য হয়ে উঠেছিলেন পালিয়ে এসে চুপ করে না থেকে আইএসের বর্বরতার বিরুদ্ধে কথা বলে।
২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ইরাকের সিনজার শহরে আক্রমণ চালায় জঙ্গি সংগঠন আইএস। সেখানকার হাজার হাজার ইয়াজিদিকে কাফের ঘোষণা করে তারা। ইয়াজিদি পুরুষদের হত্যা করে এবং নারী ও শিশুদের বন্দী করে নিয়ে যায়। ২১ বছর বয়সী নাদিয়া মুরাদ ছিলেন সেই বন্দীদের একজন। তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যা করে তাঁকে দাসী হিসেবে বিক্রি করা হয় একাধিকবার। প্রতিবারই তাঁর ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। তাতে দমে যাননি তিনি। বারবার খুঁজেছেন পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা। প্রথমবার পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে শাস্তি হিসেবে কপালে জুটেছিল গণধর্ষণ। তারপরও সাহস হারাননি নাদিয়া।
কিছুদিন পর আবারও চেষ্টা করলেন পালানোর। এবার সফল হলেন নাদিয়া। পালিয়ে ঢুকে পড়েন মসুল শহরে। সেই শহরের অধিকাংশ মানুষ সুন্নি হওয়ায় আইএসের বর্বরতা অপেক্ষাকৃত কম ছিল। কিন্তু তবু শহরের প্রতি বাঁকে বাঁকে ছিল তাদের চেকপোস্ট। এ কারণেই বন্দিশিবির থেকে পালাতে পারলেও মসুলও নাদিয়ার জন্য নিরাপদ ছিল না। তাই উপায় না দেখে অপরিচিত এক বাড়ির দরজায় কড়া নেড়েছিলেন তিনি। বাড়িটি ছিল ওমর আবদুল জব্বারের।
নেহাত কপালগুণে সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন নাদিয়া। তখন পালিয়ে যাওয়া যৌনদাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল আইএস। আর যাঁরা তাঁদের আশ্রয় দিতেন, তাঁদের জন্যও বরাদ্দ ছিল কঠোর শাস্তি। নাদিয়াকে আশ্রয় দেওয়া ওমরের পরিবারের জন্যও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েও নাদিয়াকে আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি। পরে তাঁর সাহায্যেই ইরাক ত্যাগ করেছিলেন নাদিয়া। ওমর তাঁর জন্য একটি নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে নাদিয়ার নাম দেওয়া হয় সুজান। ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয় ১৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী শহর কিরকুকের নাম। নাদিয়ার পরিচয় হয় ওমরের স্ত্রী। সারা রাত জেগে নতুন নাম, পরিচয় এবং সাজানো গল্প বারবার মুখস্থ করেছিলেন নাদিয়া।
মসুল ছাড়ার উদ্দেশ্যে সে যাত্রায় প্রথম চেকপয়েন্টেই জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল নাদিয়া আর ওমরকে। ওমর নিজেদের নকল পরিচয় যখন আইএস সৈনিকদের কাছে দিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, তখন নিকাব পরে নিশ্বাস আটকে গাড়িতে বসে ছিলেন নাদিয়া। কারণ, বাইরের সাইনবোর্ডে ওয়ান্টেড লেখা তিন নারীর ছবির মধ্যে একটি ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোনো ঝামেলা ছাড়াই তাঁরা দুজন আইএসের এলাকা থেকে বেরিয়ে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছান। পরদিন সকালে নাদিয়াকে আশ্রয় দেয় কুর্দি কর্তৃপক্ষ। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আইএসের বিরুদ্ধে ইয়াজিদি জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন।
২০১৫ সালে জার্মানির একটি সংগঠনের উদ্যোগে আইএসের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া এক হাজার ইয়াজিদি নারীর সঙ্গে জার্মানি যাওয়ার সুযোগ পান নাদিয়া। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তিনি নারীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হন। ২০১৮ সালে যৌন নির্যাতনকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান নাদিয়া।
আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না সেই সময় কেমন ছিল...একজন নারীর জন্য একা একটি হোটেলের লবিতে প্রবেশ করাই ছিল দুঃসাহসিক কাজ। আমি কখনো আমার স্বামী বা বাবাকে ছাড়া কোথাও যাইনি। লবিটা যেন এক মাইল চওড়া মনে হচ্ছিল। প্রতিটি পদক্ষেপে মনে হচ্ছিল আমি অজ্ঞান হয়ে যাব, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বরং আমি ৮০০ ডলারের একটি
৫ ঘণ্টা আগেযেকোনো সম্পর্কের একটি মৌলিক দিক হলো—পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মান। তবে প্রাপ্য সম্মান (শুধু মৌখিক প্রশংসা নয়) পাওয়ার ক্ষেত্রে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন নারীরা। এটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে শুরু করে পেশাগত পরিবেশেও হতে পারে।
১১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে কিশোরী মেয়েদের অগ্রগতির গতি ধীর বলে মত দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত ইউনিসেফ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও ইউএন উইমেনের এক প্রতিবেদনে। ‘গার্লস গোলস: হোয়াট হ্যাজ চেঞ্জড ফর গার্লস? অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস রাইটস ওভার ৩০ ইয়ার্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে কিশোরী মেয়েদের ক্ষমতায়নে
১ দিন আগেপাঁচজন নারী কেবিন ক্রু সদস্যসহ ক্যাপ্টেন আনিতা ও ফার্স্ট অফিসার তাসনুভার নির্দেশনায় ঢাকা-ব্যাংকক-ঢাকা বিশেষ ফ্লাইট বিজি-৩৮৮ পরিচালিত হচ্ছে। নারীদের সমন্বয়ে বিশেষ ফ্লাইটটি আজ সকাল ১১টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে।
১ দিন আগে