Ajker Patrika

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন

বৈষম্যমূলক সব আইন বদলে আসবে সুপারিশ

  • নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠাই লক্ষ্য।
  • প্রচলিত আইনগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
  • সম্ভাব্য বাধার বিষয়টিও প্রতিবেদনে থাকবে।
অর্চি হক, ঢাকা 
Thumbnail image
প্রতীকী ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে পারিবারিক আইনসহ নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন পরিবর্তনের সুপারিশ করা হবে। কমিশনের একাধিক সদস্য এ কথা জানিয়ে বলেছেন, বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে যাতে নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়, সেটাই তাঁদের লক্ষ্য। প্রধান উপদেষ্টার কাছে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা এ কমিশনের।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করা। সুতরাং দেশে নারীর প্রতি যত বৈষম্যমূলক আইন রয়েছে, সেগুলো সংস্কারের সুপারিশ করব আমরা। এ জন্য প্রচলিত কোন কোন আইনে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক ধারা রয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।’

সংস্কার কমিশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্য বলেন, পারিবারিক আইনে নারীকে সম-অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সে কারণে এই আইন পরিবর্তনের সুপারিশ করা হবে। সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারীর সমান অধিকার দেওয়া এবং সাক্ষ্য আইনসহ বৈষম্যমূলক অন্যান্য আইনেও পরিবর্তনের সুপারিশ করবে কমিশন।

নারী অধিকার সংগঠনগুলো বহু বছর ধরে পারিবারিক আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের সিডও অর্থাৎ নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হওয়ায় এই আইন পরিবর্তনের বিষয়টি বারবার আলোচনায় এসেছে। তবে ধর্মীয় ও সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘকে জানিয়ে আসছে, দেশের সমাজ এই আইন পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত নয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘সম্পত্তির উত্তরাধিকারে সমান অধিকার না থাকা নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইন নারীর প্রতি সহিংসতারও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অবিলম্বে অভিন্ন ও সর্বজনীন পারিবারিক আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করে নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতন বন্ধ করার পথ সুগম করতে হবে। নারীর আর্থিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি অন্যান্য দিকে ক্ষমতায়নের ওপর দৃষ্টিপাত করতে হবে।’

সংস্কার কমিশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য জানান, আইন পরিবর্তনের পাশাপাশি তা কার্যকর করায় সম্ভাব্য বাধার বিষয়টিও তাঁদের প্রতিবেদনে উঠে আসবে। এই প্রতিবেদন তৈরির জন্য নারী অধিকারকর্মী, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, আইনজ্ঞসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ সভা করা হচ্ছে।

গত ১৭ অক্টোবর শিরীন পারভিন হককে প্রধান করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের কথা জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। এর এক মাস পর কমিশন গঠন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।

কমিশনের প্রধান ছাড়া অন্য সদস্যরা হলেন ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (অবৈতনিক) নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আখতার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা। তবে কমিশনে নাম থাকলেও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন এর কার্যক্রমে যোগ দেননি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন’ সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করবে। কমিশন গঠনের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করার কথা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত