কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
রাজধানীর মহাখালী থেকে গুলশানের দিকে যেতে রাস্তার যে বাঁক, সে মোড়েই বাদামি রঙের একটা পুরোনো দালান। তার গায়ে কালো অক্ষরে লেখা ‘বন ভবন’। দালান বর্ধিত করার কাজ চলছে। এই বিরাট ভবনের লিফটে উঠে চলে যাই পাঁচতলায়। বাংলাদেশের একমাত্র নারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তারের অফিসে।
কিছুক্ষণ বসতে হলো। সপ্তাহের শুরু বলে কর্মকর্তাদের ব্যস্ত থাকারই কথা। খানিক পরেই ডাক পড়ল তাঁর কক্ষে। এরপর ঝাড়া এক ঘণ্টা তিনি বলে গেলেন আর আমি শুনে গেলাম বন আর তাঁর রহস্যময় জগতের কথা।
শারমীন আক্তার মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন ২০১৬ সাল থেকে। বর্তমানে গাজীপুরের ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক পরিচালনা এবং ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক সম্পর্কিত ৮টি মৌজার দেখভাল করার দায়িত্বে আছেন তিনি। ঢাকাসহ ১৭টি জেলায় শৌখিন পর্যায়ে হরিণ ও পোষা পাখি লালন-পালনের লাইসেন্স প্রদান, বন্য প্রাণী সম্পর্কিত অভিযোগ, বন্য প্রাণী উদ্ধার, অবমুক্তকরণ ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হয় তাঁর ডিভিশন থেকে। তাঁর অধীনে দুজন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন, যাঁদের একজন বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং অন্যজন বন্য প্রাণী পরিদর্শক। এ ছাড়া বন অধিদপ্তরে উপ-বন সংরক্ষক পদে আছেন তিনজন নারী। এদের একজন মনিটরিং ইউনিটে, একজন উন্নয়ন পরিকল্পনা ইউনিটে এবং একজন ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিচালনার কাজ করছেন। এ ছাড়া সহকারী বন সংরক্ষক, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা, রেঞ্জ কর্মকর্তা, বন্য প্রাণী পরিদর্শক এমনকি বনরক্ষী পদেও কাজ করছেন নারীরা।
বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বন ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত কষ্টকর কাজ বলে মনে করেন শারমীন। বনকর্মীদের বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। গার্মেন্টসকর্মী, নদীভাঙনের শিকার মানুষের বসবাস—সব মিলিয়ে বেশ জটিল বন এলাকা গাজীপুর। সে এলাকায় কাজ করছেন শারমীন। কাজটা চ্যালেঞ্জের বলে বিভাগের সবাই কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে কাজ করছেন।
শারমীন আক্তার ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে বন বিভাগে যোগদান করেন। সহকারী বন সংরক্ষক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা বন বিভাগে। এর আগে তিনি উপ-প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন বন বিভাগের সুফল প্রকল্পে। সেখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে শারমীন জানান, বন অধিদপ্তরের টেকসই বন ও জীবিকা তথা সুফল প্রকল্পে নারীদের সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে মাঠপর্যায়ে বনসংলগ্ন ৬০০ গ্রামে সুবিধাভোগী আছেন ৪০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে নারী সুবিধাভোগী রয়েছেন ১৮ হাজার ৯৮৪ জন। এই সুবিধাভোগীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্ন কমিটি তৈরি করা হয়েছে, যাকে বলা হয় ভিলেজ কনজারভেশন ফোরাম। একেকটি ফোরামে পাঁচটি করে কমিটি আছে, যাদের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ও লাইভলি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপ আছে, যে কমিটিতে ৫০ শতাংশ নারী রাখা বাধ্যতামূলক। সুফল প্রকল্পের তৈরি করা প্রায় ৭৮ হাজার হেক্টরের বাগান পাহারায় কাজ করছেন এই নারীরা।
এই কাজের ক্ষেত্রে নারীদের আগ্রহ কেমন? শারমীন আক্তার বললেন, ‘কৃষিকাজ কিংবা বনায়ন নারীদের হাতে ভালো হয়। বিভিন্ন বৃক্ষরোপণ মেলায় আমাদের সুবিধাভোগী নারীরা আর্থিক অনুদান পেলে তাঁদের বাগানটাকে ভালো রাখেন। তাঁরা বাগানের যত্ন করেন এবং তাঁদের আগ্রহ আছে। তাঁরা সংগঠিত হতে পছন্দ করছেন।’
টাঙ্গাইলে জন্ম নেওয়া শারমীন আক্তার বাবার কাজের সূত্রে সপরিবারে থাকতেন খুলনায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। নৌবাহিনীতে কর্মরত বাবার সঙ্গে খুলনায় থাকতে হবে বলে ভর্তি হন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি বিভাগে। এরপর বিসিএস দিয়ে যুক্ত হন বন বিভাগের সঙ্গে।
বন বিভাগে চাকরি করতে হলে নারীদের কিছু বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে বলে মনে করেন শারমীন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানান, এখানে ৯টা-৫টার চাকরি কিংবা ডেস্ক জব করা কোনোভাবে সম্ভব নয়। আগামীকাল কোন সমস্যা সামনে আসবে, সেটা কেউ জানে না। অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা ও বিচক্ষণতা থাকা জরুরি বলে মনে করেন শারমীন আক্তার।
রাজধানীর মহাখালী থেকে গুলশানের দিকে যেতে রাস্তার যে বাঁক, সে মোড়েই বাদামি রঙের একটা পুরোনো দালান। তার গায়ে কালো অক্ষরে লেখা ‘বন ভবন’। দালান বর্ধিত করার কাজ চলছে। এই বিরাট ভবনের লিফটে উঠে চলে যাই পাঁচতলায়। বাংলাদেশের একমাত্র নারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তারের অফিসে।
কিছুক্ষণ বসতে হলো। সপ্তাহের শুরু বলে কর্মকর্তাদের ব্যস্ত থাকারই কথা। খানিক পরেই ডাক পড়ল তাঁর কক্ষে। এরপর ঝাড়া এক ঘণ্টা তিনি বলে গেলেন আর আমি শুনে গেলাম বন আর তাঁর রহস্যময় জগতের কথা।
শারমীন আক্তার মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন ২০১৬ সাল থেকে। বর্তমানে গাজীপুরের ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক পরিচালনা এবং ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক সম্পর্কিত ৮টি মৌজার দেখভাল করার দায়িত্বে আছেন তিনি। ঢাকাসহ ১৭টি জেলায় শৌখিন পর্যায়ে হরিণ ও পোষা পাখি লালন-পালনের লাইসেন্স প্রদান, বন্য প্রাণী সম্পর্কিত অভিযোগ, বন্য প্রাণী উদ্ধার, অবমুক্তকরণ ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হয় তাঁর ডিভিশন থেকে। তাঁর অধীনে দুজন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন, যাঁদের একজন বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং অন্যজন বন্য প্রাণী পরিদর্শক। এ ছাড়া বন অধিদপ্তরে উপ-বন সংরক্ষক পদে আছেন তিনজন নারী। এদের একজন মনিটরিং ইউনিটে, একজন উন্নয়ন পরিকল্পনা ইউনিটে এবং একজন ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিচালনার কাজ করছেন। এ ছাড়া সহকারী বন সংরক্ষক, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা, রেঞ্জ কর্মকর্তা, বন্য প্রাণী পরিদর্শক এমনকি বনরক্ষী পদেও কাজ করছেন নারীরা।
বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বন ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত কষ্টকর কাজ বলে মনে করেন শারমীন। বনকর্মীদের বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। গার্মেন্টসকর্মী, নদীভাঙনের শিকার মানুষের বসবাস—সব মিলিয়ে বেশ জটিল বন এলাকা গাজীপুর। সে এলাকায় কাজ করছেন শারমীন। কাজটা চ্যালেঞ্জের বলে বিভাগের সবাই কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে কাজ করছেন।
শারমীন আক্তার ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে বন বিভাগে যোগদান করেন। সহকারী বন সংরক্ষক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা বন বিভাগে। এর আগে তিনি উপ-প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন বন বিভাগের সুফল প্রকল্পে। সেখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে শারমীন জানান, বন অধিদপ্তরের টেকসই বন ও জীবিকা তথা সুফল প্রকল্পে নারীদের সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে মাঠপর্যায়ে বনসংলগ্ন ৬০০ গ্রামে সুবিধাভোগী আছেন ৪০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে নারী সুবিধাভোগী রয়েছেন ১৮ হাজার ৯৮৪ জন। এই সুবিধাভোগীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্ন কমিটি তৈরি করা হয়েছে, যাকে বলা হয় ভিলেজ কনজারভেশন ফোরাম। একেকটি ফোরামে পাঁচটি করে কমিটি আছে, যাদের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ও লাইভলি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপ আছে, যে কমিটিতে ৫০ শতাংশ নারী রাখা বাধ্যতামূলক। সুফল প্রকল্পের তৈরি করা প্রায় ৭৮ হাজার হেক্টরের বাগান পাহারায় কাজ করছেন এই নারীরা।
এই কাজের ক্ষেত্রে নারীদের আগ্রহ কেমন? শারমীন আক্তার বললেন, ‘কৃষিকাজ কিংবা বনায়ন নারীদের হাতে ভালো হয়। বিভিন্ন বৃক্ষরোপণ মেলায় আমাদের সুবিধাভোগী নারীরা আর্থিক অনুদান পেলে তাঁদের বাগানটাকে ভালো রাখেন। তাঁরা বাগানের যত্ন করেন এবং তাঁদের আগ্রহ আছে। তাঁরা সংগঠিত হতে পছন্দ করছেন।’
টাঙ্গাইলে জন্ম নেওয়া শারমীন আক্তার বাবার কাজের সূত্রে সপরিবারে থাকতেন খুলনায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। নৌবাহিনীতে কর্মরত বাবার সঙ্গে খুলনায় থাকতে হবে বলে ভর্তি হন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি বিভাগে। এরপর বিসিএস দিয়ে যুক্ত হন বন বিভাগের সঙ্গে।
বন বিভাগে চাকরি করতে হলে নারীদের কিছু বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে বলে মনে করেন শারমীন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানান, এখানে ৯টা-৫টার চাকরি কিংবা ডেস্ক জব করা কোনোভাবে সম্ভব নয়। আগামীকাল কোন সমস্যা সামনে আসবে, সেটা কেউ জানে না। অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা ও বিচক্ষণতা থাকা জরুরি বলে মনে করেন শারমীন আক্তার।
দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে গত বছর। বছরটি নারীর জন্য ছিল অম্ল-মধুর। যে বিষয়টি বলার তা হলো, বিভিন্ন পদক্ষেপ, আইন, শাস্তি—কোনো কিছুই নারীর প্রতি সহিংসতা আর নির্যাতন বন্ধ করতে পারছে না।
৪ দিন আগেজামেলা খাতুনের বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে। অনেক আগেই কর্মশক্তি হারিয়েছেন তিনি। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। কোটরাগত দুচোখ তাঁর সর্বস্ব হারানোর বিশদ উপাখ্যান। স্বামী সমেজ মিয়াকে হারিয়েছেন এক যুগ আগে। যমুনার ভাঙনে হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। মানসিক ভারসাম্যহীন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। স্বামী মারা যাওয়ার..
৪ দিন আগেআমার বয়স ১৮ বছর, স্বামীর ৪৫। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছিল দেড় বছর আগে। আমার ননদ বিয়ের সূত্রে অন্য জেলায় থাকে এবং পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলায়। নানা রকম মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছি গত দেড় বছরে। আমার ভরণপোষণও ঠিকমতো দেয়নি তারা। বাড়ির একটি রুম নিয়ে পারলার দিয়েছিলাম...
৪ দিন আগেএকজন বন্দী কারাগারে থেকে কিসের বিনিময়ে ভালো সেবা পেতে পারেন? অনেকের মনে ঘুরতে পারে এর অনেক উত্তর। কিন্তু যদি শোনেন, এই ‘বিনিময়’ সেই বন্দীর পরিবারকে দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার প্রস্তাব! অনেকে হোঁচট খাবেন। তেমনই এক ঘটনার কথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস করেছেন
৪ দিন আগে