স্বামীর শারীরিক নির্যাতন প্রতিরোধে নারীর আইনি সহায়তাগুলো কী

ইফফাত গিয়াস আরেফিন
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৫৪
Thumbnail image

উত্তর: শারীরিক নির্যাতন বলতে নারীর শরীরে আঘাত করা, শারীরিকভাবে কষ্ট দেওয়া এবং আহত করার ঘটনা বোঝায়। এটি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। শারীরিক নির্যাতনের ফলে নারীরা গুরুতর শারীরিক আঘাত পেতে পারে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

যে আইনগুলো আছে
» বাংলাদেশে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নির্যাতনের ক্ষেত্রে সাধারণত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর (সংশোধিত ২০০৩) ধারা ১১(ক), (খ), (গ) এবং যৌতুক নিরোধ আইন, ১৯৮০-এর ধারা ৩ অনুযায়ী মামলা করা হয়।

  • নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর (সংশোধিত ২০০৩) ধারা ১১-এ নির্যাতন বলতে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন বোঝায়। এই আইনে কারাদণ্ড, অর্থদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান আছে।

তুক নিরোধ আইন, ১৯৮০-এর ধারা ৩ অনুযায়ী, যৌতুক দাবি, নেওয়া বা দেওয়া অপরাধ। স্বামী বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্ত্রী বা তাঁর পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি বা এর জন্য নির্যাতন করলে এই ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায়। এই আইনে নির্ধারিত শাস্তি মূলত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হিসেবে প্রযোজ্য।

  • ঘরোয়া সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ পরিবারের মধ্যে যেকোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ এবং নির্যাতিত ব্যক্তিকে সুরক্ষা দেয়।
  • নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর আওতায় ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। যৌন হয়রানির অপরাধে ৫ থেকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের শাস্তি রয়েছে। নারী বা শিশুকে অপমান বা অমর্যাদাকর আচরণ করলে দুই থেকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান আছে। শারীরিক নির্যাতনের জন্য শাস্তি ৩ থেকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
  • দ্য প্রোটেকশন অব উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট, ২০১০ অনুসারে অভিযুক্ত নির্যাতনকারীর সাজা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। প্রোটেকশন অর্ডার লঙ্ঘন করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান আছে।
  • যৌতুক নিরোধ আইন, ১৯৮০-এ যৌতুক চাওয়ার অপরাধে সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান আছে। যৌতুক দেওয়া বা নেওয়ার অপরাধে সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধানও আছে।

থানায় অভিযোগ যেভাবে
যদি কোনো স্ত্রী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতে চান, তাহলে প্রথমে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করতে পারেন। এ সময় নির্যাতনের সব প্রমাণ; যেমন মেডিকেল রিপোর্ট, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি ইত্যাদি জমা দিতে হবে। থানায় অভিযোগ না নিলে বা সুষ্ঠু তদন্ত না হলে সরাসরি আদালতে মামলা করা যেতে পারে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন আইনি সহায়তা সংস্থা; যেমন আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ইত্যাদি থেকেও আইনি পরামর্শ ও সহায়তা নেওয়া যায়। 

পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত