দেনমোহর ও ভরণপোষণের জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারেন

ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৫৪
Thumbnail image

প্রশ্ন: আমার বোনের বিয়ের বয়স তিন বছর। দুলাভাই তাঁর ভরণপোষণ করেছেন মাত্র ছয় মাস। এর মধ্যে আমার বোন জরায়ুর টিউমারের কারণে অসুস্থ হয়ে যান। অসুস্থতার কথা শুনে তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন এবং চিকিৎসা না করিয়ে ডিভোর্স দিতে চাইছেন। দেড় বছর ধরে বাবা তাঁর চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার খরচ বহন করা বাবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এত দিনের ভরণপোষণের টাকা, চিকিৎসার খরচ, এমনকি দেনমোহরের টাকাও দিতে চাইছেন না দুলাভাই। এ ক্ষেত্রে আপুর পক্ষ থেকে কী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
মিলি আক্তার, ঝিনাইদহ

উত্তর: স্বামী যদি স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে না চান, তাহলে স্ত্রী যেদিন থেকে ভরণপোষণের টাকা দাবি করবেন, সেদিন থেকে তিন বছরের  মধ্যে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারবেন। কাজেই স্বামীর বিরুদ্ধে নিজের ভরণপোষণের জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন আপনার বোন। আর সেটা সম্ভব স্বামীকে তালাক না দিয়েও।

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুসারে, স্ত্রী ভরণপোষণ, দেনমোহর, বিবাহবিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব ইত্যাদি বিষয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারেন। সেটা তাঁর অধিকার। এ ছাড়া ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৯ ধারা অনুসারে, একজন নারী ভরণপোষণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে পারেন। চেয়ারম্যান বিধিমতো ভরণপোষণের পরিমাণ নির্ধারণ করে সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। স্বামী এরপরও নির্ধারিত ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী বকেয়া ভূমি রাজস্বের আকারে তা আদায় করতে পারবেন। 

আগে পরিশোধ করা না হলে আপনার বোন দেনমোহরের পুরো টাকা পাবেন। তালাক যে পক্ষই দিক না কেন, স্বামীকে দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে। কাজেই তালাকের নোটিশ যদি আপনার বোন বা তাঁর স্বামী দিয়ে থাকেন বা দেবেন বলে মনস্থির করেন, সে ক্ষেত্রে তালাকের নোটিশের সঙ্গে তিনি দেনমোহরের টাকা পরিশোধের জন্য একটি নোটিশ পাঠাতে পারেন। তাতেও কাজ না হলে আপনার বোন পারিবারিক আদালতে দেনমোহর এবং বিয়ের পর থেকে তালাকের নোটিশ দেওয়ার পরের তিন মাসের ভরণপোষণের জন্য আবেদন করতে পারেন। আর যদি কোনো পক্ষই তালাকের নোটিশ দিতে না চায়, তাহলেও আপনার বোন দেনমোহরের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ভরণপোষণের জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারেন। তবে মামলায় গেলে রায় পেতে দেরি হবে এবং মামলার খরচও বহন করতে হবে। তাই মামলায় না গিয়ে মীমাংসা করে নিলে দুই পক্ষের জন্যই ভালো হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন,অ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত