Ajker Patrika

ফিলিস্তিনি কবি গাসসান জাকতানের কবিতাশৈলী

ইজাজুল হক, ঢাকা
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯: ৫৯
ফিলিস্তিনি কবি গাসসান জাকতানের কবিতাশৈলী

ফিলিস্তিনি কবি গাসসান জাকতানের বেড়ে ওঠা এবং তাঁর কবি হয়ে ওঠার পথটি নিয়ে গেল পর্বেই আলাপ হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন থেকে এই কবিকে আলাদা করা যায় না। আবির্ভাব দিয়েই বুঝিয়েছিলেন নিজের উচ্চতা। 

কবিতাশৈলীতে গাসসান জাকতান পঞ্চাশের দশক থেকে আরবি কবিতার নেতৃত্ব দিয়ে আসা কবি প্রজন্মকে ছাড়িয়ে গেছেন এরই মধ্যে। যেসব আরবি কবির কবিতা আধুনিক চিন্তা ও প্রযুক্তির মৌলিক চিহ্নবাহী, তাঁদের মধ্যে সেরা কবি গাসসান জাকতান। তাঁর কবিতা উজ্জ্বল চকচকে মনোরম দৃশ্যে সজ্জিত, যা কবিতার শরীরকে জীবন্ত করে তোলে। তাতে ফুটে ওঠে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব ঘটনাপ্রবাহ; মানুষের যাপিত জীবনের সবকিছুই। ফলে তাঁর কবিতা সাধারণভাবে সমকালীন আরবদের জীবনের ওপর আলো ফেললেও বিশেষভাবে ফিলিস্তিনি মানুষের জীবনপ্রবাহের প্রতিনিধিত্ব করে। 

শাস্ত্রীয় দৃষ্টিকোণে, ভাষা ও উপস্থাপনের অকৃত্রিমতাই গাসসান জাকতানের কবিতার সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তাঁর কবিতা যথাসম্ভব অলংকার ও রূপক থেকে মুক্ত। মুক্ত ছন্দে লেখা পঙ্ক্তিগুলো উচ্চাঙ্গ ভাব ও অতি দুঃখবোধের ঊর্ধ্বে। বেশি আবেগমথিত ও অনুভূতিকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো হুজুগেও নেই তাঁর কবিতার মর্ম। তাঁর কবিতা মানেই স্রেফ বুদ্ধিবৃত্তিক আধুনিকতম পদ্য। রূপক থেকে বেরিয়ে এসে, শব্দসংখ্যা কমিয়ে, চারপাশের ছোট ছোট উপাদানগুলো মহান করে তোলাই তাঁর কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য। 

গাসসান তাঁর কবিতা রচনার ক্ষেত্রে মাহমুদ দারবিশ দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবিত। তবে তাঁর প্রভাব খুব একটা সাদাসিধে, সরল বা গল্প বলার ঢঙে সীমাবদ্ধ নয়; বরং তার চেয়ে আরও গভীর ও জটিল। মাহমুদ দারবিশ ও আদোনিসের মতো খ্যাতিমান পূর্বসূরিদের সুষম নান্দনিকতাকেও ছাড়িয়ে যান গাসসান। দৈনন্দিন জীবনের সূক্ষ্ম আখ্যান দিয়ে নতুন একটি ধারা তৈরি করেছেন তিনি, যা আজকের তরুণ আরব কবিদের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ ছাড়া তাঁর কবিতায় সমকালীন কবিদের ছাপও রয়েছে। কবি আমজাদ নাসের, কবি নুরি আল-জাররাহ্, কবি আব্বাস ইয়াবদুন, কবি বাসসাম হাজজার, কবি ইনায়া জাবির প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। 

দুই. 
গ্রিফিন পোয়েট্রি প্রাইজের অন্যতম বিচারক চাইনিজ-আমেরিকান কবি ওয়াং পিং (১৯৫৭-বর্তমান) গাসসানের কবিতায় দারুণ মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তাঁর দাবি, গাসসানের দুর্বার কাব্যপ্রতিভা তাঁকেও ব্যাপকভাবে সংক্রমিত করে। গাসসানের কবিতার মূল্যায়ন করে তিনি বলেন, ‘কবিতার কাজ কী? কিছুই না; আবার কবিতাই সবকিছু। এই মাটি, বাতাস, জল, পাখি, মাছ, বৃক্ষ, প্রেম, হৃদয় থেকে শুরু করে সবকিছুই কবিতা। কবিতা নিয়ত আমাদের সঙ্গে বসবাস করে; আমাদের ভেতরে-বাইরে সর্বত্র বিরাজ করে। এত কিছুর পরেও আমরা প্রায়ই কবিতার মতো মূল্যবান উপহারের কথা ভুলে যাই। তাই কবিতাকে উপহারের মতো করে পরিবেশন করাই কবিদের কাজ। কবির শব্দই আমাদের ফের মানুষ করে তোলে। গাসসান সে কাজই করেছেন। তাঁর কবিতা ফুলের বাগানে, হৃদয়ে কিংবা অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের গভীরে সমাহিত আমাদের ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়ে তোলে। যুদ্ধ, হতাশা ও বৈশ্বিক বিবর্তনের মধ্যেও আমরা কেন বাঁচি এবং কীভাবে—গাসসানের আবৃত্তি আমাদের তা স্মরণ করিয়ে দেয়। তাঁর কথা অন্ধকারকে আলোয়, ঘৃণাকে ভালোবাসায় এবং মৃত্যুকে জীবনে পরিণত করে। তাঁর কবিতার জাদু আমাদের একটি আশাজাগানিয়া পরিষ্কার দৃষ্টিভঙ্গির পথ দেখায়।...এটিই জাকতানের একমাত্র ‘পেশা’ এবং এখন থেকে তা আমাদেরও পেশা।’ 

মার্কিন কবি ও সাহিত্য সমালোচক লরেন্স জোসেফ (১৯৪৮-বর্তমান) গাসসানকে ফিলিস্তিনের জীবন্ত কবিদের মধ্যে শুধু সেরাই মনে করেন না, বরং বিশ্বসাহিত্যেরও অনিবার্য কবিসত্তাও মনে করেন। তিনি বলেন, ‘জাকতান ফিলিস্তিনের জীবন্ত কবিদের মধ্যেই কেবল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কবি নন, বরং তিনি একালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কবিদের একজন। উত্তরাধুনিক কবিতার ধারায় আবেগ-অনুভূতি, প্রাত্যহিক জটিলতা ও জীবনের গভীরতাকে তিনি তুলনারহিত সর্বজনীন ভাষায় মূর্ত করে তোলেন।’ 

ইউক্রেন বংশোদ্ভূত মার্কিন কবি ও সমালোচক ইলিয়া কামিনস্কি (১৯৭৭-বর্তমান) গাসসানকে যুগোস্লাভিয়ার মহান কবি ভাস্কো পোপার (১৯২২-১৯৯১) সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফাদি জাওদাহর অসাধারণ অনুবাদে গাসসান জাকতানকে পড়ে যুগোস্লাভিয়ার মহান কবি ভাস্কো পোপার কথা মনে পড়ে গেল। তিনিও সহিংসতা দেখেছিলেন এবং জাতির স্বপ্নের সময়টি কবিতায় তুলে এনেছিলেন। পোপার মতো জাকতানও তাঁর শেকড়ের পরিচয় দিতে ভয় পান না। যখন “ক্যাভাফির জাগিয়ে তোলা গুপ্ত নির্মাতারা/পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল”, তখন তারা কবিরই বালিশ দিয়ে তা খোঁড়া শুরু করে—এমন দৃশ্য দেখতেও কবি ভয় পান না। তাঁর এমন সাহসিকতা ও কাব্যিক দক্ষতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’ 

উল্লেখ্য, ‘ক্যাভাফির জাগিয়ে তোলা গুপ্ত নির্মাতারা...’ বলে ইলিয়া কামিনস্কি এখানে গাসসানের একটি কবিতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ক্যাভাফি ছিলেন গ্রিক কবি, সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তা। পুরো নাম কনস্টান্টাইন পিটার ক্যাভাফি (১৮৬৩-১৯৩৩)। ইহুদি দখলদারি ও অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রমকে কবিতায় তিনি ক্যাভাফির উসকিয়ে দেওয়া নির্মাণ কার্যক্রমের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ‘ক্যাভাফির নির্মাতারা’ শিরোনামের কবিতাটির অনুবাদ—

আমার কণ্ঠে এক সুর আছে
কখনো তার স্পর্শ পাইনি আমি—
তবে তা-ই আমার একমাত্র সোনার টুকরো
এবং তা-ই আমার অবলম্বন

তাতে আছে উপস্থিত রচনার সম্ভাবনা
আছে ক্রিয়াপদের কোমলতা
এবং আছে বর্ণনার দৃঢ়তা

যেন ক্যাভাফির জাগিয়ে তোলা গুপ্ত নির্মাতারা
পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল
এবং তা খোঁড়া শুরু করে দেয় আমারই বালিশ দিয়ে! 

(খড়ের পাখির মতো তা আমার পিছু নেয়, ২০০৮

তিন. 
ইলিয়া কামিনস্কির কথার সূত্র ধরে গাসসানের সাহসী কণ্ঠের আরেকটি দৃষ্টান্ত এখানে তুলে ধরছি। মোটেও আত্মপরিচয়ের সংকটে ভোগেন না তিনি। ইস্পাতসম দৃঢ়তার সঙ্গেই তাঁর ফিলিস্তিনি হওয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন কবিতায়। কানাডার গ্রিফিন পোয়েট্রি প্রাইজের সম্মাননা অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কবি গাসসান তাঁর ভরাট কণ্ঠে এমন বার্তা দিয়ে আবৃত্তি করা কবিতাটির অনুবাদ পাঠকদের পাতে তুলে দিচ্ছি। তার আগে কবিতার সারাংশটি বলে যাই—

ফিলিস্তিনি কবি গাসসান জাকতানপশ্চিম তীরের অধিকৃত পার্বত্য এলাকা ‘জাবালে নাজমা’র এক বিশেষ আবহে কবিতাটি লেখা হয়। প্রাকৃতিক দৃশ্যকল্পের পাশাপাশি ফিলিস্তিন অঞ্চলের পূর্বপুরুষদের অনুসন্ধান করেন তিনি। আজকের দখলদারদের বীভৎস চেহারাও বুড়ো সাইপ্রাস বৃক্ষের ওপর প্রেতাত্মার রূপে দেখতে পান কবি। শেষের দিকে তিনি দৃপ্তকণ্ঠে নিজের পরিচয় তুলে ধরেন। বাবা খলিল জাকতান, উমাইয়া যুগের বিখ্যাত ফিলিস্তিনি কবি মালিক আর-রাইব এবং বিশ শতকের বিখ্যাত কবি ও সমালোচক হুসাইন জামিল বারগৌসির পরম্পরায় নিজের পরিচয়হীন হওয়ার অভিযোগ বেশ আত্মপ্রত্যয়ের সুরে উড়িয়ে দেন। 

চলুন এবার কবিতাটি পড়া যাক—

একা নও তুমি বিজন বনে

জাবালে নাজমায়, বনের ধারে, জাদুকর পথ আগলে দাঁড়াবে আমার
কালো মাস্তুলের নৌকা চলে যে পথে
খড়ের মুখোশ আর শোকের বসনে মৃতেরা যেখানে বসে থাকে ভোরের আগ থেকে, 
যে পথ পাড়ি দেয় পাখি
যেখানে সাঁতরে বেড়ায় সাদা কুয়াশা আর ঝোপেরা খুলে রাখে দরজা সকল
যেখানে ঢাল থেকে ভেসে আসে কারও কণ্ঠ 
এবং শোনা যায় ঘণ্টাধ্বনি, ডানা ঝাপটানোর শব্দ

রাতের খাঁজ কেটে এ বন যেন উড়ে চলেছে সব পর্বত বেয়ে! 

...কৃষক, জেলে, শিকারি ও বিস্মিত সৈন্য, 
মোয়াবি, আসিরি, কুর্দি, মামলুক, 
মিসর থেকে আসা কথিত হিব্রু, 
সোনার রথে চড়া মিসরি, 
সাদা দ্বীপের জাতিগোষ্ঠী, কালো পাগড়িপরা পারসিয়ান, 
বেত-ভাঁজ-করা মূর্তিপূজক দার্শনিক
এবং অসুখের শেকড় খুঁজে-ফেরা সুফির দল…

ডানার ঝাপটানি বনকে টেনে নেয় অন্ধকারের ধারে! 

জাবালে নাজমায়, বনের ধারে
যেখানে অনুপস্থিতের নামাজ বিছিয়ে দেয় শুদ্ধতার জায়নামাজ
এবং দেখা যায় গিরিখাতটির শেষ প্রান্ত, 
অতি সন্তর্পণে পাশ দিয়ে বয়ে যায় সমুদ্রের ঘ্রাণ
ফাটলগুলি যেন জিনের ফসল
এবং আলো ছড়ায় সন্ন্যাসীদের প্রার্থনা—
তখন আমি জীর্ণ সাইপ্রাসের ওপর ঘুমিয়ে থাকা কুষ্ঠরোগীদের ভূত দেখি

জাবালে নাজমায়, বনের ধারে
পুরোনো এক চেনা কণ্ঠস্বর শুনতে পাব, 
আমার দিকে পাশা ছুড়ে দেওয়া আমার বাবার কণ্ঠস্বর 

কিংবা মালিকের—
এপিটাফে তিনি হাঁকাচ্ছেন স্বর্ণকেশী ঘোড়া

অথবা হুসাইন আল-বারগৌসির কণ্ঠস্বর—
বাদামগাছের নিচে ঘুমিয়ে আছেন যিনি 
তাঁর লিখে যাওয়া অসিয়ত মোতাবেক

এবং আমার কণ্ঠস্বর—
একা নও তুমি বিজন বনে। 

(খড়ের পাখির মতো তা আমার পিছু নেয়, ২০০৮

পরের পর্ব পড়ুন আগামীকাল: গাসসানের কবিতার বিষয়বস্তু

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সম্পাদকীয়
সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।

অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।

তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।

কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।

সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।

পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমাদের অর্জন অনেক

সম্পাদকীয়
আমাদের অর্জন অনেক

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।

এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।

... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।

সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত