রিক্তা রিচি

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্রের স্টাম্পের আঘাতে আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা গেছেন। স্তব্ধ লাগছিল। গত ২৫ জুন একজন শিক্ষক তাঁরই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রের দ্বারা অপমানিত, লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হয়েছেন এবং সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। বিষয়টা কতটা ভয়ংকর! যে স্কুলে তিনি গত ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, যিনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নিয়ম মানার জন্য বলতেন, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা হলে যে শিক্ষক উত্ত্যক্তকারীদের শাসন করতেন, সেই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তাঁকে স্কুলের মাঠে প্রকাশ্যে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একজন শিক্ষকের নৈতিকতার পুরস্কার কি লাঞ্ছনা, অপমান ও মৃত্যু?
এর কিছুদিন আগের ঘটনা। ঘটেছে নড়াইলে। নড়াইল সদর উপজেলায় মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরানো হয়েছে। অভিযোগ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। এ ঘটনা ঘটেছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে! বিষয়টা কতটা মর্মান্তিক, লজ্জাজনক ও ভয়ংকর ভেবে দেখুন। ওই প্রতিষ্ঠানে এমনকি কেউ নেই যে মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করতে জানে! একজন শিক্ষক তো মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষককে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। তাহলে আমরা কি আমাদের মেরুদণ্ডকে চপেটাঘাত করছি না? শিক্ষকের অপমান কি আমাদের ব্যক্তিগত অপমান নয়? একজন শিক্ষকের কাছে তো আমাদের নতজানু হওয়ার কথা। শিক্ষকের সামনে তো মাথা নিচু থাকার কথা। যেমনটা পড়েছিলাম কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতায়। ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটি আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিল। কবিতাটি আমার ভীষণ পছন্দের। সেখানে একটি চরণ ছিল ‘আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির’। অথচ বাস্তবিক অর্থে শিক্ষাগুরুর মাথা নিচু হতে হতে মূলোৎপাটিত হয়ে যাচ্ছে।
এখন অহরহ শোনা যায় বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকের অপমান। নিশ্চয় বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের কথা মনে আছে। ধর্ম অবমাননার দায়ে মুন্সিগঞ্জের এই শিক্ষককে আটক করা হয়েছিল। একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে ধর্ম আর বিজ্ঞানের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন হৃদয়। সেটা গোপনে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পরে তাঁকে আটক করা হয়। জেল খাটতে হয়। পরে ছাড়া পেয়ে আঘাতের ক্ষত ভুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যান তিনি। আবারও কর্মস্থলে ফিরে যান সন্দেহ ও ভয় নিয়ে। হৃদয় উজাড় করে ছাত্রদের ক্ষমা করে দেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, নৈতিকতা ও নিয়ম শেখানোর দায়ে যদি শিক্ষককে লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়, ছাত্রদের কাছে অপমানিত হতে হয়, তাহলে সামনের পরিস্থিতি আরও কী হতে পারে ভেবে দেখেছেন? কতটা নাজুক, ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ? শিক্ষকের ব্যক্তিগত অনৈতিকতা, অসভ্যতা যেমন কাম্য নয়, ঠিক তেমনি একজন সৎ শিক্ষকের অপমান, লাঞ্ছনাও সইবার নয়। ছোট থেকে জেনে আসছি, মেনে আসছি শিক্ষক হলো পিতার মতো। শিক্ষক একজন মানুষকে মানুষ করে গড়ে তোলেন। শিক্ষকের বয়স যত বেশি কিংবা কম হোক না কেন, সব সময় ভয় পেতাম। শিক্ষকের সামনে দিয়ে হাঁটতে, দুষ্টুমি করতে ভয় পেতাম। এমনকি বড়দের সামনেও।
আগে একটা বিষয় খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হতো। স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর সময় এবং প্যারেন্টস মিটিংয়ে অভিভাবক শিক্ষককে বলতেন তিনি যেন তাঁর (সেই অভিভাবকের) সন্তানকে শাসন করেন। সন্তান ভুল করলে যেন ভুল ধরিয়ে দেন। অথচ এখন দেখা যায় শাসন করার কারণে শিক্ষককে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হচ্ছে।
আমার অগ্রজদের দেখেছি শিক্ষকের সঙ্গে নত হয়ে কথা বলতে। আমিও ঠিক যথাসম্ভব তা করার চেষ্টা করেছি। দেখা হলেই সালাম দিয়ে কুশল বিনিময়ের চেষ্টা করি। অথচ দিনকে দিন দেখছি শিক্ষার্থীরা অসহিষ্ণু, বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে। এই দায় কার আসলে? পরিবার, প্রতিষ্ঠান, নাকি শিক্ষকেরই? প্রশ্নটা রেখে গেলাম।

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্রের স্টাম্পের আঘাতে আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা গেছেন। স্তব্ধ লাগছিল। গত ২৫ জুন একজন শিক্ষক তাঁরই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রের দ্বারা অপমানিত, লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হয়েছেন এবং সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। বিষয়টা কতটা ভয়ংকর! যে স্কুলে তিনি গত ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, যিনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নিয়ম মানার জন্য বলতেন, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা হলে যে শিক্ষক উত্ত্যক্তকারীদের শাসন করতেন, সেই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তাঁকে স্কুলের মাঠে প্রকাশ্যে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একজন শিক্ষকের নৈতিকতার পুরস্কার কি লাঞ্ছনা, অপমান ও মৃত্যু?
এর কিছুদিন আগের ঘটনা। ঘটেছে নড়াইলে। নড়াইল সদর উপজেলায় মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরানো হয়েছে। অভিযোগ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। এ ঘটনা ঘটেছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে! বিষয়টা কতটা মর্মান্তিক, লজ্জাজনক ও ভয়ংকর ভেবে দেখুন। ওই প্রতিষ্ঠানে এমনকি কেউ নেই যে মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করতে জানে! একজন শিক্ষক তো মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষককে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। তাহলে আমরা কি আমাদের মেরুদণ্ডকে চপেটাঘাত করছি না? শিক্ষকের অপমান কি আমাদের ব্যক্তিগত অপমান নয়? একজন শিক্ষকের কাছে তো আমাদের নতজানু হওয়ার কথা। শিক্ষকের সামনে তো মাথা নিচু থাকার কথা। যেমনটা পড়েছিলাম কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতায়। ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটি আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিল। কবিতাটি আমার ভীষণ পছন্দের। সেখানে একটি চরণ ছিল ‘আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির’। অথচ বাস্তবিক অর্থে শিক্ষাগুরুর মাথা নিচু হতে হতে মূলোৎপাটিত হয়ে যাচ্ছে।
এখন অহরহ শোনা যায় বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকের অপমান। নিশ্চয় বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের কথা মনে আছে। ধর্ম অবমাননার দায়ে মুন্সিগঞ্জের এই শিক্ষককে আটক করা হয়েছিল। একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে ধর্ম আর বিজ্ঞানের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন হৃদয়। সেটা গোপনে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পরে তাঁকে আটক করা হয়। জেল খাটতে হয়। পরে ছাড়া পেয়ে আঘাতের ক্ষত ভুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যান তিনি। আবারও কর্মস্থলে ফিরে যান সন্দেহ ও ভয় নিয়ে। হৃদয় উজাড় করে ছাত্রদের ক্ষমা করে দেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, নৈতিকতা ও নিয়ম শেখানোর দায়ে যদি শিক্ষককে লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়, ছাত্রদের কাছে অপমানিত হতে হয়, তাহলে সামনের পরিস্থিতি আরও কী হতে পারে ভেবে দেখেছেন? কতটা নাজুক, ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ? শিক্ষকের ব্যক্তিগত অনৈতিকতা, অসভ্যতা যেমন কাম্য নয়, ঠিক তেমনি একজন সৎ শিক্ষকের অপমান, লাঞ্ছনাও সইবার নয়। ছোট থেকে জেনে আসছি, মেনে আসছি শিক্ষক হলো পিতার মতো। শিক্ষক একজন মানুষকে মানুষ করে গড়ে তোলেন। শিক্ষকের বয়স যত বেশি কিংবা কম হোক না কেন, সব সময় ভয় পেতাম। শিক্ষকের সামনে দিয়ে হাঁটতে, দুষ্টুমি করতে ভয় পেতাম। এমনকি বড়দের সামনেও।
আগে একটা বিষয় খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হতো। স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর সময় এবং প্যারেন্টস মিটিংয়ে অভিভাবক শিক্ষককে বলতেন তিনি যেন তাঁর (সেই অভিভাবকের) সন্তানকে শাসন করেন। সন্তান ভুল করলে যেন ভুল ধরিয়ে দেন। অথচ এখন দেখা যায় শাসন করার কারণে শিক্ষককে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হচ্ছে।
আমার অগ্রজদের দেখেছি শিক্ষকের সঙ্গে নত হয়ে কথা বলতে। আমিও ঠিক যথাসম্ভব তা করার চেষ্টা করেছি। দেখা হলেই সালাম দিয়ে কুশল বিনিময়ের চেষ্টা করি। অথচ দিনকে দিন দেখছি শিক্ষার্থীরা অসহিষ্ণু, বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে। এই দায় কার আসলে? পরিবার, প্রতিষ্ঠান, নাকি শিক্ষকেরই? প্রশ্নটা রেখে গেলাম।
রিক্তা রিচি

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্রের স্টাম্পের আঘাতে আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা গেছেন। স্তব্ধ লাগছিল। গত ২৫ জুন একজন শিক্ষক তাঁরই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রের দ্বারা অপমানিত, লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হয়েছেন এবং সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। বিষয়টা কতটা ভয়ংকর! যে স্কুলে তিনি গত ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, যিনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নিয়ম মানার জন্য বলতেন, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা হলে যে শিক্ষক উত্ত্যক্তকারীদের শাসন করতেন, সেই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তাঁকে স্কুলের মাঠে প্রকাশ্যে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একজন শিক্ষকের নৈতিকতার পুরস্কার কি লাঞ্ছনা, অপমান ও মৃত্যু?
এর কিছুদিন আগের ঘটনা। ঘটেছে নড়াইলে। নড়াইল সদর উপজেলায় মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরানো হয়েছে। অভিযোগ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। এ ঘটনা ঘটেছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে! বিষয়টা কতটা মর্মান্তিক, লজ্জাজনক ও ভয়ংকর ভেবে দেখুন। ওই প্রতিষ্ঠানে এমনকি কেউ নেই যে মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করতে জানে! একজন শিক্ষক তো মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষককে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। তাহলে আমরা কি আমাদের মেরুদণ্ডকে চপেটাঘাত করছি না? শিক্ষকের অপমান কি আমাদের ব্যক্তিগত অপমান নয়? একজন শিক্ষকের কাছে তো আমাদের নতজানু হওয়ার কথা। শিক্ষকের সামনে তো মাথা নিচু থাকার কথা। যেমনটা পড়েছিলাম কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতায়। ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটি আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিল। কবিতাটি আমার ভীষণ পছন্দের। সেখানে একটি চরণ ছিল ‘আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির’। অথচ বাস্তবিক অর্থে শিক্ষাগুরুর মাথা নিচু হতে হতে মূলোৎপাটিত হয়ে যাচ্ছে।
এখন অহরহ শোনা যায় বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকের অপমান। নিশ্চয় বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের কথা মনে আছে। ধর্ম অবমাননার দায়ে মুন্সিগঞ্জের এই শিক্ষককে আটক করা হয়েছিল। একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে ধর্ম আর বিজ্ঞানের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন হৃদয়। সেটা গোপনে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পরে তাঁকে আটক করা হয়। জেল খাটতে হয়। পরে ছাড়া পেয়ে আঘাতের ক্ষত ভুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যান তিনি। আবারও কর্মস্থলে ফিরে যান সন্দেহ ও ভয় নিয়ে। হৃদয় উজাড় করে ছাত্রদের ক্ষমা করে দেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, নৈতিকতা ও নিয়ম শেখানোর দায়ে যদি শিক্ষককে লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়, ছাত্রদের কাছে অপমানিত হতে হয়, তাহলে সামনের পরিস্থিতি আরও কী হতে পারে ভেবে দেখেছেন? কতটা নাজুক, ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ? শিক্ষকের ব্যক্তিগত অনৈতিকতা, অসভ্যতা যেমন কাম্য নয়, ঠিক তেমনি একজন সৎ শিক্ষকের অপমান, লাঞ্ছনাও সইবার নয়। ছোট থেকে জেনে আসছি, মেনে আসছি শিক্ষক হলো পিতার মতো। শিক্ষক একজন মানুষকে মানুষ করে গড়ে তোলেন। শিক্ষকের বয়স যত বেশি কিংবা কম হোক না কেন, সব সময় ভয় পেতাম। শিক্ষকের সামনে দিয়ে হাঁটতে, দুষ্টুমি করতে ভয় পেতাম। এমনকি বড়দের সামনেও।
আগে একটা বিষয় খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হতো। স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর সময় এবং প্যারেন্টস মিটিংয়ে অভিভাবক শিক্ষককে বলতেন তিনি যেন তাঁর (সেই অভিভাবকের) সন্তানকে শাসন করেন। সন্তান ভুল করলে যেন ভুল ধরিয়ে দেন। অথচ এখন দেখা যায় শাসন করার কারণে শিক্ষককে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হচ্ছে।
আমার অগ্রজদের দেখেছি শিক্ষকের সঙ্গে নত হয়ে কথা বলতে। আমিও ঠিক যথাসম্ভব তা করার চেষ্টা করেছি। দেখা হলেই সালাম দিয়ে কুশল বিনিময়ের চেষ্টা করি। অথচ দিনকে দিন দেখছি শিক্ষার্থীরা অসহিষ্ণু, বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে। এই দায় কার আসলে? পরিবার, প্রতিষ্ঠান, নাকি শিক্ষকেরই? প্রশ্নটা রেখে গেলাম।

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্রের স্টাম্পের আঘাতে আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা গেছেন। স্তব্ধ লাগছিল। গত ২৫ জুন একজন শিক্ষক তাঁরই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রের দ্বারা অপমানিত, লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হয়েছেন এবং সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। বিষয়টা কতটা ভয়ংকর! যে স্কুলে তিনি গত ১০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, যিনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নিয়ম মানার জন্য বলতেন, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা হলে যে শিক্ষক উত্ত্যক্তকারীদের শাসন করতেন, সেই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তাঁকে স্কুলের মাঠে প্রকাশ্যে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একজন শিক্ষকের নৈতিকতার পুরস্কার কি লাঞ্ছনা, অপমান ও মৃত্যু?
এর কিছুদিন আগের ঘটনা। ঘটেছে নড়াইলে। নড়াইল সদর উপজেলায় মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরানো হয়েছে। অভিযোগ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। এ ঘটনা ঘটেছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে! বিষয়টা কতটা মর্মান্তিক, লজ্জাজনক ও ভয়ংকর ভেবে দেখুন। ওই প্রতিষ্ঠানে এমনকি কেউ নেই যে মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করতে জানে! একজন শিক্ষক তো মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষককে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। তাহলে আমরা কি আমাদের মেরুদণ্ডকে চপেটাঘাত করছি না? শিক্ষকের অপমান কি আমাদের ব্যক্তিগত অপমান নয়? একজন শিক্ষকের কাছে তো আমাদের নতজানু হওয়ার কথা। শিক্ষকের সামনে তো মাথা নিচু থাকার কথা। যেমনটা পড়েছিলাম কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতায়। ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটি আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিল। কবিতাটি আমার ভীষণ পছন্দের। সেখানে একটি চরণ ছিল ‘আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির’। অথচ বাস্তবিক অর্থে শিক্ষাগুরুর মাথা নিচু হতে হতে মূলোৎপাটিত হয়ে যাচ্ছে।
এখন অহরহ শোনা যায় বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকের অপমান। নিশ্চয় বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের কথা মনে আছে। ধর্ম অবমাননার দায়ে মুন্সিগঞ্জের এই শিক্ষককে আটক করা হয়েছিল। একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে ধর্ম আর বিজ্ঞানের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন হৃদয়। সেটা গোপনে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং পরে তাঁকে আটক করা হয়। জেল খাটতে হয়। পরে ছাড়া পেয়ে আঘাতের ক্ষত ভুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যান তিনি। আবারও কর্মস্থলে ফিরে যান সন্দেহ ও ভয় নিয়ে। হৃদয় উজাড় করে ছাত্রদের ক্ষমা করে দেন।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, নৈতিকতা ও নিয়ম শেখানোর দায়ে যদি শিক্ষককে লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়, ছাত্রদের কাছে অপমানিত হতে হয়, তাহলে সামনের পরিস্থিতি আরও কী হতে পারে ভেবে দেখেছেন? কতটা নাজুক, ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ? শিক্ষকের ব্যক্তিগত অনৈতিকতা, অসভ্যতা যেমন কাম্য নয়, ঠিক তেমনি একজন সৎ শিক্ষকের অপমান, লাঞ্ছনাও সইবার নয়। ছোট থেকে জেনে আসছি, মেনে আসছি শিক্ষক হলো পিতার মতো। শিক্ষক একজন মানুষকে মানুষ করে গড়ে তোলেন। শিক্ষকের বয়স যত বেশি কিংবা কম হোক না কেন, সব সময় ভয় পেতাম। শিক্ষকের সামনে দিয়ে হাঁটতে, দুষ্টুমি করতে ভয় পেতাম। এমনকি বড়দের সামনেও।
আগে একটা বিষয় খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হতো। স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর সময় এবং প্যারেন্টস মিটিংয়ে অভিভাবক শিক্ষককে বলতেন তিনি যেন তাঁর (সেই অভিভাবকের) সন্তানকে শাসন করেন। সন্তান ভুল করলে যেন ভুল ধরিয়ে দেন। অথচ এখন দেখা যায় শাসন করার কারণে শিক্ষককে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হচ্ছে।
আমার অগ্রজদের দেখেছি শিক্ষকের সঙ্গে নত হয়ে কথা বলতে। আমিও ঠিক যথাসম্ভব তা করার চেষ্টা করেছি। দেখা হলেই সালাম দিয়ে কুশল বিনিময়ের চেষ্টা করি। অথচ দিনকে দিন দেখছি শিক্ষার্থীরা অসহিষ্ণু, বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে। এই দায় কার আসলে? পরিবার, প্রতিষ্ঠান, নাকি শিক্ষকেরই? প্রশ্নটা রেখে গেলাম।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল।
০৩ জুলাই ২০২২
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল।
০৩ জুলাই ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৯ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল।
০৩ জুলাই ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৮ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

২৭ তারিখ ছিল আজকের পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি। আমাদের মনে আনন্দের জোয়ার। পুরো অফিসে হইচই-রইরই ব্যাপার। সহকর্মীদের সঙ্গে খোশগল্প, ফটোসেশন এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বোলাচ্ছিলাম আজকের পত্রিকার অনলাইনে। খবরটা পাওয়ার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। মুহূর্তেই যেন আমাদের আনন্দমুখর আঙিনায় কালো মেঘ নেমে এল।
০৩ জুলাই ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
১ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৭ দিন আগে